আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসুন না, যার যার অবস্থান থেকে দেশকে ভালোবাসি!

স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা আসুন না, যার যার অবস্থান থেকে দেশকে ভালোবাসি! ফেসবুক ব্যবহার করি সেই ২০০৬ থেকে। তখন ব্লগ ও তেমন জনপ্রিয় হয়নি। জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল ফোরামগুলো। আর সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মধ্যে জনপ্রিয়ের শীর্ষে ছিল হাইফাইভ। তখন অনেককেই বলতে শুনতাম - আমার ফেসবুকে একাউন্ট নেই; আমার সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ভালো লাগেনা।

আর আজ যখন তাদের সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং দেখি তখন সত্যিই হাসি পায় যাক সে কথা - আসল কথা এটা নয়। অনলাইনে থাকতে থাকতে অনলাইন রেভ্যুলেশনের যেনো সাক্ষী হয়ে যাচ্ছি। কবে যেনো ইতিহাসের পাতায় ঢুকে যাই! এই অনলাইনে কত কি যে হলো! এই যেমন অভ্র বাংলা কীবোর্ড ২০০৩ এ প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০০৮ সালে যেনো একটা রেভ্যুলেশনের সুচনা হলো। আর ২০০৯-১০ সালে তো অনলাইনে বাংলা একপ্রকার রাজত্ব করা শুরু করলো। সে সময়ের হিসেব অনুযায়ী প্রায় ৫৭ লক্ষ বাংলাদেশী ইন্টারনেট ব্যবহারকারি ছিল যা ছিল মোট জনসংখ্যার ৩.৭ শতাংশ।

এখন সেটা অনেক বেড়েছে। কম্যুনিটিতে ফিরে আসি। বাংলা ব্লগ তার রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে ফেসবুক উত্থানের সময়টাতেই। ২০০৮ সালে নাড়াচারা দেয়া শুরু করলেও ২০০৯-১০ এই মুলত বাংলা ব্লগ নিজস্ব জৌলুসে উত্তাল দামামা বাজিয়ে জানান দিচ্ছিলো। সামহোয়্যার ইন ব্লগ বাংলাদেশের প্রথম কম্যুনিটি ব্লগ এবং সবচেয়ে বেশী ব্যবহারকারীদের আনাগোনা ব্লগ গুলোর মধ্যে সবচেয়ে উপরের স্থান ধরে রাখছে সবসময়ই।

এখন ফেসবুক খুললেই শুধু বাংলা লেখা চোখে পড়ে। ফোরামগুল সব বাংলায়, গুগল বাংলাকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। ব্লগগুলোর প্রতিযোগীতায় বাংলা ব্লগ পুরষ্কার জিতে নিচ্ছে। এসব ই আমাদের অর্জন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ঠিক ৬০ বছর এই অনলাইনে বাংলা ভাষার যে পরিস্ফুটন আমরা দেখতে পাচ্ছি - এটা আমাদের এই জেনারেশনের অবদান - এটা আমাদের পরবর্তী জেনারেশনের জন্য গৌরব।

ব্লগে আমরা অনেক ধরনের, অনেক রুচির, অনেক মন-মানুষিকতার মানুষ (নাকী ব্যবহারকারী বলা ভালো!!) দেখে থাকি। আমাদের সবার চিন্তা-চেতনা ও দর্শন আলাদা হবে এটাই স্বাভাবিক। ১৯৫২ সালে যেমন আলাদা ছিল, ১৯৭১ এও আলাদা ছিল, এবং ১৯৯০ তেও আলাদা ছিল। আজ এই ২০১২ তেও আলাদা। আমরা ব্লগে একি সাথে সাহিত্য চর্চাবিদ দেখতে পাই, দেখতে পাই সিনেমা পাগল মানুষ।

আমরা দেখি গান পাগল মানুষ, দেখি ফটোগ্রাফী নিয়ে পড়ে থাকা মানুষ। আমরা দেখি মুক্তিযুদ্ধ-বিপক্ষের পা চাটা কুকুরদের, দেখি এই কুকুরদের তাড়িয়ে দেয়া যোদ্ধাদের। আমরা দেখি, ভাষা-সমাজ-রাজনীতি-দেশ-জনগন নিয়ে চিন্তাবিদদের, দেখি পোস্টে লাইক আর সহমত টাইপ কমেন্ট দিয়ে সরে যাওয়া ব্যবহারকারী। আমরা দেখি ইভটিজার, আমরা দেখি বিপ্লবী, দেখি একি মানুষের পারস্পরিক দ্বন্দ-মুলোক চিন্তাভাবনা। আমরা দেখি ধর্ম না মানা একদল মানুষ, দেখি ধর্ম কে আকড়ে ধরে পোড়ে থাকা একধরনের মানুষ।

