আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মৃত মা-বাবার জন্য করণীয়

জানার আগ্রহ মানুষের চিরন্তন, বই হলো তার বাহন, আইনের মৃত্যু আছে কিন্তু বইয়ের মৃত্যু নেই। মা-বাবা দু’টি ছোট শব্দ, কিন্তু এ দু’টি শব্দের সাথে কত যে আদর, স্নেহ আর ভালোবাসা রয়েছে, তা পৃথিবীর কোনো মাপযন্ত্র দিয়ে নির্ণয় করা যাবে না। এ জন্য আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর আমি মানুষকে তার মা-বাবার ব্যাপারে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে; সুতরাং আমার ও তোমার মা-বাবার শুকরিয়া আদায় করো।

প্রত্যাবর্তন তো আমার কাছেই। ’ [সূরা লুকমান : ১৪]। মা-বাবা দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার পর তাদের জন্য কী আমল করতে হবে সে বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছেÑ ‘আবু আছিদ মালিক ইবনে রাবি’আ রাদি আল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা একদা রাসূল্ল্লুাহ সা:-এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম এ সময় বনি সালামাহ গোত্রের এক লোক আগমন করে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল সা. আমার মা-বাবার জন্য কি এমন কিছু করণীয় সদাচরণ আছে, যা আমি তাদের মৃত্যুর পরও করতে পারি? উত্তরে প্রিয় নবী সা: বলেন : হ্যাঁ আছে। আর তা হচ্ছে, তাদের জন্য দোয়া করা, মা প্রার্থনা করা। তাদের চলে যাওয়ার পর তাদের কৃত প্রতিশ্র“তি ও অঙ্গীকার পূরণ করা, তাদের বন্ধুবান্ধবদের সম্মান করা এবং তাদের মাধ্যমে যে আত্মীয়তার সম্পর্ক হয়েছে তা রা করা।

’ [সুনান আবু দাউদ : ৫১৪৪]। জানাজার সালাত আদায় করা : মা-বাবা দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার পর সন্তান মা-বাবার জন্য দ্রুত সালাতুল জানাজার ব্যবস্থা করবে। এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে, ‘আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, রাসূল্ল্লুাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা দ্রুত জানাজার ব্যবস্থা করো। ’ [সহিহ বুখারি : ১৩১৫]। দাফন সম্পন্ন করা : সালাতুল জানাজার পর সুন্নাহ পদ্ধতিতে তাদের দাফন সম্পন্ন করতে হবে।

এ বিষয়ে হাদিসে এসেছেÑ ‘হুসাইন ইবনে ওয়াহ্ওয়াহ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তালহা ইবনুল বারাআ রা: পীড়িত হয়ে পড়লে নবী সা: তাকে দেখতে এলেন এবং বললেন, আমি দেখতে পাচ্ছি তালহার মৃত্যু আসন্ন। আমাকে তার মৃত্যুর সংবাদ জানাবে। আর তার দাফন-কাফনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করবে। কারণ মুসলিমের লাশ তার পরিবারবর্গের কাছে আটকে রাখা উচিত নয়। ’ [সুনান আবু দাউদ : ৩১৬১]।

ঋণ পরিশোধ করা : মা-বাবার কোনো ঋণ থাকলে তা দ্রুত পরিশোধ করা সন্তানদের ওপর বিশেষভাবে কর্তব্য। রাসূলুল্লাহ সা: ঋণ পরিশোধ করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। আবু হুরায়রা রা:থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘মুমিন ব্যক্তির ঋণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত ঋণের আত্মা তার সাথে থাকে। ’ [সুনান ইবন মাজাহ : ২৪১৩]। ঋণ পরিশোধ না করার কারণে জান্নাতে যাওয়া স্থগিত হয়ে যায়।

হাদিসে আরো এসেছেÑ ‘যতণ পর্যন্ত বান্দার ঋণ পরিশোধ না করা হবে, ততণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না’। [মুসনাদুল জামি : ১১৩৫৭] মা-বাবার বৈধ অসিয়ত পূর্ণ করা : মা-বাবা শরিয়াহসম্মত কোনো অসিয়ত করে গেলে তা পূর্ণ করা সন্তানদের ওপর দায়িত্ব। রাশীদ বিন সুয়াইদ আসসাকাফি রা: বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সা:-কে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমার মা একজন দাসমুক্ত করার জন্য অসিয়ত করে গেছেন। আর আমার কাছে কালো একজন দাসি আছে। রাসূলুল্লাহ সা: বললেন, তাকে ডাকো, সে এলো, রাসূলুল্লাহ সা: তাকে প্রশ্ন করলেন, তোমার রব কে? উত্তরে সে বলল, আমার রব আল্লাহ।

