আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাল উপন্যাস সত্যের কথা বলে এবং ভাল সমাজ গঠনে সাহায্য করে । আসুন আমরা ভাল উপন্যাস পড়ি এবং উপন্যাসের উক্তিগুলো মনে ধারণ করি ।

যদি কাহারো ভাল লাগে বা হার না মানা কথাগুলো দ্বারা কারো উপকৃত বোধ করেন , তবে অবশ্যই আমাকে একটা ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না । মনোযোগ দিয়ে পড়ুন আশা করি ভাল লাগবে । 1/ যারা সমস্ত মন দিয়ে চাইতে পারে , সমস্ত প্রাণ দিয়ে ভোগ করতে জানে, যাদের দ্বিধা নেই, সংকোচ নেই, তারাই প্রকৃতির বরপুএ । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । ২/ভুলকে ভুল বলে মানলেই সব চেয়ে বড়ো ভুল করা হয় ।

৩/ জীবনের ট্রাজেডি এইখানেই । সে ছোটো হয়ে ঋদয়ের এক তলায় লুকিয়ে থাকে, তার পরে বড়োকে একমুহূর্তে কাত করে দেয় । মানুষ আপনাকে যা বলে জানে মানুষ তা নয় , সেই জন্যেই এত অঘটন ঘটে । ৪/ বিরহে যে মন্দির শূন্য হয় সে মন্দিরের মধ্যেও বাঁশি বাজে । কিন্তু বিচ্ছেদে যে মন্দির শূন্য হয় সে মন্দির বড়ো নিস্তব্ধ শোনায় ।

৫/ পুরুষ মানুষের একটা নেশা চাই, কিন্তু সে নেশা যেন মেয়েমানুষ না হয় । ৬/পুরুষেরা যেখানে দুর্বল মেয়েরা সেখানে তাদের খুব ভাল করেই চেনে , কিন্তু পুরুষেরা যেখানে খাঁটি পুরুষ মেয়েরা সেখানকার রহস্য, ঠিক ভেদ করতে পারে না । আসল কথা , পুরুষ মেয়ের কাছে রহস্য, আর মেয়ে পুরুষের কাছে রহস্য,----। ৭/ ওদের ঐ আমির দাবিটাকে নিয়ে যে কত রঙ, কত ভঙ্গি, কত কান্না, কত ছল, কত হাবভাব , তার আর অন্ত নেই । ঐটেতেই তো ওদের মাধুর্য ।

ওরা আমাদের চেয়ে ঢের বেশি ব্যক্তিবিশেষ । আমাদের যখন তৈরি করেছিলেন তখন ছিলেন তিনি ইস্কুলমাস্টার , তখন তাঁর ঝুলিতে কেবল পুথি আর তত্ত্ব । আর ওদের বেলা তিনি মাস্টারিতে জবাব দিয়ে উঠেছেন আটির্স্ট, তখন তুলি আর রঙ্গের বাস্ক । ৮/ আমরা পুরুষ কেবল আমাদের দাবির জোরে মেয়েদের আজ উদঘাটিত করে দিয়েছি । কেবলই আমাদের কাছে আপনাকে দিতে দিতে তারা বড়ো করে বেশি করে পেয়েছে ।

তারা তাদের সমস্ত সুখের হীরে এবং দুঃখের মুক্তো আমাদের রাজকোষে জমা করে দিতে গিয়েই তবে তাঁর সন্ধান পেয়েছে । এমনি করে পুরুষের পক্ষে নেওয়াই হচ্ছে যথার্থ দান, আর মেয়েদের পক্ষে দেওয়াই হচ্ছে যথার্থ লাভ । ৯/ আমরা আজ পর্যন্ত মেয়েদের যদি কাঁদিয়ে না আসতুম তা হলে তাদের দুঃখের ঐশ্বর্য – ভান্ডারের দরজা যে আটাই থাকত । পুরুষ যে এিভুবনকে কাঁদিয়ে ধন্য করবার জন্যই । নইলে তার হাত এমন সবল তার মুঠো এমন শক্ত হবে কেন ।

১০/ ছ’টা যে রিপু আছে তার মধ্যে প্রথম – দুটো এবং শেষ দুটো হচ্ছে পুরুষের , মাঝখানের দুটো হচ্ছে কাপুরুষের । কামনা করব কিন্তু লোভ থাকবে না , মোহ থাকবে না । মোহ জিনিসটা থাকে অতীত আর ভবিষ্যৎকে জড়িয়ে । ১১/ মিথ্যাকে সত্য বলে ধরে রাখার চেষ্ঠা যে নিজের গলা চেপে ধরা । ১২/ পৃথিবীতে যা সকলের চেয়ে বড়ো তাকে লোভে পড়ে সস্তা করতে গেলেই সর্বনাশ ঘটে ।

