সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল (শিরোনাম এবং আগের লেয়ার প্রারম্ভে প্রাপ্তবয়স্ক এবং মনস্কদের প্রবেশই কামনা করলেও অন্তত একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক/মনস্ককে দেখা গিয়েছে। অনুরোধ করছি যেন এই পর্বেও এমন কিচ্ছ না ঘটে। যারা আস্থা রেখে ধৈর্য্য ধরে আছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা রইলো। )
কামশাস্রের লেখাকে কেন্দ্র করে সেই প্রাচীন যুগেই পাহাড়ের গুহায় পাথর খুদে বিভিন্ন যৌনাসন আকা হয়েছিল। আজো ভারতের অজন্তা ইলোরার খাদে খাদে সেটি সযত্নে সংরক্ষিত আছে।
সেটি দেখতে প্রতি বছর ভারতীয় এবং বিদেশি পর্যটকের মহা সমাগম ঘটে। ভারতের রক্ষণশীল সমাজের কথা না হয় বাদ দিলাম। বিদেশিদের তো যৌনতায় রুক্ষণশীলতা নেই। তাহলে কিসের অতৃপ্তি মেটাতে তারা অজন্ত ইলোরায় ছুটে আসে? সেই ৯ ১০ বছর থেকে যে যৌনচর্চা শুরু , অনেকে তো মরার আগ পর্যতও সেটা চালিয়ে নিয়ে যায়। এর পরেও আবার সাগর মহাসাগর পেরিয়ে অনুন্নত একটা দেশে শ্রেফ কামকলা দেখার জন্য গাটের পয়সার শ্রাদ্ধ করে।
যুগ বদলাচ্ছে। নিজেরদের বদলেরও একটা ঝোক আমাদের যুগে যুগে আক্রান্ত করেছে। নিজেদের শিক্ষা মেধা বুদ্ধি কোন কিছুই কাজে লাগানোটা আমাদের ধাতে নেই। তো কি করা? আদর্শ ধরে ফেলি পৃথিবির ইতিহাসে অপেক্ষাকৃত শিশু সভ্যতাধারিদের। যাদের সাথে আমাদের না আছে ভাষার মিল, না সংস্কৃতির কিংবা ঐতিহ্যের।
কিন্ত যেহেতু উনাদের বিত্ত প্রভাব প্রতিপত্তি বিশ্বব্যপি, তাই তাদের সাথে তাল মিলিয়ে চলাকেই যুগের সাথে তাল মিলানো বলে গণ্য হলো।
তাদের দেশপ্রেম - সততা-কর্মনিষ্ঠা ইত্যাদি অন্ধের মত অনুকরণ করলে তাও সান্তনা থাকতো। আমরা অনুকরণ করা শুরু করলাম উনাদের গান, উনাদের চলা বলা, খাওয়া দাওয়া, ফ্যাশন। এবং ইদানিং যৌনাচারণ।
সতিত্ব? সে আবার কি জিনিস? বিয়ে করে নারী পুরুষে মেলামেশা? হাস্যকর ! মধ্য যুগিয় পশ্চাদপদ চিন্তাধারা।
৯/১০ বছরে শুরু না হলেও ক্লাস ৭/৮ থেকেই যে প্রেমের জোয়ার শুরু হয়ে যায়, তাতে এখনও কেনো কুমার পিতা বা কুমারি মাতার সংখ্যা মহামারির পর্যায়ে যায়নি, সেটা সৌভাগ্য বলতে হয়।
দেবদাস কিংবা মেমসাহেবদের প্লেটোনিক প্রেম এখন প্রাগৈতিহাসিক ডাইনোসর। বিলুপ্ত। সভ্যদের দেখাদেখি আমরাও অনেক সভ্য হয়ে গিয়েছি। নতুবা যে নারী স্নানের সময়ও নিরাভরণ হতো না, সেই নারী খুব অনায়াসেই মুখমেহন রপ্ত করে ফেলেছে।
যে পুরুষ প্রেম করার সময় প্রেমিকার হাত ধরতেও ইতঃস্তত বোধ করতো, বাসর রাত ছাড়া জীবনের একটা রহস্য ভেদ করতে অক্ষম ছিল, সে এখন মুখ দেখেই বলে দিতে পারে কার আভরণের নীচে কি লুকিয়ে আছে।
আর বিয়ে ছাড়া লিভ টুগেদার ডাল ভাত হয়ে গিয়েছে। শুনেছি এখন রীতিমত জুটি বিনিময় ঘটে থাকে। আর এক ফুলের একই সঙ্গে একাধিক মালির চাষ করাটাও অবাক করার মত বিষয় নয় !
