ভাল কথা বলুন আমি আপনাদের কখনই বলবনা হাদীস বইগুলো একেবারে পরিত্যাগ করতে। হাদীস অবশ্যই পড়বেন এবং যে হাদীসগুলো সুন্দর, উপকারী, মহৎ সেগুলো মেনে চলবেন। তবে সহিহ বুখারী/ সিহাহ সিত্তাহ শুনলেই অন্ধ বিশ্বাস করে উদ্ভট, অবাস্তব, ভয়ঙ্কর, ক্ষতিকর হাদীসগুলো মেনে চলা একেবারেই উচিৎ নয়। হাদিসের সনদ ঠিক থাকলেই আর কোরানের সাথে সরাসরী বিরোধীতা না থাকলেই আজকাল হাদীসটি সহিহ হিসেবে গণ্য হয়ে যায়। কিন্তু আসলে দেখা যায় কোরানের সাথে বিরোধীতার পরেও সহিহ হাদীস গুলোকে রুপক হিসেবে চালানোর চেষ্টা করে সেটাকে সহিহ হিসেবেই মর্যাদা দেয়া হয়।
আর বেশীরভাগ হাদীসই কোরানের সাথে সরাসরি সাঙ্ঘর্ষিক না হলেও কোরানের সাথে যে ছন্দময় তা নয়। সেই সব হাদীস ভয়ঙ্কর হলেও আর বাতিল হয়না। হাদীসের বইতে এমন হাদীসের সংখ্যাই সর্বাধিক। আমি আপনাদের আহবান জানাই, আপনারা কোরান বুঝে পড়ুন, এবং হাদীসগুলোকে সেই কোরান দিয়েই এবং হাদীসের বক্তব্য দিয়ে যাচাই করে নিন সেগুলো সত্য কিনা। হাদীসের সনদ ঠিক থাকলেই সেটা সহিহ এমন উদ্ভট ভয়ঙ্কর কথা পরিত্যাগ করুন।
আমি আজ প্রমাণ করে দিচ্ছি যে সহিহ বুখারী আর মুসলিম শরীফের সিংহভাগ হাদীসই অগ্রহণযোগ্য।
ইমাম বুখারী এবং ইমাম মুসলিম হাদীস সত্যাসত্য করার কিছু প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছিলেন। হাদিছ হিসেবে গ্রহণীয় হওয়ার জন্য সাধারণতঃ হাদীসটির সনদে চারটি প্রধান বিষয়ের প্রতি সবার আগে নজর দিতে হবে। আমি নিচে তার দুটি উল্লেখ করলামঃ
১) আগা গোড়া প্রতিটি সাক্ষিই জ্ঞানী, খাঁটি সত্যবাদী, সৎ চরিত্র, মোত্তাকীম পরহেজগার শালিনতা ও ভদ্রতা সম্পন্ন স্বভাবের হইতে হইবে। কোন ব্যক্তি জীবনে মাত্র একবার হাদিছ সংক্রান্ত ব্যাপারে মিথ্যা উক্তির জন্য ধরা পড়িলে এ ব্যক্তির শুধু মিথ্যা হাদিছই নহে, বরং তাহার সারা জীবনের সমস্ত হাদিছই অগ্রাহ্য হইবে।
তওবা করিলেও তাহার বর্ণিত হাদিছ গ্রহণযোগ্য হইবে না। উহা ছাড়া অন্য কোন বিষয় ও মিথ্যাবাদী বলিয়া পরিচিত হইলে বা শরিয়ত বিরোধী আকিদা বা কার্যকলাপে লিপ্ত প্রমাণিত হইলে বা অসৎ প্রকৃতির লম্পট ও নীচ স্বভাবের লোক হইলে তাহার বর্ণিত হাদিছ গ্রহণীয় হইবে না।
২) প্রত্যেক সাক্ষি তার স্মরণ শক্তি সম্বন্ধে অতিশয় পাকাপোক্ত সুদক্ষ ও সুদৃঢ় সংরক্ষক বলিয়া পরিচিত হইতে হইবে। এবং ইহাও প্রমাণিত হওয়া আবশ্যক যে, প্রতিটি সাক্ষি তাহার পূর্ববর্তী সাক্ষ্যদাতা অর্থাৎ ওস্তাদের নিকট হইতে হাদিছখানা পূর্ণ মনোযোগের সহিত শ্রবণ করতঃ সবিশেষ মনোযোগের সহিত মূখস্ত করিয়া বা লিপিবদ্ধ করিয়া রাখিয়াছেন। এই বিশেষ প্রমাণ এরূপ হইবে যে, উক্ত সাক্ষি যে যে হাদিছ আজীবন শত শতবার বর্ণনা করিয়া আসিতেছেন।
কোন সময়ই তার বর্ণনার মধ্যে এরূপ গরমিল দেখা যাইবে, তখন হইতে আর ঐরূপ সাক্ষির বর্ণনার কোন হাদিছ সঠিক প্রমাণিত বলিয়া গণ্য হইবে না।
আমরা জানি বুখারী এবং মুসলিম শরীফের সিংহভাগ হাদীসের বর্ণনাকারী হচ্ছেন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)। তিনি রাসূল (সঃ) এর সাথে মাত্র তিন বছরের চাইতেও কম সময় থাকলেও সর্বাধিক প্রায় পাঁচ হাজার হাদীস বর্ণনা করেছেন। অথচ প্রধান চার খলিফা সহ আর কোন সাহাবীই সারাজীবন নবী (সঃ) এর সাহচর্যে থাকার পরেও এত অধিক সংখ্যক হাদীস বর্ণনা করেননি।
হাদীস বেত্তাগণ মনে করেন, বুখারী আর মুসলিম শরীফের সকল হাদীসই সহিহ।
এবার আমি সহিহ হাদীস দিয়েই প্রমাণ করে দিব যে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) উপরে উল্লিখিত ২ টি নিয়মেই হাদীস বর্ণনাকারী হিসেবে বাদ পড়ে যান। তিনি ভুল হাদীস বলেছেন আবার তাঁর স্মৃতি শক্তিও নির্ভরযোগ্য ছিলনা।
মূল বিষয়ে যাবার আগে প্রথমেই একটি হাদীস।
হাদীস নং ১
বুখারী, বুক ৩, হাদীস ১১৯ Click This Link
Narrated Abu Huraira: I said to Allah's Apostle "I hear many narrations (Hadiths) from you but I forget them." Allah's Apostle said, "Spread your Rida' (garment)." I did accordingly and then he moved his hands as if filling them with something (and emptied them in my Rida') and then said, "Take and wrap this sheet over your body." I did it and after that I never forgot any thing.
