বলা শেষ শুরুর আগে থেকে শুরু পর্যন্ত, [পাঠকদের জন্য intro part]
মেয়েটা ছিল CODAতে আর ছেলেটা NDC । দুজন সম্ভবত একই এলাকায় থাকত, কারন প্রতিদিন তারা বারিধারার Bus Standএ দাড়িয়ে দাড়িয়ে সকাল দেখত। যদিও দুজনের গন্তব্য আলাদা ছিল, তবে কখনই CODAর Bus আসার আগ পর্যন্ত তাদের সকাল দেখা শেষ হতনা।
ছেলেটা সম্পর্কে বলার কিছুই নাই, কারন ছেলেটা আমি নিজে, আর মেয়েটা সম্পর্কে আমি তখনো পর্যন্ত কিছুই জানতাম না, তাই এই মুহূর্তে কিছুই বলতে পারছিনা। কাহিনীতে back করি,
Some Noticable Moments [সবগুলাই সাফল্যের সাথে Miss করছি] :
Missing Point ১ [Constant ভালোলাগা]: কলেজের First Year, তখন থেকেই তাকে দেখি, খুব গম্ভীর তবে অতিরিক্ত মাত্রার cute।
দেখা মাত্রই বারিধারা Bus Stand, CODA কলেজ আর Bus Standএর আশেপাশের সবকিছুর প্রেমে পরে গেলাম।
প্রতিদিন ও একই জায়গায় দাঁড়াত, আমি কয়েকদিন এলোমেলো ভাবে দাঁড়ালেও কিছুদিন পর থেকে ওর ঠিক ডান পাশে একটু দূরত্ব নিয়ে দাঁড়াতাম। কেন জানিনা, ও আমার দিকে মাঝে মাঝে তাকিয়ে থাকতো, তবে আমি তাকালেই মুখ ঘুরিয়ে নিত। অনেক ভাল লাগত, সম্ভবত তার জন্যই এই লেট লতিফ আমি ছোভা ছোভা বের হতাম Station সুন্দরীকে দেখার জন্য। প্রতিদিন একই জায়গায় একই সময়ে চলছিল আমার Constant ভালোলাগা।
বেশী ভাল লাগত যখন আমি Late করে আসতাম, ঐদিন সে একটি বারের জন্যে ও আমার দিকে তাকাত না। সম্ভবত রেগে যেত, আর ও রাগলে গাল আর নাক একসাথেই ফুলে যেত, খুব হাসি পেত আমার, একদিন হেসেও ফেললাম, তার পরের তিনদিন মেমের দেখা মেলেনি। তিনদিন পর দেখা পেলাম, তাকাবেই না। আর বুঝতে পারছিলাম, যখনি আমি তাকাই চরম বিরক্ত হয়। ভাবে নাকি অভিমানে বুঝিনি।
তার পর আর কোনদিন ওর সামনে হাসিনি। এই মান অভিমান শেষ হতে প্রায় ৫-৬ দিন লেগেছিল।
Missing Point ২ [ Standby প্রেম ]: অসুস্থ ফকির দেখলেই আমি টাকা দেই, ঐদিন সকালে ২ জন দাড়িয়ে আছি, অভিমানের কারনে দূরত্বটা একটু বেশী, একটা ফকির এসে টাকা চাইল, ভাংতি ৫ টাকা ছিল, দিয়ে দিলাম, তার পর আরেকটা এল, ওটা আগেরটার চাইতেও বেশী বৃদ্ধ, দেখি ভাংতি নাই, আর ওটা হাত পেতেই দাড়িয়ে আছে যদিও আশেপাশে অনেকেই ছিল, তখন মেজাজ খারাপ হয়ে ছিল আর ঐভাবেই দূরের অভিমানির দিকে তাকাই, ঠিক তখনি সে বৃদ্ধটাকে ডেকে টাকা দেয়, কেন জানিনা তা দেখে অনেক ভাল লেগেছিল, বুঝলাম পুরা ডাল কালো না হলেও, কিছু কালো part আছে। শুরু হল আমাদের Bus Standএ দাড়িয়ে Standby প্রেম।
Missing Point ৩ [কফি কফি ভালোবাসা] : কিছুদিন পরের কথা, দুজন প্রতিদিনের মতই same position নিয়া দাড়িয়ে আছি।