১৩/ দুঃখের ভিতর দিয়ে যে মুক্তি আসে সেই মুক্তি দুঃখের চেয়ে বড়ো । ১৪/ যে আমার অপকার করে সে আমার কাছে ঋণী, পরকালে সে ঋণ তাহাকে শোধ করিতে হইবে , যে আমার উপকার করে আমি তাহার কাছে ঋণী, কিন্তু কোনকালে তাহার সে ঋণ শোধ করিতে পারিব না । ১৫/ তলোয়ারে শত্রুকে জয় করা যায় , কিন্তু সংগীতে শত্রুকে মিত্র করা যায় । ১৬/ লোকের যখন ধর্ম জ্ঞান সহসা প্রবল হইয়া উঠে, তখন কোন যুক্তিই তাহার কাছে খাটে না । ১৭/ ঋদয় জিনিসটা অতি উত্তম কিন্তু সকলের চেয়ে উত্তম নয় ।

১৮/ কথার মধ্যে কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যে তাহা লইয়া যতই তর্ক কর-না কেন প্রাপ্তির মধ্যে যে সত্য সেইটাই আসল । ১৯/ বিচ্ছেদের মুখে প্রেমের বেগ বাড়িয়া উটে । ২০/ আপনাকে জানো । নইলে মুক্তি কিছুতেই নেই । ২১/ যে লোক যে ক্ষেত্রে আছে সে ক্ষেত্রের বাহিরের সত্য যদি তার কাছে ছোট হয়ে না থাকে তবে সে ব্যক্তি কাজ করতেই পারে না ।

২২/ অন্যায়কে সহ্য না করাই হচ্ছে উচিত ব্যবহার । ২৩/ যেখানে ভিতরে কোথাও একটা অন্যায় আছে সেখানে বাহিরে শান্তি থাকাটাই সকলের অমঙ্গল । ২৪/ সমাজকে বুদ্ধিতে লংঘন করা সহজ , কিন্ত কাজে লংঘন করিবার বেলায় ছোট বড় কত জায়গায় টান পড়ে । ২৫/ ভালোর সঙ্গে মন্দ মেলাই সব চেয়ে কঠিন । ২৬/ জগৎ যখন কাজ করছে তখন তুমিও যদি কাজ না কর তা হলে যে কেবই ঠকবে ।

২৭/ মুখের তর্কে একটা জিনিসকে একরকম করে দেখানো যেতে পারে , কিন্ত কাজে সেরকমটি পাওয়া যায় না । ২৮/ ভাবের অসীমতা না হলে মানুষের ঋদয়ের ফাঁকা ভরে না । ২৯/ কোনো মানুষের সঙ্গে সমাজের যখন বিরোধ বাধে তখন দুটো কথা ভেবে দেখবার আছে –দুই পক্ষের মধ্যে ন্যায় কোন দিকে এবং প্রবল কে । সমাজ প্রবল তাতে সন্দেহ নেই , এতএব বিদ্রোহীকে দুঃখ পেতে হবে । ৩০/ মতকে মত দিয়ে , যুক্তিকে যুক্তি দিয়েই বাধা দেওয়া চলে , কিন্ত বুদ্ধির বিষয়কে ত্রুোধ দিয়ে দন্ড দেওয়া বরব র্রতা ।

৩১/ সমাজকে যদি তোমরা লংঘন করিতে চাও তবে সমাজের চেয়ে তোমাদিকে বড়ো হইতে হবে । ৩২/ আপন যখন পর হয় তখন তাকে সম্পূর্ণ ত্যাগ করা ছাড়া অন্য কোন গতি নেই । সেই জন্যেই তো এত বিধিনিষেধ , এত প্রাণপণ টানাটানি । ৩৩/ পৃথিবীতে যাহারা সাহস করিয়া নিজের জীবেনর দ্বারা নব নব সমস্যার মীমাংসা করিতে প্রস্তুত হয় তাহারাই সমাজকে বড়ো করিয়া তুলে । যাহারা কেবলই বিধি মানিয়া চলে তাহারা সমাজকে বহন করে মাত্র , তাহাকে অগ্রসর করে না ।

