আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নেটকাপানো ১০ হ্যাকার

তবে তাই হোক, ক্লান্তিহীন তিল তিল আরোহনে সত্য হোক বিক্খুব্ধ এই জীবন _____ সম্প্রতি বাংলাদেশে হ্যাকার আর হ্যাকিং নিয়ে একটি আলোচনা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের বেশ কয়েক হ্যাকার ভারতের হ্যাকারদের সঙ্গে এক ধরনের ঘোষণা দিয়েই নেমেছে হ্যাকিং যুদ্ধে। আর দুই দেশের হ্যাকারদের বিভিন্নভাবে সহায়তা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক হ্যাকার গোষ্ঠীগুলোও। তাই এ বিষয়ে জানতে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। হ্যাকারদের ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় প্রকার কাজেই সংশ্লিষ্ট থাকার কথঅ প্রযুক্তি জগতে যুক্ত সবাই টের পেয়েছেন ইতিমধ্যেই।

তাই হ্যাকারদের পরিচিতিও ব্যাপক। আর বিশ্বের শীর্ষ ১০ হ্যাকারের একটি তালিকা সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। এ ১০ হ্যাকারকে নিয়ে লিখেছেনÑনাজমুল হক ইমন স্টিভ ওজনিয়াক স্টিভ ওজনিয়াক অ্যাপল করপোরেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা। অ্যাপল পণ্যগুলো উদ্ভাবনে তার কৃতিত্ব অনেক। গত শতকের সত্তরের দশকের কথা।

তিনি ও স্টিভ জবস মিলে টেলিফোনের মতো একটি যন্ত্র তৈরি করেন। যন্ত্রটির নাম ব্লু বক্স। এর সাহায্যে টেলিকম অপারেটর এটিঅ্যান্ডটির নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিনা খরচে কথা বলা যেত। দু’জন ১০০টিরও বেশি ব্লুবক্স বিক্রি করেন। প্রতিটির দাম ছিল ১৫০ ডলার।

টিম বার্নারস লি বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইন্টারনেট ছাড়া হ্যাকিংয়ের কথা চিন্তা করা যায় না। ইন্টারনেটের জনক স্যার টিম বার্নারস লি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। সেখানে তিনি ও তার এক বন্ধু হ্যাকিংয়ের দায়ে ধরা পড়েন। অবশ্য সে সময় তিনি নিজেও ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের ((িি)ি) কথা চিন্তা করেননি। তারা অক্সফোর্ডের কম্পিউটারের অপব্যবহার করেন।

পরে স্যার টিম নিজেই একটি কম্পিউটার তৈরি করেন এম ৬৮০০ প্রসেসর ও একটি পুরনো টেলিভিশন সেট জোড়া লাগিয়ে। লিনাস ট্রোভাল্ড ইতিবাচক হ্যাকিং রূপকথার সবচেয়ে উজ্জ্বল তারকা হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে। তিনি কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম লিনাক্সকে আরও সমৃদ্ধ করেন। এরপর অনলাইন ফোরামের মাধ্যমে অন্যদের লিনাক্স ব্যবহার করার সুযোগ করে দেন। অপারেটিং সিস্টেমটির কোড হ্যাক করে তিনি একে মুক্ত সফটওয়্যারে পরিণত করেন।

তার হ্যাকিংয়ের মূল কথা ‘সবার জন্য উš§ুক্ত’। সুতোমু শিমোমুরা কুখ্যাত হ্যাকার কেভিন মিটনিক শিমোমুরার ব্যক্তিগত কম্পিউটারটি হ্যাক করেন। কেভিনকে উপযুক্ত জবাব দিতেই এক দক্ষ ও নীতিবান হ্যাকারে পরিণত হন শিমোমুরা। ‘সাদা’ হ্যাকিংয়ের প্রতিনিধি হয়ে তিনি মিটনিককে কারাগারে পাঠাতে সক্ষম হন। তার সহায়তায় কেভিনকে আটক করতে সমর্থ হয় এফবিআই।

তিনি মিটনিকের সেলফোন তথ্য অনুসন্ধান করে এফবিআইকে নিশ্চিত করেন। রিচার্ড স্টলম্যান তার উপাধি ‘মুক্ত সফটওয়্যারের জনক। ’ ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির স্টাফ হ্যাকার তিনি। দায়িত্বের অংশ হিসেবেই তিনি পাসওয়ার্ড সিস্টেম ভাঙার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন। তার হাত ধরে তৈরি হয় জিএনইউ অপারেটিং সিস্টেম।

