জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই
অবশেষে আগামী ১৭ জুলাই শুরু হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের নাটক বীরাঙ্গনা'র শুটিং । মুক্তিযোদ্ধা চরিত্রে অভিনয় করবেন অভিনেতা লিটু আনাম এবং বীরাঙ্না চরিত্রে অভিনয় করবেন অভিনেত্রী দীপা খন্দকার।
আগামী ১৭ জুলাই নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা ও শহীদ নগর এলাকায় এই নাটকটির শুটিং শুরু হবে।
নাট্য ব্যক্তিত্ব ফজলুল হক পলাশের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস “ওকে যেতে দাও” অবলম্বনে এই নাটকটি নির্মাণ করছি। নাটকের নাম “বীরাঙ্গনা” ।
আমার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ও অভিনয় স্কুল ‘এক মুঠো চলচ্চিত্র’ এর ব্যানারে নির্মিত হচ্ছে এই নাটক। এই নাটকে টেলিভিশন তারকা ছাড়াও অভিনয় করছেন এক মুঠো চলচ্চিত্র অভিনয় স্কুলের এক ঝাঁক নতুন মুখ।
মুক্তিযুদ্ধে এক নারীর অসাধারণ আত্মত্যাগ নিয়ে এই নাটকের গল্প গড়ে উঠেছে। জীবনযুদ্ধে পরাজিত এক বীরাঙ্গনা নারী যে কি না জীবিত থাকতেও অপমানিত হয়েছে, মরে গিয়েও অপমান তার পিছু ছাড়েনি। মানবতা বোধ, কৃতজ্ঞতা বোধ, বীরত্ব, সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ ইত্যাদি অনেক গুণে গুণান্বিত হয়েও এই নারী সমাজের চোখে ঘৃণিতই থেকে গেছে।
বাধ্য হয়েছে বেছে নিতে ঘৃণিত আদি পেশা।
বীরাঙ্গনায় অভিনয় করছেন লিটু আনাম, দীপা খন্দকার, সাইদ তারেক, আনোয়ার খানসহ নারায়ণগঞ্জ নাট্যাঙ্গনের গুণী শিল্পী মহসীন, নুরুল ইসলাম, মনির হোসেন নিমাই, ইব্রাহীম খলিল, মোশারফ হোসেন, পলাশ লালপুরী , পথিক তোতা, জুয়েল চৌধূরী, সাইদ , আবদুর রহমান অপু, মিজানুর রহমান, মিজান শাহ, মাখন, জাহাঙ্গীর, জনি, মাসুদ, সজীব, লাবন্য , আঁচল, মারিয়া, রিয়া ও মাধবী রীতি ।
এই নাটকটির চিত্রনাট্য ও পরিচালনার দায়িত্ব এই অধম পালন করছে। আপনাদের শুভ কামনা চাই।
গল্প সংক্ষেপ :
এক সাংবাদিক কম্পিউটারে লিখছে।
তার লেখার শিরোনাম - বীরাঙ্গনা । সে লিখে চলেছে - ভদ্র সমাজে তার পরিচয় নষ্ট মেয়ে। সে নিজেও জানে সেটা। তাই তো কখনও নিজেকে বীরাঙ্গনা বলে পরিচয় দেয় না। অন্ধ গলিতে পঁচে মরা অন্য মেয়েদের মতো সে নিজেকে বড় সাধারণ মনে করে।
আসলে সে তো সাধারণ কেউ না, সে বীরাঙ্গনা।
সাংবাদিকের লেখায় উঠে আসে তার বীরাঙ্গনা হয়ে ওঠার গল্প।
দয়াল চানের মেয়ে নাজমা। একদিন কলেজ থেকে ফেরার পথে এক মাস্তান তাকে অপমান করে। প্রতিরোধ গড়ে তোলে নাজমা।
ফলে গুণ্ডাদের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি চলতে থাকে।
ভাষা সৈনিকের মেয়ে সালমা সেখান দিয়ে যেতে থাকে। সে গিয়ে গুণ্ডাদের সঙ্গে মারামারি শুরু করে। তাদের সাথে মারামারি করে ক্ষুরের পোচ খেয়ে আহত হয় সালমা। গুন্ডারা পালিয়ে যায়।
সেই থেকে নাজমা ও সালমা বান্ধবী।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নাজমার বাবা দয়াল চান শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হয়। অন্য দিকে সালমার ভাই রাজু হয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা।
সালমাকে পাকিস্তানী মেজরের কাছে তুলে দেয়ার পরিকল্পনা করে দয়াল চান। আড়াল থেকে শুনে ফেলে নাজমা।
সে সালমাকে বাঁচানোর পরিকল্পনা করে। নাজমা সালমাকে রাজাকার বাহিনী আসার কথা জানিয়ে দেয়। পালিয়ে যায় সালমা ও তার মা। অন্য দিকে, রাজাকার বাাহিনীর লোকজন তাকে সালমা ভেবে তুলে নিয়ে যায়। সে পাকিস্তানী মেজরের কাছে ধর্ষণের শিকার হয়।
ফুর্তি করার জন্য পাকিস্তানী মেজর নাজমাকে দয়াল চানের কাছে পাঠায়। এবার নাজমা তার নেকাব সরায়। দয়াল চান দেখে এ তার নিজের মেয়ে। সে তার মাথা ঠিক রাখতে পারে না। বন্দুক নিয়ে গিয়ে সরাসরি গুলি করে মারে পাকিস্তানী মেজরকে।
গুলির শব্দ শুনে চারপাশের সৈনিকরা ঘরটা ঘিরে ফেলে। দয়াল চান তার মেয়েকে পালিয়ে যেতে বলে। তার মেয়েকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করার জন্য সে পাকিস্তানী সৈনিকদের সঙ্গে গুলি বিনিময় করতে থাকে। নাজমা পালিয়ে যায়। গোলাগুলিতে মারা যায় দয়াল চান।
সাংবাদিকের প্রতিবেদনটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে সাংবাদিকের কাছে ফোন আসে বীরাঙ্গনা নাজমা মারা গেছে। সে যৌনকর্মী ছিল বলে কেউ তার লাশ সৎকার করতে চায় না। সাংবাদিক নিজে গিয়ে ব্যবস্থা করার চেষ্টা করে। অবশেষে ব্যর্থ হয়ে তার লাশ ভাসিয়ে দেয়া হয় নদীতে।
তার কপালে জোটে না রাষ্ট্রীয় সম্মান। তাতে কী, সাংবাদিকের লাল স্যালুট ঠিকই সে অর্জন করে নেয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।