আবার প্রশ্ন করলেন আমি কে? উত্তরে সে বলল, আপনি আল্লাহর রাসূল। তখন রাসূলুল্লাহ সা: বললেন, তাকে মুক্ত করে দাও, কেননা সে একজন মুমিন নারী। ’ [সহিহ ইবন হিব্বান : ১৮৯]। পরিত্যক্ত সম্পত্তি ওয়ারিশদের মধ্যে বণ্টন করা : মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তি ওয়ারিশদের মধ্যে শরিয়াহসম্মতভাবে বণ্টন করা সন্তানদের অন্যতম কাজ। এ বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘(মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদ বণ্টন করবে) তার অসিয়ত পালনের পর, যা সে অসিয়ত করেছে অথবা ঋণ পরিশোধের পর।

তোমাদের মা-বাবা ও তোমাদের সন্তান-সন্তুতিদের মধ্য থেকে তোমাদের উপকারে কে অধিক নিকটবর্তী তা তোমরা জান না। এটি আল্লাহর নির্দেশ। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। ’ [সূরা নিসা : ১১]। ক্শমা প্রার্থনা করা : মা-বাবার জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি মা প্রার্থনা করা গুরুত্বপূর্ণ আমল।

সন্তান মা-বাবার জন্য মা প্রার্থনা করায় আল্লাহ তায়ালা তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। হাদিসে বলা হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, মৃত্যুর পর কোনো বান্দাহর মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়। তখন সে বলে, হে আমার রব, আমি তো এত মর্যাদার আমল করিনি, কিভাবে এ আমল এলো ? তখন বলা হবে, তোমার সন্তান তোমার জন্য মা প্রার্থনা করায় এ মর্যাদা তুমি পেয়েছ’ [আলআদাবুল মুফরাদ : ৩৬]। দান-সাদকাহ করা : মা-বাবা বেঁচে থাকতে দান-সাদকাহ করে যেতে পারেননি বা বেঁচে থাকলে আরো দান-সাদকাহ করতেন, সেজন্য তাদের প থেকে সন্তান দান-সাদকাহ করতে পারে। হাদিসে এসেছে, ‘আয়েশা (রা বলেন, ‘জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা -এর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমার মা হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেছেন।

তাই কোনো অছিয়ত করতে পারেননি। আমার ধারণা তিনি যদি কথা বলার সুযোগ পেতেন তাহলে দান-ছাদকা করতেন। আমি তার প থেকে সাদকা করলে তিনি কি এর সাওয়াব পাবেন? রাসূলুল্লাহ (সা বললেন হ্যাঁ, অবশ্যই পাবেন’। [সহিহ মুসলিম : ২৩৭৩]। মা-বাবার ফরজ সিয়াম থেকে গেলে তাদের প হতে পালন করা : মা-বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় যদি তাদের কোনো মানতের সিয়াম এবং ফরজ রোজা কাজা থাকে, সন্তান তাদের প থেকে সিয়াম পালন করলে তাদের প থেকে আদায় হয়ে যাবে।

আয়েশা রা: হতে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করল এমতাবস্থায় যে তার ওপর রোজা ওয়াজিব ছিল। তবে তার প থেকে তার ওলিগণ অর্থাৎ মৃত্যুর পর অভিভাবক রোজা রাখবে’ [সহিহ বুখারি : ১৯৫২]। হজ বা ওমরাহ করা : মা-বাবার প থেকে হজ বা ওমরাহ করলে তা আদায় হবে এবং তারা উপকৃত হবে। ইবনে আববাস রা: হতে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘জুহাইনা গোত্রের একজন মহিলা রাসূলুল্লাহ সা:-এর কাছে আগমন করে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার মা হজ করার মান্নত করেছিলেন কিন্তু তিনি তা সম্পাদন না করেই মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন আমি কি তার প থেকে হজ আদায় করতে পারি? রাসূলুল্লাহ সা: বললেন, ‘তুমি তোমার মায়ের প থেকে হজ করো।