দেখুন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) নিজেই স্বীকার করেছেন যে তিনি হাদীস ভুলে যেতেন। পরে নবীর মাজেজায় আর জীবনেও নবীর হাদীস সহ কোন কিছুই ভুলেন নাই বলে দাবী করেছেন।
এই সম্পর্কে আরেকটি হাদীসঃ
হাদীস নং ২
বুখারী, বুক ৩৪, হাদীস ২৬৩ Click This Link
Narrated Abu Huraira: You people say that Abu Huraira tells many narrations from Allah's Apostle and you also wonder why the emigrants and Ansar do not narrate from Allah's Apostle as Abu Huraira does. My emigrant brothers were busy in the market while I used to stick to Allah's Apostle content with what fills my stomach; so I used to be present when they were absent and I used to remember when they used to forget, and my Ansari brothers used to be busy with their properties and I was one of the poor men of Suffa. I used to remember the narrations when they used to forget. No doubt, Allah's Apostle once said, "Whoever spreads his garment till I have finished my present speech and then gathers it to himself, will remember whatever I will say." So, I spread my colored garment which I was wearing till Allah's Apostle had finished his saying, and then I gathered it to my chest. So, I did not forget any of that narrations.
দেখুন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এত বেশী হাদীস বলতেন বলে তখন অনেকেই সন্দেহ করেছেন। সেই সময় এই হাদীস প্রচারিত হলে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)'র কথা শুনে সকল সাহাবীই এই কাজটা করতেন। তাতে তারাও আর জীবনে হাদীস ভুলতেননা। সকলেই ৫০০০ এর উপর হাদীস বর্ণনা করতে পারতেন। এত কষ্ট করে মুখস্তও রাখতে হতনা, বা কোথাও লিখেও রাখতে হতনা।
নবী প্রধান চার খলিফাকেও এই পদ্ধতি শিখাতে পারতেন, সেক্ষেত্রে খলিফারা আর ভয়ের কারণে হাদীস নষ্ট করতে যেতেননা। অবাক ব্যাপার হলো এই হাদীসটি তিনি বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা করেছেন যেখানে প্রেক্ষাপট আর ঘটনার ধারা এক রকম নয়। এতে করেই তার নিজস্ব স্বীকারোক্তি অনুযায়ীই বুঝা যায় তিনি ভুলোমনা ছিলেন। এক হাদীসের বর্ণনাতে তিনি বলেছিলেন তার গায়ে একটা মাত্র কাপড় ছিল, এতে করে কাপড় মেলে ধরার সময় আর বুকে মাখার সময় যে তার লজ্জাস্থান প্রকাশ পেয়ে যায় সেটা বোধয় তিনি ভুলে গিয়েছিলেন।
এবার চলুন আমাদের মূল বিষয়ে যাই।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) ভুল বা মিথ্যা বলেছিলেন এবং দূর্বল স্মৃতির মানুষ ছিলেন তা প্রমাণ করে দিই।
হাদীস নং ৩
সহিহ মুসলিম বুক, ২৬ হাদীস-৫৫১০ Click This Link
Abu Salama h. 'Abd al-Rahman b. 'Auf reported Allah's Messenger (may peace be upon him) as saying: There is no transitive disease, but he is also reported to have said: A sick person should not be taken to one who is healthy. Abu Salama said that Abu Huraira used to narrate these two (different ahadith) from Allah's Messenger (may peace be upon him), but afterwards Abu Huraira became silent on these words:" There is no transitive disease," but he stuck to this that the sick person should not be taken to one who is healthy. Harith b. Abu Dhubab (and he was the first cousin of Abu Huraira) said: Abu Huraira, I used to hear from you that you narrated to us along with this hadith and the other one also (there is no transitive disease), but now you observe silence about it. You used to say that Allah's Messenger (may peace be upon him) said: There is no transitive disease. Abu Huraira denied having any knowledge of that, but he said that the sick camel should not be taken to the healthy one. Harith, however, did not agree with him, which irritated Abu Huraira and he said to him some words in the Abyssinian language. He said to Harith: Do you know what I said to you? He said: No. Abu Huraira said: I simply denied having said it. Abu Salama said: By my life, Abu Huraira in fact used to report Allah's Messenger (may peace be upon him) having said: There is no transitive disease. I do not know whether Abu Huraira has forgotten it or he deemed it an abrogated statement in the light of the other one.
