"আমারে ফিরায়ে লহো অয়ি বসুন্ধরে, কোলের সন্তানে তব কোলের ভিতরে"-শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১,
একটা গল্প বলি। আজ থেকে অনেক দিন আগে এই শহরের কোথাও থাকতো এক বালক। তার ভাবনা জুড়ে খেলতো রহস্যের ঘোড়া। তার অনুভূতি গুলো জোছনা রাতে গুটিসুটি হয়ে অপেক্ষা করতো গল্প শোনার। তার স্বপ্ন মেলে ধরতো প্রখর রোদে।
একদিন কোন এক বৃহস্পতিতে হঠাৎ করেই সেই বালকের মন খারাপ হয়েছিল। তবে শোনা যাক সেই মন খারাপের গল্প......
আজ বালকের মন খারাপে ভাজ ভাঙ্গেনি শাদা স্কুল শার্টে,
অভিমানে নিথর দৃষ্টিপাত মেলা থেকে কেনা মাটির ঘোড়ার।
গণিতের রাফ খাতা ভয়ে ভয়ে উঁকি দেয় স্কুল ব্যাগ থেকে,
কাঠ পেন্সিলের সাথে মনোমালিন্যে হারিয়ে গেছে ইরেজার।
পূর্ব দিনে টিফিনের সিঙ্গারার টাকা ডান পকেটের থেকে,
বারে বারে জানান দেয় লাটাইয়ের সুতায় ধাঁর দেয়ার কথা।
গতকালও হেরে গেছে তার ঘুড়ি, উড়ে গেছে দুরে কেটে সুতা,
ছিঁড়ে গেছে লাটিমের ফিতে, পেরেকের মাথা গেছে বেঁকে।
জুতোজোড়া রণক্ষেত্রে বীরদর্পে যুদ্ধের পরে দখল করে পা,
বৃদ্ধাঙ্গুলি কুঁজো বুড়োর মত যবুথবু হয়ে বসে থাকে জুতোয়।
আজ আর শালিকেরা ধান খেতে আসেনি উত্তরের জানালায়,
হারিয়ে গেছে গুলতি আবার, ভেঙ্গে গেছে প্রিয় মাটির হাতিটা।
ব্যাস্ত শহর, আজ বালকের মন খারাপের একা বৃহস্পতি,
রুদ্ধ প্রহর, সবুজ মাঠে ঘাস ফড়িং আর লালচে প্রজাপতি।
হাটুর ভাঁজে মুখ লুকিয়ে, অভিমানে হারিয়ে শেষে বেলা,
আজ বালকের মন ভালো নেই, মন খারাপের মেলা।
২,
আচ্ছা আমরা সবাই তো কম আর বেশি ভালোবাসি তাইনা? কেউ প্রেম করে হতাশ, আবার কেউ প্রেমে পড়ে হতাশ, কেউ আবার প্রেম না পেয়ে হতাশ।
সমীকরণের সমাধানে দাঁড়ায় প্রেম মানেই হতাশা, আর হতাশা থেকেই কিন্তু বেড়িয়ে আসে চমৎকার সব সাহিত্য! তাহলে কি সকল কৃতিত্ব দাড়াচ্ছে প্রেমের? ধুর! বাদ দেই এসব উঁচু কথা বার্তা, যদি মাল্টিপারপাসের পারপাস প্রেম হয় তাহলে কেমন হয়? দেখা যাক তবে.......
শুনেছি তোমাদের মাল্টিপারপাসে স্বল্প সুদ আর সহজ কিস্তিতে
ভালোবাসা দেয়া হয় বিচ্ছিন্ন ভালবাসাহীন মানুষদের জন্যে।
আমি আজ ভালোবাসা ঋণ করতেও রাজি।
শুধু চাই আমার ঘাটতিটুক পূরণ হোক। ।
কথাদিচ্ছি, যথাসময়ে পরিশোধিত হবে কিস্তি,
তবুও ভালোবাসা চাই।
।
চাই কেউ একজন নায়িকা হোক আমার গল্পের,
শুনুক আমার অপ্রকাশিত কবিতা।
কেউ একজন অবাক হয়ে বলুক"এটা তুমি লিখেছ!"
আজ যেখানে ভালোবাসার বাজারে রমরমা ব্যাবসা,
সেখানে আমি কেন ঋণ নিতে লজ্জায় কুন্ঠিত হবো?