তোমার কি ধারণা যদি তোমার মার ওপর ঋণ থাকতো তবে কি তুমি তা পরিশোধ করতে না? সে বলল, অবশ্যই পরিশোধ করতাম। রাসূলুল্লাহ সা: বললেন, তাহলে তা আদায় করো। কেননা আল্লাহর দাবি পরিশোধ করার অধিক উপযোগী’ [সহিহ বুখারি : ১৮৫২]। তবে মা-বাবার প থেকে যিনি হজ বা ওমরাহ করতে চান তার জন্য শর্ত হলো তিনি আগে নিজের হজ-ওমরাহ করতে হবে। মা-বাবার প থেকে কোরবানি করা : মা-বাবার প থেকে কোরবানি করলে তার সওয়াব দ্বারা তারা উপকৃত হবে।

এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে, আয়েশা রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: এমন একটি দুম্বা উপস্থিত করতে বললেন, যার পা কালো, চোখের চতুর্দিক কালো এবং পেট কালো। অতঃপর তা কোরবানির জন্য আনা হলো। তখন রাসূলুল্লাহ সা: আয়েশা রা:-কে বললেন, ছুরি এনে পাথর দ্বারা ধারালো কর। তিনি তাই করলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ সা: ছুুরি হাতে নিয়ে দুম্বাটিকে শুয়িয়ে দিলেন।

পশুটি জবেহ করার সময় বললেন, বিসমিল্লাহ, হে আল্লাহ তুমি ইহা মুহাম্মাদ, মুহাম্মাদের পরিবার এবং মুহাম্মাদের উম্মতের প থেকে এটি কবুল করো, তারপর তিনি তা জবেহ করলেন’ [সহিহ মুসলিম : ৫২০৩]। মা-বাবার বন্ধুদের সম্মান করা : মা-বাবার বন্ধুদের সাথে ভালো ব্যবহার করা, সম্মান করা, তাদের দেখতে যাওয়া, তাদের হাদিয়া দেয়া। এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে, ‘আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার রা: আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা: থেকে বর্ণনা করেন, একবার মক্কার পথে চলার সময় আব্দুল্লাহ রা:-এর সাথে এক বেদুঈনের দেখা হলে তিনি তাকে সালাম দিলেন, যে গাধার ওপরে উপবিষ্ট ছিলেন তাতে তাকে তুলে নিলেন, এবং তার (আব্দুল্লাহ) মাথায় যে পাগড়িটি পরা ছিল তা তাকে প্রদান করলেন। আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার রা: বলেন, তখন আমরা আব্দুল্লাহকে বললাম, আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুক! এরা গ্রাম্য মানুষ : সামান্য কিছু পেলেই এরা সন্তুষ্ট হয়ে যায়Ñ (এতসব করার কি প্রয়োজন ছিল?) উত্তরে আব্দুল্লাহ (রা বললেন, তার বাবা, (আমার বাবা) উমার ইবনে খাত্তাব রা:-এর বন্ধু ছিলেন। আমি রাসূলুল্লাহ সা: বলতে শুনেছি ‘পুত্রের জন্য বাবার বন্ধুবান্ধবের সাথে ভালো ব্যবহার করা সবচেয়ে বড় সাওয়াবের কাজ’ [সহিহ মুসলিম : ৬৬৭৭]।

মা-বাবার আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক রাখা : সন্তান তার মা-বাবার আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে। আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা: থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার বাবার কবরে কোনো সাওয়াব পৌঁছাতে ভালোবাসে, সে যেন বাবার ভাইদের সাথে সম্পর্ক রাখে’। [সহিহ ইবন হিব্বান : ৪৩২]। কাফফারা আদায় করা : মা-বাবার কোনো শপথের কাফফারা, ভুলকৃত হত্যাসহ কোনো কাফফারা বাকি থাকলে সন্তান তা পূরণ করবে। আল কুরআনে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি ভুলক্রমে কোনো মুমিনকে হত্যা করবে, তাহলে একজন মুমিন দাসকে মুক্ত করতে হবে এবং দিয়াত (রক্তপণ দিতে হবে) যা হস্তান্তর করা হবে তার পরিজনদের কাছে।

তবে তারা যদি সাদাকা (মা) করে দেয় (তাহলে দিতে হবে না)’। [সূরা আন নিসা : ৯২]। মান্নত পূরণ করা : মা-বাবা কোনো মান্নত করে গেলে সন্তান তার প থেকে পূরণ করবে। আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, কোনো মহিলা রোজা রাখার মান্নত করেছিল, কিন্তু সে তা পূরণ করার আগেই মৃত্যুবরণ করল। এরপর তার ভাই এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সা:-এর কাছে এলে তিনি বললেন, তার প থেকে সিয়াম পালন করো।