তাকাতাকি চলছে, Busএর Driver বুঝতে পেরেছিল মনে হয়, তাই ঐদিন কারো Busএর দেখা মিলছিলনা, আমি অন্যভাবেও যেতে পারি, কিন্তু কেমনে? দাড়িয়ে ছিলাম বলে পা আর মাথা ২টাই ব্যথা করছিল, ভাবলাম কফি খাই একটা, কফি নিয়ে দোকানদারকে ১০০ টাকার নোট দিলাম, কমিনা হাসি মুখে টাকাটা ফেরত দিয়ে বলে এত্ত সকালে ১০০ টাকার ভাংতি হবেনা, কি করব কফি নেয়া হয়ে গেছে। বললাম আরেকটা দাও, তাহলে হবেত? তখনি সে তার ৩২ দন্ত বের করা হাসি দিয়ে বলল হবে। ওর শয়তান মার্কা হাসি দেখে মাথায় same typeএর plan এল। দোকানদারকে বললাম কফিটা ওই মেয়েটাকে দিয়ে আয়, টাকা নিবিনা, আর কে দিছে তা বলার দরকার নাই। পোলা দেখি মহা উদ্যমে কফি নিয়া মেয়ের সামনে গেল, তখন আমি মাত্র কফি নিয়ে ওর থেকে একটু দূরে দাড়িয়ে দেখছি ও কি করে, অবাক হলাম, ও কিছু না বলেই কফি নিল, ওর কফি খাওয়ার style টাও আমার ভাল লেগে গেল, এক কথায় তার সবকিছুই ভাল লাগতে লাগল।
পরদিন বের হতে 25 মিনিট এর মত দেরি হয়ে গেল, দৌড়ে গেলাম stationএ, মন খারাপ হয়ে গেল, আমার সখিরে codaএর bus এ উঠাইয়া class করাতে নিয়া গেছে, তখনি কফির দোকানের ছেলেটা, নাম আক্তার, কফি নিয়া এল, বললাম সর এখান থেকে, কিছু খাবনা, আক্তার বলে, খাইয়া লন মামা, মামি দিয়া গেছিল। শুনেই তো আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম, বলে কি। আরও জানতে পারলাম, ও অনেক ক্ষণ কফি হাতে দাড়িয়ে ছিল, যখন ওর Bus এল, তখন আক্তারকে ২টা কফির দাম দিয়ে একটা আমাকে দিতে বলে ওর হাতের কফিটা ফেলে চলে যায়। কফিটা হাতে নিয়ে ঝিম মেরে বসে রইলাম, বুঝলাম আজ আর কলেজ যাওয়া হবেনা, বাসায় ফিরে এলাম। পরদিন অনেক সকালে গেলাম, যেন গতদিনের মত কোন কিছু না হয়, অবাক হবার বিষয় হল, ও আমার আগেই Station এ বসে ছিল।
আক্তারকে ডাকতেই ও ২টা কফি হাতে নিয়ে এল, বলার আগেই আরেকটা অরে দিয়া আসলো, আমি টাকা দিয়ে দিলাম আর কফি খাওয়া বাদ দিয়ে সুন্দরীর কফি পান দেখতে লাগলাম। সুখ সকালগুলো এভাবেই কেটে যাচ্ছিল, কফির মত কফি কফি ভালোবাসার উষ্ণতায়।
Test Exam এসে গেল, আমি ব্যস্ত হয়ে গেলাম আর ওকে দেখলাম Private Carএ করে আসা যাওয়া করছে। কফিময় সকালের অবসান ঘটল। আফসোস হচ্ছিলো, কেন ওর সাথে কথা বলিনি, এমনটা তো না হলেও পারত, কেন এমন হল, এ কি করলাম আমি।
বন্ধুদের কথাগুলো মনে হচ্ছিলো। আমার এক একটা বন্ধু এক এক জন উঠতি বুদ্ধিজীবী। যে টাইপের উদীয়মান বুদ্ধি আর ভবিষ্যৎবাণী করছে, তা শুনে সাহস নামের জিনিসটা আমার ভিতর থেকে কর্পূরের মত গায়েব হয়ে যায়।