৩৪/ ওই বাহিরের চাঁদটাও কিছু না , মেঘটাও কিছু না, সব ফাঁকি – সব ফাঁকি ! আসল যা কিছু তা এই নিজের মনটা । সে যখন যাকে যা দেখায়, বিভোর হইয়া সে তখন তাই শুধু দেখে । **** শ্রীকান্ত **** ৩৫/ একজন আর একজনের মন বুঝে সহানুভুতি এবং ভালবাসা দিয়ে – বয়স এবং বুদ্ধি দিয়া নয় । সংসারে যে যত ভালবাসিয়াছে , পরের ঋদয়ের ভাষা তাহার কাছে ব্যক্ত হইয়াছে উঠিয়াছে । এই অত্যন্ত কঠিন অন্তদৃষ্টি শুধু ভালবাসার জোরে পাওয়া যায়, আর কিছুতেই নয় ।

**** শ্রীকান্ত **** ৩৬/ মানুষ শেষ পর্যন্ত কিছুই নিজের সমস্ত পরিচয় পায় না । সে যা নয়, তাই বলিয়া নিজেকে জানিয়া রাখে এবং বাহিরে প্রচার করিয়া শুধু বিড়ম্বনার সৃষ্ট করে এবং যে দন্ড ইহাতে দিতে হয় , তা নিতান্ত লঘুও নয় । **** শ্রীকান্ত **** ৩৭/ জগতের প্রত্যক্ষ সত্য যদি কাছু থাকে , ত সে মরণ । **** শ্রীকান্ত **** ৩৮/ বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না – ইহা দুরেও ঠেলিয়া দেয় । **** শ্রীকান্ত **** ৩৯/ মধু থাকলেই মৌমাছি এসে জোটে তারা দেশ – বিদেশের বিচার করে না ।

**** শ্রীকান্ত **** ৪০/ এই ভালবাসার মত এতবড় শক্তি , এতবড় শিক্ষক সংসারে বুঝি আর নাই । ইহা পারে না এতবড় কাজও বুঝি কিছু নাই । **** শ্রীকান্ত **** ৪১/ স্বাধীন চিন্তায় আর পরাধীন জ্ঞানে সংঘর্ষ বাধে, তখন উপদেশ দিতে যাওয়ার মত বিড়ম্বনা সংসারে অল্পই আছে । **** শ্রীকান্ত **** ৪২/ দুঃখ জিনিসটা অভাব নয়, শূন্যও নয় । ভয় ছাড়া যে দুঃখ , তাকে সুখের মতই উপভোগ করা যায় ।

**** শ্রীকান্ত **** ৪৩/ সংসারে সব নর – নারী এক চাঁচে তৈরি নয় , তাদের সার্থক হবার পথও জীবনের শুধূ একটা নয় । তাদের শিক্ষা , তাদের প্রবৃত্তি , তাদের মনের গতি কেবল একটা দিক দিয়েই চালিয়ে তাদের সফল করা যায় না । তাই সমাজে তার ব্যবস্থা থাকা উচিত । **** শ্রীকান্ত **** ৪৪/ সত্য যখন সত্যই মানুষের ঋদয় হইতে সম্মুখে উপস্হিত হয় যেন ইহারা সজীব , যেন ইহাদের রক্তমাংস আছে , যেন তার ভিতরে প্রাণ আছে – নাই বলিয়া অস্বীকার করিলে যেন ইহারা আঘাত করিয়া বলিবে চুপ কর া মিথ্যা তর্ক করিয়া অন্যায়ের সৃষ্টি করিয়ো না । **** শ্রীকান্ত **** ৪৫/ দুঃখ ভোগ করার মধ্যে একটা মারাক্তক মোহ আছে ।

মানুষ বহুযুগের জীবনযাত্রায় এটা দেখিয়াছে যে, কোন বড় ফলই বড় রকম দুঃখ – ভোগ ছাড়া পাওয়া যায় না । **** শ্রীকান্ত **** ৪৬/ সুখের জন্য দুঃখ স্বীকার করিতে হয়, এ কথা সত্য , কিন্তু তাই বলিয়া যেমন করিয়া ইহাকে উল্টাইয়া লইয়া যেমন করিয়া হোক কতকগুলো দুঃখ –ভোগ করাই গেলেই যে সুখ আসিয়া স্কন্ধে ভর করে, তাহা স্বতঃসিদ্ব নয় । ইহকালেও সত্য নয়, পরকালেও সত্য নয় । **** শ্রীকান্ত **** ৪৭/ আগুনের এক নাম সর্বভোক , সে সুখ –দুঃখ দুই-ই টেনে নেয়-তার বাচবিচার নেই । **** শ্রীকান্ত **** ৪৮/ ব্যথা একজন সহিতে স্বীকার করিলেই কিন্তু ব্যথা দেওয়ার কাজটা সহজ হইয়া উঠে না ।

