সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল (চারিদিকে ক্যাচাল আর ক্যাচাল। সবাই সেই বিষয়েই লিখছে। আমারও লেখার ইচ্ছা ছিল। কিন্ত অন্য কিছু লেখার মুডে এই অখাদ্যটা লিখছি। রম্য কি রম্য না, সেটা পাঠক বিবেচনা করবেন।
তবে সাধু ভাষায় বর্তমান সময় বর্ণনাটা কেমন লাগলো আশা করি জানাবেন। )
কবি জীবন চৌধুরি বেশ চিন্তিত। প্রিয় শিষ্যটি পাণি গ্রহন করিতে অস্বীকার করিয়াছে, ইহাই তাহার চিন্তার বিষয় । এই একাবিংশ শতাব্দিতে বিবাহ নামক প্রথাটি এখনও বেশ শক্তপোক্ত হিসাবেই টিকিয়া রহিয়াছে, সে সম্ভবত বাংলাদেশ বলিয়াই।
ইহার পরেও দুটি মন দুটি প্রাণ ,বিবাহ নামক বন্ধনটিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করিয়া একে অপরকে অল্প বিস্তর করিয়া হইলেও গ্রহন করিতেছে।
শিষ্যটি এই রুপ কোন কর্ম করিলেও কবির চিন্তা হইতো না। তাহা বলিয়া একেবারে নারী বিবর্জন?
আরেকটি সম্ভাবনা উকি দেয়াতে বেশ বিব্রত বোধ করিলেন। যে যুগ। বলা তো যায় না ! বিপরীত লিঙ্গের পাশাপাশি, সমলিঙ্গের কারু প্রতি কি দুর্বলতা? তাহা হইলে তো কেলেংকারির আর শেষ থাকিবে না।
এক ঘরে বসিয়ে গুরু শিষ্য ঘন্টার পর ঘন্টা কলা লইয়া কত্ত আলাপ করিয়া কাটাইছেন।
এখন শিষ্যটি যদি ওইরুপে প্রকাশিত হয়, তাহা হইলে অপবাদের আগুনে তো নিজেরো পুড়িয়া মরিবার দশা হইবে।
নিন্দুকদের কল্পনায় অবস্থাটা বুঝিবার চেস্টা করিলেন কবি। দিব্য দৃস্টিতে দেখিলেন, সাহিত্য সঙ্গিত ইত্যাদি কলা্, দেহজ কলায় রুপান্তরিত হইয়া ... না না , ছি ছি আর ভাবিতে পারিলেন না কবি।
যে করিয়াই হোক, এই শিষ্যের একটা ব্যাবস্থা করিতেই হইবে।
জীবন চৌধুরির নাম বজলুর রহমান।
তবে কিনা আদি নামে যাই হোক কলায় নাম যশ পাওয়া চাট্টিখানি কথা তো নয় । কাব্যিক নাম হইতে হইবে। তাই মাস ছয়েক ব্যাপক গবেষণা করিয়া এই নামখানিই উপযুক্ত মনে করিলেন।
আদ্দিকালের দিন তো নাই যে কবি মাত্রেই গরিব ঘরে ছেড়া গায়ে রোমান্টিক মনের অধিকারি প্যাকাটি শরিরের মানুষ হইতে হইবে।
সচ্ছল পিতার তত্ত্ববধায়নে পড়াশুনার পাঠ চুকাইয়া এবং মামা চাচার যৌথ প্রযোজনায় খোদ সরকারি চাকুরিতে ভালো মতই কবি প্রতিষ্ঠিত।
তাহা ছাড়া সিস্টেমে গা ভাসাইয়া দিবার ফলে উপরি আয়ও বেশ। ইহার কারণে তাহার মন সদা প্রফুল্ল। সময়ও অঢেল। সময় আর অর্থ যাহার অনুকুলে ইয়ার দোস্ত লাভে তাহার সমস্যা কই?
