মুক্ত আকাশ দেখব বলে বয়ে চলা। আকাশ কেন মুক্ত হয় না। ক’বছর আগের কথা।
আমরা সহপাঠী ৯ বন্ধু, তার মধ্য ৪ জন মেয়ে।
মেয়ে বন্ধুদের কথা একটু বলা প্রয়োজন বোধ করছি-ওরা মিলি, রুপা, সম্পা, নীরা (আসল নাম নয়)।
প্রতিদিন আমাদের সাথে দেখা হয়। মিলি আর নীরার ভালবাসার মানুষ আছে, মানে তারা প্রেম করে।
সহপাঠী হলেও পড়ালেখার আলাপ আমাদের মাঝে কম হতো। শুধু পরীক্ষার আগে দৌঁড়াদৌঁড়ি পরে যেত আর কি! বাউন্ডুলেদের পড়ালেখার আলাপ করতে নেই। তাই শয়তানী হতো প্রতিদিন।
ওদের বালক বন্ধুদের নিয়ে পঁচানো হতো।
যাই হউক তখন ফাইনাল ইয়ারে পড়ছি। এলাকার এক সিনিয়র ভাইয়ের কাছ থেকে হস্তরেখা বিষয়ে তালিম নিয়েছি। কিছু পয়েন্ট ভালই শিখিয়েছেন সেই বড় ভাই। একদিন আমরা ঢা বি টিএসসিতে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম।
সবাই জানে আমি হাত দেখতে পারি কিছুটা। আমাকে পঁচানোর জন্য নীরা সবাইকে চুপ থাকতে বলে-বলল তোকে আমার হাত দেখাব। বলতে হবে আমার কবে বিয়ে হবে।
আমি রাজী হলাম হাত দেখতে।
নীরা হাতটা বাড়িয়ে দিল।
সব বন্ধুদের দৃষ্টি আমার দিকে। আমি ওর হাতের দিতে তাকালাম। এক নজর তাকিয়েই আকাশ থেকে পড়লাম যেন। আমার এলাকার বড় ভাই যা শিখিয়েছে তাতে মনে হলো নীরার বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু কোনভাবেই মিলাতে পারছিলাম না।
নীরার বিয়ে হয়েছে আর আমরা জানবো না এমন হতেই পারে না। তাই কিছুক্ষন চুপ করে রইলাম। কি বলা যায় ভাবছি। বিয়ে হয়ে গেছে বললেই সবাই মিলে ধরবে আমায়।
সাহস করে বলে ফেললাম- নীরা তোর বিয়ে হয়ে গেছে।
নীরার মুখ সাথে সাথেই কালো হয়ে গেলো। চেহারার পরিবর্তনটা সবাই খেয়াল করেছে। বাকী বন্ধুরাও সবাই চুপ। আমি আবারো বললাম নীরার বিয়ে হয়ে গেছে ১০০% নিশ্চিত।
নীরা স্বীকার করলো না।
সবাই আমাকে ক্ষেপাতে লাগলো। আমিও কিছুই বুঝতে পারলাম না। ভাবলাম হাত দেখা ধান্ধাবাজি। কিন্তু আমি আমার অবস্থান থেকে সরিনি। বার বার একি কথা বলছিলাম-ওর বিয়ে হয়ে গেছে।
যাক সেদিন আর আমাদের আড্ডা জমল না। নীরা কেমন জানি চুপ মেরে গেছিল।
এজিবি কলোনীতে বাসায় ফিরেছি। মিলিদের বাসা আমার ৩টা বিল্ডিং পরে। সেদিনি বিকেলে মিলির সাথে দেখা।
বললাম নীরার কবে বিয়ে হলোরে...কিছু কি জানিস?
মিলি আমাকে ধমক দিল—ধুর কি বলছ না বলছ!!
ভাল করে ধরলাম মিলিকে। মিলি স্বীকার করল—নীরা কোর্টে বিয়ে করেছে ১ সপ্তাহ আগে তার ভালবাসার মানুষটাকেই। কিন্তু আমাদের বন্ধুদের মাঝে শুধুমাত্র মিলিই জানে এই কথা-এমনকি মিলির বাসারও কেউ জানে না। নীরা আমাদের কাউকে জানায়নি বলে মন যতটা খারাপ হয়েছিল, তার থেকে বেশী ভাল লেগেছিল এই ভেবে যে আমি অন্ততঃ জীবনে একবার কারো হাত দেখে সঠিক কথা বলতে পেরেছি।
(তার পরেই আসল বিপদে পরেছিলাম।
সেটা না হয় পরের পর্বে বলি)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।