বীচিওয়ালা বেগুনের
চুলকানী
২০১৩-০৪-১২ ১৪:৫৯:৫০
গোলাম মওলা রনি :
বীচি শব্দটি নিয়ে আমার
অভিজ্ঞতা ভালো না। গ্রাম
গঞ্জে দেখেছি পুরুষ
মানুষেরা বীচি শব্দ শুনলে রাগ
করেন। এক বয়স্ক মহিলার নিকট এক যুবক
এসে বললো ও ভাবী সিমের
বীচি আছে? শুনেই মহিলা ঝাড়–
নিয়ে তেড়ে এলেন।
শৈশবে দেখা এসব
স্মৃতি এখনো মনে পড়ে, মজা পাই।
কিন্তু কেনো পাই তা জানি না।
সম্প্রতি ফেইসবুকের একটি কমেন্ট
নিয়ে জনৈক তরুণ বন্ধু আমার
উদ্দেশ্যে বললেন, মনে হয়
ইদানিং আপনি বেশী বেশী বীচিওয়ালা বেগুন
খাচ্ছেন, তাই সারা শরীর বড্ড
চুলকাচ্ছে! সর্বনাশ!
ঘরে কথা পরে জানলো ক্যামনে!
আমি যে জন্ম থেকেই বেগুন
ভালবাসি এবং হয়তো একারণে আমার
শরীর একটু এলার্জির ভাব আছে।
তা বন্ধুটি জানলেন ক্যামনে?
শ্রদ্ধা ও ভক্তিতে আমার দেহ মন
বন্ধুটির পানে এমন ভাবে নতজানু
হলো যেমনটি বাম ঘরনোর
রাজনীতিবীদগণ সরকারের
দিকে ঝুঁকেছে।
কিছু কিছু বিষয় নিয়ে আমার বক্তব্য
মাঝে মধ্যে আলোচনায আসে।
সমালোচনাও হয় বিস্তর। বিশেষ
করে আমার দলের কট্ররপন্থী বঙ্গবন্ধু
প্রেমিক যারা পচাত্তরের ১৫ই
আগষ্টের পর ইদুঁরের
গর্তে লুকিয়েছিলেন তারাই এখন
সিংহ গলায় হুকার ছাড়েন-তুই
কে রে! শিবির নাকি!
আমি হাসি-অন্যান্য নির্বোধের
মতো আমারও প্রচন্ড হাসি পায়
প্রায় সব সময়-কি অসভ্য কান্ড
কারখানা বলুনতো! আমাকে শিবির
বলে আর আমি হাসি।
অভিযোগকারীগণ বলেন,
রনি তো শিবির
করতো ছ্ত্রা জীবনে, নেত্রী ভুল
করে তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন।
যেহেতু
সরাসরি তারা নেত্রীকে দায়ী করেন
তাই আমি আর আত্মপক্ষ সমর্থন
করে নিজের অবস্থান
ব্যাখা করি না। এভাবেই চলছে গত
৪টি বছর ।
এবার বীচিওয়ালা বেগুনের
চুলকানী প্রসঙ্গে আসি। আমার
যে কোনো এতো চুলকায়
বুঝতে পারি না।
আমি কি ভবিষ্যতে এই দল
ছেড়ে অন্য দলে যোগদান করবো,
নাকি অন্য দলে এজেন্ট হয়ে এ
দলে কাজ
করছি এনিয়ে অনেকে চালাচ্ছে নিরন্তর
গবেষনা। আমার
মতো যারা বোকা তারা আবার
মাঝে মধ্যেই হঠাৎ করেই পক্ষ
নিয়ে কিছু কথা বলেন। তাদের
বক্তব্য কেউ যদি এজেন্ট
হয়ে আসে সেতো কোনো দিন
কারো সঙ্গে বিরোধ করে না।
বরং ঘাপটি মেরে মহাবন্ধু
সেজে সর্বনাশ করে তারপর
চলে যায় ঠিক সময়মতো।
অন্যদিকে একজন সাধারণ
মোটা বুদ্ধির মানুষও
বোঝে তেলবাজি না করলে পদ
পদবী ও নমিনেশন কিছুই মিলবে না।
তারপরও কেউ যদি দলের
সমালোচনা করে তবে ধরে নিতে হয়
সমালোচনাকারী স্বার্থের
দিকটি উপেক্ষা করেই সবকিছু
করছে কেবল মাত্র মঙ্গলার্থে।
আজ মনে পড়ছে জাতীয়
সংসদে প্রদত্ত আমার একটি ভাষনের
ইতিবৃত্ত নিয়ে। জামাত ইসলামীর
ইতিহাস
নিয়ে পর্যালোচনা করেছিলাম
পনের মিনিট ধরে। তাও আবার
কোরান হাদিসের আলোকে। চার
বছর আগের কথা।
তখনো আমার বদনাম
হয়নি বা কেউ
বলেননি যে আমি শিবির করি। ধন্য
ধন্য রব পড়ে গেলো সংসদে।
সিনিয়র সব নেতাই পরম মমতায়
অভিনন্দন জানালেন। স্পিকারের
চেয়ারে বসা ছিলেন প্যানেল
স্পিকার বর্ষীয়ান
পার্লামেন্টেরিয়ান জনাব
ছায়েদুল হক। অধিবেশন
শেষে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেনÑবাবা তোমার
বক্তব্য শুনে আমি মুগ্ধ।
যে সাহস
নিয়ে তুমি জামাত শিবিরের
আঁতে ঘা মারলে তা আমরা কেউ
করিনি। তোমাকে নিয়ে আমার ভয়
হয়। কারণ আওয়ামী লীগ
মেধাকে ইতিপূর্বে ধারণ
করে রাখতে পারেনি। মোস্তাক,
তাহের উদ্দিন
ঠাকুরেরা কিভাবে দলের
মেধাবীদেরকে বঙ্গবন্ধুর নিকট
থেকে আলাদা করে রেখেছিলো সেই
দৃশ্য আমি নিজে দেখেছি।
এরপর চারটি বছর চলে গেলো।
আমি শুধু দলের
নীতি নির্ধারণী ব্যক্তিবর্গের
চক্ষুশ্যুল হতে থাকলাম অবিরতভাবে।
কেউ একবার
আমাকে বুঝিয়ে বললো না কেনো তারা বিরক্ত।
অন্য দিকে আমার নির্বোধ মস্তিস্ক
ও আমাকে বলছে না যে আমি ভুল
করে যাচ্ছি। এরই মধ্যে নিত্যকার
ঘটনা আমাকে আরো হতাসার
দিকে টেনে নিয়ে যায়। শরীর ও
মনে অনুভব করি ভীষন চুলকানী।
এই
যেমন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর
রহমানের গ্রেফতারের ঘটনা আমার
শরীরে এলার্জি সৃষ্টি করেছে।
কোনো বীচিওয়ালা বেগুন
আমি খাইনি গত একমাসেও। তারপরও
চুলকাচ্ছে। তাই বিকারগ্রস্থ
হয়ে বিনয়ের সাথে প্রশ্ন করছি-
কাজটা কি ঠিক হলো??
http://dnewsbd.com/single.php?id=26579 ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।