আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এসো নুতন- এসো বৈশাখ- পহেলা বৈশাখের কিছুকথা ও আগামী নতুন বছরটিতে বাজুক সকল বাঙ্গালীর একতার সঙ্গীত-রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ অনিঃশেষ!

শুভ নববর্ষ! বিদায় ১৪১৯। স্বাগতম ১৪২০। বৈশাখ এসেছে নুতনের বারতা নিয়ে। এসেছে নুতন বছর । মুছে যাক সকল পাপ, তাপ, ব্যাথা, বেদনা ও গ্লানি।

আগামী বছরের প্রতিটি মূহুর্ত, ক্ষন ভরে উঠুক আনন্দ, হাসি, গান আর সাফল্যে! নুতন বছরটিকে বরণ করে নেবার প্রয়াসে দিকে দিকে জাগে আজ সেই অতি পুরাতন নুতনের বাণী। এসো হে বৈশাখ এসো এসো তাপস নিশ্বাস বায়ে, মূমুর্ষকে দাও উড়ায়ে ... বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক যাক যাক !! এসো এসো...... এসো হে বৈশাখ এসো এসো........ টাকডুম টাকটুম বাজে বাংলাদেশের ঢোল...... সব ভুলে যাই তাও ভুলিনা বাংলা মায়ের কোল প্রিয় স্বদেশ, প্রিয় মাতৃভূমি, প্রিয় বাংলাদেশ। অন্ন, জল, স্নেহ মমতায় বেড়ে উঠেছি তোমারই কোলে। তোমার প্রতি অকুন্ঠচিত্তে জানাই কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা।

হাজার কোটি, লক্ষ্য উপমায় যার হয়না তুলনা। ধন্য মোদের জীবন। ধন্য এ নশ্বর প্রাণে অবিনশ্বরের গান! বাংলার আলো হাওয়া জল শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির পথ ধরেই আমরা পাই বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা। যে যাই বলুক আর যে দেশেই যাইনা কেনো বাংলার গান, কবিতা, পোষাক আষাক আর ষোলআনা বাঙ্গালীয়ানার মাঝে যে তৃপ্তি, যে আনন্দ তা বুঝি আর কোনো কিছুতেই নেই আমাদের। তাই তো আমরা বাঙ্গালীরা মেতে উঠি বাংলাবছরের প্রথমদিনটিকে বরণ করতে হাসি আনন্দ আর নাচে গানে।

কান্নাহাসির দোল দোলানো পৌষ ফাগুনের পালা তারই মধ্যে চিরজীবন বইবো গানের ডালা প্রায় সকল দেশে, সকল জাতির মাঝেই আছে নতুন বর্ষবরণের সংস্কৃতি। তবে বাঙ্গালীর পহেলা বৈশাখের মত নাচে গানে, খাবারে,পোষাকে আর উৎসবে এমন রঙে রঙিন বর্ষবরণ আর পৃথিবীর কোথাও বুঝি নেই। আপাতদৃষ্টিতে বাঙ্গালীর বর্ষবরণ উৎসব বৈশাখের প্রথমদিনটিতে করা হয় মনে হলেও আসলে তা নয়, চৈত্রের শেষদিনটিতে চৈত্রসংক্রান্তির মধ্য দিয়েই শুরু হয় বাঙ্গালীর প্রাণের এ উৎসবটি। গ্রামাঞ্চলে বছরের এই শেষ দিনে চৈত্র সংক্রান্তি উৎসবে পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে, নতুন বছরের জন্য শুভকামনা জানানো হয়, সুচনা হয় নতুন ভোরের নতুন সূর্য্যদয়ের সাথে সাথে নতুন বছরটির। চৈত্র সংক্রান্তিতে রাতভর গান বাজনা, পালাগানে ভরে ওঠে বাংলার গ্রাম, গঞ্জ, বন্দরগুলো।

