আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Joint Security Area : দুই কোরিয়ার মাঝের যুদ্ধ, থ্রিলার এবং হত্যারহস্যের মুভি

আমি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। মনে হয় না এর থেকে বেশী কিছু চাওয়ার আছে। মুভিখানা দেখার আগে একটা কথা পড়ে যান যে পাগলা এবং বস পরিচালক, অতি বিখ্যাত এবং সবার ফেভারিট Quentin Tarantino মুভিটি দেখার পর এক সাক্ষাতকারে এই মুভিটিকে ১৯৯০সালের পর তার সবচেয়ে প্রিয় ২০টি মুভির মাঝে একটি বলে রায় দিয়েছেন। North Korea এবং South Korea । অনেকদিন ধরেই একে-অপরের সাথে সাপে-নেউলে সম্পর্ক দুদেশের সেটা সবাই জানেন।

কি এক অদ্ভূত কারণে একটি দেশ আরেকটি দেশকে কখনোই দেখতে পারেনা। South Korea কে একটু সহনশীল মনে হলেও North Korea একেবারেই বেপোরোয়া আচরণ করে। অনেকবারই দুদেশ একেঅপরের সাথে তুচ্ছ কারনেও মুখোমুখি অবস্থানে চলে গিয়েছিলো। একবার তো ব্যাপক যুদ্ধই হয়ে গেলো দুদেশের মাঝে। আজ এই ২০১২সালে এসেও এই দুদেশের সম্পর্ক একটুও ভালো হয়নি।

সবসময় একরকম টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে দুদেশের সীমান্তে। সাধারণ জ্ঞানের ক্লাস শেষ। এইবার একটি মুভির নাম বলি। South Korean এই মুভিটির নাম J.S.A.: Joint Security Area। মুভিটির পরিচালক আমাদের সবার পরিচিত ক্লাসিক Oldboy মুভির পরিচালক Chan-wook Park ।

দারুণ লাগলো মুভিটি দেখে। দুদশের মাঝে যে এই সবসময়ের উত্তেজনা/একে অপরকে সবসময় শত্রু ভাবা যে মাঝে মাঝে কোন কারণে খুব বিপদজনক পরিস্থিতির দিকে চলে যেতে পারে তারই বর্ণনা মুভিতে। মুভির কাহিনী চিরবৈরী এই দুদেশের সীমান্তের এক ঘটনাকে নিয়ে। একে যুদ্ধের মুভি বলতে পারেন আবার থ্রিলারের মিশেলও আছে বেশ। দেখা শুরু করলে দারুণ মজা পাবেন।

বেশ ভালো মুভি। মুভির শুরুতেই দেখা যাবে দুজন North Korea এর সৈন্য Korean Demilitarized Zone তে তাদের সীমান্তের হাউজে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। সাথে সাথে দুদেশের সীমান্তেই জরুরী এলার্ম বেজে উঠে। দুদেশের সৈন্যরাই মুখোমুখি অবস্থানে এসে যায়। শুরু হয়ে যায় গুলাগুলি।

এরই মাঝে South Korean একজন সৈন্যকে আহত অবস্থায় North Korea থেকে পালিয়ে আসার পর South Korean সৈন্যরা তাকে উদ্ধার করে। আগেই বলেছি এই দুটো কোরিয়ান দেশ সবসময় একে অপরের মুখোমুখি অবস্থানে থাকে। যেকোন কারণেই দুদেশের মাঝে ভয়াবহ যুদ্ধ লেগে যেতে পারে। আর সেখানে এই ঘটনা তো বেশ ভয়াবহ। এদিকে পালিয়ে আসা সেই সাউথ কোরিয়ান সৈন্য এই হামলার কথা স্বীকার করে।

যাইহোক দুদেশের এই মুখোমুখি অবস্থানের মাঝে এগিয়ে আসে Neutral Nations Supervisory Commission । দুদিন পরেই দুদেশের সম্মতিতে ঘটনা তদন্তে তারা সুইডিশ এবং সুইশ তদন্তকারী দল পাঠায়। দুদেশের ভবিষ্যৎ এখন এই তদন্তকারী দলের হাতে। যদি ঘটনা সত্য বলে প্রমাণিত হয়ে যায় তাহলে হয়তো বিশ্ববাসী আবার নতুন এবং ভয়াবহ একটি যুদ্ধ দেখতে পাবে। সুইশ এবং সুইডিশ দল শুরুতেই হোচট খায়।

তারা কাজটি খুব কঠিন সেটা আগেই ভেবেছিলো কিন্তু সেটা যে এতটা জটিল আকার ধারণ করবে সেটা বুঝতেই পারে নি আগে। * ঘটনাটি নিয়ে দুদেশের গল্প দুরকম। তাহলে কারটা সঠিক ??? ** সবকিছু আরো সবচেয়ে জটিল করে তুলতেই আসে মৃত সৈন্যদের অটপসি রিপোর্ট। কিছুই মিলোনা যাচ্ছে না এবার আর। হিসব মিলানো যাচ্ছে না কোন কিছুরই।

তাহলে ?? এখন কি করবে সেই তদন্তকারী দল ?? তারা কি আসল ঘটনাটি এবং আসল দোষীকে সবার সামনে নিয়ে আসতে পারবে ?? সত্যি করে কি হয়েছিলো সেইদিন ?? কারণটাই বা কি ?? আসল অপরাধীই বা কারা ?? অবশ্যই সব সত্য সবার সামনে সঠিকভাবে হাজির করতে হবে সেই তদন্তকারী দলকে। কারণ ব্যাপারটা ছেলেখেলা নয় আর। যদি চিরবৈরী এই দুদেশ নিজেদের সাথে যুদ্ধ লাগিয়ে দেয় ?? বাকিটা আর বললাম না। দেখে নিজে জেনে ফেলুন। অসাধারণ একটা মুভি।

জমজমাট এবং টানটান থ্রিল পাবেন সেটা গ্যারান্টি। আরেকটি কোরিয়ান মাস্টারপিস এবং মাস্ট সি মুভি। কিছু তথ্য: * অনেক পুরস্কার পায় এই মুভিটি মুক্তি পাবার পর। ** কোরিয়ার সবচেয়ে ব্যবসাসফল ৫টি মুভির মাঝে এটি একটি। মুভিটির ইংরেজী সাবটাইটেলসহ stagevu ডাউনলোড লিংক: Joint Security Area stagevu link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।