ছাত্র কেউ কৃতকর্মের জন্য খ্যাতি অর্জন করেন আবার কেউ কুখ্যাতি অর্জন করেন। মানুষ ভালো এবং মন্দ দুটো কাজই মনে রাখে। কিছু মানুষের নাম নিলেই তার চরিত্র সম্পর্কে আর বলার প্রয়োজন হয় না। যেমন হিটলারের নাম আনলেই চট করে বলে ফেলা যায় তিনি কেমন। ইতিহাসে তার জায়গা কোথায়।
হিটলারের কারনেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়েছিলো এবং এ কারনে অনেক লোক মারা গিয়েছিলো। তবে হিটলার সম্পর্কে আমরা এতোদিন মুভি বা ইতিহাস থেকে যে খারাপ কাহীনিগুলো শুনেছি তার বাইরে গিয়ে একটি মুভি তৈরি হয়েছে ২০০৪ সালে ডাউনফল। দ্বিতীয় বিশ্বযোদ্ধের উপর এবং হিটলারের উপর অনেক মুভি এ পর্যন্ত তৈরি হয়েছে। ডাউনফল মুভিটি যারাই দেখবেন তারা একমত হবেন যে, আসলেই মুভিটি একটু অন্য ধরনের।
হিটলারকে আমরা যতোটা পরাক্রমশালী হিসেবে যানি ডাউনফল মুভিটিতে হিটলারকে সেভাবে তুলে ধরা হয়নি।
এখানে হিটলারের শেষ বারো দিনের ঘঠনাপ্রবাহ দেখানো হয়েছে। মুভিটির কাহীনি নেওয়া হয়েছিলো হিটলারের উপর লেখা কয়েকটি জীবনিগ্রন্থ থেকে। এর মধ্যে তখন হিটলারের সাথে বাংকারে তার যে সেক্রেটারি ছিলেন তার লেখা বইও আছে। ১৯৪৫ সাল। রাশিয়ান আর্মি জার্মানিদের ঘিরে ফেলছে।
হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানি বাহীনি পর্যায়ক্রমের কাবু হয়ে আসছে। তখন হিটলার বার্লিনের একটি বাংকারে ছিলেন। হিটলার শেষ পর্যন্তও বিশ্বাসি ছিলেন যে, তার জেনারেলরা তার সাথে থাকবে। এবং এই যুদ্ধে জার্মানির বিজয় হবে। কন্তু হিটলারের সে ধারনা ভুল হয়।
তারা হিটলারকে ছেড়ে চলে যায়। একপর্যায়ে হিটলার বাংকারে তার ওয়াইফকে সংগে নিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে হিটলারের ইচ্ছা অনুযায়ী তাদের মরদেহ আগুনে পুড়ে ফেলা হয়। মুভির কাহীনি এভাবেই শেষ হয়।
তবে মুভিটির কিছু দৃশ্য অবশ্যই দর্শককে অশ্রুসিক্ত করবে।
যেমন হিটলারের ছেলেমেয়েদের ঘুমের মধ্য মেরে ফেলা এবং এক জেনারেলের তার ফ্যামিলিসহ বম ফাটিয়ে আত্মহত্যা। এছাড়াও মুভিটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত যে বসিয়ে রাখবে তাতে সন্দেহ নেই।
মুভিটি থেকে ক্ষমতার প্রভাব এবং পতন সম্পর্কে কঠিন কিছু বিষয় দেখা যাবে। বিশেষত আমাদের দেশের দর্শকরা এটা আরো ভালো বুঝবেন। হিটলার এতোটাই ক্ষমতাদর ছিলেন আর শেষের দিকে তার করুন অবস্থা দেখে অনেকেরই তার প্রতি করুনা হতে পারে।
অনেকেই হয়তো হিটলারকে তাদের কল্পনার সাথে মিলাতে গিয়ে হোচট খাবেন।
সে যাই হোক, এ ধরনের ইতিহাস নির্ভর মুভি তৈরি করতে গেলে অনেক সময় এবং শ্রম দিতে হয়। করতে হয় রিচার্স। যেমন হিটলারের চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন তিনি হিটলারের প্রাইভেট কথোপকথন এর রেকর্ডিং শুনেছেন। এটা তিনি করেছেন যাতে করে প্রকৃত হিটলারের মতো কথোপকথন করতে পারেন এবং অস্টৃয়ান অ্যাকসেন্টা যাতে ঠিক হয়।
এই ধরনের কাজের প্রতি সবার যে আগ্রহ থাকে তা স্বাভাবিক। কাজ শেষ হওয়ার পর বিভিন্ন দিক থেকে মতামত আসতে থাকে। কিছু পক্ষে যায় আবার কিছু বিপক্ষে যায়। কারন ইতিহাস নির্ভর মুভি পুরোপুরি সঠিকভাবে তুলে ধরা সম্ভব হয় না।
তাই প্রস্তুত থাকতে হয় নেগেটিভ সমালোচনা সহ্য করার।
সমালোচনা উঠেছে মুভিটিতে কিছু নৃশংস ঘঠনা মিস করা হয়েছে। এজন্য কৃটিক, রাইটাররা ডিরেক্টরকে কুলাবোরেটরও বলেছেন। আরেকটি বিষয় সম্পর্কে অভিযোগ উঠেছে তা হলো বার্লিন পতনের সময় বাংকার থেকে যারা পালিয়ে চলে যাচ্ছিলেন তখন অনেক মেয়েই রেপ হয়েছিলেন সভিয়েট বাহীনি দ্বারা। যেমন রেপ হয়েছিলেন গেরডা কৃস্টিনা এবং এলস ক্রুজের। জেমস ও'ডেনেল এর দি বাংকার বইতেও জাংজ এর রেপ হওয়ার কথা উল্লেখ আছে।
যদিও তিনি নিজে তার আত্মজীবনীতে তা বলেননি।
এতোসব সমালোচনা সত্ত্বেও মুভিটি থেকে হয়তো কেউ মুখ ফিরিয়ে নিবেন না। মুভিটির ক্ষমতা হলো মুভির কাহীনির ধারাবাহিকতা। তা ছাড়া অনেক খন্ড খন্ড ব্যাপারতো আছেই। ডিরেক্টর অলিভার হায়ারবিইগেলের পরিচালনায় মুভিটি ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৪ সালে জার্মানিতে রিলিজ পায়।
বায়োগ্রাফি,ড্রামা,হিস্ট্রি নির্ভর মুভিটি অস্কারে নমিনেশন পেয়েছিলো। তাছাড়া ১৫টি পুরস্কার এবং ১৩টি নমিনেশন পায়। অভিনয় করেছেন ব্রুনু গ্যান্জ, আলেকজান্দ্রা মারিয়া লারা,করিনা হারফস। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।