আজ তুমি অন্যের...........প্রীতি! আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চতুর্থ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর ৩য় রায় এটি।
একাত্তরে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে আলবদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন মুহাম্মদ কামারুজ্জামান।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং তৎকালীন আলবদর নেতা কুখ্যাত রাজাকর মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, দেশত্যাগে বাধ্যকরাসহ সাত ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে এই জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ গুলোঃ-
১ নং অভিযোগ বদিউজ্জামান হত্যা
কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ২৯ জুন শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী থানার কালীনগর গ্রামে ফজলুল হকের ছেলে বদিউজ্জামানকে রামনগর গ্রামের আহম্মদ মেম্বারের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনীর সদস্যরা। এরপর তাঁকে নির্যাতন করে আহম্মদনগরের রাস্তার ওপরে গুলি করে হত্যা করা হয়।
পরে লাশ টেনে নিয়ে কাছাকাছি কাঠের পুলের নিচে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়।
অভিযোগ প্রমাণিত।
২ নং অভিযোগ শেরপুর কলেজের প্রভাষক আব্দুল হান্নানকে নির্যাতন
একাত্তরের মে মাসের মাঝামাঝি এক দুপুরে শেরপুর কলেজের তৎকালীন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ আব্দুল হান্নানকে খালি গায়ে মাথা ন্যাড়া করে, গায়ে ও মুখে চুনকালি মাখিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে উলঙ্গ অবস্থায় চাবুক দিয়ে পেটাতে পেটাতে শেরপুর শহর ঘোরায় আসামি কামারুজ্জামান ও তার সহযোগীরা।
অভিযোগ প্রমাণিত।
৩ নং অভিযোগ সোহাগপুরে গণহত্যা
একাত্তরের ২৫ জুলাই ভোর বেলায় কামারুজ্জামানের পরিকল্পনা ও পরামর্শে রাজাকার, আলবদরসহ পাকিস্তানী সেনাবাহিনী শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার সোহাগপুর গ্রাম ঘিরে ফেলে।
এরপর তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১২০ জন পুরুষকে ধরে এনে হত্যা করে। ধর্ষণের শিকার হন গ্রামের মহিলারা। (যা পরবর্তীতে বিধবা পল্লী হিসেবে পরিচিত। )
অভিযোগ প্রমাণিত।
৪ নং অভিযোগ গোলাম মোস্তফাকে হত্যা
১৯৭১ সালের ২৩ অগাস্ট মাগরিবের নামাজের সময় গোলাম মোস্তফা তালুকদারকে ধরে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনীর সদস্যরা।
কামারুজ্জামানের নির্দেশে তাকে সুরেন্দ্র মোহন সাহার বাড়িতে বসানো আলবদর ক্যাম্পে রাখা হয়। মোস্তফার চাচা তোফায়েল ইসলাম এরপর কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করে তার ভাতিজাকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু ওই রাতে আলবদর বাহিনীর সদস্যরা গোলাম মোস্তফা ও আবুল কাশেম নামের আরেক ব্যক্তিকে মৃগি নদীর ওপর শেরি ব্রিজে নিয়ে গিয়ে গুলি করে। গুলিতে গোলাম মোস্তফা নিহত হলেও হাতের আঙ্গুলে গুলি লাগায় নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে বেঁচে যান আবুল কাশেম।
অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
৫ নং অভিযোগ লিয়াকতসহ ৮ জনকে হত্যা
একাত্তরে রমজান মাসের মাঝামাঝি সময়ে এক সন্ধ্যায় শেরপুরের চকবাজারের বাসা থেকে মো. লিয়াকত আলী ও আরো ১১ জনকে আটক করে ঝিনাইগাতী আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনীর সদস্যরা। এরপর তিনজন ছাড়া বাকি সবাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
গুলি করার সময় আসামি কামারুজ্জামান ও তার সহযোগী কামরান সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ করেছে প্রসিকিউশন।
অভিযোগ প্রমাণিত।
৬ নং অভিযোগ দিদারসহ কয়েকজনকে নির্যাতন একাত্তরের নভেম্বর মাসে দিদারসহ কয়েকজনকে ময়মনসিংহ শহরের জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় ধরে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনী।
পাকিস্তানের পক্ষে বক্তব্য দিতে বাধ্য করতে সেখানে নির্যাতন চলে তাদের ওপর।
প্রমাণিত হয়নি।
৭ নং দারাসহ ছয়জনকে হত্যা
মুক্তিযুদ্ধের সময় ২৭ রোজার দিন দুপুরে ময়মনসিংহ শহরের গোলাপজান রোডে টেপা মিয়ার বাড়ি ঘেরাও করে আলবদর বাহিনী টেপা মিয়া ও তাঁর বড় ছেলে জহুরুল ইসলাম দারাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় আলবদর ক্যাম্পে। পরদিন কামারুজ্জামানের নির্দেশে টেপা মিয়া ও দারাসহ সাতজনকে ব্রহ্মপুত্রপারে নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করা হয়। টেপা মিয়া বেঁচে গেলেও অন্যরা প্রাণ হারান।
অভিযোগ প্রমাণিত।
মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৭টি অভিযোগের মধ্যে ৫টি অভিযোগ প্রমাণিত ২টি অভিযোগ(৪ ও ৬ নং) প্রমাণিত হয়নি।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগের বিবরণ অনুযায়ী, কামারুজ্জামান এসব অপরাধ করেছেন একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে। তার বিচরণক্ষেত্র ছিল বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা।
মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারের লক্ষ্যে সরকার ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে।