ইদানিং শহরেও এই চৈত্র সংক্রান্তি উৎসবের আয়োজন হয়। শহরের মানুষগুলোও নাচে গানে আর উৎসবে বিদায় জানায় বছরের শেষদিনটির শেষ মুহুর্তটিকে। হৃদয় আমার ঐ ঐ ঐ বুঝি তোর বৈশাখী ঝড় আসে আসে...চৈত্রসংক্রান্তির রাত পেরুলেই নতুন ভোরের সূর্য্যদয়ের সাথে সাথে সুচনা হয় বাঙ্গালীর নতুন বছরের। ১৯৬৫ হতে আজ পর্যন্ত রমনার বটমূলে রবিঠাকুরের এসো হে বৈশাখ গানটি গেয়ে ছায়ানটের পক্ষ থেকে নতুন বছরকে স্বাগত জানায় ঢাকাবাসী। এছাড়াও বাংলাদেশের শহর, নগর, গ্রামে দিনভর চলে বৈশাখী মেলা ও নানারকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি, তুমি এই অপরুপ রুপে বাহির হলে জননী- বাংলা বছরের জন্মের কথা শোনা যায় মোগল সাম্রাজের প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহ হুমায়ুনের মৃত্যুর পর ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসেন সম্রাট আকবর । তিনি সিংহাসনে বসার পরই আগ্রা ও দিল্লি দখল করে নেন আদিল শাহ শূরের সেনাপতি হিমু। পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে সেনাপতি হিমু সম্রাট আকবরের কাছে পরাজিত হলে তার এই বিজয় উদযাপন করতে এবং আরও সুবিধাজনক ভাবে খাজনা আদায় করতে সম্রাট আকবর ইলাহী সন চালু করেন। মোঘল আমলে রাজারা খাজনা আদায় করতেন চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী। কিন্তু চান্দ্রবর্ষ প্রতিবছর ১১ দিন করে এগিয়ে যেতো আর কৃষকের খাজনা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়তো।

বাদশাহ আকবর বিজ্ঞানভিত্তিক ও কার্যকর পদ্ধতিতে বছরের হিসাব রাখার কথা ভাবছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি দায়িত্ব দেন সে সময়ের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও জ্যোর্তিবিদ আমির ফতুল্লাহ শিরাজীকে। তার সহযোগীতায় ১৫৮৪ খ্রীষ্টাব্দের ১০ বা ১১ মার্চ সম্রাট আকবর ‘ইলাহী সন’ নামে নতুন এক সন চালু হয়। সে সময়ের কৃষকদের কাছে এটি ‘ফসলি সন’ নামে পরিচিত হয়। পরে এটি ‘বঙ্গাব্দ’ নামেই পরিচিতি পায়।

নতুন এই সালটি আকবরের রাজত্বের ২৯তম বর্ষে চালু হলেও তা গণনা আরম্ভ হয় ১৫৫৬ খ্রীষ্টাব্দের ৫ নভেম্বর থেকে কারণ ওই দিনেই দ্বিতীয় পানিপথের যুদ্ধে তিনি হিমুকে পরাজিত করেছিলেন। বাংলা মাসগুলির নামাকরণের পেছনের ইতিকথা বাংলা মাসগুলির নামকরণ করা হয় বিভিন্ন নক্ষত্রের নামে। বিশাখা থেকে বৈশাখ, জ্যেষ্ঠা থেকে জৈষ্ঠ্য, আষাঢ়া থেকে আষাঢ়, শ্রবণা থেকে শ্রাবণ, ভাদ্রপদ থেকে ভাদ্র, আশ্বিন - অশ্বিনী নক্ষত্রের নাম অনুসারে, কৃত্তিকা থেকে কার্তিক, অগ্রাইহনী থেকে অগ্রহায়ণ, পুষ্যা থেকে পৌষ, মঘা থেকে মাঘ, ফল্গুনি থেকে ফাল্গুন, এবং চিত্রা থেকে চৈত্র। তবে অগ্রহায়ণ মাসের নামের আরেকটি ব্যাখ্যা আছে। অগ্র অর্থ প্রথম, হায়ণ অর্থ বর্ষ বা ধান।

আগে এই মাস থেকেই বছর গণনা আরম্ভ হতো বা এই সময়ে প্রধান ফসল ধান কাটা হতো। আর তাই এই মাসের নাম হয় অগ্রহায়ণ। বাংলা সপ্তাহের দিনগুলির গল্প সবচেয়ে মজার আর আশ্চর্য্য ব্যাপারটা হলো এখন মাত্র সাতটা দিনে হয় এক সপ্তাহ আর এই সাতদিনের নাম প্রতি সপ্তাহে ঘুরে ফিরে আসে। আকবরের সময় মাসের প্রত্যেকটি দিনের জন্য আলাদা আলাদা নাম ছিল। ভাবা যায়! এ কথা শুনে এখন মাথা ঘুরাচ্ছে বটে তবে সম্রাট আকবরের আমলে সেটাই ছিলো নিয়ম।

এত ঝামেলা, এতো কষ্ট দেখে সম্রাট শাহজাহান একজন বিদেশি পণ্ডিতের সাহায্য নিয়ে সাপ্তাহিক পদ্ধতিতে দিনের নামকরণ পদ্ধতি চালু করেন। এ কারনেই ইংরেজি দিনের নামের সাথে বাংলা দিনের বা বারের নামের মিল পাওয়া যায়। যেমন সানডে (ঝঁহফধু) হলো রবিবার। ইংরেজি ঝঁহ (সান) অর্থ সূর্য্য বা রবি। ১৪ই এপ্রিল-ঠিক কবে থেকে উদযাপন শুরু হলো বাংলা নববর্ষ ? তখন ব্রিটিশ আমল।

