আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হলে বসে দেখা দি স্পিড

........ সেই মে মাসের ২০ তারিখের প্রাক্কাল হতেই আমার ছোট ভাই “দি স্পিড” দেখিবার জন্য ঘ্যানর-ঘ্যানর করতেছিল । আমি বলেছিলাম, পূরবীতে আমি যাব না, আমার “ডর” লাগে । কিন্তু তারপরও তার ঘ্যানর ঘ্যানর থামেনাই । যাই হোক, এক কাজিনের বিয়ে উপলক্ষে জুনের ২ তারিখে ঢাকা আসতেই হল । ঢাকা এসে ছোটভাইয়ের “দি স্পিড” দর্শনেচ্ছা নতুন করে চাগার দিয়ে উঠল ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বসুন্ধরা সিটি নাকি আমাদের আত্মীয়ের বাসার খুব কাছেই । এইবার আমাদের পায় কে??? পরেরদিন সকালে প্ল্যানমত রিকশা চেপে খালুর দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী বসুন্ধরা সিটির পেছন দিকে বেসমেন্ট দিয়ে লিফট, লিফট থেকে সোজা আটতলায় । এরপর টিকিট কিনে ২০-২৫ মিনিট একটু ঘোরাঘুরি করে যথাসময়ে ১ নাম্বার হলের এইচ-৫ ও এইচ-৬ সিট দুইটা আমরা দুইভাই দখল করলাম । হলের সিট হইল "ঘেউ ঘেউ" এর লেঞ্জার মতন! ধইরা/ বইসা নামাইতে হয় । সিট ছেড়ে উইঠা পড়লেই আবার আগের মত হয়ে যায় ।

ফিল্ম শুরু হওয়ার কথা ১০টা ৫০ মিনিটে । এর কিছুক্ষণ আগেই পর্দা চালু হয়ে গেল । প্রথমেই দেখানো হল বসুন্ধরা বেবী ডায়াপারের এড!!! আমরা বসে বসে ভাবছি, এটা কি মুভি সম্পর্কে কোন ইঙ্গিত-টিঙ্গিত ছিল নাকি??? যাউজ্ঞা, এরপর কিছু আবজাব এড দেখানোর পরে জাতীয় সঙ্গীতের সময় সবাই দাঁড়াইলাম, এরপরে শুরু হইল আসল ফিল্ম । আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকলাম । হলের দর্শকের মধ্যে বেশিরভাগই আধুনিক পুলাপান ।

মনে হয়, সবাই আমাদের মত হাসতেই গেছিল । ফিল্ম শুরু হইল বিশিষ্ট ব্যবসায়ী অনন্য(এম এ জলিল অনন্ত) সাহেবের ড্রিল পর্ব দেখায়ে, দৌড়ের স্পিড ১৬ কিলোমিটার(যদিও স্পিড দেখে মনে হইছিল আরো বেশি) । এরপর নানা ভগি চগি দেখানোর পরে অনন্য সাহেবকে এক বেকার যুবককে চাকরি দিতে দেখা গেলো । কাছাকাছি সময়ে যখন দৃষ্টি(দীঘি) ও তার হস্তিনীসদৃশ দুই পরিচারিকাকে পর্দায় দেখা যেতেই হলের সবার মাঝে হাসির হুল্লোড় পরে গেল । ওদিকে কিবরিয়া সাহেব “অনন্য-সিন্ড্রোম” এ ভুগতে ভুগতে পেপার টেপার সব ছুঁড়ে ফেলে দেন ।

অনন্য সাহেবের সাফল্যে ব্যতিব্যাস্ত হয়ে কিবরিয়া অনন্যকে বালিশ ছাড়া শোয়ায়ে দেবার পরিকল্পনা করতে থাকল । এমন সময় খলনায়ক ডনের আবির্ভাব । এমন কিম্ভূতকিমাকার বেশে ডনকে লুজ থুড়ি স্লো-মোশনে আসতে দেখে হলের লুল-সুশীল নির্বিশেষে কেঁপে কেঁপে হাসতে লাগল । ডন অপমানিত হয়ে নেতাকে খুন করে । কিবরিয়া খান ডনকে অনন্যকে খুন করার তালগাছ থুড়ি “সুপারি” দেয় ।