কলা পাড়ায় নিয়মিত চা আর ধুম পানের সৌজন্যখানি সদা নিজ স্কন্ধে নেওয়াতে চারিদিকে তাহার সুখ্যাতি। পুর্বের যুগের ন্যায় কবিতার পান্ডুলিপি হাতে করিয়া প্রকাশক সম্পাদকদের দ্বারে দ্বারে ঘুড়িয়া ব্যার্থ হইয়া অকালে যক্ষ্মা হইয়া ইহধাম ত্যাগ করিবার যুগেরও সমাপ্তি ঘটিয়াছে।
তাই চা টা ইত্যাদির পরিবেশনের প্রযোজক সহযোগে, এবং প্রায়শঃই সরকারি কর্ম করিবার বহু চক্র ঘুড়িবার গোলকধাধা হইতে সহজেই পরিত্রানের পথ করিয়া দিবার জন্য, উলটো পত্রিকা সম্পাদক আর প্রকাশকদেরই কবির দুয়ারে ধর্ণা দিতে দেখা যায়।
শিষ্যটি বয়সের তুলনায় অনেক নবীন। এই বয়সে তরুণগণ যখন মুক্তকচ্ছ হইয়া, পুরানো ধ্যান ধারণার পশ্চাদদেশে লাত্থি মারিয়া, ইঙ্গ দেহাতি মিশ্র ভাষা সহযোগে যৌবন সমুদ্রে অবগাহনে ভীষন ব্যাস্ত, তখন এই শিষ্যখানি জানি কেমন।
অবশ্য নিন্দুকেরা বলিয়া থাকে শিষ্যটি নাকি গভীর জলের মৎস। সবার সামনে ভ্যাবলা হইয়া থাকে।
শিষ্যের সাথে পরিচয়ের পালাটিও হঠাৎই। ছোকড়া গোছের সাধারণ প্যান্ট শার্ট পরিহিত মাঝারি গরণের গোফযুক্ত কৃষ্ণকায়। মাথার বাম দিকে সিথি কাটা। প্রথমে ভাবিয়াছিলেন, মফস্বল হইতে আগত কোন সাহিত্য সভায় আমন্ত্রণের জন্য আসিয়াছে।
মফস্বল হইতে সদ্য আগত সেটি ঠিক ছিল।
কিন্তু সাহিত্য সভায় আমন্ত্রণ করিবার নিমিত্তে আসে নাই। আসিয়াছে শিষ্যত্ব গ্রহনে।
এই যুগে শিষ্যত্ব গ্রহন করিতে আসিয়াছে, এই রুপ কথা উন্মাদ মাত্রেই বিশ্বাস করিতে পারে। কবিও বিশ্বাস করিতে পারেন নাই। তাই শিষ্যত্ব গ্রহনটি খুব সোজা ছিল না।
প্রথমে শিষ্যের ভাষাটি ঠিক করিতে কবির প্রাণ ওষ্ঠাগত হইয়া গিয়াছিল। বাচন ভঙ্গিতে প্রমিতের যায়গায় আঞ্চলিক শব্দের উচ্চারণ যে কাব্যের ১২টা বাজাইয়া দেয়, ইহাই ছিল প্রথম দীক্ষা। তাহা ছাড়া আচার আচরণে মফস্বলের ভাব প্রকাশখানিও কবিত্বের কৌলিন্তে কালিমা লেপনের সামিল !
এখন অবশ্য শিষ্যখানি অনেকখানি শুধরাইয়া গিয়াছে। প্রমিত ভাষায় কহিতে লিখিতে পারে। শাহাবাগে অন্যান্য তরুণ কবিদের সহিত মিলিয়া মিশিয়া চায়ের কাপে ঝড় তুলিতে পারে।
দেখিলে কে বলিবে এক সময় অশুদ্ধ উচ্চারণে মাথায় টেরিকাটা কৃষ্ণকায় তরুণটিই এইটি !
কবি শুনিয়াছেন, তাহার শিষ্যটি নাকি উচ্চবিত্তের উচ্চ শিক্ষিত কিছু কন্যার মনও জয় করিয়াছে। হু হু বাবা। এতো আর আদ্যিকাল নয়। মন জয়ের সাথে সাথে অন্যান্য জিনিষগুলিও যে জয় লাভ করিয়াছে, সে কথা মুখে না বলিলেও চলিবে। এই কবি একাবিংশ শতাব্দির কবি ! চারিপাশ নিয়ে অন্ধত্ব নিয়ে চলার মত মানুষই তিনি নন।
আর শিষ্যের পিতাটিও বলিহারি ! শিক্ষক মানুষ। হোক না সে মফস্বলের। তাহা বলিয়া কি এইরুপ আঞ্চলিক ভাষা শিখাইয়া উচ্ছন্নে দিতে আছে?