তবে আরো অত্যাধুনিক যৌনাচারণ চাই। তেনাদের ওখানে একই খাবার বার বার খেয়ে খেয়ে উনাদের অরুচি হয়ে গিয়েছে।
তাই "যুগের" প্রয়োজনে (+) (+) বা (-)(-) জুটি বাধা শুরু। এই অদ্ভুতুড়ে কান্ড জায়েজ করবার জন্য মানবাধিকারের বুলিটি সামনে আনা হলো। সমাকামিদের অনেকেই তারকা খ্যাতি পেলো। মিডিয়া এমনভাবে ফুলিয়ে ফাপিয়ে ওদের মহান বানানোর তোড়জোর করলো, আমরা ভাবলাম আরে বাপ রে। না জানি কি ! এটাই আধুনিকতা।
এটাই ফ্যাশন । তাই মহামারি না হলেও কলম বা কিবোর্ডের আড়ালে অনেকেই এটা জায়েজ করার ধান্ধায় লিপ্ত। হয়তো এখন না হোক আগামি ১০-২০ বছরের মধ্যে এও গা সওয়া হয়ে যাবে। যেমন বাকিগুলি গা সওয়া হয়ে গিয়েছে।
বুক পেট বের করা, অথবা অস্থিকায় পৌরষ প্রকাশটির শুরু ফ্যাশন শো থেকেই।
দেশ বা বিদেশ যেখানেই হোক, ফ্যাশন মডেলদের রুটি রুজির জন্যই তারা এক মাত্র যোগ্যতা সর্বসম্মুখে প্রকাশহ করে। তোমরা তরুণ, বেশির ভাগই ছাত্র ছাত্রি। বংশ কারোই খারাপ না। লেখাপড়া শেষ করে একতা ভালো গন্তব্যে যাওয়ার পথে অন্য লিঙ্গের মানুষদের যৌন সুরসুরি দেবার মানে কি? যতই ডিজে আরজে সীসা ইয়াবা করে আধা ল্যাংটা হয়ে কুকাম করো, বিয়ের বেলায় দেখি সৎ বা সাধবি খোজ ! সব চোরের মাঝে মহাপুরুষ খোজার মত নির্বুদ্ধিতা আর আছে?
এসব আমাদের উপর চাপানো হয়নি। বরং আমাদের আগ্রহের কারনেই এখন কর্পোরেট পুজিপতিরা সেটা ভাঙ্গিয়ে খাচ্ছে।
সব হিসাব নিকাশকে উল্টে দিয়ে যখন দুই তৃতিয়াংশ ভোটের বেশি পেয়ে বাকশালিরা ক্ষমতায় এলো, তখন ডালে কালো কিছুর অস্তিত্ব থাকলো, বিএনপি ভাবলো, আচ্ছা দেখা যাক। এই দেখতে দেখতে তারা না যত বেশিই খোয়ালো, তার চেয়ে বেশি খোয়ালো দেশের মানুষ। দেশের মানুষের কথা ভাবার টাইম নেই। তাই উচ্চবাচ্য ছিল না। এমনকি প্রতিবেশি শত্রুর সাথে অধীনতামুলক চুক্তি করে আসলেও বিএনপির মুখে কুলুপ আটা ছিল।
যাই ই হোক। দেশের উপর দিয়ে যাচ্ছে, আমাদের কি? ভাবখানা ছিল এই রকম। কিন্তু যেইই নেত্রির বাসভবন খানা ছিনিয়ে নেয়া হলো, আর যাবে কোথায়? ঈদ পরবের গুস্টি কিলাই বলে হরতাল প্রতিবাদ শুরু হলো। প্যাদানি খেয়ে ঠান্ডা। লাগাতার মুখে মুখে খালি হেন করবো তেন করবো ইত্যাদি।
কাজের বেলায় ঠনঠন। দুরাচার বাকশালিরা পরম মজা পেলো। আইন আদালত কব্জা করার পর আরো পোয়া বারো। নতুন তড়িকায় গুম শুরু হলো। প্রথম ছোটখাট পুটি।
এবার তো আস্তা রুই গুম করে ফেলেছে। আবারও বিএনপির মিউ মিউ। ওদিকে দেশে বয়ে এসে অজাত কুজাতরা হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে।
দেশের একটি বিশাল অংশ পার্বত্য চট্ট্রগ্রাম। বিদেশিদের সাথে মিলে সেটাকে বিচ্ছিন্ন করার চক্রান্তে যারা প্রকাশ্যে জড়িত, তাদেরকেই আমরা বিশিস্ট শিক্ষাবিদ বা বিশিস্ট মানবাধিকার নেতা/নেত্রি বলে পুজা করছি।
সরকারি কর্মচারিরা গাছেও খাচ্ছেন, তলায়ও কুড়াচ্ছেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি হয়েও উনারা জনগণের প্রভুর ভুমিকায় অবতীর্ণ।
শিক্ষাঙ্গন আর কলকারখানার মধ্যে রাজনীতি নেই। পলিটিক্স ঢুকেছে। তাই বিড়ি টানা দিনমজুর কিংবা পায়ে হেটে চলাচল করা দুবেলা মাত্র ভাত খাবার সামর্থবান ছাত্ররাই এই পলিটিক্সে ঢুকে হয়ে যাচ্ছে দামি বাড়ি গাড়ির মালিক।
উনাদের বাচ্চারা আধা ইংরেজ। আর বিবিদের খাই খাই এর দাপটে বিদেশি মাল দোকানে রাখবে না, এমন সাধ্য কার?
