মানুষের জীবন খুবই বিবর্ণ থাকে মাঝে মাঝে। আসলে একে বিবর্ণ বলাটা বোধ হয় ঠিক না। এটাও একটা রং। হয়তো নিকষ কালো কিংবা ধূসর ! আমাদের এলাকায় গত এক বছর আগে নদীর কোল ঘেঁষেই সুন্দর একটি পার্ক তৈরি হয়। পার্কটির নাম মুক্তিযোদ্ধা পার্ক।
পার্কটি মোটামুটিভাবে সামাজিক বিনোদনের একটি স্থান হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সব বয়সের মানুষই এখানে আসে ঘুরতে আর নদীর পারের নির্মল হাওয়া খেতে আসে। আমি যখন ঢাকা থেকে বাড়িতে যাই তখন প্রায় প্রতিদিনই সেই পার্কে যাই। তো একদিন বিকেলে আমি আর আমার এক ফুফাতো ভাই সেখানে গেলাম রোজকার মত হাওয়া খেতে। দুই ভাই বসে বসে গল্প করছি আর হাওয়া খাচ্ছিলাম।
হঠাৎ শুনি এক ফেরিওয়ালা চিৎকার করে বলছে “ এই লাগবে নাকি প্রেমফল? প্রেমফল! প্রেমফল!! প্রেমফল!!!” এই কথা শুনে তো আমার চোখ চরখ গাছ। কি বলে এই বেটা ? ! প্রেমফল এইটা আবার কি জিনিস? তো আমি একটু কৌতুহল নিয়েই ফেরিওয়ালাকে ডাক দেই “ওই মামা এদিক আহো”। তো ফেরিওয়ালা আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করে “লাগবো নাকি মামা প্রেমফল? দিমু নাকি একশ গ্রাম? একশ গ্রাম মাত্র দশ টাহা। ” আমি বলি “আচ্ছা মামা এই যে প্রেমফল প্রেমফল কইরা চিল্লাইতাছ, এই প্রেমফলডা আবার কি জিনিস?” তো ফেরিওয়ালা জবাবে আমাকে বলে “আরে মামা এইডা কি কন? প্রেমফল চিনেন না? আফনের লগে মামী থাকলে তো ঠিকই কিন্না চাবাইতে থাকতেন”। আমি বলি মিয়া এত না পেঁচাইয়া সহজ কইরা কও”।
ফেরিওয়ালা বলে “প্রেমফল হইল বাদাম! এই যে দেহেন না যারা জোড়ায় জোড়ায় আহে খালি হেরাই এইগুলা কিন্না খায়। আর কেউ তেমন এইগুলা কেনে না। হ্যাঁরা প্রেম করে আর বাদাম চাবায়। হেইরলেইজ্ঞা এইগুলার নাম প্রেমফল। এইবার বোজঝেন?”।
আমি বললাম “হুম বুজঝি কিছুডা” ফেরিওয়ালা আমাকে এবার জিজ্ঞেস করে “মামা দিমুনি একশ গ্রাম প্রেমফল?” আমি বলি “নাহ। লাগবো না”। তখন আমাকে ফেরিওয়ালা আবার বলে “এইয়ার লেইজ্ঞাই এইগুলার নাম প্রেমফল। মামীরে লইয়া আইলে ঠিকই কিনতেন”। সে বলতে বলতে চলে যায়।
আর আমি ভাবতে থাকি এই প্রেমফল নিয়ে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।