৩,
কখনো কখনো কোন শব্দ কিংবা নাম আমাদের খুব প্রিয় হয়ে যায়, আমরা স্বপ্ন দেখি সেই নামের মানুষকে নিয়ে। অনেক অনেক আশা করি। আমি সব সময়েই বলে থাকি, উচ্চাশা থেকে হতাশার জন্ম।
আমাদের আশা যদি সাধ্যের মধ্যে পরিমিত হয় তাহলে কিন্তু আমাদের হতাশার বলির পাঠা হতে হয় না। আমি এত জ্ঞানের কথা বলছি, আমি নিজেও মাঝে মাঝে হতাশ হয়ে যাই। যেদিন এই কবিতাটি লিখলাম, সেদিন খুব হতাশার সাথে প্রচন্ড মাথা ব্যাথা ছিল, মাঝে মাঝে এই বদ মাথ্যা ধরা রোগে আমাকে পেয়ে বসে। ওকে তাহলে দেখি ফেলি সেই নাম কিংবা মাথা ধরা কাব্য......
তুমি একটি শব্দ হয়ে অবাধে আমার মাঝে বিচরন করো,
জ্বরের ঘোরে অথবা প্রচন্ড মাথাধরায়
শব্দটি আরও ভীষণ ভাবে নিরন্তর আওড়ে যাই;
কখনো কাউকে বলা হয়না শব্দটি তোমার নাম_
শুধু শুশ্রুসাকালে কেউ কেউ অস্ফুস্ট শব্দটি শুনতে পায়
আজ রাত নির্বাসনে যাক, অপেক্ষায় থাকুক ভোরের কাক।
৪,
মাঝে মধ্যে আমি ভয়ঙ্কর কিছু কবিতা লিখে ফেলি।
কবিতা শেষ করে সেইটা পড়ার সময়ে নিজেকে প্রশ্ন করি, "হারামজাদা রিক! এইটা কি লিখছিস?" যাইহোক, এমনি একটা কবিতার নমুনা দেখাই তবে......
কখনো হয়ত শহর থেকে দূরে
ট্রেনের নীচে কাটা পড়া একটি লাশ_
সংবাদ পত্রের শেষ পাতার ধূসর ছবিতে ছাপা হবে।
গুটিগুটি কালো ছাপা অক্ষরগুলো পড়ার পরে থাকবে শহরবাসীর দীর্ঘশ্বাস আর রেলওয়ে মন্ত্রনালয়ের অভিমান।
কিছুদিনেই রেললাইনের ইষ্পাতে শুকিয়ে যাবে ছোপ ছোপ রক্ত,
ভুলে যাবে সবাই হতাশার বলি মুন্ডুছিন্ন লাশের কথা_
মাস শেষে কাগজওয়ালার কাছে বিক্রি হবে পত্রিকা
ট্রেন ছুটে চলবে, ইষ্পাতে মাথা দেয়া আশাহীনের খোঁজে
আবার ছিন্ন মষ্তিষ্কের লাশ, শহর থেকে দূরে কোথাও।
৫,
মাঝে মাঝে সূরে সূরে লিরিক্যাল কিছু কবিতা লিখে ফেলি। নিজে নিজে সূর দেই সেসবে, সব মিলিয়ে জঘন্য একটা ব্যাপার হয়ে দাড়ায়।
এবার তবে চলুন দেখি কিছু কবিতার নমুনা যা নিন্মস্তরের জঘন্য না হয়ে যায় না......