গত বছরের ২২ মার্চ দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
* বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৫ এ কামারুজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালের এজলাসে নিয়ে আসার পর দুই পক্ষের আইনজীবীদের ধন্যবাদ দিয়ে মামলার ইতিবৃত্ত সংক্ষেপে তুল ধরেন এই ট্রাইব্যুনালের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। এরপর ১১টা ২১ মিনিটে জনাকীর্ণ আদালতে রায়ের সংক্ষিপ্তসার পড়া শুরু করেন ট্রাইব্যনালের সদস্য বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম।
পুরো রায় ২১৫ পৃষ্ঠার হলেও এর সংক্ষিপ্ত সার ৬২ পৃষ্ঠার।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া রায়ের দ্বিতীয় অংশ পড়েন এবং ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান চূড়ান্ত আদেশ দেন।
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল তৎকালীন আলবদর নেতা কুখ্যাত রাজাকার মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধী মামলার ঐতিহাসিক ফাঁসির রায় ঘোষণা করা হয়।
জন্ম, শিক্ষা ও রাজনীতিঃ-
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং তৎকালীন আলবদর নেতা কুখ্যাত রাজাকার কামারুজ্জামানের জন্ম ১৯৫২ সালের ৪ জুলাই তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার জামালপুর মহকুমার শেরপুর থানা সদরে। তাঁর বাবার নাম ইনসান আলী সরকার (প্রয়াত) এবং মায়ের নাম সালেহা খাতুন। শেরপুরে জি কে এম ইনস্টিটিউশনে দশম শ্রেণীতে পড়ার সময়ই ইসলামী ছাত্রসংঘে যোগ দেন কামারুজ্জামান।
এসএসসি পাস করার পর তিনি জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজে ভর্তি হন। সেখানে স্নাতক শ্রেণীর ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি ইসলামী ছাত্রসংঘের হল শাখার সেক্রেটারি ছিলেন। ওই কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সাহিত্য সম্পাদক পদে প্রার্থীও হয়েছিলেন তিনি। তবে নির্বাচনে জিততে পারেননি। মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল।
তিনি জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের সাবেক নির্বাহী সম্পাদক। ১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে কামারুজ্জামানকে আলবদর বাহিনীর প্রধান সংগঠক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ৩১ ডিসেম্বর দৈনিক বাংলায় 'আরো ১৫ জন দালাল গ্রেফতার' শিরোনামে এক প্রতিবেদনে সরকারি তথ্য বিবরণীর বরাত দিয়ে অন্যদের সঙ্গে কামারুজ্জামানের গ্রেপ্তার হওয়ার খবরটি প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে কামারুজ্জামানকে শেরপুরের আলবদর হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়।
১৯৭০ সালে কামারুজ্জামান জামায়াতে ইসলামীর তখনকার ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের ময়মনসিংহ জেলার প্রধান হন। পরে ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান। মুক্তিযুদ্ধের সময় এপ্রিল মাসে জামালপুরে প্রথম যে আলবদর বাহিনী গড়ে ওঠে, তার প্রধান সংগঠক ছিলেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বেই এক মাসের মধ্যে ময়মনসিংহ জেলার সব ছাত্রসংঘকর্মীকে আলবদর বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই বছরের ২ অক্টোবর তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১-এ তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১২ সালের ১৬ এপ্রিল মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ স্থানান্তর করা হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ৪ জুন মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ গঠন করেন। ২ জুলাই এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
তদন্ত কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষের ১৮ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন এবং আসামিপক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন পাঁচজন। উভয় পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে চলতি বছরের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয় এবং শেষ হয় ৩১ মার্চ। আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন ২ এপ্রিল শুরু হয়ে ১৫ এপ্রিল শেষ হয়। যুক্তি উপস্থাপন শেষে ১৬ এপ্রিল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষাধীন রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগ গঠন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