এই হাদীসে দেখা যাচ্ছে যে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) আগে নবীর নামে নিয়মিত বলতেন যে দুনিয়াতে সঙ্ক্রামক ব্যাধী বলে কিছু নেই। কিছুদিন পরে তিনি আর এই হাদীস বর্ণনা করতেননা, বরং সত্য হাদীস বলেছেন যে অসুস্থ রোগীকে সুস্থ লোকের কাছে নিয়ে যেতে না করেছিলেন নবী। তখন হযরত আবু সালামা অভিযোগ করলেন যে আপনি তো আগে অন্য হাদীসটিও বর্ণনা করতেন এখন করেননা কেন? হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) অস্বীকার করলেন যে তিনি এমন কিছু বলেন নাই , বরং তিনি নাকি বলেছেন অসুস্থ উটকে সুস্থ উটের কাছে নিয়ে না যেতে (সম্পূর্ন ভুল কথা, নিচে হাদীস নং ৪ দেখুন)। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)র এই কথা শুনে হারিথ সরাসরি অসম্মতি জানানোর কারণে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) ভিন্ন ভাষা ব্যবহার করে বললেন এই ভাষার অর্থ হচ্ছে ''আমি অস্বীকার করলাম, আমি এমন কিছুই বলিনাই''।
তখন হযরত আবু সালামা জীবনের কসম খেয়ে বলেছিলেন যে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এই কথা বলেছেন।
এইবার দেখি হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) সত্যি এই কথা বলেছিলেন কিনাঃ
হাদীস নং ৪
সহিহ মুসলিম, বুক ২৬, হাদীস ৫৫০৭ Click This Link
Abu Huraira reported Allah's Messenger (may peace be upon him) as saying: There is no infection, no safar, no hama. A desert Arab said: Allah's Messenger, how is it that when the camel is in the sand it is like a deer-then a camel afflicted with scab mixes with it and it is affected by sub? He (the Holy Prophet) said: Who infected the first one?
অর্থাৎ হযরত আবু সালামার কথাই সত্য, হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) সত্যিই এই হাদীসটি বর্ণনা করতেন।
উপরের আলোচনার ভিত্তিতে এবার নিম্ন লিখিত অনুসিদ্ধান্তে সহজেই আসা যায়ঃ
১) হয়তো হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) মিথ্যা বলেছেন (সূত্র উপরের ৩ নং হাদীস)। তাহলে হাদীস সংগ্রহের নীতিমালার এই পোস্টের শুরুতে বর্ণিত ১ নং পয়েন্ট অনুযায়ী হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত সকল হাদীস বাদ হয়ে যায়। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি এমন একজন সাহাবী মিথ্যা বলতে পারেননা।
তাই...
২) হয়তো তিনি হাদীসটি ভুলে গিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে হাদীস সংগ্রহের নীতিমালার এই পোস্টের শুরুতে বর্ণিত ২ নং পয়েন্ট অনুযায়ী হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত সকল হাদীস বাদ হয়ে যায়। এখন কেউ যদি বলেন একটা মাত্র ভুলের জন্য তো তার সকল হাদীস বাদ দিয়ে দেয়া যায়না তাহলে নিচের পয়েন্টগুলো দেখুন যে তিনি মাত্র একটা ভুলই করেননি। এছাড়া সঙ্ক্রামক ব্যাধী বলে যে কিছু নেই এমন ভুল কথা কি নবী কোনদিন বলতে পারেন? হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) ই নবীর নামে ভুল কথা বলেছেন।
৩) উপরের ২ অনুযায়ী হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হাদীস ভুলে গিয়ে থাকলে বলা যায় নবী মিথ্যা বলেছিলেন (যেহেতু নবী হাদীস মনে থাকবে এমন কথা বলেছিলেন কিন্তু তা কাজে লাগেনি, সূত্র উপরের ১ নং হাদীস)।
কিন্তু নবী মিথ্যা বলবেন এটা কোনভাবেই সম্ভব না তাই নির্দ্বিধায় এই পয়েন্ট বাদ দিয়ে দেয়া যায়।
৪) যেহেতু নবী (সঃ) মিথ্যা বলেননি তাই অবশ্যই তিনি ভুল বলেছিলেন। আর নবীর (সঃ) যে ভুল হওয়া সম্ভব তা কোরআন এবং হাদীস সমর্থিত। সেক্ষেত্রে প্রমাণ হয়ে যায় যে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) নিয়মিত ভাবেই হাদীস ভুলে যেতেন (হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)'র নিয়মিত হাদীস ভুলে যাবার নিজস্ব স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এবং নবীর সেই ভুল মিরাকল ভুলোমনা হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)'র অবস্থার উন্নতি করতে পারেনি অনুযায়ী)।
অতএব আমাদের যত খারাপই লাগুক না কেন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) কে হয় মিথ্যাবাদী অথবা ভুলোমনা এই দুটোর অন্তত একটা স্বীকার করে নিতে হবেই, নাহলে বলতে হবে বুখারী আর মুসলিম শরীফের হাদীস মোটেই নির্ভরযোগ্য নয়।
তাই অত্যন্ত প্রিয় হলেও হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)'র বর্ণিত হাদীস ইমাম বুখারী এবং ইমাম মুসলিম অনুসৃত নিয়ম অনুযায়ী মোটেই গ্রহণযোগ্য হয়না।
এবার চলুন দেখি ভুলোমনা স্বভাবের হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) আর কি কি সন্দেহজনক হাদীস প্রচার করেছেন। আমি মাত্র কয়েকটি উল্লেখ করছি। এমন আরও বহু সংখ্যক হাদীস আছে যাতে প্রমাণীত হয় হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) ভুল বলেছেন। ক, খ, গ দিয়ে পয়েন্ট করে দিলাম।
কঃ
_____________________________________________
হাদীস নং ৫
Bukhari, Book 10, Hadith 566 & 567 Click This Link
Narrated 'Aisha: Allah's Apostle never missed two Rakat before the Fajr prayer and after the Asr prayer openly and secretly.
Narrated 'Aisha: Whenever the Prophet come to me after the 'Asr prayer, he always prayed two Rakat.
আমরা দেখলাম হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেছেন যে নবী আসরের পর দুই রাকাত নামাজ পড়তেন।
এবার এটা দেখুনঃ
হাদীস নং ৬
Bukhari, Book 10, Hadith 562 Click This Link
Narrated Abu Huraira: Allah's Apostle forbade the offering of two prayers: 1. after the morning prayer till the sunrises. 2. after the 'Asr prayer till the sun sets.