সবার মধ্যে ব্রিটিশবিরোধী চেতনা গড়ে উঠছে। আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের খবর প্রথম পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে। এরপর আবার পহেলা বৈশাখ উদযাপনের খবর পাওয়া যায় ১৯৩৮ সালে। তবে ১৯৬৭ সনের আগে ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালনের রীতি তেমন একটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি। বাংলা বর্ষপঞ্জি বা বঙ্গাব্দ বাঙালির নিজস্ব সাল হলেও, সারা বিশ্বের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখতে বাংলাদেশের সব জায়গাতেই খ্রিষ্টীয় সন ব্যবহার করা হয়।

১৯৮৮ সালের ১৯ জুন থেকে আমরা বাংলা একাডেমীর সুপারিশ করা পঞ্জিকা গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়। গগণে গগণে ধায় হাকি, বিদ্যুৎবাহী বজ্রবাহিনী বৈশাখী- রমনার বটমূলে বৈশাখ স্বাধীনতা-পূর্ব বাংলাদেশের কথা। সে সময়ের পাকিস্তানি শাসকরা বাঙালি সংস্কৃতিকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছিল। রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান প্রকাশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার প্রতিবাদে ১৩৭৫ বঙ্গাব্দ বা ১৯৬৫ সালে রমনা পার্কে পহেলা বৈশাখ উদাযাপনের আয়োজন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট। রবি ঠাকুরের ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানের মধ্যে দিয়ে স্বাগত জানায় বৈশাখকে।

সেই ধারা আজও অব্যাহত আছে। ১৯৭২ সালের পর থেকেই মূলত এটি জাতীয় উৎসব হিসেবে স্বীকৃত হয়। ১৯৮০ সালে প্রচলন হয় বৈশাখী শোভাযাত্রার। এছাড়া এইদিনে বাংলা একাডেমীসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠানই উদযাপন করে পহেলা বৈশাখ। বৈশাখীমেলা - আমি মেলা থেকে তালপাতার এক বাঁশী কিনে এনেছি পহেলা বৈশাখে নাচে গানে বর্ষবরণের সাথে সাথে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলা।

ছোট বড় নানা রকম বৈশাখী মেলায় সরগরম হয়ে ওঠে বাংলাদেশের শহর, গ্রাম, গন্জ। ঢাকায় বছরের প্রথম সূর্য্যদয়ের সাথে সাথে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয় রমনার বটমূলে। ছায়ানটের শিল্পীরা বৈশাখের আগমনী গান গেয়ে স্বাগত জানান নববর্ষকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের বকুলতলায় একই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-ছাত্ররা মিলে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে।

এদিন শহীদ মিনার, টি.এস.সি এবং চারুকলা সহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পরিণত হয় এক বিশাল জনসমুদ্রে। বৈশাখী মেলায় পাওয়া যায় কারূপণ্য, লোকশিল্পজাত পণ্য, কুটির শিল্পজাত সামগ্রী, সব ধরণের হস্তশিল্প ও মৃৎশিল্পজাত সামগ্রী। এ ছাড়া বাচ্চাদের খেলনা, মাটি, কাঠ, পুঁতির গয়না রকমারি লোকজ খাদ্যসামগ্রী, চিড়া, মুড়ি, খৈ, বাতাসা ও বিভিন্ন প্রকার মিষ্টির বৈচিত্র্যময় সমারোহ থাকে মেলায়। বাঙ্গালীরা বছরের এই প্রথম দিনে খায় পান্তা ইলিশ। শুধু খাওয়া দাওয়াই নয়, এসব মেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকগীতি ও লোকনৃত্য পরিবেশন করা হয়।

সেখানে পালাগান, কবিগান, জারিগান, গম্ভীরা গান, গাজীর গান, আলকাপ গান তো থাকেই, থাকে যাত্রাপালার আয়োজনও, থাকে পুতুল নাচ, নাগরদোলা, বায়োস্কোপ, সাপের খেলা। চুলটানা বিবিয়ানা, সাহেব বাবুর বৈঠকখানা-সাদা লাল শাড়ী পান্জাবী ধুতীতে বিবিয়ানা বাবুয়ানা বৈশাখ সারাদিন টইটই ঘুরাঘুরি, মেলা,পান্তা ইলিশ, মাথার উপরে গনগনে সূর্য্য সবই তুচ্ছ এ বর্ষবরণের আনন্দের কাছে। তবে বাঙ্গালী সাজে প্রকৃতির সাথে মিলিয়ে রঙে রঙিন ও আরামদায়ক সুতী কাপড়ে লাল সাদাকেই প্রাধন্য দেওয়া হয়। রেশমী চুড়ির রিনঝিনি আর আলতা টিপে বাঙ্গালী ললনাদের কলহাস্যে মুখরিত হয় চারিদিক। গ্রামে গঞ্জে কৃষক কিষানীকে উপহার দেয় নতুন ডুরে শাড়ী।