আমাদের বুদ্ধি আছে। তবে গড়ায় নয় নাশে । নইলে জিঞ্জিরা নকলের জন্য কুখ্যাত না হয়ে দেশী পণ্যের জন্য বিখ্যাত হতো। ধোলাইখাল আমদানিকৃত বাসের সিট চিপা করার পরিবর্তে নিজস্ব যানবাহন প্রস্তুতের কারখানা হতে পারতো।
দেশের এক অংশ পড়ে ইংরেজি মিডিয়ামে, এক অংশ বাংলা আরেক অংশ মাদ্রাসায়। দো আশলা এই রকম শিক্ষাব্যাবস্থা থাকলে, উন্নতি হবে কি করে? যে যার মত বুঝে নিজের পাতে ঝোল টানার জন্য আজীবন কসরত করে যাবে। ঐক্য নয় বিভেদের বিষবৃক্ষ এই ব্যাবস্থা। বর্তমান সরকারের সময় এটা বদলানোর চেস্টা করা হয়েছে। যারা এর পিছনে ছিলেন, তারা আবার প্রগতিশীল মৌলবাদি কাঠমোল্লা।
তাই জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে জনগণকে গেলানোর জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মেশানো হয়েছে। তাও সর্বক্ষেত্রে মুজিব ঢুকিয়ে। বাকিরা সব অপাক্তেয়।
সব দেশের ব্যাবসায়ি মানেই লাভের ১৬ আনা বুঝতে সক্রিয়।
আমরা এক কাঠি সরেস। মুরগির পেটে পাথর ঢুকিয়ে ওজন বাড়ানোর মধ্যেই হোক, কিংবা মাছ তাজা রাখায় ফরমালিন যুক্ত করেই হোক, অথবা শাক সবজি ফল মুলে বিষাক্ত রাসায়িক প্রয়োগেই হোক, আমরা চাই ১৬ দুকুনে ৩২ আনা লাভ। তার উপর আবার ওজনে কম টম দিয়ে যা লাভ সেটা বোনাস।
আর ঠেকিয়ে লভ্যাংশ আদায়? প্রতি বছর রমজানে সেটা তো খালি চোখে খুব সুন্দর দেখা যায়।
বিনোদনের জগৎ? আরো ভয়াবহ।
টাকা আছে, পেশি শক্তি আছে। তাই ইচ্ছা হলো, হয়ে গেলাম অভিনেতা। হয়ে গেলাম প্রযোজক-পরিবেশক এমন কি পরিচালকও। সুরে নকল, কাহিনী নকল/বস্তাপচা কুচ পরোয়া নেই। বস্তি থেকে গরিবের মেয়েদের ধরে এনে উলঙ্গ অর্ধলঙ্গ করে কাটপিস জুড়ে দিলে লগ্নি, লাভসহ তো ফেরত আসবেই।
সাথে রাস্তার দু টাকার গুন্ডা পান্ডাও তারকা হয়ে পত্রিকার শোভা বর্ধন করবে।
বিদেশের বুদ্ধিজীবিরা অন্তত আতলামির পেছনে অন্তত দেশের স্বার্থটা চিন্তা করে। তারা অন্তত একাডেমিকভাবে অত্যন্ত যোগ্য। আর আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবিরা আসে মহিলা সমিতির মঞ্চ থেকে। কেবল বিএ পাশই সম্বল।
কেউ কেউ আদৌ কলেজের চৌহদ্দি মাড়িয়েছে কিনা সন্দেহ।
আর শিক্ষিত যারা আছেন তারা তো ফুলার রোড দোয়েল চত্ত্বর আর বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি ছেড়ে অবসর নেবার আগ পর্যন্ত স্বাভাবিক অবস্থায় আর কোথাও যান কি না সন্দেহ ! শিক্ষার গরমে তাদের অনেকেরই আবার সাধারণ মানুষের প্রতি একধরণের উন্নাসিকতা আছে। তাই একান্ত অনুরোধে মাঝে মাঝে দয়া করে ইনারা বিবৃতি দিয়েই খালাস।
আমাদেরর চারিপাশে যা ঘটছে, সেটা আমাদের দেশকেই রমন করার সামিল। হ্যা ধর্ষন নয়, রমণ।
কারণ সেটা আমদের পুর্ণ সম্মতিতেই ঘটছে।
আগের পর্বেই উল্লেখ করেছিলাম, বাৎসায়নের কামশাস্রের ৬৪ কলা পুরণ করবার নজির পৃথিবিতে একটিই আছে। আমরা। হ্যা জাতি হিসাবে আমরা সেই ৬৪ কলাতেই দেশকে রমণ করে যাচ্ছি।
আজ এত যুগ এত কাল পর বাৎসায়ণের কামশাস্ত্র পুর্ণতার মুখ দেখতে পেলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।