**** শ্রীকান্ত **** ৪৯/ পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা বড় সত্য এই যে , মানুষকে সদুপদেশ দিয়া কখনো, ফললাভ হয় না । সৎপরামর্শ কিছুতেই কেহ শুনে না । **** শ্রীকান্ত **** ৫০/ নির্ভর হতে পারার চেয়ে ভালোবাসার বড় পাওয়া মেয়েদের আর নেই । **** শ্রীকান্ত **** ৫১/ পাপের সহায় হতে কখনো বন্ধুকে ডাকতে নেই – তাতে একের প্রায়শ্চিত্ত পড়ে অপরের ঘাড়ে । **** শ্রীকান্ত **** ৫২/ একেবারে সৌভাগ্যের প্রিয়তম পুত্র ! স্বাস্থ্য, শক্তি, রূপ, ঐশ্বর্য ! ।

**** চরিত্রহীন **** ৫৩/ সবাই নিজের বিদ্যে-বুদ্ধি এবং অভিজ্ঞতা দিয়েই সত্য –মিথ্যা ওজন করে । কিন্তু এ জিনিস সকলের এক নয় । তুমি যাকে সত্য বলে বুঝতে পার, অন্য জন তা নাও পারে । **** চরিত্রহীন **** ৫৪/ সত্য –মিথ্যা যাই হোক , তাকে বুদ্ধি-পূর্বক গ্রহণ করা উচিত । **** চরিত্রহীন **** ৫৫/ দু-রকমের অন্ধ আছে কিনা ।

যারা চোখ বুজে চলে , তাদের সম্বন্ধে ত ভাবতে হয় না তাদের চেনা যায় । কিন্তু যারা দু’চোখ চেয়ে চলে, দেখতে পায় না , তাদের নিয়েই যত গোল । তারা নিজেরাই ঠকে , পরকেও ঠকাতে ছাড়ে না । **** চরিত্রহীন **** ৫৬/ মানুষের এমনি পোড়া স্বভাব , যা তার সাধ্যাতীত তার সবচেয়ে লোভ । **** চরিত্রহীন **** ৫৭/ যেদিন বুঝবে রূপটাও মানুষের ছায়া , মানুষ নয় – সেইদিনই শুধু ভালবাসার সন্ধান পাবে ।

**** চরিত্রহীন **** ৫৮/ সন্তান – ধারণের জন্য যে সমস্ত লক্ষণ সবচেয়ে উপযোগী তাই নারীর রূপ । সমস্ত জগতের সাহিত্যে, কাব্যে এই বর্ণনা । এই বর্ণনাই , তাঁর রূপের বর্ণনা । এই জন্যই নারীর বাল্যরূপ যদি বা মানুষকে আকৃষ্ট করে তাকে মাতাল করে না । আবার যেদিন সে সন্তান – ধারণের বয়স পার হয়ে যায়, তখনও ঠিক তাই ।

শুধু নারী নয় পরুষের এই দশা । ততক্ষণই তার রূপ , যতক্ষণ সে সৃষ্ট করতে পারে । এই সৃষ্টি করবার ক্ষমতাই তাঁর রূপ – যৌবন , এই সৃষ্টি করবার ইচ্ছাই তারঁ প্রেম । **** চরিত্রহীন **** ৫৯/ যে ভলবাসতে পারে , সেই কেবল সুন্দর অসুন্দর সব ভলবাসতেই নিজেকে ডুবিয়ে দিতে পারে । **** চরিত্রহীন **** ৬০/ যুবতীর রমণীর মন পাওয়া এক কিন্তু সে পাওয়া কাজে লাগানো ভিন্ন বস্তু ।