আমরা এও দেখি, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট রা কয়েকভাগে ভাগ হয়ে যাচ্ছে - একেক ভাগের সাথে একেক ভাগের দ্বন্দ দেখি আমরা - উপভোগ করি। এই যে এত রঙের মানুষ আমরা, আমাদের লক্ষ্য ভিন্ন, আমাদের পথচলা ভিন্ন - কিন্তু আমাদের পরিচয় কিন্তু সর্বশেষে সেই একটাই - আমরা বাংলাদেশী। প্রথমে আমরা মানুষ এবং তারপরেই আমরা বাংলাদেশী। তুমি-আমি-সে-আমরা সবাই বাংলাদেশী; আমাদের রক্তে খাঁটি দেশী রক্ত। এই রক্ত কি আমরা শুধুই শরীরের ভেতর মরে যেতে দিতে পারি? আমাদের রক্তের কি কোন দাম নেই? আমরা কি নিজেদের রক্ত নিজেরা খেয়েই মরতে থাকবো? এই কি ছিলো স্বাধীনতার মানে? এই কি হওয়া উচিত আমাদের পুর্বপুরুষের ত্যাগের ফসল? আরেকবার ভাবুন।

আসুন না, আমরা যার যার অবস্থান থেকে দেশকে ভালোবাসি? যে যাই করি না কেনো, আমাদের মাথায় একটা কথা ভালোভাবে গেঁথে রাখি - আমি যা করছি তা কোনভাবে কি আমাদের দেশের ক্ষতি হচ্ছে কিনা! আমাদের দ্বারা কি আমার বাংলাদেশী ভাই বা বোন ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে কিনা! আমার মা সবসময় একটা কথা বলেন - নিজে ভালো তো জগত ভালো। সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ। বিঃদ্রঃ কমেন্ট ব্যান তাই কারো লেখায় কমেন্ট করতে পারছিনা। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া চট্রগ্রামে পাহাড় ধ্বসে মানুষ মারা যাওয়ার পর আমাদের অনেকের টনক নড়েছে, আমরা ত্রান দিয়েছি।

বিষয়টি অনেক প্রসংশিত। কিন্তু আমাদের এটাও খেয়াল রাখা উচিত - "পৃথিবীর জনসংখ্যা বাড়ছে। থাকার জায়গার সঙ্কুলান আমাদের বাধ্য করছে পাহাড়ে বসবাস করতে। এখন আপনি না চাইলেও পাহাড় এর ক্ষতি হচ্ছে এতে। আবার চাইলেও পারছেন না পাহাড় কেটে বসবাসরত এই মানুষদের থাকার জায়গা করে দিতে।

তাহলে পাহাড়কেই কেনো বসবাসের উপযোগী করা হচ্ছেনা? বসবাসের উপযোগী করার জন্য সব পাহাড়কে গনহারে ধরলেও ঠিক হবেনা অবশ্যই। সম্পুরক তথ্যঃ বাইরের অনেক দেশে পাহাড় কেটে বসবাসের উপযোগী করা হয়েছে। তাতে প্রকৃতির ভারসাম্য তেমন হয়নি কারন একি সাথে তারা সবুজ বনভুমি, ছোট খাটো পাহাড়, বন প্রভৃতি কে সংরক্ষন করছে ভালমতো। ব্যাপারটা এমন নয় যে পাহাড় ঠিক সাইজে কেটে দিলাম আর মানুষ বসবাস করা শুরু করলো - তাহলে আদতে কিছু হবেনা। আমাদের সবদিকেই খেয়াল রাখতে হবে " - এই মন্তব্যটি আমি অন্য এক জায়গায় করেছিলাম, সেটাই এখানে কপি পেস্ট করে দিলাম।

এই লেখার সাথে বিঃদ্রঃ' এর কোন সম্পর্ক নেই ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।