তারপর HSC Exam এল, শেষ হল, আমার বন্ধুদের দেখলাম ভর্তি নামক যুদ্ধটির জন্য যেই পরিমান প্রস্তুতি নিতেছে, সম্ভবত Hitler তার নাৎসি বাহিনীরে এতোটা প্রস্তুত করেনাই, হতাশায় তখন আমার ডুবাডুবি অবস্থা। তবে আশার আলো দেখতে পাই যখন দেখি আমার মা বাবা আমার চাইতেও বেশী হতাশ।
না হয়েও উপায় ছিল না, আমার মত অদম্য মেধাবীদের বাপ মায়েরা হুদা কামেই হতাশায় ভোগে।
আমার কারণটা ভিন্ন ছিল, কারন আমার বন্ধুরা প্রায় সবাই ভর্তি যুদ্ধের এক একটা নাদুস নুদুশ টাইপের যোদ্ধায় পরিনত হইছে।
Missing Point ৪ [ জ্ঞানহীন মানুষের প্রেম হয় না (ইহা একটি মহান বানী) ] : যোদ্ধা হতে পারিনি বলে এক একাই চলতে শুরু করলাম। মৌচাক S@ifurs এর IELTSএ ভর্তি হলাম, পোড়া দেশে থাকবনা, চলে যাব। চাইলেই তো আর হয় না, বাপ আমার ঈদের মত খুশি, আম্মা কোন ভাবেই রাজি না, এই নিয়ে আমার শান্তিনিকেতনে গৃহযুদ্ধ শুরু হল।
আমার চারিদিকে অশান্তি আর অশান্তি, শান্তির খুজে একদিন দুপুরের ঠাডা পরা রোদে শান্তিনগরে ঘুরছিলাম, হঠাৎ করেই আমার Bus Standএর নায়িকার দেখা পেলাম, অনেকদিন পরে দেখলেও একটুও চিনতে কষ্ট হয়নি, কিন্তু সে এমন একটা ভাব নিয়ে U Turn নিল যেন আমাকে সে চিনেই না অথবা ধরাতে ভূমিষ্ঠ হবার পর এইমাত্র আমার দর্শন পাইছে। বেপুক কষ্ট পেলাম, মাথা আমার আর উঠেনা [লজ্জায় নিচু হয়ে গেল], কহিতে লাগিলাম,
হে ধরণী তুমি দ্বিধা হও, আমি তন্মদ্ধে প্রবেশ করিব।
ধরণীর মুড may b ভাল ছিলনা, তাই আমার কোথায় কর্ণপাত করলনা, কি আর করা মনের দুঃখে বিড়ি ধরালাম। [still then my মাথা was in নিচু position]। ঠিক তখনি একটা ঝাঁঝালো কণ্ঠ কানে এলো, “এতদিনে তাহলে সিগারেট নিয়াই ব্যস্ত ছিলা, একটাবারের জন্যেও কি কফি শপে আসতে পারনি, ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, ,,,,,,,,,,,,,,,,,”
আমি বলতে চাইছিলাম যে অনেকবার গেছি, তোমারে পাইনাই, কে শুনে কার কথা, ও যে বলা start করছে, থামার আর নাম নাই, কিছু কথা বুঝতেছি বাকি গুলা মাথার Antena এর উপর দিয়া যাইতেছে।
সব শেষে একটা কথাই বুঝলাম তা হল, “কি হল চুপ কেন, বল, কথা বল”
বুঝলাম এই মাইয়ারে বুঝানো আর হিমালয় ঠেলে সরানো same কাজ, হুদা পরিশ্রম করার energy আমার নাই, তাই শুধু এই টুকুই বললাম, আমি পরে তোমাকে সব বলব, এখন শুধু বলতে পারি, আমি খুব ঝামেলার মাঝে আছি। সিগারেটটা হাতেই পুড়ে শেষ হল, মাথা তুলে ওকে দেখলাম, চেহারা দেখে মনে হল, ঝাঁসির রাণীর মনে দয়ার উদ্গিরন ঘটছে, জানতে চাইল কি হইছে, বললাম খুব খিদা লাগছে, খেতে খেতে বলি?