অনন্য রুপী অনন্তের “পাওয়ার” সম্পর্কে ডনের অজানা ছিল না । তো ডন ডিরেক্ট রকেট লাঞ্চার নিয়ে বৃষ্টিভেজা রাতে অনন্যরে দিয়ে “লাঞ্চ” করতে অনন্যা থুক্কু অনন্যের গাড়িবহরে হামলা করে । এমন সময় শুরু হয় হল-দর্শকদের বহুল আকাঙ্খিত “দি জলিল মোমেন্ট” । বৃষ্টির মাঝে যখন অনন্য যখন কোট খুলল, তখন পোলাপানের হাসি থামায়(তালিও পড়ছিল বোধহয় সেই সময়ে) । ডন ব্রাজিলের জার্সি গায়ে দিয়া কিবরিয়া সাহেবের ঘরের ভিতরে আছড়ায়া পইরা পটল তুলে ।

এমন সময় অনন্যর ডায়লগবাজি শুরু……নানা কথার পর “নীতিবানরা দুর্নীতিবাজদের চ্যালেঞ্জ করে না্, থ্রেট করে……” । অনন্য গটগট করে চলে গেল । অনন্য সাহেবের ভাতিজির চাচ্চুর উপর গোসসসা করলে চাচ্চু অনন্য বিভিন্ন হাবিজাবি গল্প বলে ভাতিজিকে হাসায়(এই গল্প বলার সময়ে নায়কের এক্টিং কিন্তু খুব একটা খারাপ হয়নাই) । যাই হোক, ভাতিজির রাগ ভাঙ্গানোর পর ঢাকার রাস্তায় “চাচ্চু তোমার নেই তুলনা………” গানটা কিন্তু ভালোই দাঁড়িয়েছে । এর কারণ হল দীঘির সপ্রতিভ অভিনয় এবং পরিচালক সোহানুর রহমানের পরিচালনা ।

এই মুভিটিতে একটা জিনিস খেয়াল করলাম, যখনি কোন সিকোয়েন্সী দর্শক মগ্ন হতে থাকে ঠিক তখনি অনন্ত জলিলের এক-একটা মার্কামারা এক্সপ্রেশনে মানুষজন হাসতে হাসতে অস্থির হয়ে যায় । যাই হোক, হাসি-ঠাট্টার মাঝ দিয়ে আমরা হলের দর্শকরা মুভির বাকি কাহিনীতে মনোনিবেশ করি । কিবরিয়া সাহেব(আলমগীর) অনন্যকে সাইজ করার জন্য এনড্রু(নিনো) কাজে লাগানোর ট্রাই মারিলেন । নিনো অনন্যরে গিয়া কইল, “আস মামু, মিল্ল্যা-ঝুইল্ল্যা পুংটামি করি!” কিন্তু অনন্য কৈলেন, এন্ড্রু ওরফে এনায়েত হইল বাংলাদেশী শূটার যে কিনা প্রতিযোগিতা থেকে পলায়ে স্মাগলিং আরম্ভ করে । আরো বিভিন্ন কথাবার্তার পর চখাম সেই ডায়লগ, “আই নো, বাট ইউ ডোন্ট নু মাই ডিটেইলস!!!” মানুষজন আবারো বিনোদিত হওয়া খতম না হইতেই নায়িকার আগমন ।

নায়িকাকে দেখে হলের লুলদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি হয়ে গেল । নায়িকা সন্ধ্যা(পারভিন) হল অনন্তের অফিসের একজন কর্মকর্তার বোন । সন্ধ্যাকে এয়ারপোর্ট থেকে নিয়ে আসার সময় সন্ধ্যার ভাইয়ের মুখে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্যে বর্তমান সরকারের মর্তমান প্রচেষ্টার কথা বলতেই হলের ইয়াং পুলাপানেরা হাত মুষ্টিবদ্ধ করে বুড়া আঙ্গুল নিচের দিকে পয়েন্ট করে সুন্দরভাবে “দুয়ো” দিল । যাই হোক, একপর্যায়ে নায়িকা অনন্যের স্মার্টনেস(!), ব্যবসার প্রতি দায়িত্ববোধ, শ্রমিকদের প্রতি মমত্ববোধ ইত্যাদি দেখে অনন্যের প্রেমে পড়ে যায় সন্ধ্যা(এতেই প্রমাণ হয় পারভীন একজন ভাল অভিনেত্রী!!!) এইসময়ে সন্ধ্যা কল্পনা করে অনন্যের সাথে সে নেচে নেচে গান গাইছে! আহা! কি সেই গান! “আমি রোমিও!!! তুমি জুলিয়েট!!! প্রেম করিতে আজ……করব নাকো লেট!!” যাই হোক, মসলা সং হিসেবে গানটা খারাপ না……যেই দর্শকেরা গানটার প্রশংসা মনে মনে করতে শুরু করেছে ঠিক এমন সময়েই নায়ক সামনের দিকে বেঁকে ২ আনার আবেদনের সাথে ১৪ আনা ধনুষ্টংকার মিশিয়ে একটা ভঙ্গি করতেই ভসভসিয়ে পেট থেকে উঠে এসে দর্শকদের দন্ত-ব্যাদানে অনূদিত হৈল । যাউজ্ঞা, গান শেষ হওয়ার পর নায়িকা অনন্যের মন জয় করার মিশনে নামে ।