[সহিহ ইবন হিব্বান : ২৮০] মা-বাবার ভালো কাজগুলো জারি রাখা : মা-বাবা যেসব ভালো কাজ করে গেছেন অর্থাৎ মসজিদ তৈরি, মাদরাসা তৈরি, দ্বীনি শিাপ্রতিষ্ঠান তৈরিসহ যে কাজগুলো করে গেছেন তা যাতে অব্যাহত থাকে সন্তান হিসেবে তার ব্যবস্থা করা। কেননা এসব ভালো কাজের সওয়াব তাদের আমলনামায় যুক্ত হতে থাকে। হাদিসে এসেছে, ‘ভালো কাজের পথপ্রদর্শনকারী এ কাজে আমলকারী অনুরূপ সওয়াব পাবে’। [সুনান আততিরমীজি : ২৬৭০]। কবর জিয়ারত করা : সন্তান তার মা-বাবার কবর যথাসম্ভব জিয়ারত করবে।

এর মাধ্যমে সন্তান এবং মা-বাবা উভয়ই উপকৃত হবে। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘আমি তোমাদের কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, অতঃপর মুহাম্মাদের মায়ের কবর জিয়ারতের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এখন তোমরা কবর জিয়রাত করো, কেননা তা আখিরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয়’ [সুনান তিরমীজি : ১০৫৪]। ওয়াদা করে গেলে তা বাস্তবায়ন করা : মা-বাবা কারো সাথে কোনো ভালো কাজের ওয়াদা করে গেলে বা এমন ওয়াদা যা তারা বেঁচে থাকলে করে যেতেন, সন্তান যথাসম্ভব তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে। কুরআন মাজিদে বলা হয়েছে, ‘আর অঙ্গীকার পূর্ণ করো, নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে’।

[ সূরা বনি ইসরাঈল : ৩৪] কারো হক নষ্ট হলে মা-বাবার প থেকে মাফ চাওয়া : মা-বাবা বেঁচে থাকতে কারো সাথে খারাপ আচরণ করে থাকলে বা কারো ওপর জুুলুম করে থাকলে বা কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে মা-বাবার প থেকে তার কাছ থেকে মাফ চেয়ে নেবে অথবা তিপূরণ দিয়ে দেবে। তাদের প হতে লোকদের খাওয়ানো : মা-বাবা বেঁচে থাকলে তারা আত্মীয়স্বজন, বন্ধুদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতেন। তাই তাদের প হতে লোকদের খাওয়ানো। এ বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে, ‘আবদুল্লাহ বিন আমর রা: হতে বর্ণিত, একজন লোক এসে রাসূলুল্লাহ সা:- কে জিজ্ঞাসা করলেন, ইসলামে উত্তম কাজ কোনটি? তিনি বললেন, অন্যদের খাবার খাওয়ানো এবং পরিচিত ও অপরিচিত সবাইকে সালাম দেয়া’। [সহিহ বুখারি : ১২]।

বেশি বেশি দোয়া করা : মা-বাবা দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার পর সন্তান মা-বাবার জন্য বেশি বেশি দোয়া করবে। আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার যাবতীয় আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে তিনটি আমল (বন্ধ হয় না) ১. সদকায়ে জারিয়া, ২. এমন জ্ঞানÑ যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায়, ৩. এমন নেক সন্তান- যে তার জন্য দোয়া করে’। [সহিহ মুসলিম : ৪৩১০]। আল কুরআনে এসেছে, ‘হে আমার প্রতিপালক, তাদের উভয়ের প্রতি রহম করুন, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন’। [সূরা ইসরা :২৪] ‘হে আমাদের প্রভু, রোজ কিয়ামতে আমাকে, আমার মা-বাবা ও সব মুমিনকে মা করে দিন’।

[সূরা ইবরাহিম : ৪১]। এ ছাড়া আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মা-বাবার জন্য দোয়া করার বিশেষ নিয়ম শিা দিতে গিয়ে বলেন, ‘হে আমার রব! আমাকে, আমার মা-বাবাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষকে মা করুন এবং ধ্বংস ছাড়া আপনি জালিমদের আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না’। [সূরা নুহ : ২৮]। মাওলানা হাবীবুল্লাহ মুহাম্মাদ ইকবাল লেখক : শিক্ষক, প্রবন্ধকার  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।