মানুষের উপকার কম করলাম না,পরিনামে খেলাম শুধু বাঁশ। তবু হাল ছাড়ি নাই....উপকারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রী ছিলেন সোহানা (ছদ্মনাম)। বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। ছোট্ট সংসার আছে তার।
কিন্তু যে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি উচ্চশিক্ষা লাভ করেছেন সে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুনলে আঁতকে ওঠেন। কারণ, ঐ বিশ্ববিদ্যালয়েরই নিজ শিক্ষকের হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন তিনি। তাকে নির্যাতন করেছিল ঐ শিক্ষকের ‘তল্পিবাহক’ দুই ছাত্রও।
২০০৪ সালে অনার্স প্রথমবর্ষে অধ্যয়নকালে শিক্ষকের নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে মাস্টার্স পরীক্ষা পর্যন্ত তিনি কয়েকবার বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে ঘটনার সুবিচার এবং সুরক্ষা চেয়ে আবেদন করেছিলেন।
এই সময়ে বিভাগে চেয়ারম্যান পরিবর্তন হয়েছেন তিনজন। সকলের কাছেই আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কারো কাছ থেকেই ন্যায়বিচার পাননি।
বরং রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী শিক্ষকরা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত না করে বরং তা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল মফস্বলের ছাত্রী শাহেনার (ছদ্মনাম)।
সে স্বপ্ন সত্যি হয় ২০০৮ সালে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই আবাসন সংকটের কারণে শরণাপন্ন হন দূর সম্পকের্র ভাই ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং বিভাগের মাস্টাসের্র ছাত্র শরিফুল ইসলামের। শরিফুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিববাড়ি এলাকায় একটি বাসায় শাহেনার জন্য সাবলেটে থাকার ব্যবস্থা করেন। তার উপর নিভর্রশীলতা বাড়ে শাহেনার। এরপরই বিবর্ণ হতে শুরু করে তার স্বপ্ন।
২০০৯ সালের জুন মাসের একদিন পানির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শাহেনাকে অচেতন করে তার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে শরিফুল। সেই ছবি ও ভিডিও ক্লিপকে পুঁজি করে মেয়েটির সাথে প্রতারণা ও অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে বাধ্য করে। শুধু শরিফুল নয়, তার দুই বন্ধুর সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করা হয় শাহেনাকে। পরে আপত্তিকর কিছু ছবি ছড়িয়ে দেয়া হয় শাহেনার আত্মীয়-স্বজনের কাছে এবং অনুষদে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শরিফুলকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
তবে এখনও তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত একাডেমিক সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উপরের ঘটনা দুইটি কোনো বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়। দেশের উচ্চশিক্ষার প্রধানতম প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ ধরনের যৌন নিপীড়ন অতি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় প্রতিমাসেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির অভিযোগ আসছে। কোনো কোনো মাসে এ ধরনের দুই-তিন ডজন অভিযোগ আসে কর্তৃপক্ষের কাছে।
গত তিন বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১২ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। সহপাঠী বা অন্য ছাত্রের হাতে নিপীড়ন বা হয়রানির অভিযোগ করেছেন শতাধিক ছাত্রী। দুই বছর আগে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে ও বিচারে একটি উচ্চপর্যায়ের তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হলেও একটি বৈঠকও করেনি সে কমিটি। ফলে শিক্ষক কিংবা সহপাঠীর হাতে এভাবে নিপীড়নের শিকার হয়ে তীব্র মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন প্রতিশ্রুতিশীল অনেক ছাত্রী। আবার ব্যক্তিগত শত্রুতার বশবর্তী হয়েও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তোলা হয়তএমন অভিযোগও রয়েছে।
এ ধরনের ঘটনা একদিকে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন্ন করছে, অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৈতিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
নিপীড়নের ও হয়রানির ঘটনায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে ভুক্তভোগী ও তাদের আপনজনদের। আর প্রশ্রয় পেয়ে অপকর্মে আরো বেশি জড়িয়ে পড়ছে নিপীড়করা। এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দুঃখজনক এবং এটি দারুণভাবে হতাশ করে আমাদের। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
সকল নিপীড়নের ঘটনায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে। এজন্য তদন্ত কমিটিগুলোকে আরো কার্যকর ও সক্রিয় হওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
শিক্ষক যখন যৌন নিপীড়ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির অভিযোগও বাড়ছে। হয়রানির শিকার হয়ে ছাত্রীদের শিক্ষাজীবন নানাভাবে বিঘি্নত হলেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অফিস, প্রক্টর অফিস এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত তিন বছরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অন্তত ১২ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এসেছে।
তবে সামাজিক লজ্জা ও ভয়ের কারণে সব অভিযোগ কর্তৃপক্ষের কাছে আসে নাতএমন মন্তব্য করেছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী। এই হিসাবে এ ধরনের যৌন নিপীড়নের সংখ্যা আরো বেশি বলে তারা জানান।
সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত্স্যবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হাসানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ জুন বিভাগের একাডেমিক কমিটি এ অধ্যাপকের জন্য বিভাগের ২০০৯-১০ ব্যাচের সকল ক্লাস এবং বষের্র ক্লাস গ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে।
গত ৭ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক নূরউদ্দিন আলোর বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়।
এ বছরই নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন এক ছাত্রী।
গত জুন মাসে পরিসংখ্যান, প্রাণ পরিসংখ্যান ও তথ্য পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জাফর আহমেদ খানের বিরুদ্ধে পরকীয়া, নিপীড়ন ও যৌতুকের অভিযোগ আনেন তারই স্ত্রী। তিনি জাফরের বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।
২০০৯ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন মোল্লার বিরুদ্ধে এক ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন। এরপর ঐ শিক্ষককে এক বছর একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