নাকে নোলক আর ডুরে শাড়িতে কিষানী বউটি যখন ভাত বেড়ে দেয় কিষানের পাতে আর হাতে থাকে তালপাখা। গ্রামবাংলার চিরায়ত রুপটি তখন ফুটে ওঠে। হালখাতা অনুষ্ঠান নতুন বছরের প্রথমদিনটিতে ব্যাবসায়ীদের মাঝে হালখাতা খোলা এক বহু প্রচলিত রীতি। সম্রাট আকবরের সময়কাল থেকেই সবাইকে চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল প্রকার খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হত। এরপর দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখের দিন ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদের মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করতেন।

এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হত। এই উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয় যার রূপ পরিবর্তন হয়েই বর্তমানে হালখাতা অনুষ্ঠান। তখনকার সময় এই দিনের প্রধান ঘটনা ছিল একটি হালখাতা তৈরি করা। হালখাতা বলতে মূলত একটি নতুন হিসাব বই বোঝানো হয়। হালখাতা বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাঠের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া।

নতুন বছরের সকল হিসাব-নিকাশ নতুন করে শুরু করা হয় এই হালখাতায়। শহর কিংবা গ্রাম বা বাণিজ্যিক এলাকা, সকল স্থানেই পুরনো বছরের হিসাব-নিকাশের বই বন্ধ করে নতুন বছরের জন্যে হিসাব বই খোলা হয়। হালখাতার দিনে দোকনদাররা তাদের ক্রেতাদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করে। বিশেষ করে বড় বড় সোনার গহনার দোকানে গেলেই পেট পুরে মিষ্টি খাওয়া যায়। ঐ নতুনের কেতনে ওড়ে কালবোশেখী ঝড়, তোরা সব জয়ধ্বনী কর জাতীয় কবি নজরুলের চোখে বৈশাখ যেন তারই মতন অপ্রতিরোধ্য, বাঁধাহীন।

উদ্দাম, উচ্ছলতায় ভাসিয়ে নিয়ে যায় সকল পুরাতন জীর্নতাকে। কালবোশেখীর ঝড়ো হাওয়ায় উড়িয়ে নেয় পাপ তাপ,দুঃখ বেদনা। উদ্দাত্ত কন্ঠে তাই তো কবি গেয়েছেন তোরা সব জয়ধ্বনী কর, ঐ নতুনের কেতন ওড়ে কালবোশেখী ঝড়। নতুন বছরের পহেলা দিনটিতে যত হাসি আনন্দে মেতে উঠিনা কেনো। দূর্বার, দূর্দমনীয় কালবোশেখী ঝড়ের কথা ভুললেও চলবেনা।

এই ঝড়ে মুহুর্তে থেমে যেতে পারে সকল হাসি আনন্দ আর গান। যতটুকু পারা যায় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যদিও মাঝে মাঝে প্রকৃতির কাছে আমরা বড় অসহায় হয়ে পড়ি। জগৎস্রষ্ঠার কাছে জানাই প্রার্থনা, নতুন বছরে প্রতিটি প্রান ভরে উঠুক আনন্দে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতা, হানাহানি সকল কিছু যাক থেমে, নামুক শান্তির বারী ধরণীতে।

ধুয়ে যাক দুঃখ কষ্ট, সকল ক্লেশ। মুছে যাক গত ৪২ বছরের গ্লানিমা। আগামী নতুন বছরটিতে সকল বাঙ্গালীর মুখে মুখে বাজুক একতার সঙ্গীত-রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ অনিঃশেষ! বরিষধরা মাঝে শান্তির বারি শুস্ক হৃদয় লয়ে আছে দাঁড়াইয়ে, উর্ধমুখে নরনারী........... পহেলা বোশেখে সকলের তরে রইলো শুভেচ্ছা ও সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা.......... কৃতজ্ঞতা- ১। বই- বৈশাখ ও আমাদের ঐতিহ্যচেতনা - তিতাস চৌধুরী ২। চৈত্র সংক্রান্তি নিয়ে লেখা ও ছবিতে ভরপুর মহলদার ভাইয়ার ব্লগ( ভাইয়াকে না পেয়ে তার বিনা অনুমতিতে) Click This Link ৩।

আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর বর্ণে ছন্দ ভরপুর চারুকলার চৈত্রসংক্রান্তি Click This Link ৪। চৈত্র সংক্রান্তি http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=6723 ৫। বৈশাখ ছায়ানট http://www.businesstimes24.com/?p=35239 ৬। পহেলা বৈশাখ Click This Link ৭। বৈশাখ Click This Link  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৬৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।