টানা তিন মাস একটা প্রজেক্ট এ কাজ করার পর আজ সপ্তাহ শেষে একটু শান্তি অনুভব করছি। আজকাল প্রায় তরুণ প্রগামাররা আমকে প্রশ্ন করে এন্ড্রয়েড না আইফোন। যদিও আমি সেইরকম দক্ষ গোছের লোক না, তারপরও আমি আমার মত করে কিছুটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব।
প্রথমেই আসি খরচ-পাতির হিসাবে। বাংলাদেশি প্রায় সব প্রগামারের কাছেই একটা পিসি থাকে তাতে উইন্ডোজ বা লিনাক্স সেটআপ করা থাকে।
তার সাথে একটি জাভা আইডিই (ইকিলিপ্স কিংবা আইডিয়া)ও এন্ড্রয়েড এসডিকে ইন্সটল দিলেই কাজ হয়ে গেল। কিন্তু আইওএস ডেভেলপ শুরু করতে গেলেই আগে বিশাল অংকের অর্থ ব্যয় করে একটি ম্যাক ক্রয় করতে হবে (যদিয় আজকাল অনেকেই হ্যাকিংটোশ দিয়ে কাজ করছে)। এর পর এপল ডেভেলপার আইডি দিয়ে এক্সকোড ডাউনলোড করে এনভাইরোমেন্ট সেটআপ দিতে হয়। কিন্ত বছর প্রতি ৯৯ ডলার দিয়ে ডেভেলপার একাউন্ট না খুললে নিজের ডেভেলপ করা এ্যপ নিজের ডিভাইসেই ট্রান্সফার করতে পারেনা। এন্ড্রয়েডে আবার এই টাইপের কোন ঝক্কি-ঝামেলা নেই।
কিন্তু গুগল প্লেতে (এন্ড্রয়েড মার্কেট)এ আপলোড করতে ২৫ ডলার ব্যয় করতে হয়। যেটি এপলের এ্যপস্টোর এ আপলোড করার জন্য প্রতি বছর ব্যয় করতে হয়না।
এরপর আসি ল্যাংগুয়েজের কথায়। এন্ড্রয়েড এ সেই চিরাচরিত জাভাই ব্যবহৃত হয়ে আসছে কিন্তু আইওএস ডেভেলপমেন্টে অবজেক্টিভ-সি ব্যবহৃত হয়। জাভা অনেক প্রগামারের আগে থেকেই জানা থাকায় আইওএস এর তুলনায় এন্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্ট এ তাড়াতাড়ি নামতে পারে।
আপাত দৃষ্টিতে এন্ড্রয়েড এ কাজ করা ভাল মনে হলেও উল্টোভাবে চিন্তা করলে, মানে বেতন চিন্তা করলে হয়ত আইওএসই ভাল। কেননা ল্যাংগুয়েজ এবং প্রাথমিক ইনভেস্টমেন্ট এন্ড্রয়েড এ তুলোনামুলকভাবে সুবিধা থাকায় ডেভেলপারের সংখ্যা অনেক বেশি হবে তাই বেতন আইওএস ডেভেলপারেরই বেশি হবার সম্ভাবনা বেশি।
যদি পরিব্যাপ্তি কথায় আসি, এন্ড্রয়েড অবশ্য আইফোনের চেয়ে এগিয়ে। আইফোনের উচ্চমূল্যের তুলনায় এন্ড্রয়েডের অনেক সস্তা হেন্ডসেটগুলোর বিক্রির হার অনেক বেশি। এন্ড্রয়েডের দামী সেটগুলো আইফোনের সাথে এখন সেইভাবে পাল্লা দিচ্ছে।
মেমোরি মেনেঞ্জমেন্ট এর জন্য জাভার গারবেজ কালেক্টরের কম-বেশি সুনাম রয়েছে। এদিক দিয়ে এন্ড্রয়েড আইফোনের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বা বলতে পারি এগিয়ে ছিল। কেননা আইওএস ৫ থেকে এআরসি (অটোমেটিক রেফারেন্স কাউন্টিং) এলএলভিএম কম্পাইলার এর সাথেই দেয়া হচ্ছে। এআরসি গারবেজ কালেক্টরের থেকে ভাল, কারণ কম্পাইলার মেমরি মেনেঞ্জমেন্ট এর জন্য প্রয়োজনীয় লজিকগুলো কম্পাইল টাইমেই কোডে প্রবেশ করিয়ে দেয়। যার ফলে এটি রান টাইমে গারবেজ কালেক্টরের মত হার্ডওয়ারের রিসোর্স খেয়ে বসে থাকেনা।
ইউআই পয়েন্ট অব ভিউ থেকে বিবেচনা করলে আইফোনের তুলনা নেই। এন্ড্রয়েড ও আইফোন দুটোতেই ড্রেগ এন্ড ড্রপ ইউআই লেআউট ডিজাইন করা যায়। আইফোনের জিনিষগুলো এদিক দিয়ে অনেক সমৃদ্ধ। কিন্ত ব্যক্তিগতভাবে আমি এন্ড্রয়েডে এক্সএমএল ব্যইজ ডিজাইন করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করি।
এগুলো ছাড়াও এভেইলএবল রিসোর্স, থার্ড পার্টি লাইব্রেরী, সিমুলেটর ইত্যাদি হাজার রকমের ইস্যু বিবেচনার আছে।
তবে পরিশেষ এ একটা জিনি্ষ না আনলেই হচ্ছেনা, সেটি হল এ্যপ পাবলিশিং এপ্রুভাল। এপল এ্যপ অনুমোদন এ অনেক স্ট্রিক। এ্যপ স্টোরে এ্যপ সাবমিট করবার পর বেশ কদিন অপেক্ষা করতে হয়। এন্ড্রয়েড এ এপলের মত রিভিউ প্রসেস নেই বলে আপলোড অনেকটা ইনস্ট্যান্টই হয়ে থাকে।
ত এবার আপনিই সিদ্ধান্ত নিন আপনি কোনটির ডেভেলপার হবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।