কোথায় আজ হারালে তুমি, আগে তোমায় কেন বুঝিনি আমি ! আমরা সবাই বিখ্যাত পরমাণুবিদ জন ডাল্টন এর নাম শুনেছি। ইংলিশ বিজ্ঞানী ডাল্টন তাঁর সাড়া জাগানো পরমানু মডেল এর জন্যে বিখ্যাত। মজার ব্যপার হল, ডাল্টন ছিলেন বর্নান্ধ। তিনি সবুজ রং চিনতে পারতেন না। তাঁর সময়ে বর্নান্ধতার সঠিক কারণ আবিষ্কৃত হয়নি।
ডাল্টনই সর্বপ্রথম বর্নান্ধতা নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। তিনি তাঁর বর্নান্ধতার কারণ সম্পর্কে ধারনা করেছিলেন যে, হয়তো তাঁর চোখের ভিট্রিয়াস হিউমার (চোখের লেন্সের পেছনে এক প্রকার তরল) নীল বর্ণের, যা সাধারণ চোখে বর্ণহীন। তাঁর ইচ্ছে ছিল মৃত্যুর পর যেন তাঁর চোখের ব্যবচ্ছেদ করে ভিট্রিয়াস হিউমার এর রঙ পরীক্ষা করা হয়। তাঁর এই ইচ্ছে পূরণ করা হয়েছিল। Joseph Ransome নামক বিজ্ঞানী ডাল্টনের মৃত্যুর একদিন পর তাঁর চোখের ভিট্রিয়াস হিউমার পরীক্ষা করে দেখেন, এবং তা ছিল অন্যান্য মানুষের চোখের মতই বর্ণহীন! অতএব ডাল্টনের ধারণা ভুল প্রমানিত হল।
কাহিনী এখানেই শেষ হতে পারত। কিন্তু Ransome ডাল্টনের চোখের নমুনা ফেলে দিতে চান নি, বরং তা সযত্নে সংরক্ষণ করে রাখেন প্রিজারভেটিভ তরলে । একটি দু’টি বছর নয়, এই নমুনা কাচের জারে সংরক্ষিত ছিল প্রায় ১৫০ বছর !
১৯৯০ শতকের মাঝামাঝিতে বর্নান্ধতার জীনগত ব্যখ্যা আবিষ্কৃত হয়। এরপর ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা ডাল্টনের রেটিনার নমুনা থেকে DNA সংগ্রহ করেন। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে দেখা যায়, ডাল্টনের রেটিনায় লাল বর্ণ চিনতে পারে এমন অপসিন জীন ছিল কিন্তু সবুজ বর্ণ চিনতে পারে এমন জীন ছিল না।
যে কারণে ডাল্টন সবুজ রঙ চিনতেই পারতেন না। এ ধরনের বর্নান্ধদের বলা হয় green- dichromat. এভাবেই মৃত্যুর ১৫০ বছর পর হলেও ডাল্টনের বর্নান্ধ-রহস্য বের করা হয়েছিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।