ইদানীং ঘুম ভাঙ্গে সাগর রুনির জিকিরে আর ঘুমাতে যাই সাগর রুনি রুনি সাগর বিচার আচার ইতং বিতং চিৎকারে, চিন্তায়, দুশ্চিন্তায়। তারপর ঘুমের ভিতর দুঃস্বপ্ন দেখি। আমি ঠিক শিওর না আমি ঘুমাই নাকি ঘুমের ভান করে পড়ে থাকি। যদি ভান করি তো কার সাথে? মনে হয় নিজেকে নিজে নিশ্চিত করি এই বলে যে, আমি এতক্ষন ঘুমিয়ে ছিলাম। ফ্রেশ ঝরঝরে ঘুম আমার হয়েছে।
তাই আমি ক্লান্ত নই। আমার উচিত নব যৌবন নিয়ে দিন শুরু করা। কেউ যেন ঠিক তখন-ই কানে কানে মনে করিয়ে দেয়, এই জ্যাক রাতে কি সত্যি- ই তুমি ঘুমিয়েছো? না ঘুমাওনি একটু ও। দেখ তোমার মাথা ঝিম ঝিম করছে, কি করছেনা ? আবার নিজেকে সান্তনা দেই- এই বালের মাথা তো সারাক্ষন-ই ঝিম ঝিম করে। ঘুমালেও করে না ঘুমালেও করে।
এই মাথাটাকেই মাঝে মাঝে নিজের শত্রু মনে হয়। সে সব কিছু যত্ন করে মনে রাখে। যেসব জিনিস ভুলে গেছি বলে নিজেকে সার্টিফিকেট দেই সে গুলো গাছের চারার মতো নতুন করে গুড়ি মেলে আর আমি বিরবির করি।
সাগর রুনি খুনের ১০০তম দিন সেই কবে পেরিয়ে গেছে। তবু আধ্যাত্মিক সেই ৪৮ ঘণ্টা আর শেষ হয়না।
কবে যেন ওই কুৎসিত মহিলাটা বলল, তার লোমের ৪৮ ঘণ্টা সাংবাদিকরা উল্টা করে বর্ণনা করেছে। আবারও দোষ সাংবাদিক সমাজের। তারা-ই দিনকে রাত আর রাতকে দিন করছে। আমারও তাই বিশ্বাস। আমি তো আর সাংবাদিক কিংবা পুলিশ নই।
এই দুইটা শ্রেণীকে ব্যক্তিগত ভাবে ঘৃণা কিংবা ভালোবাসার অধিকার আমার রয়েছে। কিন্তু আমি কথা শুরু করেছিলাম একটা অবুঝ শিশুর সামনে তার মা বাবার নৃশংসও হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে যা সারাক্ষন আমার অনুভুতিকে কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। হত্যাকাণ্ডের এতদিন পর শিশুটি যখন তার মা বাবাকে নিয়ে নতুন কুৎসিত গল্প গুলো শুনল তখন না জানি তার হৃদয়টা ফেটে কেমনে চৌচির হয়ে গিয়েছিল। এ টি এনের মালিক হঠাৎ কেন আগনে ঘি ঢেলে দিলেন বুঝতে পারলাম না। যা বুঝলাম তা হল জীবিত মানুষকে মৃত বানিয়ে ফেলার পুরনো একটি কৌশল এটি।
সাগর রুনি ব্যক্তিগত জীবনে কি করতো তা ( সত্য কিংবা মিথ্যা ) প্রচার প্রকাশ এর সাথে একটা শিশুর মৌলিক অধিকার প্রাপ্তির কি সম্পর্ক থাকতে পারে? আমার মাথায় আসেনা। শেখ হাসিনা যখন তার বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাইলো তখন কি কেউ এদেশে এর বিরোধিতা করেছিল? খুব সম্ভবত না। তাহলে খুদে মেঘের চোখের সামনে যে হত্যাকাণ্ডটি ঘটল সে কেন বিচারের স্থলে বদনাম শুনতে হবে? আমি প্রায়-ই ভাবি যদি কোনোদিন কারো হাতে খুন হয়ে যাই তো তখন আমার বাচ্চার প্রতিক্রিয়া কি হবে? এসব ভাবনা আমাকে আরও আতঙ্কিত ও অস্থির করে তোলে। নিজেকে প্রবোধ দেই, বাদ দাওনা রে ভাই। এদেশে এসবের কোন বিচার হবেনা ।
এটা মানুষের দেশ না। এটা জন্তু জানোয়ারের দেশ। আমার মতো সব পশুরাই এখানে বসবাস করে। আর নিয়ম চলে জঙ্গলের। মুরগি চাল খায়- বিড়াল মুরগি খাবে-কুকুর বিড়াল খাবে-বাঘ কুকুর খাবে আবার জলে কুমির বাঘ খাচ্ছে।
এমন একটা পুরপুরি ইকোসিস্টেম গড়ে উঠেছে এখানে। কোন আচার বিচার কিংবা নিয়ম কানুনের দরকার নেই। জোর যার মুল্লক তার। যে যাকে যেখানে সুবিধা মতো পাও তাকে সেখানে-ই বধ করে রেখে এসো। তাহলে তুমি-ই এই সমাজে বীরের খেতাব পাবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।