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বললেন যে আসরের পর নামাজ পড়তে নবী নিষেধ করেছেন।
খঃ
_____________________________________________
একই ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে সংখ্যাতে তালগোল পাকিয়েছেন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)। সুলাইমান (আঃ) কে যে কিভাবে অপমান করলেন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) সেটা নাহয় নাই বললাম।
হাদীস নং ৭
সুলাইমান নবীর স্ত্রী সংখ্যা ৬০ Click This Link
সুলাইমান নবীর স্ত্রী সংখ্যা ৭০ Click This Link
সুলাইমান নবীর স্ত্রী সংখ্যা ৯০ Click This Link
সুলাইমান নবীর স্ত্রী সংখ্যা ১০০ Click This Link
গঃ
_____________________________________________
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)'র কল্পবিলাসী মনঃ কথা বলা গরু আর নেকড়ে
হাদীস নং ৮
Bukhari, Book 56, Hadith 677 Click This Link
Narrated Abu Huraira: Once Allah's Apostle; offered the morning prayer and then faced the people and said, "While a man was driving a cow, he suddenly rode over it and beat it. The cow said, "We have not been created for this, but we have been created for sloughing." On that the people said astonishingly, "Glorified be Allah! A cow speaks!" The Prophet said, "I believe this, and Abu Bakr and 'Umar too, believe it, although neither of them was present there. While a person was amongst his sheep, a wolf attacked and took one of the sheep. The man chased the wolf till he saved it from the wolf, where upon the wolf said, 'You have saved it from me; but who will guard it on the day of the wild beasts when there will be no shepherd to guard them except me (because of riots and afflictions)? ' " The people said surprisingly, "Glorified be Allah! A wolf speaks!" The Prophet said, "But I believe this, and Abu Bakr and 'Umar too, believe this, although neither of them was present there."
এইখানে নবীর ভাবখানা এমন যে লোকে যখন বিশ্বাস করতে চাইছে না তখন নবী বলছেন উমর/হযরত আবু বকর থাকলে তারা বিশ্বাস করত।
খুব স্বাভাবিক যুক্তিতেই বুঝা যায় নবী এই কথা আসলে কোনদিনই বলেননি। বরং লোকে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)'র কথা বিশ্বাস করবেনা বলে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) নিজেই নবীর সাথে উমর/হযরত আবু বকরের নাম জুড়িয়েছেন। আচ্ছা পাঠক, আমাদের ইসলাম পালনের সাথে এই হাদীসের কি সম্পর্ক? ইমাম বুখারী কেন এইসব আজেবাজে অদরকারী হাদীস দিয়ে বই ভর্তি করেছিলেন?
অবিশ্বাস্য/অকল্পনীয়/আজগুবী/রহস্যময় ইত্যাদি ঘটনা বর্ণনা করতে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) খুবই পছন্দ করতেন তা তার বর্ণিত বহু হাদীস দেখলেই বুঝা যায়।
ঘঃ
_____________________________________________
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)র স্মৃতি বিভ্রাটঃ
হাদীস নং ৯
Musnad of Ahmad ibn Hanbal, 6/246
Abu-Hassan reports that two people came to Aishah and said to her that Abu Hurayrah narrates that the Prophet used to say that bad luck is to be found only in women, horses and houses. At this Aishah replied: By the God who revealed the Qur’an to the Prophet ! The Prophet never said this; what he did say was that the People of the Jahilliyyah hold this opinion.
দেখুন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) নবীর নাম দিয়ে বলেছেন যে নারীরা অপয়া। এই কথা শুনে হযরত আয়েশা বলেছেন যে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) ভুল বলেছেন।
নবী এই কথা বলেননি বরং নবী বলেছিলেন বহু আগের যুগের মানুষের ভুল ধারণা। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)কে বাঁচানোর জন্য বা তার স্মৃতি দূর্বল এই কথা অস্বীকার করার জন্য সনদে দূর্বল একটি হাদীস উল্লেখ করে বলা হয় যে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) নবীর পুরো কথাটি শুনেননি। সেক্ষেত্রে তো হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) আরও বড় ভুল করেছেন। সম্পূর্ণ কথা না শুনেই তিনি এমন আরও কত হাদীস ছড়িয়েছেন তা কে বলে দিবে?
ঙঃ
_____________________________________________
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) কি এত দ্রুত ভুলে যেতেন?
হাদীস নং ১০
বুখারী, বুক ৬৪, হাদীস ২৬৮ Click This Link
Narrated Abu Huraira: "The Prophet said, 'The best alms is that which is given when one is rich, and a giving hand is better than a taking one, and you should start first to support your dependents.' A wife says, 'You should either provide me with food or divorce me.' A slave says, 'Give me food and enjoy my service." A son says, "Give me food; to whom do you leave me?" The people said, "O Abu Huraira! Did you hear that from Allah's Apostle ?" He said, "No, it is from my own self."