কারণ , পাওয়া যখন নর-নারীর নিভৃত ঋদয়ের গোপনে নিঃশব্দে সমপুর্ণ হইয়া উটঠিতে থাকে , বাহিরের সংসার তাহার সাড়া পায় না, কিন্তু যেদিন এই এই সংসারের সম্মতি না লইয়া আর এক পদও অগ্রসর হইবার উপায় থাকে না । এ পাওয়া যে কত কঠিন , এ রত্ন যে কত দুর্লভ, বাহিরের সংসার সে বিচারের দিক দিয়া যায় না – সে কেবল তাহার শাস্ত্র লইয়া , সমাজ লইয়া , লোকাচার লইয়া বিরুদ্ধস্বরে কলরব করে – এই শুধু তাহার কাজ । **** চরিত্রহীন **** ৬১/ সুন্দর ফুল রূপ দিয়ে , গন্ধ দিয়ে , মধু দিয়ে মৌমাছি টেনে এনে ফলে পরিণত হয়, সেই ফল আবার ঠিক সময়ে মাটিতে পড়ে অঙ্কুরে পরিণত হয় – এই তার প্রকৃতি, এই তার প্রবৃত্তি, এই তার স্বর্গীয় প্রেম । **** চরিত্রহীন **** ৬২/ অসাবধানে গাছ থেকে পড়ে হাত-পা ভাঙ্গার অপরাধ মাধ্যাকর্ষণের উপর চাপান , আর প্রেমকে কুৎসিত ঘৃণিত বলা সমান কথা । **** চরিত্রহীন **** ৬৩/ যে দেহে তার জন্ম , সেই দেহের মধ্যে যখন তার পরিণতির নির্দিষ্ট সীমা শেষ হয়ে যায় , তখন সেই তার যৌবন ।

**** চরিত্রহীন **** ৬৪/ খুনের অপরাধে জজসাহেব যখন হতভাগ্যের প্রাণদন্ড করেন, তখন তিনি বিচারক , কিন্তু অপরাধীর অন্তরের দুর্বলতা অনুভব করে যখন তিনি দন্ড লঘু করেন , তখন তিনি কবি । **** চরিত্রহীন **** ৬৫/ কবি যে শুধু সৃষ্টি করে তা নয় কবি সৃষ্টি রক্ষাও করে । যা স্বভাবতই সুন্দর, তাকে যেমন আরও সুন্দর করে প্রকাশ করা একটা কাজ , যা সুন্দর নয় , তাকেও অসুন্দরের হাত থেকে বাঁচিয়ে তোলা তারই আর একটা কাজ । **** চরিত্রহীন **** ৬৬/ সাদা আলো যেমন বাঁকা কাঁচের মধ্যে রঙ্গিন হয়ে ওঠে , ন্যায়ও তেমনি অন্যায় , অধর্ম , পাপ, তাপের বাঁকা পথ দিয়ে দয়া , মায়া ক্ষমার বিচিত্র হয়ে দেখা দেয় । **** চরিত্রহীন **** ৬৮/ সুখই জীবের একমাত্র লক্ষ্য এবং আর সমস্ত উপলক্ষ ।

দয়া , ধর্ম,পূণ্য , এ সমস্তই উপলক্ষ্য । হয় ইহকালে নয় পরকালে , হয় নিজের, না হয় পাঁচজনের হয় স্বদেশের, না হয় বিদেশের – কি উপায়ে সে সুখের সমষ্টি বাড়াইয়া তুলিতে পারা যায় – ইহাই জীবের কর্ম এবং জানিয়া হোক , না জানিয়া হোক , এই চেষ্টতেই জীবের সমস্ত জীবন পরিপূর্ণ হইয়া থাকে , এবং এইটিই একমাত্র তুলাদন্ড, যাহাতে ফেলিয়া সমস্ত ভালমন্দ ওজন করিয়া দিতে পারা যায় । **** চরিত্রহীন **** ৬৯/ যতদিন তুমি পরকালের কল্পনা, আত্তার কল্পনা, ঈশ্বরের কল্পনা, প্রভৃতি জঞ্জালগুলি মনের মধ্যে থেকে পরিস্কার করে ঝেটিয়ে না ফেলতে পারবে , ততদিন সংশয় তোমার থেকেই যাবে । সূখই যে জীবনের শেষ উদ্দেশ্য এবং সুখী হওয়াই যে জীবনের চরম সার্থকতা, এ কথা বুঝেও বুঝবে না । কেবলই মনে হতে থাকবে , কে জানে, হয়ত বা আরো কিছু আছে ।

অথচ এই আরো কিছুর সন্ধান কোনদিনই খুজে পাবে না । এ তোমাকে ব্যস্ত করে রাখবে অথচ গতি দেবে না , আকাঙ্কা জাগিয়ে তুলবে, কিন্তু পরিতৃপ্তি দেবে না । পথের গল্পই বলবে , কিন্তু কোনদিন পথ দেখিয়ে দিতে পারবেনা । **** চরিত্রহীন **** ৭০/ যে জোর করিয়া কিছু লইতে জানে, সে তাহা রাখিতেও জানে । **** বড়দিদি **** ৭১/ যাহার রূপ আছে , সে দেখাইবেই ।

