আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডরেমনঃ আমার তিক্ত অভিজ্ঞতা

মুখের প্রতিবাদ মুখ হোক, হাতের প্রতিবাদ হাত হোক, লাঠির প্রতিবাদ লাঠি হোক, আস্ত্রের প্রতিবাদ অস্ত্রে হোক আর ব্লগিংয়ের প্রতিবাদ ব্লগিংয়ে হোক। জয় বাংলা! কার্টুন দেখে না এমন পিচ্ছি পোলাপাইন খুজে পাওয়া দুস্কর। এই কার্টুনটা যে আমাদের এই শিশুগুলার ভবিষ্যৎ কিভাবে নষ্ট করছে আজকে তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। আমি ক্লাস ফাইভের একটা পিচ্ছি পড়াই। ছেলেটা মাশাল্লাহ ব্যাপক ট্যালেন্ট।

বাংলা সব শব্দ না বুঝলেও হিন্দি মাশাল্লাহ সব বুঝে। পড়ানোর মাঝে মাঝে যে ভাবে হিন্দি বলে আমি টাস্কিত হয়ে যাই। যাই হোক, আজকে পড়াতে যাওয়ার পর বললাম বিজ্ঞান বই বের করতে। বই নেওয়ার পর বের করলাম “পৃথিবী ও বিশ্বজগত” নামের চ্যাপ্টারটা। চ্যাপ্টার খোলার পর আমি তাকে জিজ্ঞাস করলাম, “মারুফ, পৃথিবী কিভাবে তৈরি হয়েছে তুমি কিছু জান?” ও যে ভাবে জানি স্যার বলল আমি ভাবলাম ছেলে মনে হয় ভালই জানে।

জিজ্ঞাস করলাম কি জানে বলতে। সে বলে যে স্যার ডরেমনের কাছে একটা গেজেট আছে যেটা দিয়ে পৃথিবী তৈরি করা যায়। সে ওই গেজেট দিয়ে পৃথিবী বানিয়ে নবিতাকে দেখিয়েছে। ওই রকম একটা গেজেট আল্লাহর কাছে আছে। আল্লাহ সেইটা দিয়া পৃথিবী তারপর সূর্য বানাইছে।

আমি কিছু বলার আগেই সে যে সুন্দর ভাবে গেজেটের কার্যপ্রণালীর বর্ণনা দিলো, আমি ওই কার্টুনের প্রভাব চিন্তা করে আতঙ্কিত হয়ে গেলাম। কি হচ্ছে এই সব???? ডরেমন তেমন আহামরি কার্টুনও না। এই কার্টুন থেকে শিক্ষণীয় কিছু আমি কখনো পেলাম না। ওই ডরেমন নামক প্রাণীটা(?) প্রত্যেক পর্বে একটা করে গেজেট বের করে তার পেট(?) থেকে আর নবিতা সেটা নিয়ে নিজের কাজে ব্যাবহার করে গণ্ডগোল বাঁধায়। শেষে বাংলা ছিঃনামার পুলিশের মত ডরেমন এসে তাকে বাঁচায়।

মাঝখানে জিয়ান এর ভিলেনগিরি আর সুজুকার ন্যাকামো। এই হচ্ছে ডরেমন কার্টুনের বেশির ভাগ পর্বের কাহেনি। এই কার্টুনটা শিশুদের একে ফাঁকিবাজ বানাচ্ছে, অন্যদিকে শিশুদের জ্ঞানের বারোটা বাজাচ্ছে। ভাষার কথা বাদই দিলাম, সেটা অনেক আগেই শেষ। মারুফের মুখে গেজেটের ওই গুণগান শোনার পর আমি তাঁর আম্মুকে ডেকে বললাম তাঁর ছেলের অবস্থার কথা।

অ্যান্টি তাঁর ছেলেকে ব্যাপক বকাঝকা করলেন, কিন্তু আমি মনে মনে চিন্তা করলাম অ্যান্টির সিরিয়াল রোগের জন্য ওনাকে বকা দিবে কে????? আমাদের মা-বোনেরা দেখে সিরিয়াল আর আমাদের ছোট ভাইবোনগুলা দেখে হিন্দি সিরিয়াল। কিছু বললে বলে “নেহিইইইইইইইইইইইইই” আর নয়তো “খামোশ!!!”। নিজেদের ছোটবেলার কথা চিন্তা করলে মাঝে মাঝে আফসোস লাগে এই সব অবুঝ ছেলেমেয়েগুলোর জন্য। নিজেদের হাতে গলাটিপে মারছি আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ। এই কার্টুনটা কি বন্ধ করা যায় না কোন ভাবে???????  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.