পৃথিবীর বাধা-এই দেহের ব্যাঘাতে/ হৃদয়ে বেদনা জমে;-স্বপনের হাতে/ আমি তাই/ আমারে তুলিয়া দিতে চাই। কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে আমি সৎ কিনা তবে আমি কোনদিক না ভেবেই উত্তর দিয়ে দেব- হ্যাঁ, আমি সৎ। পারলে সততা বিষয়ে ছোটখাট একটা ভাষণ শুনিয়ে দেব । বড় বড় মনীষীদের বাণীও কিছু ঝেরে দেব। নিঃশ্বাস যত কম ফেলে প্রশ্নকর্তার উত্তর দ্রুত দেয়া যায় সে চেষ্টা করব।
কারণ প্রশ্নকর্তার মনোযোগ প্রশ্ন থেকে দূরে সরে যেতে পারে। নিজেকে সৎ প্রমাণের এমন মোক্ষম সুযোগ আমি হারাতে চাইবো না। আসলেই আমি সৎ। কারণ, আমি পাই না তাই খাই না।
৫৫ বছরের শ্রম-ঘাম, মেধা ও সংগ্রামে অর্জিত সততা ৫ মাসে ভূলন্ডিত হতে দেখা যায় বাংলাদেশের এক রাজনীতিকের।
দুঃখজনক হলেও সত্য, শেয়ার বাজারের ঝানু খেলোয়াড় বা আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ-ঘোষখোররা ধরা না পড়ে ধরা পড়লেন অভাবে স্বভাব নষ্ট হয়ে যাওয়া অথবা বুড়ো বয়সে ভীমরতি আক্রান্ত এক রাজনীতিক। এই বয়সে এসে কেন এমন স্খলন হল তা আমাদের ভেবে দেখা উচিত।
স্বাধীনতা-উত্তর যুব সমাজের মধ্যে দ্রুত অর্থ-বিত্ত ও গাড়ি-বাড়ির মালিক হওয়ার প্রবণতা অধিক পরিমাণে লক্ষ্য করা যায়। যে যেভাবে পারে (উপার্জন করে নয়) বৈধ-অবৈধ যে কোন প্রকারেই হোক; অর্থ-বিত্তের পাহাড় গড়ার উগ্র বাসনা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হতে দেখা যায় যুদ্ধ-পরবর্তী তরুণদের মাঝে। গত শাসণামলের একজনের কথা আমরা মোটামুটি সবাই জানি।
সাম্প্রতিক পদত্যাগী রাজনীতিকের সন্তানের ব্যাংক হিসেব দুদক কর্তৃক চাওয়ার মাধ্যমে স্বাধীনতা-উত্তর যুব সমাজের দ্রুত অর্থ-সম্পদ অর্জনের নৈতিক অবক্ষয়ের চিত্রটি আরো স্পষ্টভাবে ধরা দেয় আমাদের মাঝে। সাধারণ চাকুরের হঠাত ৫ কোটি টাকা দিয়ে ইন্টারনেট গেটওয়ের লাইসেন্স প্রাপ্তির বিষয়টি বুঝতে খুব বেশি জ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন হয় না। গত শাসণামলের প্রয়াত অর্থমন্ত্রীর ছেলের কীর্তিও এক্ষেত্রে উল্লেখ্য। এরকম ভুরি ভুরি উদাহরণ দেয়া যাবে।
বর্তমান যুব-প্রজন্মের কাছ থেকে সাম্প্রতিক পদত্যাগী রাজনীতক হয়তো অর্থ কামানোর দীক্ষা নিয়েছিলেন।
তবে দীক্ষায় কিছু ত্রুটি ছিল। নইলে ডিজিটাল যুগে কোন জড়বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এনালগ পদ্ধতিতে টাকা বহন করে! এর মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করলেন, রাজনীতিতে ঝানু হলেও অর্থ-কামানোয় একেবারে শিক্ষানবীশ।
একটা কথা গ্রামে প্রচলিত আছে-পাপ ছাড়ে না বাপেরে। সন্তানের সীমাহীন চাহিদা মেটাতে গিয়ে শেষ বয়সে এসে নিজের বর্ণাঢ্য-গৌরবময় অর্জনগুলো বিসর্জন দিয়ে গ্রাম্য প্রবাদটির প্রমাণই হয়ত তিনি করেছেন। এর মাধ্যমে আমার শুরুর কথাগুলোর সত্যতাকেও আর সুদৃঢ় করে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।