ভাইকে বলে চাকরি জুটিয়ে নেয় অনন্যের অফিসে । একদিন অনন্য মিটিং্যে ব্যস্ত থাকলে অনন্যের দৃষ্টিকে আনার জন্য স্কুলে যায় সন্ধ্যা । দৃষ্টি বায়না ধরে, তাকে ওয়ান্ডারল্যান্ড নিয়ে যেতে হবে । ওয়ান্ডারল্যান্ডে খেলতে খেলতে দৃষ্টি দেখতে পায় এক মা তাঁর সন্তানের মাথায় চুমু দিচ্ছে । সন্ধ্যা চট করে বুঝে ফেলে দৃষ্টির মন খারাপ হওয়ার ব্যাপার, আর বুঝেই দ্রুত দৃষ্টিকে ঐ মায়ের মত করে চুমু দিয়ে বলে, “চলো, আমিও খেলব তোমার সাথে……”(এই অংশটা ব্যাক্তিগতভাবে আমার ভাল লাগছে, কারণ পারভীন আর দীঘি দুইজনই অভিনয় জানে……) ।

ভাল লাগা দূর হতে বেশি দেরি হল না । দৃষ্টির স্কুলে তাকে না পেয়ে অনন্য সবখানে খোঁজ লাগায় । পরে দৃষ্টি ফোন করে জানালে নায়ক অনন্য জলিলের মার্কামারা এক্সপ্রেশন আরেকটা জলিল মোমেন্টের অবতারণা করে । দৃষ্টিকে আনতে যখন অনন্য অফিসের বাইরে যায়, তার রুমের বাইরে নিউইয়র্কের সময়ওয়ালা একটা ঘড়ি ছিল । কিন্তু পর্দায় দেখা গেছে ঘড়িটা আসলে নষ্ট ।

ঘড়ির কাঁটা ৬-৪৫ এর দিকে আটকে ছিল । আর অনন্যর সাথে সন্ধ্যার একটি কথোপকথনের সময় নায়কের চুল একবার বড় আরেকবার ছোট দেখাচ্ছিল । যাই হোক, এরপরে সামান্য টেনশনের পর অনন্য-সন্ধ্যার বিয়া হয়ে গেল । বাসররাতে অনন্য-সন্ধ্যা(দুইজনেই এক ব্র্যান্ডের লিপ্সটিক লাগাইছে কিনা কে জানে???) বাসরঘরে ঢুকে দেখে দৃষ্টি ঘুমিয়ে আছে । নিজেদের মধ্যে দুই একটা সোহাগের কথা বলে ইনভল্ভ হওয়ার চেষ্টা করতেই দৃষ্টি বলে, “এই তোমরা কি করছ???”……পাবলিক হাসাহাসির জন্য প্রস্তুত হয়ে নিল ।

পরে অনন্য দৃষ্টিকে ঘুম পাড়িয়ে চলে আসার সময় বলল, “মামণি, ঘুমিয়ে পড়……” একটু পরে বিটলা ভাতিজী দৃষ্টি কৈল, “তোমরাও তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড় কিন্তু……” এই সংলাপ শুইনা পুলাপানের আনন্দ দেখে কে! হাসাহাসি আর হাততালি থামতে থামতেই বাসরঘরে বর-কনের মুচড়ামুচড়ি শুরু হইল, অনন্য সন্ধ্যাকে বিছানায় ছুইড়া দিল……অনন্য মুখ ঢেকে শুয়ে পড়ল……হলের পাবলিক রিএকশানের কথা আর কি বলব??? অনন্যের কপালে সুখ বেশি দিন সইল না । কিবরিয়া খানের লুল পাট্টির আক্রমণে ভাতিজী মরল । দৃষ্টি মরলে পরে শুরুর চাচা-ভাতিজির গানটা থেকে সাদা-কালো ফ্লাশব্যাক দেখানো শুরু হইল । আমরা দর্শকরা যেই একটু একটু করে সিরিয়াস হতে শুরু করেছি এমন সময়েই আচমকা ফ্লাশব্যাক খতম আর অনন্য বিকট একটা এক্সপ্রেশন দিয়ে ভেউ ভেউ করে কাঁদতে(অথবা কাঁদার শব্দ) করতে লাগলেন । পাবলিকের মাঝে আরো এক প্রস্থ হাসাহাসি হয়ে গেল ।