এটিও মুক্ত সফটওয়্যারের জন্য আশীর্বাদ। কিম ডটকম জার্মান এ হ্যাকারের আসল নাম কিম শিমিটজ। প্রযুক্তির ভালোবাসায় এফিডেভিট করে নিজের নাম রাখেন কিম ডটকম। তার হ্যাকিং কৃতিত্ব ভালোমন্দ দু’ভাবেই বিশ্লেষণ করা যায়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সিটি ব্যাংকে হ্যাক করে গ্রিনপিসকে ২ কোটি ডলার পাইয়ে দেন।

এ কথাও শোনা যায়, তিনি ওসামা বিন লাদেনের সুদানিজ একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেছিলেন। তবে তার কুখ্যাতি মেগাআপলোড প্রতিষ্ঠা করার জন্য। গত মাসেই বন্ধ হয় মেগাআপলোড। অনলাইন পাইরেসির অভিযোগে মাসখানেক কারাবন্দি থাকার পর জামিনে মুক্তি পান। কেভিন মিটনিক শিমোমুরার কথা বলতে গিয়ে মিটনিকের নাম এর মধ্যেই নেয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ তাকে আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড কম্পিউটার অপরাধী’ হিসেবে। পাঞ্চকার্ড ফাঁকি দিয়ে লসঅ্যাঞ্জেলেসের বাসে ওঠার মাধ্যমে তার হ্যাকিং প্রতিভার (!) বিকাশ শুরু। এরপর নকিয়া ও মটোরোলার মতো শীর্ষ করপোরেট প্রতিষ্ঠানের ডাটাবেজ হ্যাক করেন। হ্যাকিংয়ে শিমোমুরার কাছে পরাস্ত হয়ে ৫ বছরের জন্য কারাবন্দি থাকেন তিনি। জোনাথান জেমস যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের থ্রেট রিডাকশন এজেন্সির গুরুত্বপূর্ণ ডাটাবেজ হ্যাক করেন জোনাথান।

ওই সার্ভারে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ই-মেইল ঠিকানার তথ্যগুলোর অপব্যবহার করেন। এখানেই শেষ নয়, মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার ডাটাবেজ থেকে ১৭ লাখ ডলার মূল্যমানের সফটওয়্যার চুরি করেন তিনি। পুরস্কারস্বরূপ ২০০০ সালে প্রথম কিশোর হ্যাকার হিসেবে কারাজীবনের যাতনা ভোগ করেন। কেভিন পালসেন আইন কর্মকর্তাদের চোখে পালসেন কম্পিউটার অপরাধ জগতের হানিবাল লেকটার। কল্পকাহিনীর চরিত্র হানিবাল লেকটার নরমাংসভোজী কুখ্যাত এক সিরিয়াল কিলার।

আর হ্যাকারদের চোখে তিনি ‘ডার্ক দান্তে’। দান্তে প্রাচীন ইতালির এক প্রতিভাবান কবি। লসঅ্যাঞ্জেলেস রেডিও ফোনলাইনে অনুপ্রবেশ তার হ্যাকিং কর্মকাণ্ডের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা। অন্য একজনের ভূমিকায় টেলিফোন করে তিনি জিতে নিয়েছিলেন একটি বিলাসবহুল পোর্শে গাড়ি। এরপর হ্যাক করে এফবিআইর ডাটাবেজ।

এফবিআইও ছেড়ে কথা বলেনি। পালসেনকে কারাগারে পুরে রাখে দীর্ঘদিনের জন্য। রবার্ট টাপান মরিস ইন্টারনেটভিত্তিক হ্যাকিংয়ের প্রথম ভাইরাসটির নাম মরিস ওয়ার্ম। ১৯৮৮ সালে ভাইরাসটি ক্ষতিগ্রস্ত করে ৬ হাজারেরও বেশি কম্পিউটারকে। ওয়ার্মটির কারিগর রবার্ট টাপান মরিস।

অবশ্য তার দাবি ছিল ইন্টারনেট ব্যবস্থা যাচাই করার। তার যুক্তি পুলিশের মন গলাতে পারেনি। দণ্ড হিসেবে ৪০০ ঘণ্টা কমিউনিটি সেবা দিতে হয়। আর্থিক জরিমানা গুনতে হয় ১০ হাজার ৫০০ ডলার। এখান থেকে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.