লক্ষ করুন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) প্রথমে দাবী করেছেন যে নবী এটা বলেছেন। পরে স্বীকার করেছেন যে এটা তার নিজের কথা।
নবীর নামে এইভাবে ভুল কথা বলার পরেও তার কথায় নর্ভর করা যায় কোন যুক্তিতে? এই হাদীসের দূর্বলতা ঢাকতে হাদীসের পক্ষের লোকজন বলেন যে - এই হাদিসে হযরত আবু হুরাইরার গোটা ন্যারেশন ডাবল ইনভার্টেড কমার ভেতরে রাখা, এবং রাসুল সা.-এর বক্তব্যটা সিঙ্গেল ইনভার্টেড কমার ভৈতরে। তাই রাসুল (সঃ)'র বক্তব্য শেষ হবার পর অর্থাৎ সিঙ্গেল ইনভার্টেড কমা শেষ হবার পর যেটুকু থাকে সেটাই হযরত আবু হুরাইরার নিজের বক্তব্য।
কিন্তু এটা যে কত ভুল যুক্তি তা পাঠক সহজেই বুঝতে পারবেন। কারণ ইনভার্টেড কমার ভেতর নবীর বক্তব্য আছে, ওয়াইফের বক্তব্য আছে, স্লেভ এর বক্তব্য আছে আর সানের বক্তব্য আছে। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)য় নিজের বক্তব্য একেবারেই নাই।
পিপল যেখানে পরিষ্কার শুনল যে ওয়াইফ আর সানের বক্তব্য বলা হয়েছে সেখানে এই অংশটা নবীর বক্তব্য কিনা জিজ্ঞেস করাটা অবান্তর। বরং নবীর নামে যেটা বলা হয়েছে সেটাই পিপল জিজ্ঞেস করেছে। আর স্বাভাবিক ভাবে চিন্তা করে দেখেন কোন দাসী/স্ত্রী/সন্তান এর কোটেশন দেয়া বক্তব্য কোনক্রমেই হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)র নিজস্ব বক্তব্য হতে পারেনা
চঃ
_____________________________________________
এটা খুবই আজব এক হাদীস। এইখানে শয়তানের আচরণ কোরানের বর্ণনার সাথে সম্পূর্ণ সাঙ্ঘর্ষিক।
হাদীস নং ১১
বুখারী, বুক ৩৮, হাদীস 505t Click This Link
এই হাদীসের সমস্যাগুলো খেয়াল করুনঃ
১) হযরত আবু হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) নবীর কথা হয় বিশ্বাস করতেননা, নাহয় মনে রাখতেননা, অথবা সর্বাধিক গুরুত্ব দিতেননা।
যেখানে নবী দুই দুই বার সতর্ক করে দিয়েছেন যে সেই লোক মিথ্যাবাদী সেখানে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বারবার নবীর কথায় গুরুত্ব না দিয়ে সেই মিথ্যাবাদীর কথা বিশ্বাস করে তাকে ছেড়ে দিয়েছেন! এর মানে এও দাঁড়ায় যে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) শয়তানের প্ররোচনায় খুব সহজেই ঘায়েল হয় স্বয়ং নবীর সান্নিধ্যেও তা রোধ হয়না। নবীর মৃত্যুর পর হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) যে শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে হাদীস বর্ণনা করেননি তার গ্যারান্টি দিতে পারবেন কি?
২) শয়তানের উদ্দেশ্য এইখানে বুঝা গেলনা। যেখানে শয়তানের উদ্দেশ্য হল মানুষকে বিপথে পরিচালনা করা সেইখানে শয়তান সামান্য সদকা চুরি করতে এসেছিল! তাও একবার নয় পরপর তিন রাত। সেই চুরির মাল দিয়ে শয়তান কি করবে তাও এক বিরাট প্রশ্ন! আচ্ছা নাহয় চুরি করলই, তারপর শয়তান এমন পন্থা শিখিয়ে দিল যাতে করে শয়তান নিজের পথ রুদ্ধ করে দিল। শয়তান এখন নিজের মাথা চাপড়াচ্ছে নিশ্চই যে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হাদীসের মাধ্যমে সকল মুসলিমকে এই উপায় শিখিয়ে দিয়ে শয়তানের মহা সর্বনাশ করেছে।
শয়তান খামাখা এত সময় নষ্টই বা করল কেন আর নিজের ক্ষতিই বা করল কেন তার কোন জবাব নাই।
৩) যদিও কোরান দাবী করে যে নবী ভবিষ্যত জানে না, কিন্তু এইখানে নবী বলে দিয়েছেন যে প্রিজনার আবার আসবে। আপনি হয়তো দাবী করবেন এটা ভবিষ্যতবানী নয় বরং অনুমান। কিন্তু সম্পূর্ণ হাদীস পড়লে এটা অনুমান মনে করার কোন কারণ নেই, কারণ এটা যে শয়তান সেটা নবী শুরুতেই জানতেন। এছাড়া হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) কিছু বলার আগেই নবী প্রিজনার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছেন।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এতে বিন্দুমাত্র অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেনাই যে নবী কিভাবে প্রিজনারের কথা জানলেন।
৪) নবী শয়তানের কথা জেনেও আগেই কেন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)কে সাবধান করে দিলেননা? যে খাবারগুলো শয়তান নিয়ে গেল তার দায় দায়িত্ব কে নিবে? পাহারাদার হিসেবে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)র ব্যর্থতার জন্য তখনই তাকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করে দেয়াটাই স্বাভাবিক ছিলনা? নাকি কিভাবে শয়তানের দাগা থেকে মুক্ত থাকা যায় সেটা শুনার জন্য নবী অপেক্ষায় ছিলেন? সেক্ষেত্রে এই উপায় নবী শয়তানের কাছ থেকে না জেনে আল্লাহর কাছ থেকে জানতে চাইতে পারতেননা?
৫) আল্লাহর নামে শপথ করেও হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) শপথ ভংগ করেছেন।
৬) নবী হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)কে বিশ্বাস করে রমজানের যাকাত পাহাড়া দিতে বলেছিলেন, কিন্তু নিজের মাল না হওয়া সত্বেও বিনা অনুমতিতে তা বিলিয়ে দিয়ে সেই বিশ্বাস ভংগ করেছেন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)।
কি আজব!!! আমরা এতটাই অন্ধ!! ছোটবেলায় এক সময় এই হাদীস পড়ে আমার মনে একটি প্রশ্নও জাগে নাই!! হাদীস কিভাবে আমাদের মাথা দখল করে কোরানকে ভুলিয়ে রেখেছে তা আমরা নিজেরাও বুঝতে পারিনা!
