আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মারণ নেশার আঁধারে তারকা-জীবন

থলের বিড়াল খুজতেছি ধীরে ধীরে তারকা, তারপর তারকা খ্যাতি, সেই থেকে বাড়তে থাকে কাজের চাপ। আর এই কাজের চাপ সামলাতে তারকারা ঝুঁকে পড়েন মাদকে। ধীরে ধীরে তা পরিণত হয় নেশায়। ফলে অকালে শেষ হয়ে যাচ্ছে তাদের জীবন। এমনটাই মনে করছেন চিকিৎকরা।

মাদকাসক্তের কারণে মেরিলিন মনরো, এলভিস প্রেসলি, জিম মরিসন, ব্রিজেট অ্যান্ডারসন থেকে হালের অ্যামি ওয়াইনহাউস, হুইটনি হিউস্টনদের মতো তারকাদের জীবন ঝরে গেছে। শুধু হলিউডই নয় এ মারণ-নেশার ছোঁবলে আক্রান্ত বলিউডও। সঞ্জয় দত্ত, ফারদিন খান, মনীষা কৈরালার মতো বড় তারকারা এ তালিকায় রয়েছে। সাফল্য, অর্থ, খ্যাতি সব থাকা সত্ত্বেও জীবনের প্রতি এই নেতিবাচক মনোভাবের মূল কারণ হিসেবে চাপকে দায়ী করছেন মনোবিদরা। তবে মুম্বইয়ের মনোচিকিৎসক রাজু জয়রাজানি মানসিক চাপ ছাড়াও এর জন্য দায়ী করছেন সুষ্ঠু পারিবারিক সম্পর্কের অভাবকেও।

তার মতে, তারকাদের কারও কাছে ‘স্ট্রেসের’ সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার সহজ উপায় মাদকসেবন। তাতে অন্তত কিছুক্ষণের জন্য বাস্তব সমস্যা ভুলে থাকা যায়। বিশেষত পরিবারের সঙ্গে যেসব তারকার সম্পর্ক ভালো নয় তাদের কাছে ‘চাপ’ কাটানোর একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে এ মারণ-নেশা। শুধু তা-ই নয়, অনেক সময় শারীরিক যন্ত্রণা কমাতে বা অনিদ্রার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে যে ধরনের ওষুধ খেতে হয় তার মধ্যেও খুব স্বল্প পরিমাণে মাদক মেশানো থাকে। দীর্ঘদিন ব্যবহারে এর প্রতিও এক ধরনের আসক্তি তৈরি হতে পারে এবং মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে হঠাৎ মৃত্যুও অসম্ভব নয়।

মাইকেল জ্যাকসনের মৃত্যুর পেছনে মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ সেবনকেই দায়ী করা হয়েছে। তারকাদের মাদকাসক্তি নিয়ে সম্পূর্ণ অন্য রকম ব্যাখ্যাও দিচ্ছেন কেউ কেউ। তাদের মতে, সৃজনশীল মানুষের মধ্যে নিয়ম-বিরোধিতা, আবেগ, সহজে উত্তেজিত হয়ে পড়ার প্রবণতা সাধারণ মানুষের তুলনায় বেশি থাকে। মনোবিদ্যার পরিভাষায় এই বৈশিষ্ট্যগুলোকে একত্রে বলা হয় ‘ইমপালস’। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত মনোবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপিকা জয়ন্তী বসু বলেন, তারকারা সাধারণ মানুষের তুলনায় বেশি সৃষ্টিশীল।

সৃষ্টিশীল কাজে তারা তাদের আবেগ এবং ‘ইমপালস’-এর বেশ ইতিবাচক ব্যবহারও করে থাকেন। কিন্তু কোনও কোনও তারকা তাদের ‘ইমপালস’-এর উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। ফলে কখনও চূড়ান্ত উত্তেজনা আবার কখনও গভীর অবসাদ অনুভব করেন তারা। ইদানীং বিভিন্ন গবেষণায় এ কথা প্রমাণিত হয়েছে, মানসিক অবস্থার এই ঘন ঘন পরিবর্তনের সঙ্গে মাদকাসক্তির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের কাছে মাদকসেবনের জন্য আরও একটা দিক রয়েছে।

তার মতে, যে কোনও সৃষ্টিশীল মানুষ সম্মান, খ্যাতি, সাফল্যের আতিশয্যে অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজের ব্যক্তিত্ব থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যায়। তখন নিজ সত্তাকে ফিরে পেতে, কিছুটা সময় একান্তভাবে নিজের মতো থাকতে সে নেশার আশ্রয় নেয়! তারকাদের এই মারণ-নেশার ফাঁদ থেকে মুক্ত থাকার অবশ্য মনোবিদেরা মনে করেন, ‘প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর’। মাদকের নেশা থেকে বেরনোর চেয়ে বেশি কার্যকর উপায় হল, নেশার মধ্যে গিয়েই না পড়া। আর তা-ই, তারকাদের প্রথম থেকেই মাদকের ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। অতিরিক্ত চাপ বা স্ট্রেস মোকাবিলায় প্রয়োজনে মনোবিদের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা। সুত্র ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।