আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ ৫ম দিন। অবশেষে গলায় শিকল পরিয়ে দেয়া হলো।

অবশেষে গলায় শিকল বেধে দিলো লোকটি। কি নিষ্ঠুরতা। যেন শিকল মানুষের হৃদয়ে বেধে দেয়া হলো। তাও আবার পানির জন্যে। বলে দিলো তুই আর কাউকে পানি দিতে পারবি না।

গত ৫দিন ধরে মহাখালি এলাকায় পানির সংকট। অনেক বাসায় হাগু , হিসু , গোসল, দাতমাজা বন্ধ। পানির অভাবে রান্নাবান্না থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অনেকেই। বাসাগুলোর আশেপাশে টিনশেডগুলোতে কয়েকটি টিউবয়েল আছে তারা পানি দিতে চায় না। ভাবছি ওয়াসার কাছে খবরটা দিই।

ওদের কয়টা মালপানির ব্যবস্থা হবে। ৫তলা বাসার সবার ওপরে আমরা থাকি। মানে ৫তলাতেই থাকি। নতুন বাড়ি। সিড়িতে রেলিং নাই।

রাতে বাতি নাই। হাউজে পানি নাই। অথচ বাড়িওয়ালার এডভান্স ৩৫হাজার টাকা নিয়েও পানি দিচ্ছে না। এমন বিপদজ্জনক পথে ঝুকি নিয়ে দিনে ও রাতে পানি টানতে হয়। তাও আরেকজনের বাসা থেকে।

বাসায় টিভি নাই, বেচেলর বাসা, তাই পানি আনতে গেলে মোহাব্বত সহকারে নাটকের সংলাপ শুনিয়ে পানি ভিক্ষা দেয়। তাই ভাবলাম বারবার পানি আনতে গিয়ে অপমাণিত হওয়ার চেয়ে টয়লেটে তালা দিয়ে বন্ধ রাখা সুখকর। কারণ বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল হয়ে গেছে, তাই বাইনারি সংখ্যার মতো একদিন অন্তর একদিন হাগু করতে হবে। গোসল করতে হবে সপ্তাহে একবার, আশেপাসে যদি কোন আত্মীয় থাকে। নচেত গোসল না করেই থাকতে হবে।

অথচ দেখুন, বাড়িওয়ালা কোন খবরই রাখে না। গত ৫দিন বাসার টাংকিতে একফোটা পানি তোলা হয় নি। কারণ বাড়ি করছে আইন অমান্য করে। ওয়াসার লাইন থেকে ঠিকমতো পানি পাওয়া যায় না। চুরি করা পানি দিয়ে কি এ চাহিদা মেটানো যায়? আজ দুপুরে নিচে একটি টিনশেড বাসায় পানি আনতে গিয়ে দেখি টিউবয়েলের গলায় শিকল লাগিয়ে তালা মেরে দিয়েছে সে বাসার বাড়িওয়ালা।

কেমন নির্মম আচরণ। এখন মনে হয়, কি লাভ হলো সমুদ্র বিজয়ে, এখনো পানির অভাবে বাথরুমে গিয়ে নিশ্চিন্তে হাগু করতে পারি না। কেউ একজন আমাদেরকে শান্তনা দিন। যাতে শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে পরিপূর্ণ ডিজিটাল হতে পারি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।