এই পরিস্থিতিতেও কেউ যখন দর্শকদের হাসাতে পারে তার কৌতুক প্রতিভার প্রশংসা করতে হয় বৈকি । যাই হোক, এর পরে ভাতিজী-বিয়োগ সামলে উঠার জন্য অনন্য-সন্ধ্যা মিলে মালয়েশিয়া গেল । সেখানে সন্ধ্যা কিডন্যাপ হয়ে গেল আর অনন্য বুলেট-ভোজন করিল । হাসপা্তালে চিকিতসা নেয়ার সময় একটি সিডি পাইল অনন্য । সেখানে দেখিল, অল্প অক্সিজেন ওয়ালা একটা ঘরে তার বিবিকে আটকে রাখা হয়েছে ।

একটু একটু করে অক্সিজেন কমবে, ৩দিনে অক্সিজেন শেষ হয়ে যাবে আর ৫দিন পরে এই ঘরটা ধ্বংস হয়ে যাবে । এই থিওরি ছোটভাইয়ের কর্ণগোচর হইলেই সে বোকার মত বলল, খাইসে! ৩দিনে অক্সিজেন শেষ হওয়ার পরে আরো দুইদিন অক্সিজেন ছাড়া থাকবে নায়িকা! নায়িকা তো বড়ই রজনীকান্ত! এহেন ফাজলামি দেখে কি বলব বুঝতে না পেরে বাকি ফিল্মে মনোনিবেশ করলাম । এরপরে বিরহ শুরু । বিরহের গানে যেই অনন্ত সাহেবের এক্টিং একটু একটু করে ভাল হৈতেছে একেবারে ঠিক এই সময়েই একটা ফ্লাশব্যাক দেখায়ে পাবলিকদের আবারো হাসানো হল । ফ্লাশব্যাকে বাসরঘরে দুইজনের দৌড়াদৌড়ি আর মুখ ঢেকে শুয়ে পড়া- এই কথা মনে করে অনন্তের করুণ(!) এক্সপ্রেশন দেখে পাবলিক “আহারে!” বলে কেঁপে কেঁপে হাসতে লাগল……আমিও দাঁত কেলাতে বাধ্য হলাম ।

যাই হোক গান শেষ হল । কথায় আছে দুঃখের পরে সুখ আসে । এইখানে বিরহের পরে আইল “ঝাকানাকা”……ইয়ে মানে রাশিয়ান ২য় নায়িকার কথা কৈতেছিলাম আর কি! ২য় নায়িকাকে “খামান বেইবি” গুন্ডারা এটাক করলে পরে আরেকটি জলিল মোমেন্ট তৈয়ার হয় । অনন্য “ইশটপ!” উচ্চারণ করতেই হু হা হি হি!......হলের বিটল শ্রেণী “ইশটপ! ইশটপ!” বলিয়া হাসতে লাগল । যাই হোক, এরপরে ক্রিস্টিনা-অনন্যের মাঝে মৈত্রী চুক্তি হৈল ।

কথা হল, যে ক্রিষ্টিনা অনন্যকে সাহায্য করবে । ঐদিকে কিবরিয়া পার্টি উদ্ভট স্টাইলে ফুর্তি করতেছে । দুইটা লেসবিয়ান মার্কা নর্তকী ও কিবরিয়া সাহেবের সিগারেট না খেয়ে খালি শুঁকার ব্যাপারটা মানুষজনকে পীড়া দেয়া আরম্ভ করল । পুলাপান “ধরা! ধরা!” বলে নির্দেশনা দেয়া শুরু করল । কাছাকাছি সময়ে একটা আইটেম গানে নেচে(ক্যামেরাম্যানের নাচনেওয়ালীদের পেটের দিকে এত আগ্রহ কেন বুঝলাম না)……অনন্যকে “আই লাব্বু অনন্য!” বলে পটল তুলে ক্রিষ্টিনা ।