যাহার গুণ আছে , সে প্রকাশ করিবেই । যাহার ঋদয়ে ভালবাসা আছে , যে ভালবাসিতে জানে –সে ভালবাসিবেই । **** বড়দিদি **** ৭২/ সকলেরই একটা সীমা আছে । স্বর্গীয় ভালবাসারও একটা সীমা নির্দিষ্ট আছে । যদি সীমা ছাড়াইয়া যাও , কষ্ট পাইবে ।

কেহ রাখিতে পারিবে না । **** বোঝা **** ৭৩/ শুধু ইচ্ছে এবং ঋদয় থাকিলেই পরের ভালো এবং দেশের কাজ করা যায় না । যাদের ভাল করবে তাদের সঙ্গে থাকার কষ্ট সহ্য করতে পারা চাই , বুদ্ধি-বিবেচনায় ধর্মেকর্মে এত এগিয়ে গেলে তারাও তোমার নাগাল পাবে না , তুমিও তাদের নাগাল পাবে না । **** পন্ডিত মশাই **** ৭৪/ নিজের কর্তব্য করার আগে পরের কর্তব্য আলোচনা করলে পাপ হয় । **** পন্ডিত মশাই **** ৭৫/ একটা কথা এই যে মানুষ এমনি দুঃসময়ের মাঝে আশা-নিরাশার কুল-কিনারা যখন দেখিতে পায় না, তখন দুর্বল মন বড় ভয়ে ভয়ে আশার দিকটাই চাপিয়া ধরিয়া থাকে ।

যেটা হইলে মঙ্গল, সেইটাই আশা করে । ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় সেই দিক পানেই নিতান্ত উৎসুক নয়নে চাহিয়া দেখিতে চাহে । **** দেবদাস **** ৭৬/ শিক্ষা , বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞান , উন্নতি যা কিছু সব সুখের জন্য , যেমন করেই দেখনা কেন নিজের সুখ বাড়ানো ছাড়া এ সকল আর কিছুই নয় । **** দেবদাস **** ৭৭/ চাঁদের অত রূপ বলেই তাতে কলঙ্কের কালো দাগ, পদ্ম অত সাদা বলেই তাতে কালো ভোমর বসে থাকে । **** দেবদাস **** ৭৮/ যাহার আশা আছে , সে একরকম করিয়া ভাবে , আর যাহার আশা নাই, সে অন্য রকম ভাবে ।

পূব্বোর্ক্ত ভাবনার মধ্যে সজীবতা আছে , সুখ আছে, দুঃখ আছে , উৎকন্ঠা আছে, তাই মানুষকে শ্রান্ত করিয়া আনে-বেশীক্ষণ ভাবিতে পারে না । কিন্তু আশাহীনের সুখ নাই, দুঃখ নাই, অথচ তৃপ্তি আছে । চোখ দিয়া জলও পড়ে, গভীরতা আছে- কিন্তু নিত্য নুতন করিয়া মর্ম্মভেদ করে না । হাল্কা মেঘের মত যথাতথা ভাসিয়া চলে । যেখানে বাতাস লাগে না, সেখানে দাড়ায়, আর যেখানে লাগে সেখান হইতে সরিয়া যায় ।

তন্ময় মন উদ্বেগহীন চিন্তায় একটা সার্থকতা লাভ করে । **** দেবদাস **** ৭৯/ ভালবেসে শুধূ-হাতে ফিরে আসাটাই বড় যাতনা, তার পরে আবার নতুন করে ভালবাসতে যাওয়ার মত বিড়ম্বনা সংসারে আর নাই । **** দেবদাস **** ৮০/ রাজ্য পাইতে চাও তো সহস্র লোকের দুঃখকে আপনার দুঃখ বলিয়া গ্রহণ করো, সহস্র লোকের বিপদকে আপনার বিপদ বলিয়া বরণ করো,সহস্র লোকের দারিদ্র্যকে আপনার দারিদ্র্য বলিয়া স্কন্ধে বহন করো – এ যে করে সে-ই রাজা, সে পর্ণকুটিরেই থাক আর প্রাসাদেই থাক । **** রাজর্ষি**** ৮১/ যে ব্যক্তি সকল লোককে আপনার বলিয়া মনে করিতে পারে, সকল লোক তো তাহারই । **** রাজর্ষি**** ৮২/ পৃথিবীর দুঃখ হরণ যে করে সেই পৃথিবীর রাজা ।