আবারও ঝাঁঝালো আওয়াজ, খিদা লাগছে তো সিগারেট খাচ্ছ কেন, আর খিদা লাগাটা কি খুব বড় সমস্যা নাকি?
হতাশা Got me again সাথেসাথেই , তারপরেও আমার ধৈর্যে ফারাক্কা টাইপের বাধ দিয়া বললাম, খিদাটা সমস্যা না, তবে এখানে কথা না বলে কথাও বসি, অনেক কথা জমে আছে, ধীরে সুস্থে বলি। তারপর আর কোন কথা হল না, দুজনে চুপচাপ হাটতে হাটতে রাজারবাগের দোতলা নামের ফাস্ট ফুডে বসলাম। এখন মনে হয় এটা বন্ধ করে দিসে।
দোতলায় বসে ভাবছি, আমি কি আসলেই তার সাথে আছি নাকি Hallucination এ আছি।
থাকেলও খারাপ কি, থাকিনা। অনেকক্ষণ পর সুন্দরীর মুখ খুলল, বিপদটা তখনি ঘটল, ও জানতে চাইল আমি কিছু জানি কি না ওর ব্যাপারে, ওর নাম জানি কি না, কবি তাহার মহান নিরবতার মাধ্যমে জানায়া দিল, Answer Negative. তখন ওর অবস্থা দেখে মনে হল, সে যেন Loud Speaker দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল, সাথে চেয়ারটাও ছাড়ল। থাক তোমার কিছুই জানার দরকার নেই, আমি গেলাম, বলেই হাটা দিল। ওর সাথে সাথে যাবার দরকার ছিল, কিন্তু আমার ঘোর কাটতে মনে হয় একটু বেশীই সময় লেগেছিল। পেছনে তাকিয়ে দেখি, সে তো আর নাই।
কষ্টের ইমু কিভাবে দিতে হয় তখন জানতাম না, জানলে ওই টেবিলে কয়েকটা একে দিয়ে আসতাম।
অনেকদিন পার হয়ে গেল, তার দেখা আর মেলেনি, ঐদিকে আমার শান্তিনিকেতনের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটল, একটা Private Varsityতে ভর্তি হলাম। ভার্সিটির অনেক মেয়ের কুনজরই পরেছিল, তাকে তখনো অনেক মিস করতাম, তাই কারো নজরে নজর মেলাতে পারিনি।
গল্পটা এখানেই শেষ হত, কিন্তু হলনা, কিছুদিন আগের ঘটনা, ভার্সিটির semester শেষ, বন্ধুরা ঠিক করল Cox’s Bazaar to Saint Martin এর একটা লম্বা Tour দিবে, রাজি হয়ে গেলাম, আর কবে না কবে এভাবে একসাথে যাওয়া হয়। ভার্সিটিতে টুকটাক গীটার বাজাতাম, Cox’s Bazaar আসার সময় আবীর কোত্থেকে যেন একটা গীটার নিয়ে আসলো, রাতে বীচে বসে বাজাতাম অনেকক্ষণ।
Cox’s Bazaar কিছুদিন থেকে Saint Martin যাবার জন্য জাহাজে উঠলাম, Plan ছিল ওখানে ভাল লাগলে থেকে যাব, নয়ত ওই জাহাজেই ফেরত আসব। আবীরের অনুরুধে ওটা নিয়েই Saint Martin চললাম, জাহাজে কিছুক্ষণ ঘুরে গীটার নিয়ে ছাদের এক কোনায় বসে পড়লাম, একটু পরেই মোটামোটি ভিড় জমে গেলো, অনেকেই আবার সুরে বেসুরে আমাদের সাথে তাল মেলাতে লাগল, মাঝখানে সবুজ এসে বলল, দোস্ত, ২টা মাইয়া কোনায় বয়া আছে, একটা তো তর উপর