আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

র্দুবষিহ হয়ে উঠছে জন জীবন

প্রতিনিয়ত তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি দরুণ মানুষের জীবন আজ দুর্বিষহ। দ্রব্যের দাম বাড়লেও মানুষের আয় বাড়ছেনা। অপর দিকে বেকারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাছে। কিন্তু সরকার এদিকে খেয়াল না রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সভা-সমাবেশ করে বেড়াচ্ছে। সেখানেও সৃষ্টি হচ্ছে আরেক অস্বস্তিকর পরিবেশ।

প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার প্রয়োজনে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে জননিরাপত্তা মুলক স্পিডব্রেকার গুলো, চলতে দেওয়া হচ্ছে না সাধারন যানবাহন, জনগণ ঘর থেকে বের হতে পাছেনা। ব্যাহত হচ্ছে মানুষের জীবিকা নির্বাহ। যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় তাদের অবস্থা আরও করুন হচ্ছে। সারা শহর জুড়ে শুরু হচ্ছে যানজট। যেদিকেই যাওয়া যায় সেদিকেই পুলিশের বাঁধা।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এর বিনিময়ে জনগণ কি পাচ্ছে ? সেই পুরুনো ধাচের কিছু আশার বানী আর বিরোধী দলীয় নেতৃর সমালোচনা। অথচ যেই জনগণের ভোটের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন তাদের জীবনের নিরাপত্তা না দিতে পারলেও নিজের নিরাপত্তা ঠিকই করে নিচ্ছেন। বিরোধী দলও থেমে নেই। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তারা উঠে পড়ে লেগেছে। সরকারের গঠনমুলক সমালোচনা না করে শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার আশায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে বিভিন্ন মিটিং, মিছিল, সমাবেশ করে আসছে।

বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ, দব্য মুল্যের উর্দ্ধগতি, দেশের সম্পদ অসম চুক্তির মাধ্যমে বহুজাতিক কম্পানির কাছে ইজারা দেওয়া, টিপাঁই মুখ ও সারী নদীতে বাঁধ, তিস্থা চুক্তি, দেশে আমেরিকান সেনার অবস্থান এ সম্পর্কে তাদের কোন কার্যকরী কর্মসূচী নেই। গত ১২ মার্চ বিরোধী দলের চল চল ঢাকা চল কর্মসুচী মানুষকে আরও ভোগান্তির শিকার করছে। সরকার ঘোষনা দিয়ে বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেয়। এতে সরকারী দল এবং বিরোধী দলের মারমুখী অবস্থান জনমনে ভীতির সৃষ্টি করে। পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ফলে মানুষ কর্মসংস্থানে যেতে পরেনি। মুমূর্ষু রোগীদের অবস্থা আরও করুন হয়ে উঠে, কাঁচামাল নষ্ট হয়। অনাকাঙ্কিত পরিস্থিতি এড়াতে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কতৃপক্ষ। অন্যদিকে মানুষের ন্যুনতম মৌলিক অধিকার পূরণে বরাবরের মতো ব্যর্থ এ সরকারও। শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার হলেও আজকে টাকা যার শিক্ষা তার নীতি কার্যকর হচ্ছে।

প্রতিনিয়ত বেতন ফি বৃদ্ধি করে চলছে। কদিন আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এক সভায় বলছেন গরীবদের জন্য উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন বলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তার অভন্তরীণ আয় থেকে চলতে হবে অর্থাৎ ছাত্রবেতন বৃদ্ধি করতে হবে। কিন্তু দেখা যায় আমাদের দেশের সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অধ্যায়নরত সিংহভাগই মধ্যবিত্ত ও নি¤œমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। যাদের পক্ষে উচ্চ বেতন দিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

বাসস্থানের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। সম্প্রতি সরকার কোন পূর্ব ঘোষনা ছাড়াই অথবা পুনর্বাসন এর ব্যবস্থা না করেই কড়াইল বস্থি উচ্ছেদ করার কাজে হাত দিয়েছে। সরকার একদিকে বলছে বঞ্চিত মানুষদের পুনবাসন ও কর্মসংস্থান রাষ্ট্রের দায়িত্ব কিন্তু সরকারের কর্মকান্ডই তাদের বক্তব্যের সাংঘর্ষিক হয়ে দাড়াচ্ছে। প্রধান বিরোধীদলীয় নেত্রী সেনানিবাসের বাসভবন হারালে ঈদের কদিন আগে হরতাল ডেকেছিল। এতে চরম ভোগান্তিÍর সম্মুখে পড়ে সারাদেশের মানুষ।

চিকিৎসাও আজ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। সরকারী হাসপাতালে গেলে কয়েকজন সহকারী ছাড়া ডাক্তারদের দেখা মেলেনা। তাদেরকে দেখা যায় বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছে অথবা অতি মুনাফার লোভে তারা নিজেরাই কোন কসাই খানা খুলে বসেছে। সেখানে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মত হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কে টাকা। এই প্রতিষ্ঠান গুলো চিকিৎসার নামে বাণিজ্য করছে।

অথচ চিকিৎসা সেবা খাতের মধ্যে একটি অন্যতম খাত। কিন্তু এতে সরকারের কোন তদারকি নেই। নামে বেনামে আনাচে কানাচে গড়ে উঠছে বিভিন্ন ক্লিনিক, যাদের কাছে সেবার চেয়ে বাণিজ্যটাই মুখ্য। এসব ভুইফোঁড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায়ই ভুল চিকিৎসার ফলে মানুষ মরতে দেখা গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজকে সরকার বিশ্ববিদ্যালয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কিন্তু একে ঘিরে শুরু হয়েয়ে দু¤্রজাল। দেখা যায় যদি একে বিশ্ববিদ্যালয় করা হয় তাহলে বর্তমানে সাধারন মানুষ যে ন্যুনতম সুবিধা পায় তা থেকেও বঞ্ছিত হবে। পানির জন্য হাহাকার করছে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার মানুষ। কয়েক সপ্তাহ যাবত পানি নেই। বিশুদ্ধ পানির অভাবে ডায়রিয়া ও কলেরা ছড়িয়ে পরছে চারিদিকে।

রাস্থায় ব্যারিকেড, ওয়াসার অফিস ঘেরাও, মিছিল, সমাবেশ করেও কোন কাজ হচ্ছে না। এটা কোন নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু সরকার এর জন্য কার্যকর কোন ভুমিকা নিচ্ছে না। যেন তাদের চিৎকার শোনার মত কেউ নেই। গ্যাস, বিদ্যুৎ’র সংকটে বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে শিল্প কারখানা।

এই সরকার জনগণকে আশ্বাস দিয়েছিল এই সমস্যার সমাধান করবে। ২০০৯ সাল থেকে নতুন কোন সংযোগ দেওয়া বন্ধ রাখলেও। আজ পর্যন্ত কোন সমাধান দিতে পরেনি। নতুন কোন শিল্প কারখানা দূরে থাক, পুরাতন গুলোই বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। এতে করে মানুষের কর্মসংস্থান ব্যহত হবে।

সরকার যেখানে প্রতি ঘরে ঘরে চাকরি দিবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল তা শুধু মাত্র আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে গেল। এহেন যখন দেশের অবস্থা তখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে সরকার বা বিরোধী দল তারা কি মানুষের জন্য কাজ করে নাকি নিজেদের আখের গোছানোর জন্যই ব্যস্ত ? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.