গত বছরের ৪ জুন বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন। এসব অভিযোগের মধ্যে আছে একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, দেশত্যাগে বাধ্য করা ইত্যাদি। মহামান্য ট্রাইব্যুনালের ওই আদেশে বলা হয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কামারুজ্জামান বৃহত্তর ময়মনসিংহে আলবদরের প্রধান সংগঠক ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ও সহযোগিতায় আলবদর বাহিনী ও পাকিস্তানি সেনারা ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর প্রভৃতি এলাকায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করে। এরপর ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগ পড়ে শোনান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক খান জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে তিনি ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর প্রসিকিউশনের কাছে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। গত বছর ৫ ডিসেম্বর কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) জমা দেয় এবং ৩১ জানুয়ারি ৮৪ পৃষ্ঠার আনুষ্ঠানিক অভিযোগটি ট্রাইব্যুনাল-১ আমলে নেন। গত বছর ১৬ এপ্রিল চীফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপুর এক আবেদনের প্রেক্ষিতে কামারুজ্জামানের মামলাটি প্রথম ট্রাইব্যুনাল থেকে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। গত বছরের ৪ জুন অভিযোগ গঠনের মধ্যদিয়ে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের আল-বদর বাহিনীর অন্যতম নেতা কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী ৭ ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ আনা হয়। মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের অব্যবহিত পূর্বে ’৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যা বৃহত্তর ময়মনসিংহের জামালপুর ও শেরপুর অঞ্চলে শতাধিক মানুষকে হত্যা ও শতাধিক মহিলাকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
প্রসিকিউশন পক্ষে ১৮ জন সাফাই সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেনঃ-
২ জুলাই কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৮১ পৃষ্ঠার ওপেনিং স্টেটমেন্ট (সূচনা বক্তব্য) উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর একেএম সাইফুল ইসলাম ও নূরজাহান বেগম মুক্তা। গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে এ বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) আব্দুর রাজ্জাক খান, জব্দ তালিকার সাক্ষী বাংলা একাডেমীর সহকারী গ্রন্থাগারিক এজাব উদ্দিন মিয়া ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের তথ্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা আমেনা খাতুনসহ প্রসিকিউশনের ১৮ জন সাক্ষী তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
অন্য সাক্ষীরা হলেন- ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি হামিদুল হক, শেরপুরে কামারুজ্জামানের স্থাপন করা আল-বদর ক্যাম্প ও নির্যাতন কেন্দ্রের দারোয়ান মনোয়ার হোসেন খান মোহন, মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক মুন্সী বীরপ্রতীক, মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুল মান্নান, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ গোলাম মোস্তফা হোসেন তালুকদারের ছোট ভাই মোশাররফ হোসেন তালুকদার, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বদিউজ্জামানের বড় ভাই ডা. মোঃ হাসানুজ্জামান, লিয়াকত আলী, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদের পুত্র জিয়াউল ইসলাম, এ্যাডভোকেট আবুল কাশেম, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের সন্তান মোঃ জালাল উদ্দিন, মুজিবুর রহমান খান পান্নু ও দবির হোসেন ভূঁইয়া।
কামরুজ্জামনের পক্ষে ৫ জন সাফাই সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেঃ-
গত ৬ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত মোট ৫ জন সাফাই সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। এরা হলেন- মোঃ আরশেদ আলী, আশকর আলী, কামারুজ্জামানের বড় ছেলে হাসান ইকবাল, বড়ভাই কফিল উদ্দিন ও আব্দুর রহিম। প্রসিকিউশন তাদের জেরা করেছেন। গত ২৪ মার্চ থেকে ৫ কার্যদিবসে প্রসকিউশনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন চীফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, তুরিন আফরোজ, একেএম সাইফুল ইসলাম ও নুরজাহান বেগম মুক্তা।
অন্যদিকে ৩ এপ্রিল থেকে ৪ কার্যদিবসে আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও এহসান এ সিদ্দিক।
* আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ প্রথম রায় প্রদান করেন, ২১ জানুয়ারি জামায়াতের সাবেক সদস্য (রুকন) পলাতক আবুল কালাম আযাদকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
* আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ প্রথম রায় প্রদান করেন ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।
* আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ প্রথম রায় প্রদান করেন ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।
* কাদের মোল্লা ও সাঈদীর দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল বিচারাধীন রয়েছে আপিল বিভাগে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ অপেক্ষাধীন রয়েছে জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলার রায়।
*link|http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article623172.bdnews|রায়ের অপেক্ষায় শাহবাগে জনতা]
সূত্রঃ- বিডি নিউজ ২৪।
* আরেকটি রায় আজ
সূত্রঃ- দৈনিক প্রথম আলো।
* কামারুজ্জামানের মামলার রায় আজ
সূত্রঃ- দৈনিক জনকন্ঠ।
* আলবদর বাহিনীর প্রধান সংগঠক
সূত্রঃ- দৈনিক কালের কন্ঠ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।