ভাগ্য ভালো যে শিষ্যটি তাহার হাতে পড়িয়াছে।
শিষ্যের আড্ডাখানায়ও মাঝে মাঝে যাওয়া পড়ে। স্বল্প বসনা মুখে চটাং চ্যটাং কথা বলা উর্বশি মেনকারাও থাকে।
মনের মাঝে যে রঙ্গিন বাসনটাও যে কবির চাগাড় দেয় না এমন না। কিন্তু কিছু কেলেকাংরি ঘটিলে চাকুরি তো যাইবেই, সম্মানও। না হয় সে সবই গেলো। সহ্য হইবে।
কিন্তু ঘরে জলন্ত অগ্নির হস্তে যেরুপ নাকাল হইতে হইবে, সে সব ভাবিয়াই মনের দুঃখ মনে চাপিয়ে রাখিয়াছেন কবি।
যতই বয়স যাইতেছে, ততই অগ্নির উত্তাপ আরো প্রবল হইতেছে।
বিবাহের সময় মা তাহার বৌমা বলিয়াছিলেন, "আমার ছেলেটি কবি স্বভাব। একটু শক্ত করে শাসনে বেধে রেখো। "
আজ হইতে ২৫ বছর আগে, এই বৌমা শাশুড়ির উপদেশ বাণী অক্ষরে অক্ষরে এমন ভাবে পালন করিয়াছেন, যে মৃত্যুর আগেই কবির বিলক্ষণ নরক বাস নিশ্চিত হইয়া গিয়াছিল।
কবি সদ্য চাকুরিতে যোগ দিয়াছেন।
একদিন ঘরে ফিরিয়া দেখিলেন গিন্নির মুখ ভার !কেননা স্বামির কবিতার খাতা কাম ডায়রিটি গিন্নির হস্তগত হইয়াছিল। ব্যাস ! কর্ম সাবাড় !
বয়স অল্প। সদ্য বিবাহিত স্ত্রীর সেদিনের মান ভাঙ্গাইতে অতীতের মাত্র একটি অর্ধেক প্রেমের কাহিনী শুনাইতে বাধ্য হইয়াছিলেন।
সেদিন হইতে অদ্যাপি কথায় কথায় সেই ঘটনা বিভিন্ন আঙ্গিকে সম্মুখে আনিয়া হেনস্তা করিতে বৌ এর বাধে না।
ধরুণ কবি ধ্যানে মগ্ন হইয়া নতুন কিছু লিখিবার চেস্টা করিতেছেন।
একটু আগে দেখিয়া আসিয়াছেন যে বৌটি রসুইঘরে চাকরানির চৌদ্দ গোষ্ঠি উদ্ধারে ব্যাস্ত। অর্থাৎ মোটামুটি ঘন্টাখানেক কাব্য চর্চায় মননিবেশে বাধা নাই।
কিন্তু কিসের কি? মাছে গন্ধে যেমন ভোদড়ের উদয় হয়, তেমনি কাব্য চর্চার গন্ধও ঠিকই গিন্নির নাসারন্ধ্রে প্রবেশ করে। এইজন্যই হঠাৎই গিন্নি উদয় হইয়া, কবিকে চমকাইয়া বাজখাই গলায় খোটা দেওয়া শুরু করিলেন, " ও ! পুরানো প্রেম চাগাড় দিয়েছে বুঝি? এই জন্য বসে বসে স্মৃতি রোমন্থন হচ্ছে! এই সব ভুত মাথা থেকে ছাড়ো, নইলে...। "
অথবা " ওহ মন খারাপ? তুমি মনে করো আমি কিছু বুঝি না।
ওই শাকচুন্নির কথা মনে পড়াতে বাবুর ভীষন মন খারাপ, তাই না? তা যাও না, ওর কাছে যাও মরতে। "
এর পর উচ্চ স্কেল হইতে মধ্যমায় নামাইয়া গিন্নির হায় হুতাশ "হায় রে। । এই অপদার্থের সাথে বিয়ে হয়ে আমার সবস্ত জীবন নস্ট হয়ে গেলো। "
কামাই মন্দ নয়।
সংসার দিব্যি চলিতেছে। ইহার পরেও কেন এত অনুযোগ তাহা মস্তিস্কে প্রবেশ করিতে চাহে না। অন্যান্য বন্ধু বর্গের সহিত আলাপ করিয়া জানিয়াছেন, তাহাদের অবস্থাও একই রকম। অথচ বন্ধু বর্গের বেশির ভাগই কবি নহে।
কবিকে মুক্ত মনের হইতেই হইবে।
