আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যৌথ পরিবারে বউ-শাশুড়ির দ্বন্দ্ব-----------

জানার আগ্রহ মানুষের চিরন্তন, বই হলো তার বাহন, আইনের মৃত্যু আছে কিন্তু বইয়ের মৃত্যু নেই। যৌথ পরিবারে বউ-শাশুড়ির দ্বন্দ্বটা থেকেই যায়। অন্য এক মেয়ে ছেলেকে, পর করে দিচ্ছে এ ব্যাপারগুলো মেনে নিতে হয়তো অনেক বেশিই সময় লাগিয়ে নেন শাশুড়িরা। অনেক সময় মেনে নেয়ও না। বেশিরভাগ শাশুড়ি বউকে প্রতিপক্ষ ভাবে।

ফলে মারমুখো আচরণ প্রকাশ পায়। তিনি ভুলে যান কোনো একদিন তিনিও বউ ছিলেন। বরং, তিনি তার শাশুড়ির জায়গা দখল করে তার মতোই নিজেকে প্রকাশ করতে চান। যে মেয়ে বউ হয়ে তার ঘরে এসেছে, পুরোনো পরিবেশ ফেলে নতুন এ পরিবারে নিজেকে খাপ খাওয়াতে যে ব্যাকুল তাকে তিনি নতুন প্রজাতির কোনো প্রাণী ভেবে নেন। কিন্তু বউ এবং শাশুড়িই দিনের বেশি সময় একসাথে কাটায়।

তাদের মধ্যেই ভালো বোঝাপড়া থাকা দরকার। কারণ, কোনো সমস্যায় সবার আগে একজনই অন্যকে সাহায্য করবে। এ ব্যাপারটা বৌ-শাশুড়ি দুজনেই ভালোভাবে বোঝে, এমন পরিবার হাতেগোনা ক’টা আছে। কিংবা আদৌ পাওয়া যাবে কি না এ ব্যাপারে সন্দেহ আছে। মূল কথা হলো, দু’জনের প্রতি দু’জনের মনোভাবের পরিবর্তন করতে হবে।

শাশুড়িকে মনে রাখতে হবে, বউ তার সমবয়সী বা প্রতিপক্ষ নয়। আর বউকে শাশুড়ির সাথে মানিয়ে নিতে হবে। দুজনকেই ছাড় দিতে হবে এবং দুজনের ভালো-মন্দই দুজনকে বুঝতে হবে। তবে শাশুড়ির ওষুধপত্র থেকে শুরু করে তার একা থাকার সময়টাতে তাকে আনন্দে রাখার জন্য বউকে তার পাশে থাকতে হবে। বউ শাশুড়িকে মা এবং শাশুড়ি বৌকে মেয়ে ভেবে নিলে দুজনের ত্র“টিগুলোকে ছাড় দিলে বউ-শাশুড়ির সম্পর্কটা বেশ ভালো হয়।

দুজন একসাথে কিছু সময় গল্প করে, টিভি দেখে সময় কাটাতে পারে। আর খুব জরুরি একটি ব্যাপার হলো, বউ-শাশুড়ি এবং ঘরের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারগুলো নিয়ে পাড়া-পড়শি বা আত্মীয়-স্বজন অন্য কারো সাথে আলোচনা করা মোটেও ঠিক না। এবং এ নিয়ে কারো পরামর্শ না নিলেই বরং বেশিরভাগ পরিবার ভালো থাকতে পারবে। এ ব্যাপারগুলো বোঝার জন্য প্রয়োজন দুজনের ভালো মানসিকতার অধিকারী হওয়া। এ প্রসঙ্গে ড. মেহতাব খানম বলেন, বউ-শাশুড়ি সম্পর্ক নিয়ে এ প্রজন্মের মেয়েদের মধ্যে রয়েছে অনেক শঙ্কা।

শাশুড়ি মানেই যে শাসন আর কর্তৃত্ব খাটানো, তা কিন্তু ঠিক নয়। এক্ষেত্রে দুই প্রজন্মের মানুষের এক ধরনের মানসিক দ্বন্দ্ব দেখা যায়। শাশুড়িকেও নববধূর মানসিক অবস্থার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাবার বাড়ি ছেড়ে যেই মেয়েটি স্বামীর সংসারে আসে বাকীটা জীবন কাটানোর জন্য তার জন্য আন্তরিক হওয়াটা খুবই জরুরি। অন্যদিকে নববধূকেও মনে রাখতে হবে যে, শাশুড়িকে অবহেলা বা বিদ্রƒপ করলে সম্পর্কের তিক্ততা বাড়বেই সেই সাথে তার প্রভাব পরিবারের উপর পড়বেই।

নববধূর করণীয় আপনি চাইলেই বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক মধুর করতে পারেন। সেক্ষেত্রে নববধূর উপরে দায়িত্বটা অনেক বেশি। নববধূদের যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত- ১. শাশুড়ির মতামতকে প্রাধান্য দিন। কখনোই দুর্ব্যবহার করবেন না। কোনো বিষয়ে মতের বিরোধ হলে ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে বলুন।

২. শাশুড়ির পছন্দের মেন্যুগুলো মাঝে মাঝে রান্না করুন। হঠাৎ করেই ছোটখাটো কোনো গিফট উপহার দিতে পারেন। ৩. মাঝে মাঝে শাশুড়িকে নিয়ে বেড়িয়ে আসুন কাছে কোথাও। শপিং-এও শাশুড়িকে নিয়ে যেতে পারেন। ৪. শাশুড়ির জন্মদিন ও ম্যারেজ ডে ভুলে যাবেন না কিন্তু।

৫. সব বিষয়ে শাশুড়ির সাথে কথা বলুন। শাশুড়িকে বন্ধুর মতো ভাবুন। শাশুড়ির করণীয়ঃ ১. নববধূকে আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করুন। ২. অযথাই কাজের চাপ দিবেন না। সাংসারিক সব কাজ ভালো করে বুঝিয়ে দিন।

ভুল হলে তা শুধরে দিবেন পরিবারের একজনের মতো করে। ৩. অন্যের মেয়ে নয় নিজ মেয়ের মতোই আচরণ করুন নববধূর সাথে। মনে রাখবেন যদি আপনার মেয়ে থাকে তবে সেও কিন্তু আরেক পরিবারে যাবে। ৪. নববধূর ছোটখাটো কাজে প্রশংসা করুন। তাতে করে সে আরো অনেক বেশি উৎসাহী হবে সাংসারিক দায়িত্ব নেবার জন্য।

৫. কখনোই প্রতিবেশি কারো বউয়ের সাথে তার তুলনা করবেন না। এতে করে সে নিজেকে হীন মনে করতে পারে। আবার পরিবারের প্রতি নববধূর বিরূপ ধারনা জন্মাবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।