৫-(ক)
কেউ আছে একজন, তোর আশেপাশে
রোদের সকালে, দখিনা বাতাসে,
রিনিঝিনি বাজে পায়ের নূপুরে
জড়িয়ে রাখে শীতের কাঁথাতে।
দেখে যায় তোর, জল নিয়ে খেলা
পাশে থেকে অপলক বেলা অবেলা,
ভালোবাসে তোর কালো চোখ রোদেলা
বইয়ের ভাঁজে থাকা শুকনো মালা।
তোর কানে দুল হয়ে উচ্ছ্বাসে রয়
কাছ থেকে দূরে গেলে মনে সংশয়,
হাসির আড়ালে ঠোঁটে চাঁদ বাঁকা হয়
ক্ষনে ক্ষনে শুধু তোকে হারানোর ভয়।
৫-(খ)
আমার বাংলা বইয়ের শেষ কবিতায় নামটি লেখা তুমি
বইয়ের ভাঁজে তোমার নামে চোখ বুজিয়ে চুমি,
তুমি আমার কাঠ পেন্সিল চতুর্ভুজের বাহু
আমি হচ্ছি মকর রাশি ঘিরে সকল রাহু,
বুঝিনা আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞান, কে আসামী কে বাদী
ইকোনো ডি এক্স হারিয়ে গেলে এখনো আমি কাঁদি।
৫-(গ)
যোগগুলোর সমাধানে কেউ বর্গমূল করে
সুখের কখনো গুনন হয় না,
দিনে দিনে সংসার ভাগ হয়ে যায়
জীবনের কোন সমীকরণ হয় না।
৫-(ঘ)
রাতে পরী এসেছিল ঘরে
চুপিচুপি স্বর্গ থেকে নেমে,
পরী ভেঙ্গেছে তার ডানা
তাই উড়ে যেতে মানা।
পরী মায়াবী খুব বেশী
আমি অবাক হয়ে দেখি,
তুমি যেওনা আর ফিরে
থেকো ভালোবাসার নীড়ে।
৬,
মাঝে মাঝে কিছু ভাবনা এসে কবিতা হয়ে যায়, আদৌ কবিতা হয় কি না জানিনা, তবে ধারে কাছে হয়ত যায়, এবার দেখা যাক সেসব ভাবনার মেলা.........
৬-(ক)
তারপরে যখন সূর্য্যিমামা বাংলা বইয়ের ভাজ থেকে উঁকি দিলো উজ্জ্বল উদ্দীপ্ত কিরনে,
তখন প্রেমিকার মেরুদন্ড বেঁয়ে সরু ঘামের রেখা নেমে যেতে দেখে উদ্ভাসিত প্রেমিক।
দৈনিক সূর্য রোজ ভোরে ঘুম থেকে উঠে দৈনন্দিন রুটিনে দেখে যায় রঙ তামাসার মিথস্ক্রিয়া,
শালিকের অভিশাপে আদ্র হয় প্রেম, ভেজা প্রেম ধুয়ে যায় বৈকালিক চা-বৃষ্টির আবগাহনে।
৬-(খ)
শোন মেয়ে, প্রেম চাইনা,
যদি জাগিয়ে দিতে পারো নিথর অনুভূতি_
শতবর্ষের পাথুরে শিলায়
আর অব্যার্থ তীরন্দাজের হিয়ায়,
তবে মেনে নিতে পারো
জেনে নিতে পারো জীবনের তরে,
থাকবে কেউ তোমারি,
প্রথম প্রেমের মৃত্যুর পরে দ্বিতীয় প্রেমের কৃত্যদাস।
৬-(গ)
সময়ের চক্রবৃদ্ধিতে হারিয়ে যাই
সামুদ্রিক শামুক কিংবা
দূর থেকে চোখে আসা জ্বলন্ত বালুকণার ন্যায়,
দূরে যাই, আরও দূরে, খুব বেশী দূরে_
দাগ কেটে মনে
দূর দ্বিপ বনে
মায়া সবুজাভ অরন্যকের গহীনে,
খুঁজি মাথার উপরে গোলপাতার ছায়া।
এই রোদ, এই সোনালি আলো
আয় নেমে আয় শরীরে
ঘুমঘুম স্বপ্ন ভ্রমে
বন্ধ হোক গাছেদের কান্না,
পাহারের নিঃসারিত বহ্নি দীর্ঘশ্বাস,
শিকারির আগুনে পাখিদের ঝাঁক,
আর অসহায় হরিণীর চাহুনি।
৬-(ঘ)
প্রতিদিনের এলোমেলো ঘরে
অনাদ্র বিছানা চাঁদর,
রাত্রি করে বাড়ি ফেরা নৈমিত্তিক অভ্যেসে
খুঁজি পুরনো আদর।
৬-(ঙ)
তখনো আমি অশ্রু গোপন করতে জানি না
শুধু জানতাম, তুই কোনদিন ছাড়বি না হাত,
আমি এখন আর অশ্রু গোপন করি না
জানি, এভাবেই একা কাটাবো আরো অনেক রাত।
এই তো, কয়টা বছর হবে?