**** রাজর্ষি**** ৮৩/ রাজাকে বধ করিয়া রাজত্ব মেলে না , পৃথিবীকে বশ করিয়া রাজা হইতে হয় । **** রাজর্ষি**** ৮৪/ পাপের শেষ কোথায় গিয়া হয় কে জানে , পাপের একটি বীজ যেখানে পড়ে সেখানে দেখিতে দেখিতে গোপনে কেমন করিয়া সহস্র বৃক্ষ জন্মায় , কেমন করিয়া অল্পে অল্পে সুশোভন মানবসমাজ অরণ্যে পরিণত হইয়া যায় , তাহা কেহ জানিতে পারে না । **** রাজর্ষি**** ৮৫/ দিনরাত প্রখর বুদ্ধিমানের সঙ্গে থাকিলে বুদ্ধি লোপ পায় । ছুরিতে অবিশ্রাম শান পড়িলে ছুরি ক্রমেই সুক্ষ হইয়া অর্ন্তধান করে । একটা মোটা বাট কেবল অবশিষ্ট থাকে ।

**** রাজর্ষি**** ৮৬/ সুক্ষ বুদ্ধির একটা লক্ষণ এই যে , তাহা সহজ জিনিসকে শক্ত করিয়া তুলে । **** রাজর্ষি**** ৮৭/ পৃথিবীতে বিস্তর বুদ্ধিমান না থাকিলে পৃথিবীর কাজ অনেকটা সোজা হইত । নানারূপ সুবিধা করিতে গিয়াই নানারূপ অসুবিধা ঘটে । অধিক বুদ্ধি লইয়া মানুষ কী করিবে ভাবিয়া পায় না । **** রাজর্ষি**** ৮৮/ পাঁচটা আঙ্গুলেই বেশ কাজ চালিয়া যায় , দুর্ভাগ্যক্রমে সাতটা আঙ্গুল পাইলে ইচ্ছা করিয়া কাজ বাড়াইতে হয় ।

**** রাজর্ষি**** ৮৯/ বিবাহ না করিয়া ঠকা ভালো , বিবাহ করিয়া ঠকিলেই মুশকিল । **** চোখের বালি *** ৯০/ সংসারে কঠিন কর্তব্য হইতে প্রেমকে ফুলের মতো ছিড়িয়া স্বতন্ত্র করিয়া লইলে, তাহা কেবল আপনার রসে আপনাকে সজীব রাখিতে পারে না, তাহা ক্রমেই বিমর্ষ ও বিকৃত হইয়া আসে । **** চোখের বালি *** ৯১/ ভালোবাসার উৎসবও কেবলমাত্র দুটি লোকের দ্বারা সম্পন্ন হয় না – সুখালাপের মিষ্টান্ন বিতরণের জন্য বাজে লোকের দরকার হয় । **** চোখের বালি *** ৯২/ সংসারে আপন – পর কেহই নাই । যে আপন মনে করে সেই আপন – যে পর বলিয়া জানে , সে আপন হইলেও পর ।

**** চোখের বালি *** ৯৩/ সোহাগের সঙ্গে রাগ না মিশিলে ভালোবাসার স্বাদ থাকে না – তরকারিতে লঙ্কামরিচের মতো । **** চোখের বালি *** ৯৪/ চিকিৎসা করিয়া রোগ সারানোর চেয়ে রোগ না হইতে দেওয়াই ভাল । **** চোখের বালি *** ৯৫/ প্রকৃত আপনাকে মানুষ আপনিও জানিতে পারে না , অন্তর্যামীই জানেন , অবস্থাবিপাকে যেটা বাহিরে গড়িয়া উঠে সংসারের কাছে সেইটাই সত্য । **** চোখের বালি *** ৯৬/ ভালো যে বাসে সে নিজের ভালোবাসাকে বরাবর অপদস্থ করিতে পারে । **** চোখের বালি *** ৯৭/ একটা প্রবল আবেগের উচ্ছ্বাসের পর ঋদয়ে অবসাদ উপস্থিত হয় – ক্লান্ত ঋদয় কিছুকালের জন্য দূরে ঠেলিয়া রাখিতে চায় ।

