আমি কিছুই না..... আবার অনেক কিছু । ফারিস ওদেহ. নাম টা আপনার কাছে মোটেও পরিচিত হবে না যদি না আপনি একজন ফিলিস্তিনী হয়ে থাকেন. একটি ছবি দেখলে আপনার শরীরে সমস্ত লোম দাড়িয়ে যাবে , মনে মনে বলবেন " এর নামই কি সাহসিকতা ?" ইসরাইলী ট্যাংক টা তখন গাজা স্ট্রিপ অতিক্রম করছিলো. ফারিস ওদেহ তখন একটি পাথর তুলে নির এবং ইসরাইলী ট্যাংকের দিকে ছুড়ে মারলো পাথর টি. পাথরের সাথে ছিল ঘৃনা, ক্ষোভ, বেদনা এবং একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবী. ছবি টি তোলা হয় অক্টোবর ২৯, ২০০০ সালে প্রেসের এক ফটো জার্নালিস্ট কতৃক. এর ১০ দিন পর ফারিস আবার একই ভাবে ছুড়ে মারে পাথর কারনি নামক একটি জায়গায় ইসরাই্লী ট্যাংক লক্ষ্য করে. তবে এবার ইসরাইলী ট্রুপস আর আগের ভুল করেনি. ইসরাইলী সৈন্য রা তার ঘাড়ে গুলি করে নভেম্বর ৯, ২০০০ সালে. এর পর ফারিস ওদেহ ফিলিস্তিনী স্বাধীনতাকামী মানুষের কাছে একজন বীরের মর্যাদা পায়. আন্তর্জাতিক প্রেস তার নাম দেয়, "ট্যাংক বয়" শুনবেন তার গল্প ? সাধারন ঘরের ছেলে ফারিস ওদেহ. শৈশব থেকেই সে ছিল সাহসী এবং তার মার মুখে শোনা যায় তার বিস্তারিত. সে একবার ৪ তালা ভবন থেকে লাফ দিয়েছিল. ২০০০ সারে বৃহত্তম বিক্ষোভ এর সময় সে স্কুলে পালাতো. চলে যেত ইসরাইলী ট্যাংকের সামনে আর পাথর ছুড়তো তাদরে দিকে. এটা মোটেও পছন্দ করতো না ফারেসের বাবা. এমন কি মারধর এবং ঘরে আটকে রাখতেও হয়েছিল ফারেস কে. কিন্তু দূরন্ত ফারেস জানালা টপকে চলে যেত রাস্তায়. তার মা দ্যা ওয়াশিংটন পোষ্ট কে জানায়, ফারেস বিখ্যাত হবার জন্য এগুলো করেনি এমনকি ক্যামেরা দেখলে সে দৌড়ে চলে যেত. কারন টিভি তে যদি তাকে দেখে তার বাবা, তাহলে হয় তো তাকে আবার মার খেতে হবে. একসময় মেনেই নিয়েছিল মা. ছেলে কে বরেছিল, তুমি পাথর ছুড়তে চাও? ঠিক আছে, কিন্তু তুমি কিছুর আড়াল থেকে চুড়বে এবং তোমার বাবা যেন এটা না জানে. ফারেস ওদেহ বলেছিল , "আমি কোন কিছুর ভয়ে ভীত নই" কিন্তু কোন কিছুর আড়াল থেকে নয়, সম্মুখ ট্যাংকের সামনেই পাথর মারতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয় ফারেস ওদেহ. ১ ঘন্টা পড়েছিল ফিলিস্তীনি মাটি তে তার লাশ. জন্মদিনের মাত্র ১৩ দিন আগে মারা যায় ফারেস. শহীদের মর্যাদা পেয়েছিল ফারিস ওদেহ. ফারেস ওদেহ ১০ হাজার লোক এসেছিল ফারেসের জানাজায়. তার বাবা বলেছিলেন" সে একজন শহীদ এবং সব সময় সে তাই চেয়েছিল, শহীদ হবে আল-আকসার জন্য. ইরাকি প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ফারেসের জন্য ১০ হাজার ডলারের একটি চেক পাঠালেও তার মা বলেন, ফারেসের রক্ত অমূল্য. ২০০২ সালে ইয়াসির আরাফাত ফারেসের প্রতি শ্রদ্ধা জানান. প্রশ্ন জাগতে পারে কেন আমি হটাৎ করে ফারেস ওদেহের কথা কেন বললাম. ১৯৬৯ এর কথা মনে পড়ে যায়, রশীদ তালুকদারের একটি ছবি. মিছিলের সামনে একটি টোকাইয়ের প্রতিবাদী স্লোগান. মিলিটারি রা ছেলেটি কে পড়ে গুলি করে মেরে ফেলে. আর তেমন কিছুই জানতে পারিনি. স্বাধীনতা ত্যাগের ফসল. আর ত্যাগ আমাদের গর্বিত করে. সূত্র: ১. ছবি. ২. গুগল ইমেজ ৩. উইকি . ৪. প্যালেস্টাইনি কয়েকটি ওয়েবসাইট.
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।