আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অ্যালোপ্যাথিক মেডিসিনের উদ্ভব এবং এরপর ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিজ্ঞান

ইতিহাস সম্পর্কে জানতে গেলে একটি বিষয় খুব স্পষ্ট হয়ে উঠে, বিষয়টি হচ্ছে রাজনীতি। কোনো জাতির শিক্ষা-সংস্কৃতির বিকাশ তার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। রাজনৈতিক ধারা সুস্থ হলে সেই জাতি যেমন পৃথিবীর বুকে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখতে পারে ঠিক তার বিপরীত ঘটনাটি ঘটে যখন কোনো সমাজে অসুস্থ রাজনীতির চর্চা ঘটে। ইসলামের আবির্ভাবের পরে মুসলমানদের রাজনৈতিক কাঠামো অত্যন্ত কঠোর ছিল। সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা তাদেরকে পৃথিবীর বুকে অনন্য জাতি হিসেবে অসুস্থ রাজনৈতিক চর্চাকারীদের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে থাকে।

তৎকালীন সময়ে মুসলমান অধ্যুষিত দেশ ও শহর গুলোতে শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্রমবিকাশ ছিল চোখে পড়ার মত। ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞান মুসলমানদের বা আরবীয়দের মাধ্যমে সর্বাধিক বিকাশ লাভ করে বিধায় একে গ্রীকো-অ্যারাবিয়ান চিকিৎসা পদ্ধতিও বলা হয়ে থাকে। উল্লেখ্য, মুসলমাগণ উপমহাদেশে শাসনকালে আয়ুর্বেদের বিভিন্ন বিষয় ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞানে অন্তর্ভুক্ত করে যেমন- ত্রিফলার অর্থাৎ আমলকী, হরিতকি ও বহেড়ার সমষ্টিগত ব্যবহার। প্রাচ্যে বাগদাদ আর পাশ্চাত্যে কর্ডোভা ও টলেডো এ সময়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে খ্যাতি লাভ করে। ইতিহাস মতে, ১০৭৫ সালে যখন খ্রীষ্টানগণ মুসলমানদের থেকে টলেডো জয় করে নেয় তখন থেকে শুরু হয় ইউরোপীয় বা অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের পথচলা।

ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞানের বইগুলো এ সময় ইউরোপীয় ভাষাগুলোতে অনুবাদ করা হয়। এ সকল অনুবাদ করা গ্রন্থ ১৮৫০ সাল পর্যন্ত মাউন্ট পিলার, বোলংগা, প্যরিস, পাডোয়া, অক্সফোর্ড, ক্যামব্রীজ প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যক্রমভুক্ত ছিল। এরপর শুরু হয় পৃথিবীর ইতিহাসে এক নতুনতম অধ্যায়। ক্রমাগত বৈজ্ঞানিক গবেষণা আর তথ্য প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার অ্যালোপ্যথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানকে করে আরও মানসম্মত ও আধুনিক। বৃটিশদের মাধ্যমে অ্যালোপ্যথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপমহাদেশে আগমণ ঘটে।

তাদের শক্ত রাজনৈতিক অগ্রগতির সাথে সাথে প্রসার পেতে থাকে তাদের চিকিৎসা বিজ্ঞান আর এদেশীয় চিকিৎসা বিজ্ঞান হয় নিজ ঘরে গৃহবন্দী। শুরু হয় অপপ্রচার এবং প্রায় রুদ্ধ হয়ে যায় ইউনানী ও আয়ুর্বেদের গবেষণা ও প্রসার। যারা এই চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ধরে রেখেছিলেন তারা অপেক্ষা করছিলেন সঠিক সময়ের। এরপর আসে ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৬৯ আর ১৯৭১ জন্ম হয় স্বাধীন বাংলার। রাজনৈতিক অবস্থার ক্রম পরিবর্তনের সাথে সাথে হতাশার মাঝে দেখা যায় আশার আলো।

উপমহাদেশের গুটিকয়েক ইউনানী ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণের নিরলস চেষ্টায় গঠণ হয় ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক বোর্ড। বৃটিশ শাসনের শুরু থেকে নানান প্রতিকুল অবস্থার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে আজকের এই অবস্থানে আছে ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিজ্ঞান। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।