বাড়ির সবার খাবার আর স্বাস্থ্যের প্রতি কড়া নজর আপনার। কিন্তু রান্নাঘরটা পরিষ্কার আছে কি না, তা খেয়াল করছেন তো?
‘রান্নাঘর তেলচিটচিটে হওয়ার মূল কারণ গ্যাসের চুলার আগুন, তাপ থেকে আঠালো একটা ভাব সৃষ্টি হওয়া। ঢাকা শহরে প্রায় বেশির ভাগ বাড়িতে গ্যাসের চুলা ব্যবহার করে। গ্যাসটা যদি বিশুদ্ধ হয়, তাহলে তা পোড়ালে তেলচিটচিটে হয় না। কিন্তু গ্যাসের সঙ্গে মিশ্র পদার্থ থাকে বলেই রান্নাঘরে তেল, কালি, ঝুল পড়ে এবং রান্নাঘর তেলচিটচিটে হয়ে যায়।
’ বলেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের গৃহব্যবস্থাপনা ও গৃহায়ণ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রীনাত ফওজিয়া।
তবে একটু সচেতন থাকলে রান্নাঘরের তেলচিটচিটে অবস্থা থেকে একটু হলেও রেহাই পাওয়া যাবে। সেই পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
সাধারণত রান্নাঘরে এগজস্ট ফ্যান ব্যবহারের গুরুত্বটা অনেকে বুঝতে পারে না। ফ্যান ঘুরতে থাকলে চুলার গরম বাতাসটা বের হয়ে যায়।
এতে রান্নাঘরের বাতাসটা ঠান্ডা অনুভব হয়। তেলচিটচিট ভাবটাও কম হয়।
রান্নাঘরে কিচেন হুডও ব্যবহার করতে পারেন। কিচেন হুড চুলার ওপর গরম বাতাস ছড়াতে দেয় না। গরম বাতাস শোষণ করে চিমনির সাহায্যে পাইপ দিয়ে বাইরে বের করে দেয়।
ফলে, রান্নাঘর তেলচিটচিটে হতে পারে না।
বাড়ি নির্মাণের সময় পুরো বাড়িতে না হলেও অন্তত চুলার পেছনে দেয়াল বা চুলার নিচে ও চোখের সমান উচ্চতায় (আই হাইট) টাইলস বসানো উচিত। চুলা ও চুলার পাশটা টাইলস দিয়ে নির্মাণ করা ভালো। কারণ, টাইলসের রান্নাঘর সহজে মুছে পরিষ্কার করা যায়।
অন্যান্য ঘরে মাকড়সার পাতলা ঝুল জমলেও রান্নাঘরের ওপরের দিকে দেয়ালে মোটা ভারী ধরনের ঝুল জমে।
গ্যাসের চুলায় রান্না করার কারণে তৈলাক্ত পদার্থ পুড়ে ওপরের দিকে উঠে ধোঁয়া হচ্ছে, এ কারণে মাকড়সার ঝুলটাও তেলচিটচিটে হয়ে যায়। তাই মাকড়সার মোটা ঝুল যেন রান্নাঘরে না জমতে পারে, সে জন্য রান্নার পরপরই প্রতিদিন অথবা সপ্তাহে অন্তত এক দিন হলেও রান্নাঘরের ওপরে জমে থাকা মাকড়সার ঝুল পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
রান্নাঘরের জানালার গ্রিলের গায়ে অনেক সময় তেল ও ঝুল আটকায়। কিছুদিন পর পর স্পঞ্জ বা কাপড় দিয়ে রান্নাঘরের জানালার গ্রিলটা পরিষ্কার করতে হবে।
রান্না করার সময় মসলা ও তেলের কণা চুলার পাশে ছিটে পড়ে ফলে তেলচিটচিটে হয়ে যায় চুলার চারপাশ।
তাই রান্নার পরপরই চুলার চারপাশটা অন্তত একবার পরিষ্কার স্পঞ্জ বা কাপড় ভিজিয়ে সাবান-পানি বা কিচেন ক্লিনার দিয়ে মুছে পরিষ্কার করে রাখতে হবে।
যখন গ্যাসের চুলার ভেতর ময়লা জমে, তখন চুলায় আগুনের শিখা লালাভ হয়। ফলে, তেলচিটচিটে ভাবটা বেশি হয় রান্নাঘরে। এ কারণে যখনই এ অবস্থা দেখা দেবে, তখনই চুলা ঠিক করার মিস্ত্রি ডেকে এনে কিংবা নিজে পারলে চুলার ভেতরের প্রতিটি অংশ খুলে ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে, যেন চুলার আগুনের শিখা আবার নীলাভ হয়ে যায়। বছরে অন্তত একবার চুলার প্রতিটি অংশ খুলে পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
রান্নাঘরের তেলচিটচিটে ভাব দূর করার বিষয়ে বলছিলেন রান্নাবিদ সিতারা ফেরদৌস।
জেনে নিন
রান্না করার পর প্রতিদিন পরিষ্কার করে রাখতে হবে। সাবান-পানিতে ফোম ভিজিয়ে বা লিকুইড ক্লিনার দিয়ে চুলার আশপাশ পরিষ্কার করে রাখতে হবে।
রান্নাঘরের ব্যবহূত সামগ্রী, যেমন: বিভিন্ন ধরনের মসলার কৌটা, আনুষঙ্গিক সামগ্রী আঠালো ভাব হওয়ার আগেই সপ্তাহে অন্তত এক দিন সাবান-পানি কিংবা কিচেন লিকুইড ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করা ভালো।
রান্নাঘরে প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে রাখতে হবে।
ইদানীং অনেক রান্নাঘরে কেবিনেট থাকে। কেবিনেটের ভেতরে সব প্রয়োজনীয় সামগ্রী থাকে। এসব সামগ্রী ব্যবহারের পরপরই পরিষ্কার করে রাখতে হবে।
কিচেন কেবিনেট না থাকলে প্রয়োজনীয় জিনিস আলাদা প্যাকেট কিংবা মোড়কে করে রাখা যেতে পারে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।