মধ্যদুপুরে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হলো মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামে, একটি খেলার ডামি দেখানোর জন্য। ডামিটি দেখে তো চোখ ছানাবড়া হওয়ার জোগাড়। তলোয়ার নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ, যুদ্ধ খেলা! ‘কিন্তু খেলার নিয়মকানুন সম্পর্কে জানার পর আমরা সবাই আগ্রহী হয়ে গেলাম। ’ কথাগুলো বলছিলেন প্রমা সাহিদা নাজনীন। তলোয়ার নিয়ে এই খেলাটির নাম ফেন্সিং।
সম্প্রতি শেষ হওয়া বাংলাদেশ গেমসে প্রথমবারের মতো যুক্ত করা হয়েছে ইভেন্টটি।
এই নতুন খেলাটি কমার্স কলেজে জনপ্রিয় করেছেন ক্রীড়া শিক্ষক ফয়েজ আহমদ। একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী নুসরাত মোমিন তানহা, সাহিদা নাজনীন, শাফিনাজ ফাইরুজ জামান, তানিয়া আক্তার এ খেলা সম্পর্কে আগে জানতেন না। তাই যখন এই খেলায় তাঁদের অংশ নিতে বলা হলো, তখন তাঁরা একটু দ্বিধায় পড়ে গেলেন। তার পরও ডামি খেলা দেখে প্রস্তুতি খেলায় অংশও নিলেন।
কিন্তু দিন শেষে মাথায় ভর করল আরেক চিন্তা—সামনে পরীক্ষা। সেই সঙ্গে ভর করল আরেক দুশ্চিন্তা, পরিবার অনুমতি দেবে তো এমন খেলায় অংশ নিতে?
এসব দুশ্চিন্তার পালে অবশ্য হাওয়া লাগেনি। ‘খেলা সম্পর্কে বাসায় যখন বলি, তখন বাবা-মা কিছুটা দ্বিধান্বিত ছিলেন বটে। পড়াশোনার ক্ষতি যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন। ’ বলছিলেন তানহা।
এরপর উদয়াস্ত পরিশ্রমের পালা। ‘কঠোর পরিশ্রম করে আমরা অল্পতেই খেলাটি আয়ত্তে আনলাম। খেলাটিতে তিনটি বিভাগ আছে। আমরা খেলেছি ইপি বিভাগে। ’ খেলার শুরুর দিককার কথা বলছিলেন তানিয়া আক্তার।
বাংলাদেশ গেমসের প্রথম আসরেই সাফল্য অর্জন করেন এই আত্মপ্রত্যয়ী মেয়েরা। ইপি বিভাগে তাঁরা অর্জন করেন রানারআপ শিরোপা। তবে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ আনসার। এই প্রতিযোগিতায় আরও অংশ নেয় মিরপুর ক্লাব ও ডাই হার্ট ক্লাব।
এই সাফল্যের পর থেকে কমার্স কলেজের এই শিক্ষার্থীরা তাঁদের পরিবার থেকেও পাচ্ছেন বিপুল উৎসাহ।
সাহিদার বাবা তো বলেই দিয়েছেন, ‘তোমার ইচ্ছা হলে ফেন্সিং চালিয়ে যেতে পারো। ’ এমন উৎসাহ পাওয়ার পর কে আর রোধে তাঁকে! এখন তাঁদের একটাই স্বপ্ন, অলিম্পিকে বাংলাদেশের হয়ে ফেন্সিং খেলা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।