থেকে চোখ সরানোর কথা ভুইলা গেছে, দেখতে ইচ্ছে করছিল মেয়েটাকে, কিন্তু এক মহান গিটারিস্ট আমাকে বলেছিল, গীটার বাজানোর সময় ভুলেও কোন মেয়ের দিকে তাকানো যাবেনা, ভাব কমে যায়। ভাবের মূল্য বজায় রাখার জন্য চোখের দেখা বন্ধ করলাম, এটা নতুন কিছু না, এই রকম আফছুছ বহুতবার করছি। কোন দুঃখে যে ওই কমিনার কথা শুনছিলাম। যাই হোক, অবশেষে Saint Martinএ পা রাখলাম, কেন জানি মনটা খারাপ হয়েছিল, আমার অবস্থা দেখে ওরা থাকার ইচ্ছা বাদ দিয়ে জাহাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিল।
ফেরার পথে শুটকি কিনতে কিনতে জাহাজ ছাড়ার আওয়াজ পেলাম, কেনা বাদ দিয়ে আমরা সবকটা একসাথে ঝেড়ে দৌড় দিলাম। ততক্ষণে জাহাজ অনেকদূর ছেড়ে গেছে। পাড়ে দেখলাম এক Speed Boatঅলা আমাদের ডাকছে, আমাদের জাহাজে পৌঁছে দেবে, ১৫০০ টাকা দিতে হবে, Saint Martin এর উপর থেকে রুচি যার পর নাই উঠে গেলো, রাজি হয়ে গেলাম, Speed Boat ছাড়ার পর আমার ভবের লীলা সাঙ্গ হবার সময় হয়ে এলো বলে, যে কোন মুহূর্তে Speed Boat উল্টে যেতে পারে, কি আর করা, একটা Life Jacket ধরে বসে রইলাম, জাহাজের কাছাকাছি আসতেই Speed Boatঅলা ডাকাডাকি শুরু করল, কিছুক্ষণের মাঝেই জাহাজে উঠার জন্যে একটা জায়গা করে দেয়া হল, জাহাজে উঠতেই জাহাজের প্রায় সবাই হাততালি দিতে লাগল, যেন Saint Martin থেকে কোন রাজকন্যা তাদের জন্য উদ্ধার করে আনছি। তারপরেও ভয়ের সাথে সাথে জাহাজ ধরতে পারার আনন্দটা বেশী কাজ করছিল, খেয়াল করলাম একজন লোক আমার বন্ধুদের সেইরাম ভাবে ঝারতেছে, এমনিতেই এতকিছু পার করে জাহাজে উঠলাম আর নয়া ঝামেলা শুরু দেখে ইচ্ছে করছিল বেটাকে তখনি জাহাজ থেকে ফেলে দেই, হয়তবা দিতামও, ঠিক সেই মুহূর্তে কোন একটা মেয়ে ওসাইন বোল্টের চাইতে বেশী গতিতে আমাদের দিকে ছুটে আসছে, কিছু বুঝে উঠার আগেই সে ধাক্কা দিল আমাকে, নিজেকে সামলাতে গিয়ে ইব্রাহিমের উপর পড়লাম, বেচারা তখনো ঝাড়ি খাওয়ায় ব্যস্ত ছিল, তাই আমার ধাক্কায় ইব্রাহিম ভূপাতিত হল। আমি তখন কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না।
কারন ২টা হাত আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছিল আর অনেকগুলো এলোমেলো চুল আমার মুখের উপর পড়েছিল। বুঝতে পারছিলাম আমার চাইতে মেয়েটি বেশী কাপছিল। অনেক কষ্টে নিজেকে বাহুবন্ধনি থেকে মুক্ত করলাম। কিছুক্ষণের মাঝেই ২টা ভুলের অবসান ঘটে;
১. যে ঝাড়ি মারছিল, সে ছিল জাহাজের Supervisor.