শারিরিক বিষয়গুলি প্রকাশে শুচিবাইগ্রস্থ হইলে চলে না। কোন একটি লেখায় তিনি নারীর কোমল স্থানগুলি বেশ কাব্যের সহিত প্রকাশের চেস্টা করিতেছিলেন। পেছনে গিন্নি যে দাড়াইয়া সেই সব পড়িতে পড়িতে নাসারন্ধ্রের স্ফীতি ঘটাইতেছিল, কবির সে খেয়াল ছিল না। হঠাৎ কিসে ধাক্কায় পপাতধরণিতল হইয়া কবির কর্ণ কুহরে জোড়া বোমা আঘাত পড়িল।
"ছি ছি ছি।
খাচ্চর! বদমাইস। আল্লাহ এ কার পাল্লায় আমি পড়লাম ! বল কোন মাগির ন্যাংটা ছবি দেখে এই সব লেখা হচ্ছে। এই জন্যই তো বলি মিনসের আজকাল এত প্রেম প্রেম ভাব হচ্ছে কোথা থেকে। আজ কে তোমার একদিন কি আমার একদিন..."
ইহার পর কবির শারিরিক অবস্থা কি ঘটিয়াছিল, তাহা বর্ণনা করিবো না। কল্পনায় দেখে নিন।
তাহার কাব্য চর্চাকে সমুলে উৎপাটিত করিবারও কম চক্রান্ত করা হয় নাই। কাদিয়া কাটিয়া , জলপানে অনিহা প্রকাশ করিয়া, বাপের বাড়ি গমনের হুমকি দিয়া, এমনকি আত্মিয়স্বজন ডাকিয়া হেনস্থা করিলেও কবিকে টলানো যায় নাই। অবশ্য মচকাইতে হইয়াছে অনেক বার।
পয়লা তারিখে বেতনের সমুদয় অর্থ দিবার পরেও মাসে মাসে গিন্নির নানা বাহারি শখ মিটাইতে হয়। ভাগ্যিস উপরি আয় ছিল।
নইলে দীন হীন বেশে কবিকে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামিতে হইতো।
যে ঘটনা লইয়া গিন্নির এত অত্যাচার, তাহা খুবই সামান্য ছিল। অন্তত আজকের বিচারে তো বটেই !
সেই ৩০ বছর পুর্বে এই পাড়ায় নতুন ভাড়াটিয়ার আগমন। তাহাদের একটি কিশোরি কন্যাও ছিল। কবির মন আগে হইতেই উড়ু উড়ূ।
সেই কবি মনের কল্পনায় হাজারও রঙ আকিবার ফলে সাধারণ সেই কিশোরি অসাধারণ সুন্দরি এক রাজকন্যার বেশে মানসে দেখা দিতো।
ডায়রির পাতা ভরিয়া অজস্র কাব্য রচনা যাহার তরে, তাহাকে মুখ ফুটিয়া বলা তো দূরে থাক, একখানি পত্র দিতেও কুন্ঠিত ছিলেন কবি। বন্ধুদের হাজারও উপদেশ আর সাহস দিবার ফলেও সেই কুন্ঠা ত্যাগ করা সম্ভব হয় নাই। বন্ধুদের কে যেন কিশোরিটিকে কবির মনে কথা কহিয়াছিল। তাই যাতায়তে পথে কিশোরি তাহাকে দেখিলেই দন্ত প্রকাশ করিতো।
ইহা দেখিয়া কবির বদ্ধমুল ধারণা হইলো যে, প্রেম শুধু হয়ই না, বরং পরিণয়ের পরিণতির দিকে গিয়াছে।
ইহা ভাবিয়া ভাবিয়া কবির স্বাস্থ্য হানি ঘটিতে লাগিলো। উদাস কবি আরো উদাস হইলেন। বাবা মা চিন্তিত হইলেন। এহেন অস্বস্তির অবসানে সাহসি দুই তিন জন বন্ধু রাজি হইলো।
কোন এক শুভ দিনে, কবিকে সদর দুয়ারের বাইরে খারা করিয়া রাখিয়া সেই দুই তিন বন্ধু কবির মায়ের সামনে উপস্থিত।
"ইয়ে মানে খালাম্মা। "
"বাবারা কত ক্ষন ইয়ে ইয়ে করবা? কি হয়েছে বলো?"