তখনো আমি ভাবতাম, শুধুই আমার রবে
হা হা, আমি কিন্তু এখনো হাসি
এখন হাসি পৃথিবীকে উপহাস করে।
৬-(চ)
সকালের রোদ রোজ রোজ আমার বারান্দায় ইজিচেয়ারে দুলতে দুলতে দুপুর নিয়ে আসে। তারপরে বিদ্যুৎ চলে গেলে রোজকার মত আমি দখল করে নেই সকাল রোদের স্থান। আমার বেলা সন্ধায় থমকে দাঁড়ায়, মন খারাপের সন্ধারা ছারপোকার মত রক্ত শুষে নেয় আমার। অভিমান করে যখন চড়ুই ছানা ট্রেনের জানালায় বসে,আমি তখন সিগারেটের ধোঁয়ায় কারো মুখ কল্পনা করি। ছোট্ট চড়ুই অভিমান করে চেয়ে থাকে অপলক,
তবে আজ চড়ুই ছানাই হোক গন্তব্যের সাথী এইতো আমার নিত্যদিনের রুটিন, এইতো আমার মধ্যবিত্ত জীবন।
৭,
অমিয় চক্রবর্তীর "রাত্রি" কবিতাটি তো অনেকেই পড়েছেন, মাঝে মাঝে মনে হয়, এই কবিতাটি আমি কেন লিখলাম না! কোন একদিন জেগে থাকা এক রাত পাখিকে উদ্দ্যেশ্য করে ফেসবুক স্ট্যাটাসে "রাত্রি" কবিতার আদলে লিখেছিলাম "রাত্রিলেখা" নামক কবিতাটি। সেই রাত পাখি আবার সেই স্ট্যাটাসে সাথে সাথেই লাইক দিয়েছিল। পাঠক তবে দেখে নিন কেমন ছিল রাত্রিলেখা........
ঘুমাওনি রাত্রিলেখা?
প্রত্যুষের চড়ুই চিলেকোঠায়,
সূর্য উঠার আগের রাঙা আভা,
আড়মোড়া ভাঙ্গে সমস্ত শহর_
আর ব্যাস্ততা পিপীলিকার মিছিলের ন্যায়,
ঘুমিয়ে পড়ো,
যদিও সকাল পর্দার আড়াল থেকে উঁকি দেয়।
৮,
মেঘ, বৃষ্টি, রোদ, বর্ষার সাথে কবিদের এত ভাব কেন? এমন প্রশন অনেকের মনেইআসতে পারে, এবং আসেও। সত্যি বলতে অধিকাংশ কবিই এসবকে উপাদান করে রূপক সৃষ্টির মাধ্যমে কবিতা লিখেন।
বিজ্ঞ পাঠক মাত্রই বুঝে নিবেন। আচ্ছা তবে দেখা যাক, মেঘ, বৃষ্টি, রোদেলা আর বর্ষার সাথে আমার প্রেম কাহিনী.......
৮-(ক)
আমাদের প্রেম যখন বর্ষায় কানায় কানায় পূর্ণ অথৈ জলাধর,
আমরা তখন সম্পর্ক নামের নৌকায় চড়ে ভাসি সময়ের স্রোতে,
স্রোতে উজান থেকে আসা কচুরি ফুল তার খোপায় গুজে দেয়া
অথবা বৈঠার সাথে বিমূর্ত জলের রসায়ন মুগ্ধ করে আমাদের।
আমরা ভুলে গিয়েছিলাম, প্রতীক্ষিত বর্ষা বছর জুড়ে থাকে না,
ভাটিতে জল নেমে যাওয়ার সাথে সাথে উবে যায় আমাদের প্রেম।
৮-(খ)
মেঘেরা আকাশমাঠে লুকোচুরি খেলে নিরন্তর,
কিছু বৃদ্ধ থাকে বৃষ্টির অপেক্ষায়_
প্রেমিকযুগল চায় বৃষ্টিকদম ফুল,
যাত্রিরা বলে, "ধুয়ে যাক সব ধুলো। "
তবুও বৃষ্টি ঝড়েনা এই শহরে
মেঘেদের অভিমান বেড়ে চলে দিনে দিনে,
অবশেষে কোন এক বৈকালিক কফির কাপে
বৃষ্টি নামে,
নীলরঙা বিরহস্নাত বৃষ্টি।
৯,
কখনো কখনো মন ভালো থাকলে ছড়া লেখি, কথা না বাড়িয়ে একটি ছড়া দেয়া যাক......
