'জীবন' হলো এক কাপ গরম চা আর একটা জ্বলন্ত বেনসনের মতো। গরম চা একসময় জুড়িয়ে যাবে, বেনসনের তামাকও পুড়ে শেষ হয়ে যাবে। শুরুর কথা:
১৯১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের হাজারা বিভাগের খাইবার পাখতুনখার হরিপুর গ্রামে জগতখ্যাত পাকিস্তানী কবি আওরঙ্গজেব খান জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৩৮ সালে তিনি ’ক্বাতিল শিফায়ী’ ছদ্মনামে উর্দু কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। কাব্য চর্চার শুরুর দিকে জনাব হাকিম মোহাম্মাদ শিফা ছিলেন তাঁর দীক্ষা গুরু।
উর্দু কবি ক্বাতিল শিফায়ী
কর্ম জীবন:
অল্প বয়সে পিতাকে হারানোর পর তাঁর পড়ালেখা তেমন একটা আর হয়ে ওঠেনি। ছোটখাট একটা খেলনার দোকান চালানো শুরু করলেন কবি। কিন্তু সেখানে ভাগ্য সহায় না হওয়ায় তিনি পাকিস্থানের রাওয়ালপিণ্ডিতে চলে আসেন এবং এখানে মাসিক ৬০ রূপীতে একটা পরিবহন সংস্থায় কাজ নেন। ১৯৪৬ সালের দিকে তিনি ’'আদাব-এ-লতিফ'’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকায় কাজ করার সুযোগ পান। ওই সময়টাতেই তাঁর লেখা প্রথম গজল ক্বামার জালালাবাদী সম্পাদিত লাহোরের সাপ্তাহিক ’'স্টার’' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
১৯৪৭ সালে লাহোর ভিত্তিক চলচ্চিত্র পরিচালকদের থেকে গজল লেখার আমন্ত্রণ পান এই বিখ্যাত কবি। ’'তেরি ইয়াদ'’ নামের সিনেমাতে তিনি তাঁর প্রথম গানটি লেখেন। এরপর আর তাঁকে পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি।
যুবক বয়সে কবি ক্বাতিল শিফায়ী
লেখক এবং কবি হিসেবে কর্মজবিনের শুরুতে তিনি সহকারী লেখক হিসেবে কাজ শুরু করলেও পরবর্তীতে কবি নিজেই তৎকালীন বহু জনপ্রিয় সিনেমার গানের কথার জনক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এ সময়টাতেই তাঁর ঝুলিতে জমতে থাকে অনেক অনেক সম্মান এবং পুরষ্কার এবং ঠিক এ সময়টিতেই তাঁর লেখাগুলো প্রকাশিত হয় পাকিস্তানের বিখ্যাত সাহিত্য পত্রিকা '’মুত্রিবা’' -তে যা তাঁকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে যায়; তিনি ভূষিত হন পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সম্মানে।
জনাব তানভীর নাকভী এবং সাহির লুধিয়ানভীর পরেই উর্দু সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে ক্বাতিল শিফাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। দুই হাজার পাঁচশত-এরও বেশি গান তিনি লিখে গিয়েছেন। তাঁর লেখা উর্দু গানগুলো হিন্দী, গুজরাতি, ইংরেজি, রাশিয়ান এবং চাইনিজ ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
কবি ক্বাতিল শিফায়ী
সম্মাননা:
১৯৯৪ সালে প্রাইড অব পারফরমেন্স সহ আদমজী অ্যাওয়ার্ড, নাকুশ অ্যাওয়ার্ড, আব্বাস আর্ট কাউন্সিল অ্যাওয়ার্ড এবং ভারতের আমির খসরু অ্যাওয়ার্ড।
কবি ক্বাতিল শিফায়ী
তাঁর সাহিত্যকর্মের বিশেষত্ব হলো, তিনি তাঁর কাব্যে উর্দুর পাশাপাশি হিন্দী শব্দের প্রয়োগ করেছেন এবং তাঁর কবিতাগুলো অত্যন্ত সাবলীল এবং সহজবোধ্য।
সদ্যপ্রয়াত জগজীৎ সিং সহ চিত্রা সিং, গুলাম আলী প্রমুখ গজল শিল্পীর কন্ঠে গাওয়া তাঁর গজলগুলো অমর হয়ে থাকবে চিরকাল। ১১ জুলাই, ২০০১ সালে এই মহান কবি পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যান।
কবি ক্বাতিল শিফায়ী'র লেখা গজল
যে সকল ছায়াছবিতে তাঁর লেখনীর ছোঁয়া রয়েছে:
১. Bade Dilwala (1999) (lyricist)
২. Yeh Hai Mumbai Meri Jaan (1999) (lyricist)
৩. Auzaar (1997) (lyricist)
৪. Naajayaz (1995) (lyricist) (as Qatil Shafai)
৫. Sir (1993) (lyricist) (as Qateel Shafai)
৬. Phir Teri Kahani Yaad Aayee (1993) (English: Your Memories Have Returned) (lyricist) (as Qateel Shafai)
৭. Tahqiqaat (1993) (lyricist) (as Cratil Sipahi)
৮. Painter Babu (1983) (lyricist)
৯. Shireen Farhad (1975) (lyricist)
১০. Naila (1965) (lyricist)
১১. Intezar (1956) (asst lyricist)
১২. Gumnaam (1954) (assisted Hakim Ahmad Shuja as junior lyricist)
১৩. Gulnaar (1953) (asst lyricist)
১৪. Teri Yaad (1948) (asst lyricist) - (English: Memories) (International: English title)
কবি ক্বাতিল শিফায়ী'র লেখা উর্দু শেরগুলো:
লিঙ্ক-১
লিঙ্ক-২
কবির নিজ কণ্ঠে শের-ও-শায়েরি:
কবির লেখা কয়েকটি জনপ্রিয় গজল:
আপনে হোঁটো পার সাজানা চাহ্তাহু
রুবারু ও হ্যায় ইবাদাত কাররাহাহু, গায়ক: অশোক খোসলা
দারদসে মেরা দামান ভারতে ইয়া আল্লাহ
কিয়া হ্যায় পেয়ার যিসে হামনে জিনদেগী কি তারহা
প্যাহলে তো আপনি দিলকি রাযা জান জাইয়ে
তুম পুছো অওর ম্যায়না বাতাউ, অ্যায়সে তো হালাত নেহি, গায়ক: ভূপিন্দার সিং
সূত্র:
উইকিপিডিয়া
নিউজ সোর্স ডট কম
উর্দু আদাব ফর ইউ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।