অনন্য কিবরিয়ার ঘাঁটিতে দৌড় লাগায় । কিবরিয়ার ঘাঁটিতে যাওয়ার আগে যথাযথভাবে সাজগোজ করতে থাকে অনন্য । তার খালিগা দেখে দর্শকরা হেসে উঠে । আয়নার সামনে জামা পড়ার সময় বুক-বগল দেখা গেলে কয়েকজন মহিলা দর্শককে “ছি! ছি!” বলতে শুনেছি মনে পড়ে……ব্যাপক ভাব নিয়ে কিবরিয়ার ডেরায় যায় অনন্য । অনন্যর আসার খবর টের পেয়ে এন্ড্রু পালাতে থাকে ।

কিন্তু কিবরিয়া না পালানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় । এই সময় বাইরে গোলাগুলি টের পেয়ে কিবরিয়া ব্যবস্থা নেয় । ঢিচকিয়া! ঢিচকিয়ার পর চার নম্বর ভিলেন এন্ড্রুর রেটিনা স্ক্যান করে অনন্য । এরপর কিবরিয়ার খোঁজ করতে করতে সিগারেট ধরানো অবস্থায় কিবরিয়াকে দেখতে পায় অনন্য । সিগারেট অবশেষে ধরানো হয়েছে দেখে পাবলিক অকৃপণতার সাথে হাততালি দিল ।

যাই হোক, একপর্যায়ে কিবরিয়া আত্মহত্যা করলেন । শেষদিকে একেবারে “আলিফ লায়লা” মার্কা একটা এন্ডিং হল । শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে থেকেই পুলাপান “ইশটপ! ইশটপ!” বলে চিলাচ্ছিল । হল থেকে বের হওয়ার পরে ভাই জিজ্ঞেস করল, “আমার চোখ কি বান্দরের মত লাল?” বুঝলাম, মুভি দেইখা একটু হ্যাং ওভারের মত হইছে । এর পরে বসুন্ধরার এক্সেলেটর দিয়া নামতে নামতে নানা দোকান দেখলাম ।

ঐ দেখা পর্যন্তই, পকেটে আমার তখন ৫০টাকাও ছিলনা । এরপরে আবারো বেসমেন্ট দিয়া বের হয়ে রিকশা দিয়ে ফার্মগেটে চলে আসলাম । পরে দেখি, যেই ফ্রিটিশার্ট টা দিছে সেইটা হইল “Rise Of The Planet Of The Apes- Evolution Becomes Revolution” । আমি ছোটভাইকে বললাম, “এইটা কি আমাদের দেখা মুভিটার সাথে “বিশেষ” সম্পর্কযুক্ত নাকি তোমার চেহারা দেইখা দিছে??” সে তেমন কিছু বলল না । মুভিটির সবচেয়ে বড় অসঙ্গতি অনন্ত জলিলের অভিনয় ।

এই কারণে মুভিটা কমেডি হয়ে গেছে । বাকি সবার অভিনয় ভালোই ছিল । আলমগীরকে বার বার সিগারেট না শুঁকালেই বোধহয় ভাল হত । কারণ তাঁর অভিনয়ই সবচেয়ে মাপা ছিল । দীঘি, পারভিন ভালোই করেছে ।

মুভিতে কিছু টুইস্ট দিলে মুভিটা আসলেই জমে যেত । সেটা নিচে বলছি । যা টুইস্ট দেয়া যেত মুভিটিতেঃ সন্ধ্যা ও এন্ড্রু পি আই এ এর প্লেনে আসে কেন? যদি দেখানো যেত সন্ধ্যার ভাই, সন্ধ্যা , এন্ড্রু তিনজনেই কিবরিয়ার সেট আপ, আর শেষে যদি ২য় নায়িকার সাথে মিলিয়ে দেয়া হত, সন্ধ্যা মাফ চেয়ে অনন্যকে বাঁচিয়ে মারা যেত , তাহলে কিন্তু অনেকেই এই সামান্য টুইস্টের জোরেই মানুষজন অনেক কিছু ভুলে যেত । (এটা আমার আপাতত বিদায়ী পোস্ট । বেশ কয়েকমাস আমি আর নতুন লেখা দিবনা ।

মাঝে মাঝে এসে কমেন্ট করতে পারি । সবাইকে ধন্যবাদ । ভালো থাকবেন সবাই । ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।