বিচ্যুত যৌবনে জোছনা আমায় করেছে উম্মাদ ব্রাজিল!!
এমন একটা দেশের নাম যার শুভাকাঙ্খী বাংলাদেশের প্রত্যেক ঘরে অন্তত একজন হলেও আছে। এই ব্রাজিলের পক্ষে বিপক্ষে বাংলদেশে কত আলোচনা-সমালোচনা, কথার যুদ্ধ হয়, চায়ের কাপে ঝড় উঠে। কিন্তু ব্রাজিলের সাম্প্রতিক খবর কি আমরা রাখছি। ব্রাজিলের প্রতি এতো ভালোবাসা থেকে আমরা কি কিছু শিখছি?
ব্রাজিল অর্থনৈতিকভাবে পৃথিবীর ৬ষ্ট বৃহৎ রাস্ট্র। সামনেই ২০১৪ এর বিশ্বকাপ।
২৭ বিলিওয়ন রিয়াল খরচ হচ্ছে বিশ্বকাপের এই মহাউৎসব আয়োজনের জন্য। কিন্তু ব্রাজিল এ মূহুর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জন প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। হাজার হাজার মানুষ রিও কিংবা সাও পাওলোর রাস্থায় জড়ো হয়েছে। ও হ্যাঁ ঠিক রাস্থা নয় মূলত সাও পাওলো ক্যাথিড্রালের সামনে।
আপনি কি জানেন কেনো এই প্রতিবাদ, কেন এই আন্দোলন?
অতি সামান্য তুচ্ছ একটা কারন সাও পাওলো ও রিও এর মেয়র বাস ভাড়া মাত্র ১০% বাড়িয়েছে, যা বৃটিশ পাউন্ডে £০.০৬ বা বাংলাদেশী টাকায় ৭ টাকার মাতো বৃদ্ধি পেয়েছে।
যা আগে ছিলো ৩ রিয়াল এখন হয়েছে ৩.২ ব্রাজিলিয়ান রিয়াল। আর তাতেই আগুন লেগে গেছে। লাখো মানুষ রাস্থায় এসে পরেছে। রায়ট পুলিশের সংগে জিহাদ হচ্ছে। সেই সাধারন বাস ভাড়া বাড়ানো বিরোধী আন্দোলন দেশটাকে এমন নাড়া দিয়েছে যে এখন আন্দোলনকারীরা শিক্ষা ও যাতায়াতের সুবিধা বৃদ্ধির জন্য একজোট হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ডিলমা রুসেফ
এখন কথা হচ্ছে দেশটির প্রেসিডেন্ট কি করছেন এই মহা কঠিন দুরবস্থায়। বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। তার আগে আগে বিশ্বকাপের প্রস্তুতু হিসেবে কনফেডারেশান কাপ হবে সব মিলিয়ে প্রেসিডেন্টের টেনশন আরো বেশী। মজার ব্যাপার হলো তিনি সবাইকে অবাক করে দিয়ে বলেছেন " এই আন্দোলনকারী মানুষগুলোর কথা অবশ্যই শুনতে হবে। এরা একটা উত্তম দেশ তৈরির জন্য এক হয়েছে"" এবং বিরাট সংখ্যক মানুষের লংমার্চকে তিনি তার দেশের গনতন্ত্রের প্রমান হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আহা এই না হলে নেতা। ইতোমধ্যে তিনি সাও পাওলোর মেয়রের সংগে বৈঠকের আ্যারেঞ্জ করেছেন বিষয়টার সুন্দর সমাধানের জন্য।
আমরা যারা ব্রাজিল ব্রাজিল করি তাদের জন্য
ব্রাজিলে কি হচ্ছে না হচ্ছে সেটা নিয়ে আমার পেট ব্যাথা নাই। আমি সিরিয়ার মুসলমান নিয়েই খুব একটা চিন্তিত না সেখানে ব্রাজিলতো অনেক দুরের ব্যাপার। কিন্তু কিছু জিনিস শিখলাম তাদের এই আন্দোলন থেকে।
১.সামান্য বাস ভাড়া বৃদ্ধি থেকে কি বিরাট আন্দোলন, ভালোর জন্য আন্দোলন শুরু হতে পারে। যেখানে কাউকে জবাই করা, কিংবা বস্তায় ভরে নাস্তা করার কথা নেই।
অথচ আমাদের দেশে ৩০ লাখ শেয়ার ব্যাবসায়ী নিঃস্ব হয়, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুটপাট হয়, দেশ জুড়ে গনহত্যা হয় কিন্তু মানুষ জেগে উঠে না।
২. মজার ব্যাপার হচ্ছে ওদেশে প্রথমালু পত্রিকা নাই। বিবিসি বলেছে কিছু আন্দোলন কারী ব্যাংক ও দোকানপাট ভাংচুর ও লুট করেছে।
আবার একই সময় অন্য আন্দোলনকারীরা এদেরকে নিবৃত্ত করেছে। প্রথমালু থাকলে নিশ্চয় বলতো এরা জংগি জামায়াত-হেফাজতের কর্মী, কিংবা খুঁজতো কোথায় কেউ পত্রিকা জ্বালিয়েছে কিনা তাহলে কাগজ বিনষ্টকরনের একটা রিপোর্ট ছাপাতো!!
৩. রাতের আঁধারে গ্রেনেড আর বুলেটে নিরীহ ঘুমন্ত আন্দোলনকারীদের উপর চলেনি এখনো। বরং দেশের প্রধানমন্ত্রী খুশী হয়ে বলছেন হাজার হাজার মানুষ পতাকা হাতে একটা সুন্দর দেশ বানাতে এক হয়েছে এজন্য তিনি গর্বিত। না এখানে কারো ফাঁসী, কারো ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ বা কোন রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়নি।
৪. ব্রাজিলের রাস্ট্র প্রধান একজন নারী বাংলাদেশের রাস্ট্রপ্রধানও একজন নারী অথচ কত ব্যাবধান, বিস্তর ব্যাবধান।
আহা নারী কখনো রুসেফ কখনো লেডি হিটলার।
অ.ট
বিজয় সন্নিকটে, বিজয় নিশ্চয় আসবে। বিজয় আসবেই। ২৮ ফেব্রুয়ারী কিংবা ৫ ই মে'র রক্ত বৃথা যেতে পারেনা। যেমন ২৫ মে কালো রাটএর রক্ত বৃথা যায় নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।