আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টেসকো বলছে ঝুঁকিপূর্ণ, বিজিএমইএর ‘না’

সাভারের আশুলিয়ার জিরানিতে লিবার্টি ফ্যাশনস নামের একটি পোশাক কারখানার ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে প্রতিবেদন দিয়েছে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ করা প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান। তবে লিবার্টি কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পোশাকমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর বিশেষজ্ঞরা ও বুয়েটের প্রতিনিধিদল ভবনটি ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করেছে।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান টেসকো (যুক্তরাজ্যভিত্তিক) দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে লিবার্টি ফ্যাশনস থেকে পোশাক কিনছিল। রানা প্লাজা ধসে পড়ার পর সম্প্রতি মিডওয়ে কনসালটেন্সি সার্ভিস (এমসিএস) নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে লিবার্টির ভবন জরিপে নিয়োগ করে টেসকো। জরিপের পর এমসিএস ওই ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে।

এরপর লিবার্টি থেকে পোশাক না নেওয়ার ঘোষণা দেয় টেসকো। লিবার্টি কর্তৃপক্ষের দাবি, ভবন সংস্কারের ঠিকাদারি কাজ এমসিএসকে না দেওয়ায় এ রকম প্রতিবেদন দিয়েছে তারা।
আশুলিয়ার জিরানিতে প্রায় সাত একর জমির ওপর অবস্থিত লিবার্টি ফ্যাশনসের কারখানা। এই কারখানায় একটি চারতলা, একটি তিনতলা, একটি দুতলা ভবনসহ ১০টি টিনশেড ভবন রয়েছে। কারখানার চারতলা ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলেছে এমসিএস।

ওই চারতলা ভবনের চতুর্থ তলায় ১১ হাজার বর্গফুট, তৃতীয় তলায় ৩৫ হাজার ঘনফুট, দ্বিতীয় ও প্রথম তলায় ৪১ হাজার ঘনফুট মেঝে কারখানা হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে। এই কারখানার শ্রমিকসংখ্যা চার হাজার ২০০। এর মধ্যে চারতলা ভবনে কাজ করেন দুই হাজার ২০০ জন। অন্যরা অন্যান্য ভবনে কাজ করেন।
টেসকোর হয়ে এমসিএসের তিন সদস্যের একটি দল গত ১৮ মে, ২৫ মে ও ১১ জুন কারখানা পরিদর্শন করে।

এরপর তারা টেসকোর কাছে প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, চারতলা ভবনটির প্রতিটি তলার ছাদ কারখানার শ্রমিক ও যন্ত্রপাতি বহনে যথেষ্ট মজবুত নয়। এই নিম্নমুখী চাপে কারখানার ছাদ ভেঙে পড়তে পারে।
তবে কারখানার কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের ভবন যথেষ্ট মজবুত। কারখানার উপব্যবস্থাপক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, পরিদর্শনের পর এমসিএস তাঁদের কোনো প্রতিবেদন না দিয়ে টেসকোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে ওই প্রতিবেদন প্রচার করেছে।

এটা বাংলাদেশের পোশাকশিল্পকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি জানান, বিজিএমইএর প্রকৌশলী দল ৯ জুন পরিদর্শন করে কারখানাটি ঝুঁকিমুক্ত বলে প্রতিবেদন দিয়েছে। গত রোববার বুয়েটের একটি বিশেষজ্ঞ দল কারখানা পরিদর্শন করে তারাও কারখানাটি ঝুঁকিমুক্ত বলে মৌখিকভাবে ঘোষণা দিয়ে গেছে। কয়েক দিনের মধ্যেই বুয়েটের বিশেষজ্ঞরা লিখিত প্রতিবেদন দেবে।
লিবার্টির স্বত্বাধিকারী মোজাম্মেল হক বলেন, ভবনটি নিরাপদ করতে ছাদের নিচে লোহার বার দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল এমসিএস।

এ জন্য প্রায় আট কোটি টাকা প্রয়োজন। তাঁরা কাজটি করার আগ্রহও দেখিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এমসিএস ভবন সংস্কারের কাজটি না পেয়ে এ রকম প্রতিবেদন দিয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য এমসিএসে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ইফতেখার আহমেদ খান দেশে নেই। তাঁর অনুমতি ছাড়া প্রতিষ্ঠানের কারও সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার এখতিয়ার নেই।

আগামী সপ্তাহে এমডি দেশে ফেরার পর তাঁর অনুমতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
এর আগে বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, বুয়েটের প্রকৌশলীরা ভবনটি পরীক্ষা করে ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করলে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে টেসকোকে এ ধরনের নেতিবাচক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।