"না মানে ইয়ে... মানে বজলুর কথা বলছিলাম। "
"হ্যা ঠিক আছে। কি বলছিলে বলো।
"
" না মানে বলছিলাম যে বজলুর হাল তো দেখেছেনই... বলছিলাম। । "
প্রায় ৫-৭ মিনিট ইয়ে ইয়ের কথা শুনে কবির মাতঙ্গিনি মা রণচন্ডির মুর্তি ধারণ করিলেন।
ঘর কাপাইয়া চিৎকার করিয়া ধমকের সহিত কহিলেন
" যা বলবার এক্ষুনি সরাসরি বলো'"
এহেন চন্ডিমুর্তিকে যেখানে পাড়ার প্রভাবশালি কবির বাবাও নিয়মিত অর্ঘ্য দিতেন, সেখানে ছোকড়া কজনা কোন ছাড় !
ভয়ে তোতলাইতে তোতলাইতে একজন আসল কথা কহিয়া দিলো।
"মা-মা-মানে-নে... বজলু, পাশের বাড়ির ঝুমকাকে ভালোবাসে।
ওদের বিয়ে দিয়ে দিন। "
একে প্রেম? তায় আবার বিয়ে? তাহাও কলেজ পড়ুয়া সপ্তদর্শ বয়সে?
ইহা শুনিয়া আকাশ বাসা প্রকম্পিত করিয়া কবির মার হুংকার
" কিইইইইইই এত্ত বড় সাহস ? এত্ত বাড় বেড়েছে? কই? হারামজাদা কই? আজকে ওর *নুই কেটে ফেলবো। "
কবির মা বটি আনার নিমিত্তে রসুইঘরে যাত্রার সুযোগে বন্ধু বর্গ নিমিসেই হাওয়া। আর দুয়ারে বাহিরে দন্ডায়মান কবিও ২ দিনের জন্য নিরুদ্ধেশ। প্রেমট্রেমের নাম লওয়া যাইবে না কোনদিন, এমন ভীষন শর্তে, ঝুমকাদের বাড়ি মুখি বারান্দায় কান ধরিয়া এক ঘন্টা দন্ডায়মান হইবার পরেই কবির পাপ মুক্তি ঘটিয়াছিল।
পাঠক ভাবিতেছেন, তো শিষ্যের বিবাহ নিয়া গুরু এত চঞ্চলতা আর উদ্বেগ কেন?
শিষ্যটিকে মুক্তমনের কথা শিখাইতে গিয়া গুরুকেই মারা পড়িবার দশা হইয়াছে। নারীদের সাথে লটর পটর পর্যন্ত তো ঠিকই ছিল। শিষ্যটি নাকি মুক্তমনের আদিখ্যেতা দেখানোর সমলিঙ্গের বিবাহ নিয়া আন্দোলনে রত একজনের সহিত বেশ মাখামাখি করিতেছে।
এই খবর এখনও তেমন চাউর হয় নাই। নিন্দুকের তো অভাব নাই।
এই কথা চাউর হইলে লোকে কি বলিবে তাহার চেয়ে গিন্নি কি বলিবে, এবং মরণের আগ অবদি কি ঘটিবে, তাহা বিলক্ষণ জানেন কবি।
" ও এত দিন মেয়েদের নিয়ে নস্টামি করা হয়েছে। এখন ছেলেদের উপর নজর। এতদিন জানতাম কাব্য চর্চা। এখন দেখি ছোকরাদের নিয়ে প্রেমলীলা।
ঘেন্না ঘেন্না । ছি ছি মর মর মর। ওয়াক থু অয়াক থু। এক্ষুনি বাসা থেকে দূর হ..."
শ্রেফ অপবাদের আর সন্দেহ হইতে তাহার উপর এমন অত্যাচার চলিলে আত্মহত্যা ভিন্ন গতি থাকিবে না। তাহাই যে করিয়াই হোক, শিষ্যকে বুঝাইতেই হইবে শুভ পরিণয় আর দেরি নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।