বর্তমানে তিনি কাজে যোগ দিয়েছেন।
২০১০ সালে ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তখনকার চেয়ারম্যান অধ্যাপক আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলা হয়। শিক্ষার্থীদের লাগাতার অন্দোলনের ফলে তিনি চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর তার বিরুদ্ধে আর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
২০১১ সালে উর্দু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ইসরাফীলের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন এক শিক্ষার্থী।
এরপর তাকে চাকরি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়। কিন্তু এর জন্য কোন তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি।
একই বছরের এপ্রিল মাসে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু মুসা আরিফ বিল্লাহর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলা হয়। বিষয়টি তদন্তের স্বার্থে তাকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ছাত্রী বিভাগে আসেন না এবং তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন সহপাঠীরা।
তার শিক্ষাজীবনই হুমকির মুখে।
ঐ বছরেরই জুন মাসে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক মুহিত আল রশিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন এক ছাত্রী। এরপর তাকেও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
একই বছরে পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী লাঞ্ছনার অভিযোগ ওঠে। পরে ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঐ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এমরান হোসেনের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তোলেন।
২০০৭ সালে মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন এক শিক্ষার্থী। অভিযোগের ভিত্তিতে ঐ শিক্ষককে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে সমপ্রতি তিনি কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন।
নিপীড়কের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে
মফস্বল থেকে আসা ছাত্রী লাবণ্য (ছদ্মনাম)।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে আবাসন সংকটে পড়েন। হলে উঠতে পারিবারিকভাবে পূর্ব পরিচিত পংকজ বারুরীর শরণাপন্ন হন তিনি। তার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেয় পংকজ। এতে নানাভাবে লাবণ্যকে প্রতারিত করার চেষ্টা করে পংকজ। এমনকি গত এপ্রিল মাসে সেই ছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা করে সে।
শুধু এ একটি ঘটনা নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের হাতে যৌন নিপীড়নের ঘটনা ‘আশংকাজনকভাবে’ বাড়ছে। গত তিন বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে শতাধিক ছাত্রী যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেছেন। তবে সব ঘটনা প্রকাশ করা হয় না তাই নিপীড়নের শিকার ছাত্রীদের প্রকৃত সংখ্যা আরো বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বছর গত এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ ২৮টি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পেয়েছে কর্তৃপক্ষ। পর্ণো ভিডিওসহ আপত্তিকর নানা ছবিসহ অভিনব কায়দায় ছাত্রীদের প্রতারণা করার অভিযোগও রয়েছে।
দুই বছরেও বৈঠক করেনি যৌন নিপীড়ন বিরোধী কমিটি
শিক্ষাঙ্গনে যৌন নিপীড়নের ঘটনা তদন্তে ২০০৯ সালে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে-উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বিরোধী তদন্ত কমিটি গঠন করার নির্দেশনা দেয় আদালত। এ অনুযায়ী পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটির আহবায়ক মনোনীত করা হয় এটর্নি জেনারেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য মাহবুবে আলমকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সুপ্রিম কোটের্র আইনজীবী এ এফ এম মেজবাহউদ্দীন, সৈয়দ রেজাউর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান। এ কমিটি গঠনের পর কোনো বৈঠক গতকাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়নি বলে জানান কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার।
আর কমিটিকে ‘অকার্যকর’ আখ্যা দিয়ে তাজমেরী জানান, কোনো যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তাদের কাছে আসেনি।
তদন্ত কমিটিতে আটকে আছে ন্যায় বিচার
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঘটনাটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। সাময়িকভাবে মৃদু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। এরপর আর ঐ কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় না। এমনকি অনেক কমিটি তদন্ত প্রতিবেদনই তৈরি করে না।
স্থায়ীভাবে একাডেমিক ও আইনি শাস্তি থেকে পার পেয়ে যান অভিযুক্তরা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন প্রহসনের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া। কারণ তদন্ত কিছুই হয় না। আর ন্যায় বিচার বঞ্চিত হন ভুক্তভোগীরা। প্রশ্রয় পায় নিপীড়করা।
নিপীড়নের মিথ্যা অভিযোগও উঠছে!
এদিকে বিভিন্ন সময় উত্থাপিত যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলোর মধ্যে কয়েকটি ঘটনা সাজানো বলে দাবি করেছেন অভিযুক্তরা। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক দ্বনে্দ্বর কারণে এ অভিযোগগুলো ছাত্রীদের দিয়ে সাজানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। যৌন নিপীড়নের কয়েকটি ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্য এ ধরনের কয়েকটি অভিযোগ সাজানো বলে স্বীকারও করেন।
যেমন গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন মোল্লা তার বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর আনা অভিযোগকে ‘সাজানো’ বলে দাবি করেন। তিনি দাবি করেন, ঐ ছাত্রীকে বিভাগের দুই শিক্ষক প্ররোচিত করে অভিযোগ এনেছে।
এর বিনিময়ে ঐ ছাত্রীকে শিক্ষকদ্বয় পরীক্ষায় অতিরিক্ত নম্বর দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. আমজাদ আলী বলেন, যৌন নিপীড়নের অভিযোগগুলো তদন্তে সময় একটু বেশিই লাগে। এক্ষেত্রে গতি আনতে সমপ্রতি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সামপ্রতিক সময়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের ঘটনা বাড়ছে বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, শিক্ষার প্রধানতম উদ্দেশ্য নৈতিকভাবে বলীয়ান নাগরিক তৈরি করা। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের ঘটনা আশংকাজনক।
বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।