রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ চাই
কিছুদিন আগে একবার কালনী এক্সপ্রেসে সিলেট যাচ্ছিলাম। বলাবাহুল্য, সুরঞ্জিতবাবু কালনী এক্সপ্রেস চালুর উদ্যোগ নিয়েছিলেন, কিন্তু উদ্বোধন করতে পারেন নাই। সবাই জানে নতুন ট্রেন। কিন্তু নতুন ট্রেন মানে সবকিছু নতুন নয়। ইঞ্জিন পুরোনো, বগি পুরোনো, সিট পুরোনো।
সবকিছুকে ঘষামাজা করে নতুন নামে চালু করা হয়েছে।
কালনী এক্সপ্রেসের সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো, এর বসার সিটগুলো। সাধারণ কোনো মানুষ আরামদায়কভাবে এই সিটে বসতে পারে না। কারণ, আপনি বসলে আপনার পায়ের হাটু সামনের সিটে সাথে লাগবে, চেয়ারকোচ গুলোতে আপনি নিজের সিট পিছনে সরিয়েও বসতে পারবেন না, কারণ এতে পিছনের যাত্রীরা পা রাখতে পারবে না। আরো সমস্যা আছে, সিটের পিছনটা অনেক উচু।
তাই জানালার পাশে বসা ছাড়া করিডোর পাশে বসা ব্যক্তি কোনো বাতাস পান না।
এইতো গেল ট্রেনের বিবরণ। সেদিন যথারীতি কমলাপুরে গিয়ে ট্রেনে উঠলাম। আমার পাশের কলামে ৬জন ইয়াং ছেলে(২২-২৪ বছর) বসেছে। তাদের বাড়ী মনে হয় সিলেটেই।
কিছুক্ষণ পরে আর একটা লোক আসলে, সেও একটু তাগাড়া টাইপের(বয়স ৩২-৩৫), আমার কাছে নেশারু মনে হয়েছিলো। সে বসলো ওদের পিছনের সিটে। ট্রেন ছাড়ার আগে ঐ জোয়ান ছেলেদের একজন তার চেয়ারের সিট পিছনে হেলিয়ে দিলো, আর ঐ তাগাড়া ছেলে তাকে কি কি বলাবলি করলো, কারণ, তার পায়ে গিয়ে ধাক্কা লেগেছে।
এরপর শুরু হলো হাতাহাতি, তারপর দুইপক্ষই নিজেদের প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা শুরু করলো। জোয়ান ছেলেগুলো বললো, তারমতো ২-৩জনকে তারা পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, আর তাগাড়া লোকটা বললো, সে র্যাবকে ফোন করবে, সিলেট নেমেই হাজত বাস করবে।
এবং সে সত্যি সত্যিই র্যাবের কোন অফিসারকে ফোন করলো, এবং স্টেশনে রাত ৯টার সময় ফোর্স পাঠাতে বললো। কিন্তু জোয়ান ছেলেদের কোনো বিকার হলো না। তার বললো, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করলেও কোনো লাভ হবে না, তাদের কেউ কিছু করতে পারবেন না।
ট্রেন চলছে, ঝগড়াও চলছে একটু পর পর। মাঝে মাঝে ট্রেনের গার্ডরা এসে তাদের ঝগড়া থামানোর চেষ্টা করছিলো।
কিন্তু তাতে তেমন লাভ হচ্ছিলো না।
রাত সাড়ে আটটার দিকে ট্রেন মাইজগাও স্টেশনের কাছাকাছি আসলে ৬জন জোয়ান ছেলে নেমে যাওয়ার জন্য ব্যাগ গোছাচ্ছিলো, (সিলেট স্টেশন আরো পরে)। তখন ঐ নেশারু বুঝতে পারলো, এদেরকে তো র্যাব দিয়ে মাইর খাওয়ানো সম্ভব নয়, তখন সে আবার ক্যাচাল শুরু করলো। এইবার আসলো জিআরপি পুলিশ। এসে কোনো রকম ফায়সালা করলো।
ওরা ট্রেন থেকে নেমে পড়লো। এরমাঝে বেশ কয়েকবার হাতাহাতিও হলো
তখন ঐ ৬জন ছেলে হুমকী দিলো, সাহস থাকলে এইখানে নেমে আয়।
আর তাগাড়া লোকটা ট্রেনের ভিতর থেকে চিৎকার করছিলো, সাহস থাকলে সিলেটে চলো। হাজতের ভাত খাইয়েই ছাড়বো।
শিক্ষা:
১।
তাদের কারোরই সাহস ছিলো না।
২। লম্বা হাটুওয়ালা/পা ওয়ালা মানুষদের জন্য কালনী এক্সপ্রেস সুবিধাজনক নয়।
সেদিন আরো অনেক মানুষকেই দেখলাম, পা এবং সিট রাখা নিয়ে হালকা পাতলা অসুবিধার কথা বলছিলো।
সিলেট থেকে ফেরার সময় আরো একটা বড় নাটক দেখেছিলাম, সেটা নিয়ে পরের পোস্টে লিখবো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।