পুরো গণ-মাধ্যম জুড়ে এই মুহুর্তে আলোচনার একটিই বিষয়: সাংবাদিক সাগর-রুনি দম্পতির হত্যাকান্ড। কে বা কারা এই নৃশংস হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষনে মুখর মিডিয়া পাড়া। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সময় বেঁধে দেয়ার কৌশলে অনেক ক্ষতি হয়ত হয়ে গেল মৃত সাগর-রুনির। তার চেয়েও অনেক বেশি ক্ষতি হলো বেঁচে থাকা তাদের একমাত্র সন্তান মেঘের। হত্যা রহস্যের জট খুলতে দেরি হওয়ায় এরই মাঝে এই হত্যাকান্ডকে পুজিঁ করে শুরু হয়ে গেছে চিরচেনা গোজামিল সাংবাদিকতার।
যে যার মতো করে ক্রাইম সিনের বিবরণ দিচ্ছেন। ঠিক তেমনটা করেই লিখছেন এসব মন্তব্য প্রতিবেদন যেমনটা আলোচনা করছেন বন্ধু বান্ধবের সাথে মিডিয়া হাউজের নিচে গরম চায়ে চুমুক দিতে দিতে। কিন্তু প্রচার বা প্রকাশিত হবার পর এসব মন্তব্য প্রতিবেদন পরিণত হচ্ছে অনুসন্ধানি প্রতিবেদনে। সাধারন মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন। একটি প্রতিবেদনেও নির্দিষ্ট করে সূত্র দিয়ে কোনো তথ্যই দিতে দেখলাম না।
কি বিব্রতকর পরিস্থিতি তা মিডিয়াকর্মীরা ছাড়া কেউই কি উপলব্ধি করতে পারবে! এমনই নাজুক পরিস্থিতি যে, এটিএন বাংলার বার্তা প্রধান জ. ই. মামুন ভাইকে দেশের সকল গণমাধ্যমের সহকর্মীদের এসব ভিত্তিহীন ও মনগড়া সংবাদ প্রকাশ বা প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করতে হলো আজ।
গোজামিল আর কাল্পনিক সংবাদ প্রচার বা প্রকাশের রীতি আমাদের সমাজে নতুন নয়। আজকে সাগর-রুনি আমাদের সহকর্মী বলেই হয়ত আমরা একটু বেশীই বিব্রত। প্রতিনিয়ত ছাতার মতো করে গড়ে উঠছে দৈনিক পত্রিকা, টেলিভিশন, রেডিও। তার পাশাপাশি কতোজন সাংবাদিক গড়ে উঠছে আমাদের দেশে? এই পরিস্থিতির জন্য আমরাই কি দায়ী না? আমার মাত্র সাড়ে চার বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতায় আমি তো স্বীকার করে নিতেই চাই এই দায়।
মামুন ভাইদের মতো সিনিয়র সাংবাদিকদের সবিনয়ে বলতে চাই, এর নাম সাংবাদিকতা হতে পারে না। আর এভাবে চলতে পারে না। আপনারাও এই দায় স্বীকার করুন। সাংবাদিকতার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা নিশ্চিত করুন। নতুনদের বাছাই এ আরো সতর্ক হন।
পুরোপুরি প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত অন এয়ার অনুমতি দেয়া থেকে বিরত থাকুন। গণ-মাধ্যমের কর্ণধারদের বলতে চাই এমন কাল্পনিক গল্প দিয়ে মানুষের সাময়িক দৃষ্টি আকর্ষন করতে পারবেন কিন্তু গ্রহনযোগ্যতা পাবেন না!
সবশেষ শুধু বলতে চাই, আমরা এভাবে বিব্রত হতে চাই না। সত্য বেড়িয়ে আসুক তাতে যদি বিব্রত হতে হয় তাতেও রাজি আছি। সত্য প্রকাশের এই পেশায় কল্পনার বা ধারণার কোনোই স্থান নাই। এই সত্য মেনে মাথা উচুঁ করে কাজ করতে চাই আমৃত্যু।
আর এমন কাল্পনিক সাংবাদিকতা চলতে থাকলে একটি মুহুর্তও আর নয় এই পেশায়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।