লোকালয়ে মোর আলয়, তবু বাস করি অন্যলোকে হ্যাপীকে কি মনে পড়ে?
খবরটা আজ কাগজে পড়ছিলাম। সারাদিন ভাবছি। ভাবছি আর আপুকে দেখছি। সাতটি বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ঠিক আমারই মত একটি মেয়ে।
হল এর লাউঞ্জে আপুটার একটা ছবি ঝোলানো আছে।
কেমন যেন নির্বাক চোখে চেয়ে থাকেন। আমিও মাঝে মাঝে অপলক চেয়ে থাকি তার বিষন্ন ছবিটার দিকে, ধীরে ধীরে তার চোখের ভাষা যেন বুঝতে পারি।
হয়তো বলতে চান, আমিও তোমাদের মতই এমন উচ্ছ্বল, প্রানোবন্ত একটি মেয়ে ছিলাম। এভাবেই বান্ধবীরা মিলে দল বেঁধে টিভি দেখতাম, রিমোটের দখল নিয়ে লড়াই করতাম, ক্যারাম খেলতাম, হাসতে হাসতে এ-ওর গায়ে লুটিয়ে পড়তাম।
কিংবা এখন মাঠের যেখানটায় আমার নামে স্মৃতিস্তম্ভটা আছে সেই জায়গায় ঘাসের উপর শুয়ে শুয়ে গভীর রাতে তারা দেখতাম।
শুধু কি তারা? স্বপ্ন দেখিনি বুঝি?!
আমার স্বপ্নের আকাশ যে ছিল ওই মহাকাশের চেয়েও বড়। অসংখ্য তারার মত জ্বলজ্বলে আমার স্বপ্নগুলো। অনেক পথ পাড়ি দিয়ে এই সবুজ প্রান্তরে এসে পৌঁছেছি। আর একটা স্বপ্ন বাকি........
আর দূরে নয়.......
আকাশে তাকিয়ে, ওই বড় কড়ই গাছটার তলায় বসে, অথবা সুপুরির সারিওয়ালা সরু পথটি ধরে হাঁটতে হাঁটতে আমি কত কিছু ভাবতাম! ঠিক তোমরা যা যা ভাবো আজ।
জানো, তোমাদের ছুটোছুটি দেখতে খুউব ভালো লাগে! কী ছটফটে, দুষ্টু তোমরা! কিন্তু পরক্ষণেই ভয়ে অস্হির হয়ে যাই......আমার মত তোমরাও হারিয়ে যাবে না তো?
প্রচন্ড কষ্ট হয় সেই মুহূর্তটার কথা ভাবলে, জানো? কষ্টে আমি নীল, বেগুনি, আর ছাই হয়ে যাই।
তাই তো ছবি থেকে হাসিটা মিলিয়ে যায়.....ভ্রু জোড়া কুঁচকে যায়......আমি ছোট্ট একটা প্রাণহীন মূর্তি হয়ে ঝুলতে থাকি তোমাদের লাউঞ্জের দেয়ালে।
যেখানে একদিন আমার অস্তিত্ব ছিল প্রচন্ড সজীব। আমি, হ্যাপি হিসেবে, ঝলমলে প্রাণোচ্ছ্বল একজন তরুনী হিসেবে, শুধু একটা ফ্রেমে বাঁধানো ছবি হয়ে নয়।
চাইনি কখনো ছবি হতে! চাই না তোমরা আর কেউ আমার পাশের জায়গাটা দখল কর...... ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।