ছঃ
_____________________________________________
মুসা নবীকে নগ্ন করিয়ে ছেড়েছেন।
হাদীস নং ১২
বুখারী, বুক ৫৫, হাদীস ৬১৬ Click This Link
পাঠক খেয়াল করুনঃ
১) লাজুক হযরত মুসাকে আল্লাহ এইভাবে হেনস্তা করতে পারলেন? লজ্জা, নম্রতা, মোডেস্ট আচরণ, আশ্লীলতা থেকে দূরে থাকা এই সকল আদেশ করাই আল্লাহর সুন্নত, আর আল্লাহর সুন্নতে কখনো পরিবর্তন হয়না।
এই হাদীস অনুযায়ী কি আমরা আল্লাহ সম্পর্কে ভুল ( কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক) ধারণা পাচ্ছিনা?
২) কোরানের যেই আয়াতের ব্যাখ্যা হিসেবে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এই হাদীস বলেছিলেন সেই আয়াতটা দেখুনঃ "O you who believe! Be you not like those Who annoyed Moses, But Allah proved his innocence of that which they alleged, And he was honorable In Allah's Sight." (33.69)
এবার আপনিই বলুনঃ হযরত মুসাকে লেংটা করে জনপদের সামনে দৌড়িয়ে তার দেহসুষ্ঠব দেখিয়ে কিভাবে হযরত মুসার সরলতা প্রমাণ করে হল? ভাইরে নিজের মাথাটা কি একটুও খাটাবেননা? আর কারো শরীরে খুঁত থাকলে সেটা তার দোষ না যে তাকে নির্দোষ প্রমাণ করা লাগবে। আল্লাহ যেখানে এই আয়াতেই বলেছেন যে আল্লাহর দৃষ্টিতে মুসা সম্মানিত, সেখানে মুসাকে লেংটা করিয়ে কিভাবে মুসার সম্মান রক্ষা করলেন সেটা আমি বুঝতে পারিনাই।
৩) এই ঘটনা সত্যি ঘটে থাকলে ইহুদীরা বলত হে মুসা তুমি কিসের নবী? সামান্য পাথর তোমাকে মানেনা, আর আমরা মানব? তাই আল্লাহ কখনো এমন ঘটনা ঘটাতেননা।
৪) কোরানের উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা স্বয়ং কোরানই দিয়েছে। সেই ব্যাখ্যার জন্য মিথ্যা হাদীসের দারস্থ হবার কোন প্রয়োজন নেই।
কোরানের (৭/১২৯, ২/৬১, ৭/১৩৮, ২/৫৫, ৫/২৪, ৬১/৫, ৫/২৫) আয়াতগুলো পরিষ্কার ভাবে ৩৩/৬৯ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রদান করে। নিজেই যাচাই করে নিন।
জঃ
_____________________________________________
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)'র অন্যায় আচরণঃ
হাদীস নং ১৩
Bukhari, Book 65,Hadith 343 Click This Link
শুধু আলোচ্য অংশটুকু পেস্ট করলাম।
I used to accompany Allah's Apostle to fill my stomach........
I used to .... ask somebody to recite a Quranic Verse for me though I knew it, so that he might take me to his house and feed me.
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) নিজেই বলছেন যে তিনি রাসুলের সাথে থাকতেন উদর পূর্তির আশায়। এছাড়া কোরানের আয়াত জানা থাকার পরেও তিনি অন্য লোকের কাছে তা জানতে চাইতেন এই আশায় যে সেই লোক হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)কে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে খাওয়াবে।
এইখানে লক্ষনীয় বিষয় এটাই যে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) সরাসরি কাউকে বলতেননা যে আমি ক্ষুধার্ত আমাকে খেতে দিন। বরং তিনি এই মিথ্যা অভিনয় করতেন যে তিনি কোরানের আয়াত শিখতে বড়ই আগ্রহী তাই সেটা শিখার জন্যই বাড়িতে যেতে আগ্রহী, অন্য উদ্দেশ্যে নয়। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)র অসততা বুঝতে এর বেশী কিছু লাগেনা।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বড়ই ক্ষুধার্ত ছিলেন, পেটে পাথর বাঁধতে হত। এই রকম একটা ক্ষুধার্ত লোককে অতি অবশ্যই সাহাবাগণ নিজের জীবন দিয়ে হলেও খাওয়ানোর ব্যবস্থা করবেন তা স্বাভাবিক চিন্তাতেই বুঝা যায়।
স্বয়ং কোরানেই বহুবার নির্দেশ দেয়া আছে প্রতিবেশী/এতীম/মিসকিন/ক্ষুধার্তকে খাবার না দিয়ে নামাজ পড়লে তা কবুল হবেনা। সুরা মাউন দেখে নিতে পারেন। তো সাহাবারা কি কোরানের নির্দেশ জানতেননা?
যাই হোক হযরত উমরের সাথে এই রকম করতে গিয়ে একদিন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) লাভবান হতে পারেন নাই। নিচের হাদীস দেখুন।
হাদীস নং ১৪
Bukhari, Book 65, Hadith 287i Click This Link
আলোচ্য অংশটুকু পেস্ট করে দিলাম।
Afterwards I met 'Umar and mentioned to him what had happened to me, and said to him, "Somebody, who had more right than you, O 'Umar, took over the case. By Allah, I asked you to recite a Verse to me while I knew it better than you."
On that Umar said to me, "By Allah, if I admitted and entertained you, it would have been dearer to me than having nice red camels.