২. মাইয়াডা আর কেউ না, আমার Bus Standএর Standby প্রেমের প্রেমিকা।
ততক্ষণে ইব্রাহীমকে কিছু উৎসাহী জনতা টেনে উঠাল।
আমি তখনো কিছু বুঝতে পারছিলাম না কি হল, কি করব। Supervisor যাবার পর সবাই কেবিনে ফিরে এলাম, দেখলাম সবাই আমার দিকে তাকিয়ে কেমন যেন করছে, তারপর সদলবলে কেবিন থেকে প্রস্থান করল, অদের যাবার পরেই কেবিনের দরজায় আমার ভালোবাসার দেবী আফ্রোদিতিকে দেখতে পেলাম, নাহ অনেক ভুল করেছি, আর না, এইবার কিছু একটা করতে হবে। ওকে হাত ধরে ভেতরে নিয়ে বসালাম।
ও মাথা নিচু করে অনেকক্ষণ বসে রইল, কি করি কি করি, যা হবার হবে ভেবেই ওর মুখটা তুলে দেখি Saint Martin এর সব পানি ওর চোখ থেকে ঝরছে, থামার নাম নেই, অনেক বুঝানোর পর ঝর কিছুটা থামল।
তখনো বুঝিনি ওই থামাটা ছিল তুফানের পূর্বাভাস, কারন সেই একই ফেইল মারা প্রশ্ন, তুমি কি এখন আমার নাম জান, না বললাম।
কিছুক্ষন পর বলল কিছুই কি জাননা, কি জানতে চাইলে একটু করা করেই বলল, “About Me” আবারও না বললাম।
কেন জানিনা সে দিন ওর expressionগুলো দেখে অনেক মজা পাচ্ছিলাম। তারপরেই দেখলাম সে চলে যাবার জন্যে উঠেছে, দরজায় এসে দাড়িয়ে বলল, আমি জাহান, রুদবার_ই_জাহান, আর কখনো কিছু জানতে আসবনা, ভাল থেক।
২বার হারাবার পর অনেক কষ্ট পেয়েছি, অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করছিল, কিন্তু কিছুই বলতে পারছিলাম না, অনেক কষ্টে বললাম, আমার প্রতিটা ভাল মুহূর্তে তোমাকে miss করতাম, মনে হত তুমি থাকলে মুহূর্তগুলো আরও রঙিন হত, আমার প্রতিটা বাজে মুহূর্তে তোমাকে miss করতাম, মনে হত তুমি থাকলে মুহূর্তগুলো আমাকে ছুঁতে পারতনা, তোমাকে এতটাই ভালোবাসি যে আর কিছুই জানার প্রয়োজনবোধ হয়নি আমার। অনেকবার হারিয়ে আজ আবার পেয়েছি, এবার হারালে মনে হয় না বাঁচতে পারব।
মুখে ওর হাতের বাঁধা পেলাম।
ওখানে বসেই জানতে পারলাম সে এসেছে তার ভাই, ভাবী আর এক কাজিন নিয়ে, ভাই ভাবী Cox’s Bazaar রয়ে গেছে, সে আর তার কাজিন Saint Martin ঘুরতে এসেছিল।
আস্তে আস্তে তার অভিযোগের লিস্ট শুরু করলো। কেন আগে ওকে বলিনি, কেন এত কষ্ট দিয়েছি, কেন কেন কেন?????????? আরও অনেক কেন।
প্রেম করলে মানুষ তাদের লাইলি মজনু বলে তা জানতাম, মজনু মানে যে বোকা তাও জানতাম, শুধু লাইলি নামের মানেটা জানতাম না যে ওটা হল লায়লা+আলী =লাইলি।
ওর প্রতিটা অভিযোগের সাথেই ওর চিমটা, কিল, গুতা আরও না জানি কি কি ছিল। তখন মনে হচ্ছিল যে পরিমান মার বিনা বাক্য বেয়ে খেয়ে যাচ্ছি, স্বয়ং The Great মোহাম্মদ আলীও ৫-৬টার বেশী হজম করার আগেই বেহুঁশ হয়া যাইত। সবচাইতে বেশী মার খেলাম জাহাজ miss করেছিলাম বলে। মেয়েটাকে কনভাবেই থামাতে পারছিলাম না। যখনি বললাম বেথা পাচ্ছি তো, সাথে সাথেই যেন মূর্তি হয়ে গেলো, সকল Activity বন্ধ করে দিল।
তখন আলতো করে ওর মাথাটা আমার কাঁধে রেখে দিলাম, ওভাবেই পরে রইল। মনে হচ্ছিল ভালোবাসার এইত শুরু।
তখন সব কিছু ভুলে শুধু একটা কথাই ভাবছিলাম, একটা মানুষ একজনের ব্যাপারে কোন কিছু না জেনেই এতদিন ধরে এতোটা ভালোবাসে কিভাবে!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।