-- এত মুগ্ধ চোখে আমি কখনও কাউকে বৃষ্টি দেখতে দেখি নি ।
কথাগুলো শ্রবণইন্দ্রিয় ভেদ করা মাত্রই নিরা বাস্তবে ফিরে এল । পাশের মানুষটির দিকে তাকিয়ে ঈষৎ লজ্জা পেয়ে গেল হয়তো । মানুষটা কেমন মুগ্ধ চোখে নিরার দিকে তাকিয়ে আছে । আষাঢ়ের আজকের বৃষ্টিতেও অফিস যেতে হচ্ছে ।
জুন ক্লোজিং এবং জুলাই ওপেনিং চলছে । সারা রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারনেই হয়ত দিনটা কেমন যেন সতেজ আর বৃষ্টিস্নাত রুপ ধারন করে আছে । সকালে বাসা থেকে বের হয়ে মুল ফটকের কাছাকাছি আসতেই ইশানের সাথে দেখা । সাধারণত তেমন একটা কথা হয় না । যখনি দেখা হয় একটু ভদ্রতার হাসি বিনিময় পর্যন্তই ।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স থেকে ডিগ্রিধারী বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের এই ধরনের মানুষের সাথে এর চেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠতা না করাই নিরাপদ মনে করে নিরা । পাশের বাড়িতে ইশানের দাদি একা থাকেন বলে নিরাদের সাথে বেশ ভাল সম্পর্ক রয়েছে দাদীর । মাঝে মাঝে ইশান দাদীর সাথে দেখা করতে আসেন , সেই সুবাদে এই হাই প্রোফাইল ক্যাটাগরির মানুষের সাথে পরিচিতি । খুব ট্যালেন্টেড মানুষের কথা বলতে গেলে নিজেকে বোকা বোকা লাগে । নিরা কেন যেন এই মানুষটাকে খুব ভয় পায় ।
রাজপুত্রের সদৃশ এই মানুষটা যে কোন সময় নিরা কে ভয়ঙ্কর একটা ঝাড়ি দেবে, এমন একটা আতঙ্ক নিরা কে আচ্ছন্ন করে রাখে।
কি মনে করে ইশান নিরা কে অফিস পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ করল । প্রচন্দ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিরার কেন যেন না করার মত সাহস হল না ! এবং কোন এক অজানা আতংকে খুব বাধ্য মেয়ের মত গাড়িতে উঠে পড়ল । মগবাজার রোডে আসার পর ঝুম ঝুম করে বৃষ্টি শুরু হল আবার । অবারিত বৃষ্টিতে নিরা ভুলেই গিয়েছিল বর্তমান অবস্থানের কথা ।
হাল্কা টিউনে কলনিয়াল কাজিনের "রেইন ড্রপস" বৃষ্টিস্নাত মুহূর্ত কে পূর্ণতার স্বাদে পরিনত করছে । মুহূর্ত টুকু নিজের মত করে বৃষ্টির সাথে মিশে যাচ্ছে অথবা নিরা হয়তো মুহূর্তটুকু ধরে রাখতে চাইছে না ।
নিরার অফিসে পৌঁছানোর পথটুকু আরেকটু দীর্ঘ করার জন্যই হয়তো ইশান হাতিরঝিলের প্রশস্থ রাস্তায় গাড়ী ঘুরিয়ে নিল । পাশে বসা এই মেয়েটাকে সব সময় আতঙ্কগ্রস্থ মনেহয় ইশানের । তারপরো আজ কোন অজানা কারনে এই মেয়েটাকে পাশে পেতেই ভাল লাগছে ।
অদ্ভুত একটা অনুভতির জলধারা স্পর্শ করে যাচ্ছে । কেমন যেন লাগছে । এই অনুভুতিটা আসলে কি ?? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।