তুই
সকালের বালিশে,
শার্টের বোতামে_
জানালার কার্নিশ,
ঘুম ভাঙ্গা সকালে।
তুই
মানিব্যাগে যতনে,
টুথপেস্ট ব্রাশে,
চশমার ফ্রেমে
রাস্তার ড্রেনে
তুই
এক কাপ কফিতে
কাওয়ালি সুফিতে,
তারাদের অফিসে
সূর্যের ছুটিতে।
তুই
শীত শীত চাদরে
কিস কিস আদরে,
ভালোবাসা মাদুরে
আহা কি সাধুরে!
তুই
বিকেলের জানালায়
রূপকথা আয়নায়,
তেলে ভাজা সিঙ্গারায়
আমি শ্লার অসহায়!
তুই
অহেতুক গল্পে
নভোচারী কল্পে,
নাভিশ্বাস অল্পে
রাতশেষে স্বপ্নে
তুই
যানজটে কথকতা
রোজকার মাথা ব্যাথা,
খালি পেটে সিগারেট
ওই-ফি আনলিমিটেড।
তুই
কানে দেয়া হেডফোন
উড়ু উড়ু করে মন,
মোবাইলে টপ আপ
তবে কেন এত ভাব!
তুই
লুডু বোর্ডে ছক্কা
হারালেই অক্কা,
চাঁদমুখ তুলসী
একাউন্ট খুলছি।
তুই
ব্যাঙ্কের চেকবুক
কবিদের মনে সুখ,
জাম গাছে আম ফল
টেনিসে ফুটবল।
তুই
হেলে দুলে হেঁটে যাস
কচি শশা তালে শ্বাস,
জানালার কব্জা
এইবেলা অব যা।
১০,
শেষের এই কবিতাটি কিছুদিন আগে ২০০৯ সালের কোন এক শ্রাবণ দিনের মেঘলা বিকেলের স্মৃতি মনে করে লিখেছিলাম। সেই দিনের পরে ঘটে যাওয়া পরিণতিও দেয়া আছে কবিতায়। বিষন্নতা মুক্তি দিক অবরুদ্ধ আত্মা, আজ তবে এই হোক শেষ কবিতা।
একটি বিকেল ছিল আমার খুব আপন,
আমার একান্তই নিজের বিকেল।
সেদিন বিকেলে মেঘেরা সুর্য গিলে অবিরত বৃষ্টিতে ভাসিয়ে নিয়েছিল পথঘাট।
আমরা দুজন তখন অনেক দূরে।
এতটা দূর যা কল্পনায় সম্ভবত সম্ভব,
কিংবা পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দে।
আমার সব কিছুতে তখন বিষাদের বাবল গাম_
শার্টে, বিছানায় অথবা অমনোযোগী পড়ার টেবিলে।
বৃষ্টি রঙের সে বিকেলে আচমকা ভেসে আসে দূরবার্তা,
তারপরে?
দীর্ঘ বিরহের পরে বেতারে কত কথা হয়েছিল দুজনে!
সে হাসি আজ অবধি বেজে যায় কানে।
অনেকদিনের পিপাসা মিটিয়ে ভিজেছিলাম বৃষ্টিতে
দুহাত প্রশস্ত করে তাকিয়ে আকাশে,
বৃষ্টিতে, নিজস্ব বিকেলে অপরিচিত বৃষ্টিতে।
আজ ভয় করে বৃষ্টি, প্রেম-হিম কাঁপন
উষ্ণতা খুঁজে ফিরে কবিতার নোটবুকে।
কোন এক বর্ষা বিকেলে...বৃষ্টি ভাসিয়েছিল সব।
সেদিনের পর বহুদূর বহুদূরে ধুয়ে যায় প্রেম।
শুধু দাগ ফেলে যায় সেই বিকেল,
একান্ত নিজের একটি বিকেল।
মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকা পরীরা দেখেছিল সব।
ক্লান্তিহীন বৃষ্টি ঠোঁটের কিনারে বলে যায় প্রথম প্রেমের গল্প।
ছবি: আমার ওয়াল স্ট্রীট ফটোগ্রাফি এন্ড গ্রাফিটি এ্যলবাম থেকে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা সবাইকে। ভাষা থাক প্রাণে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।