লেখক নাম : সাইইদ উজ্জ্বল 'বাংলাদেশ তুমি শুয়ে আছো অর্ধেন্দু দস্তিদার হয়ে, থেকে থেকে কাতরাচ্ছো,
বোমা বিস্ফোরণে নিদারুণ ক্ষত-বিক্ষত তোমার মুখ (বুক?); তোমার মুখ পুড়ে গেছে।
বাংলাদেশ, তুমি মরে গেছো প্রীতিলতার মতো বিষপান ক'রে।
বাংলাদেশ, তুমি বুলেটবিদ্ধ আনোয়ারা, কোলের শিশুকে স্তন দিতে চাও?
বাংলাদেশ, তুমি রাক্ষসী, একটা শালিকের মতো শিকার করেছো মতিয়ুরকে।
বাংলাদেশ, তুমি কারফিউ, গভীর রাতে যার বস্ত্রহরণ করতে গিয়ে মারা পড়েছি আমরা।
তুমি টর্ণেডো, বাংলাদেশ তুমি সাইক্লোন, বারাবার সমূদ্রে ভাসিয়ে নাও তুমি আমাদের,
হাঙরের পাকস্থলীতে ব'সে সুর ক'রে তেলাওয়াত করি আমারা।
তুমি গভিনী পুলোমা,
বাংলাদেশ তোমার দিকে তাকিয়ে আছে রাক্ষস কাম, একটু পরেই সে তোমাকে
বলাৎকারের চন্ড লালসায় হাত মচড়ে হিরহির ক'রে টেনে নিয়ে যাবে গভীর নিভৃত অরণ্যে।
বাংলাদেশ তুমি কিছুই নও, আবার তুমি সব। তুমি বাংলা মদের একটা বোতল,
মাতাল হবার তুঙ্গ অভিপ্রায়ে খালি ক'রে গড়িয়ে দিয়েছি তোমাকে,এখন পায়ে পায়ে গড়াবে তুমি।
বাংলাদেশ, তুমি একটা সস্তা মদের দোকান, কে শুঁড় কে-বা তার সাক্ষী তার কোন হিসেব নেই সেখানে।
বাংলাদেশ তুমি একটা ছমছমে ঘুটঘুটে বেশ্যালয়, যার সব কুঠরি এক একটি বেলীর দোকান
যেখানে কখনো কাউকে ভূতে পায়, যেখানে জং ধরা কব্জার মতো কর্কশ হিজড়েরা খ্যামটা নাচে,
যেখানে ষাট বছরের বেতো মাসী নাঙ ধরে, যেখানে তোবড়ানো বদনায়
সাতনরীর হার ঝমকা অনন্ত কানপাশা, যেখানে তাস পাশা জুয়া কড়িখেলা,
যেখানে উপদংশ আর সন্ন্যাস রোগ, যেখানে শিকড় তুকতাক ঝাড়ফুঁক ঢোলের মত মাদুলি,
যেখানে ক্ষুর্ধাত কাকের ঠোঁটে গর্ভপাতের লাল নাড়ি, যেখানে ঝুলকালিধরা
টিমটিমে প্রদীপের শিখা বরাবর উদ্বন্ধনে ঝোলা জোড়া পা শূন্যে দোল খায়।
'
( মাহমুদুল হকের 'জীবন আমার বোন' উপন্যাসের অংশবিশেষ । নিজের মতো করে লাইনগুলো সাজিয়েছি) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।