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) দাবী করছেন যে তিনি হযরত উমরের চাইতেও তিনি কোরানের আয়াতটি বেশি বুঝতেন। আমার খুব অদ্ভুত লাগছে তিনি কেন সরাসরি বলতে পারলেননা যে তিনি ক্ষুধার্ত। আপনারা যুক্তি দেখাতে পারেন যে আত্মসম্মান বোধের কারণে তিনি বলেননি। কিন্তু তিনি একজন মিসকিন, থাকার ঘরটা পর্যন্ত নেই সেই লোক আত্মসম্মানের কারণে মিথ্যা ভান করলে সেটাতো আরও বড় অপরাধ। কোরানের আয়াত জানা থাকার পরেও না জানার ভান করে খাওয়ার ব্যাবস্থা করা মিথ্যারই নামান্তর।
আর হযরত উমর কি বললেন!! হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) কে বাসার ভিতর ঢুকিয়ে উপভোগ করালে সেটা নাকি হযরত উমরের কাছে একটা উট পাওয়ার চাইতেও বেশী পছন্দনীয় ব্যাপার হত!! এত পছন্দের একটা জিনিস একেবারে হাতের কাছে পেয়েও হযরত উমর পায়ে ঠেলে দিলেন? এত ক্ষুধার্ত একজন মানুষ যে ফেইন্ট হয়ে যায় তাকে দেখলেই তো হযরত উমরের বুঝা উচিৎ ছিল যে তাকে খাওয়ানো উচিত। এই হাদীস বিশ্বাস করলেতো দেখা যাচ্ছে হযরত উমর নিজের পছন্দের ব্যাপারে পরিষ্কার মিথ্যা কথা বলেছেন।
ঝঃ
_____________________________________________
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)'র আরেকটি সন্দেহজনক হাদীসঃ
হাদীস নং ১৫
Muslim, Book 31, Hadith 6054 Click This Link
১) হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)'র মা এতই বিধর্মী যে নবীকে গালি দিতে ছাড়েননা, অথচ মাতৃভূমি ইয়েমেন ছেড়ে কপর্দকহীন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)র সাথে নবীর এলাকায় থাকতে চলে এলেন যেখানে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)য় নিজেরই খাবার জুটেনা, বারবার মাথা ঘুরে পড়ে যায়? মাতৃভূমিতে অন্য সকল অবিশ্বাসীদের সাথেই থাকার কথা ছিলনা?
২) কপর্দকহীন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) যেখানে দাবী করেন তার কোন সহায় সম্বল ছিলনা, সুফফা তে তিনি মসজিদে থাকতেন রাত দিন, সেখানে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)র এই হাদীসে বর্ণিত ঘরটি কোত্থেকে আসল? মুয়াবিয়ার আমলে হাদীস বর্ণনার সময় অবস্থাসম্পন্ন হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) কি ভুলে গিয়েছিলেন তার মক্কার শুরুর জীবনের দূরবস্থা?
৩) নবী এত দোয়া করে নিজ চাচা হযরত আবু তালিবকে মুসলিম বানাতে পারলেননা, হামজা এবং দুই একজন ছাড়া আর সকল আত্মীয়ই নবীর দোয়া সত্বেও ঈমান আনতে পারলেননা আর হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)র মার ঈমান চলে এল?
৪) এত গুরুত্বপূর্ণ একটা ঘটনা হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) ছাড়া আর কেউ জানলনা? এই ঘটনা সত্য হলে সকলের মুখে মুখে শুনা যেত, নবীর মাজেজার এক গ্রেট সাইন হত এটা। অথচ কেউ হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)র মা সম্পর্কে একবিন্দু তথ্য জানেনা, ইতিহাস ঘেঁটে দেখুন। শুধু হযরত উমরের একটা কথায় হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)র মায়ের নামটা জানা যায়।
৫) মুসলিম হয়েই হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)র মা ছেলের সামনেও পর্দা করা শুরু করে দিলেন? তিনি ওযুর কথা পর্দার কথা হঠাৎ করে জেনে গেলেন?
৬) এই হাদীসের শেষ লাইনটি সম্পূর্ণ মিথ্যাঃ no believer was ever born who heard of me and who saw me but did not love me.
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসেই আমরা দেখেছি পিপল অব ইরাক যারা বিশ্বাসী ছিলেন তারা হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)কে মিথ্যাবাদী বলতেন।
ইবনে সাদ এর তাবাকাত এ দেখি হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) নিজেই বর্ণনা করেছেনঃ উমর হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)কে বলছেন “O you, enemy of God and His Book! You stole God’s money, didn’t you? How else could you be in possession of ten thousand dinars?”
হযরত উমর এর মত খলিফা বিনা প্রমাণে একজনকে আল্লাহর শত্রু বলে দিতেননা। হযরত উমর তার নিজের পুত্রের প্রতি কি আচরণ করেছিলেন তা দেখলেই জেনে যাবেন তিনি এই ধরনের লোক নন। সহিহ বুখারী আর মুসলিমের হাদীসেও আমরা দেখেছি হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) যখন কালেমা শাহাদা এর কথা বলেছিলেন হযরত উমর হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)কে বুকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে গলায় পা দিয়েছিলেন। যদিও হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ )'র দাবী অনুযায়ী হযরত উমর পরে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)'র কথা বিশ্বাস করেছিলেন নবীর জুতা দেখে।
ঞঃ
_____________________________________________
পাপ করার লাইসেন্সঃ প্রদায়ক হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)
হাদীস নং ১৬
Muslim, Book 37, Hadith 6642 Click This Link
যত খুশি পাপ করুন, শুধু একবার বললেই হবে যে আল্লাহ ক্ষমা করে দিও। এক সময় আল্লাহ বিরক্ত (!!) হয়ে বলে দিবেন বান্দারে তুই যা খুশি কর, আমি তোরে ক্ষমা করে দিয়েছি।
এই ধারণা সম্পূর্ণ কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক। আল্লাহ বলেছেন প্রতিটি কাজের হিসাব হবে। আল্লাহ অসীম দয়ালু, তিনি তওবা কবুল করেন তবে কখনোই পাপ করার লাইসেন্স দিয়ে দেননা।
এই ধরনের আরেকটি হাদীস
হাদীস নং ১৭
Muslim, Book 37, Hadith 6638 Click This Link
কি আজব! যেখানে আল্লাহ কোরানে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন কারও তিল পরিমাণ ভাল কাজও নষ্ট হবেনা, সেখানে বিড়ালকে না খাওয়ানোতে মহিলা জাহান্নামী। বিড়ালকে না খাওয়ালে জাহান্নামে যেতে হবে এমন কথা আল্লাহ কোথাও বলেননি। মহিলা জাহান্নামে গিয়ে থাকলে বিড়ালকে না খাওয়ানোর অন্যায় এর সাথে অন্যান্ন অন্যায় মিলেই গিয়েছে। আর আরেক পাপী এত বড় পাপই করেছে যে তওবা না করেই মারা গেল। সে পাপের গুরুত্ব বুঝে তওবা করার সাহসও পায়নি।
আর আল্লাহ সেই পাপীকে বিনা তওবায় ক্ষমা করে দিলেন? আল্লাহর সুন্নতের সাথে যাচ্ছেনা। আল্লাহ বলেছেন প্রতিটি মানুষ তার কর্ম অনুযায়ী ফল ভোগ করবে।
সর্বোপরি, হাশরের বিচার এখনো শুরুই হলনা, বিচার দিবসের কথা আল্লাহ কোরানে ঘোষনা করে রেখেছেন, সেখানে সকলের কৃতকর্মের হিসাব নেয়া হবে, আর এই হাদীসে দেখছি বিচার আচার শেষে জান্নাত জাহান্নামও অকুপাই হয়ে গিয়েছে। শেষ বিচারের দিন কি আল্লাহ পূর্বের বিচারের ভিডিও দেখবেন?
