লড়াই যেন ঝড়ের রাতে হেরে গেলেও বাঁচতে শেখা... গত কয়েকদিনের বাংলাদেশের ব্লগ গুলতে সুরঞ্জিতের পদত্যাগ ছাড়া যে বিষয়টি আমার চোখে পরেছে তাহল অভিনেত্রী প্রভার আবার মিডিয়া তে ফিরে আসা। এই লেখাটা আসলে লিখতে চেয়েছিলাম যখন প্রভার ভিডিও টি নিয়ে তোলপাড় হচ্ছিল। কিন্তু কেন জানি লেখা হয়নি। আজকে যখন আবার এইসব নিয়ে কথা হচ্ছে তখন ভাবলাম লেখাটা লিখেই ফেলি।
প্রভা যে আমার খুব একটা প্রিয় অভিনেত্রী তা কিন্তু নয়।
কিন্তু তার এইভাবে হুট করে বিপদে পড়াটা আমার কাছে কেমন যেন লেগেছিল। এমন দাবি করবনা যে ভিডিওটি আমি দেখি নি বা খুব দুঃখিত হয়েছি আমোদ গ্রহন করা ছাড়া। কিন্তু এই কারনে মিডিয়া থেকে তার হারিয়ে যাওয়াটা ভাল লাগে নি আমার।
আসলে তার ও তো কিছুই করার ছিল না। এইরকম বাজে একটা ঘটনার সাথে জড়িয়ে যাবার পর কেউ তাকে নিয়ে কাজ করবে ভাবাটা কষ্টকর।
আর ঠিক সেই মুহূর্তে আমরা যারা নগ্ন প্রভাকে দেখে লোল ফেলেছি তাদের পক্ষে হয়ত টিভির পর্দায় অভিনেত্রী প্রভাকে গ্রহন করা সম্ভব ছিল না।
এখন সে ফিরে আসছে, দেখা যাক কি হয়?
কিন্তু যারা সেই সময় তাকে মেনে নিতে পারছিলাম না তারা কি অরিজিনাল সিন দেখার পর আঙ্গেলিনা জোলিকে ছিঃ ছিঃ করেছিলেন? নাকি টাইটানিক, দা রিডার দেখার পর কেট উইন্সলেটের সিনেমা দেখা ছেড়ে দিয়েছেন?
দেন নি তো? তাহলে?
ছত্রাকে যৌন দৃশে অভিনয় করার পর পাওলিকে বা গান্ডুতে ঋতুপর্ণা কে মিডিয়া থেকে বিদায় নিতে হয়নি, আমাদের দেশের দর্শকদের কাছেও এদের আবেদন কমেনি বরং বেড়েছে।
তাহলে আমার দেশের একটা মেয়ের নগ্নদেহ কেন তার অভিনয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ালো?
ও আচ্ছা! আপনি প্রভার মন মানসিকতার প্রতিবাদ করে তাকে চাননি?
দেখুন, আমরা যেই সমাজের দিকে নিজেদের নিয়ে যাচ্ছি সেইখানে অবাধ যৌনাচার হতেই হবে। আপনার আশেপাশেই হচ্ছে। এই সমাজকে রক্ষা করার জন্য আপনার যে দায়িত্ব ছিল আপনি নিজেও সেটা পালন করেন নি।
তো শুধু শুধু প্রভাকে দোষ দিয়ে কি লাভ?
নিজের সংস্কৃতি রক্ষার জন্য আমরা কে কি করেছি সেটা একটু চিন্তা করলেই বোঝা যাবে দোষের ভাগিদার আমরাও।
আর মিডিয়ার এই বেপারটা যেহেতু ওপেন সিক্রেট সেহেতু নতুন করে অবাক হবার কি কিছু আছে?
মিমের পর্ণ ভিডিও নিয়েও গত কয়েকদিন বেশ তোলপাড় হয়েছে। যদিও শুনলাম ঘটনা সত্য না। যদি সত্যিও হয় আমি মনে করি মিমের মিডিয়া ছেড়ে দেয়া ঠিক হবে না। আমাদের দৃষ্টি এই ক্ষেত্রে পরিবর্তন করার সময় এসেছে।
একটা মানুষের যৌন জীবন তার নিজের পছন্দ এবং ইচ্ছা অনুযায়ী চলবে এইটাই স্বাভাবিক।
কাউকে এই ব্যাপারে নিষেধ করার আগে আমাদের দেখতে হবে আমরা আমাদের সমাজকেই এই অবস্থায় নিয়ে এসেছি।
অতএব যেকোনো একক ব্যক্তি এর অপরাধী কেন হবে?
একজন মানুষ তার কাজের ক্ষেত্রে টিকে থাকবে কিনা সেটার বিচার যেন শুধুমাত্র তার কাজ দিয়েই হয়, অন্য কিছু নয়।
এখানে কেউ যেন এইটা ভুল না বুঝেন আমি পরিমলের বহাল তবিয়তে টিকে থাকার কথা বলছি। পরিমল অপরাধি, সে তার নিজের ছাত্রীকে বাধ্য করেছে এই কাজ করতে।
বরং এই ক্ষেত্রে আমার সেই বোনটির সাহসের তারিফ করতেই। সবাইকে এই ধরনের কথা বলে দেবার চলতি এই সমাজে ছিলনা। সে শক্ত হয়ে সেটা শিখিয়েছে আমাদের।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।