টঃ
_____________________________________________
নবীর কথা প্রচার করলেও তা মানেননি হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)
হাদীস নং ১৮
Musnad,Imam Ahmed bin Hanbal, vol.2, p.p.43.
Muhammad bin Ziyad saying: “Marwan, who was wali of Medina during the reign of Mu’awiya, sometimes assigned Abu Hurayra to be his deputy when he left Medina. Abu Hurayra beat the ground with his feet saying: “Clear the way! Clear the way! The emir has come.” He referred to himself.
দুই দিনের জন্য আমির হয়ে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) মাটিতে পা ছুঁড়ে আঘাত করে নিজেকে নিজে আমীর উল্লেখ করে বলছেন যে তার জন্য লোকে রাস্তা ছেড়ে দিক। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) যে সেই সময় মারওয়ানের ডেপুটি ছিলেন তা নিচের লিংকের ৫২০২ হাদীসেও আছে।
এদিকে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত একটা হাদীস দেখিঃ এই হাদীসে বাহরাইনের আমীর ঠিক একই আচরণ করেছিল বলে নবী না করে দিয়েছেন যে এমন আচরণ খারাপ। আমীর হয়েই হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) নবীর কথা ভুলে গেলেন?
হাদীস নং ১৯
Muslim, Book 24,Hadith 5201 Click This Link
Abu Huraire reported that he saw a person whose lower garment bad been trailin. and he was striking the ground with his foot (conceitedly). He was the Amir of Bahrain and it was being said: Here comes the Amir, here comes the Amir. He (Abu Huraira) reported that Allah's Messenger (may peace be upon him) said: Allah will not look toward him who trails his lower garment out of pride.
ভাল করে পড়ে দেখুন, কাপড় ছেঁচরানোটা মূল কারণ নয় বরং অহংকারটাই মূল কারণ যা নবী করতে নিষেধ করেছেন। আর মাটিতে পা ছুঁড়ে আঘাত করে লোকজনকে রাস্তা ছেড়ে দিতে বলাটাতো পরিষ্কার অহঙ্কার।
ঠঃ
_____________________________________________
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) স্বয়ং আল্লাহকেও দোজখে ঢুকাতে ছাড় দেননিঃ
হাদীস নং ২০
Bukhari, Book 60, Hadith 373 Click This Link
As for the Fire (Hell), it will not be filled till Allah puts His Foot over it whereupon it will say, 'Qati! Qati!' At that time it will be filled,
অর্থাৎ, আল্লাহ নিজের পা দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করবেন। এ ব্যাপারে কোরান কি বলে দেখিঃ
(৩৮/৮৫) তোর (ইবলিশ) দ্বারা আর তাদের মধ্যে যারা তোর (ইবলিশ) অনুসরণ করবে তাদের দ্বারা আমি জাহান্নাম পূর্ণ করব।
অন্যান্ন অনেক হাদীসে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) আল্লাহর হাত পা মাথা ইত্যাদি আছে বলে দাবী করেছে।
এখন এইটাকেও যদি কেউ বলেন রূপক হাদীস তাহলে ভাই আমার রূপক হাদীসের চেয়ে কোরানকেই সহজ বলে মনে হচ্ছে, কারণ আল্লাহ কোরানে সরাসরিই বলে দিয়েছেন শয়তান আর তার অনুসারী দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করবেন। আর আল্লাহর পা কে যদি শয়তানের অনুসারী বলেন (নাউযুবিল্লাহ) তাইলে আর কি বলব!! এই রুপক হাদীস দিয়ে আসলে কি বুঝানো হয়েছে তাই বলেন? এর দরকার কি আমাদের জন্য?
শেষ কথা হিসেবে বলতে চাই, আসুন ভাইয়েরা আমরা আমাদের ভুল ধারণা গুলো বাদ দিয়ে সত্য পথে চলার চেষ্টা করি। আমি এতক্ষণ শুধু হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসই উল্লেখ করেছি। তার গুলো বাদেও এমন বহু সংখ্যক হাদীস রয়েছে যা অবাস্তব, ভয়ঙ্কর, লজ্জাজনক, ক্ষতিকর এবং মিথ্যা।
তাই সনদের উপর বিশ্বাস না করে চলুন সবাই কোরান দিয়ে হাদীস যাচাই করি। তাহলেই শুধু এই সিঙ্ঘভাগ বাতিল হাদীস থেকেও আপনি অনেক ভাল হাদীস খুঁজে পেতে পারেন। আল্লাহ আমাদের হেফাযত করুন। আমিন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।