সেই ভাবের ভাঁটার সময় তলের সমস্ত প্রচ্ছন্ন পঙ্ক বাহির হইয়া পড়ে – যাহা মোহ আনিয়াছিল তাহাতে বিতৃষ্ণা জন্মে । **** চোখের বালি *** ৯৮/ যাহা যথার্থ গভীর এবং স্থায়ী, তাহার মধ্যে বিনা চেষ্ঠায় , বিনা বাধায় আপনাকে সম্পূর্ণ নিমগ্ন করিয়া রাখা যায় বলিয়া তাহার গৌরব আমরা বুঝিতে পারি না – যাহা চঞ্চল ছলনামাত্র , যাহার পরিতৃপ্তিতে লেশমাত্র সুখ নাই , তাহা আমাদিগকে পঞ্চাতে উর্ধ্ধশ্বাসে গোড়দৌড় করিয়া বেড়ায় বলিয়াই তাহাকে চরম কামনার ধন মনে করি । **** চোখের বালি *** ৯৯/ অন্যকে দোষী করিয়া যেটুকু সুখ , দোষ মনে রাখিবার দুঃখ তাহার চেয়ে ঢের বেশি । **** চোখের বালি *** ১০০/ উপদেশ দেওয়া সহজ , উপায় বলিয়া দেওয়াই শক্ত । **** চোখের বালি *** ১০১/ অধিকারলাভের যে মর্যাদা আাছে, সেই মর্যাদা রক্ষা করিতে হইলে অধিকার প্রয়োগকে সংযত করিতে হয় ।

যতটা পাওয়া যায় ততটা লইয়া টানাটানি করা কাঙ্কলকে সুভা পায় – ভোগকে খর্ব করিলেই সম্পদের যথার্থ গৌরব । **** চোখের বালি *** ১০২/ মানুষ তো ফুল কিংবা প্রজাপতি মাত্র নয় যে, ভালো দেখার বিচারটাই সর্বাগ্রে তুলিতে হইবে । **** নৌকাডুবি *** ১০৩/ ভুল হইতে, বেসুর হইতে, অক্ষমতা হইতে আনন্দ পাইবার শক্তি ভালোবাসারই আছে । **** নৌকাডুবি *** ১০৪/ প্রয়োজন রাজার মতো আপনার পুরা সময় লয়-আর ভালবাসা কাঙ্কাল । **** নৌকাডুবি *** ১০৫/ কতকগুলি জিনিস আছে, যা আপনার ঝোকেই অগ্রসর হয়ে পড়ে, তাহাকে আর পশ্রয় দিতে হয় না – বাড়িতে বাড়িতে আপনিই বাড়াবাড়িতে গিয়া পৌছায় ।

**** নৌকাডুবি *** ১০৬/ যেখানে নির্ভরতাও নাই, স্বাধীনতাও নাই, সেখানে প্রাণ বাঁচে কী করিয়া । **** নৌকাডুবি *** ১০৭/ আমার সঙ্গে যাহার বোঝাপড়ার কোনো সম্পর্ক নাই তাহাকে বুঝিতে চেষ্ঠা করাই ধৃষ্টতা । কিন্তু পৃথিবীতে দৈবাৎ এমন এক একটি মানুষ মেলে দৃষ্টিপাতমাত্রই যাহার সঙ্গে সম্বন্ধ স্থির হইয়া যায় । **** নৌকাডুবি *** ১০৮/ বার বার ভিন্ন ভিন্ন রকম স্থির করাকে স্থির বলে না – সে তো অস্থির করা । **** নৌকাডুবি *** ১০৯/ পৃথিবীতে কাহারো অভাবে অধিক দিন কিছুই শূন্য থাকে না ।

**** নৌকাডুবি *** ১১০/ কর্মিষ্ঠ লোকের দোষ এই, অন্য লোকের কর্মপটুতার উপরে তাহাদের বড়ো একটা বিশ্বাস থাকে না । তাহাদের ভয় হয়, যে কাজ তাহার নিজে না করিবে সেই কাজ অন্যে করিলেই পাছে সমস্ত নষ্ট করিয়া দেয় । **** নৌকাডুবি *** ১১১/ মানুষের সহবাসই মানুষের সর্বপ্রকার মনোবৈকল্যের প্রধান ঔষধ । **** নৌকাডুবি *** ১১২/ পরের দোষত্রূটি লইয়া কেবলই আলোচনা করিতে থাকিলেই মন ছোটো হইয়া যায়, স্বভাব সন্দিগ্ধ হইয়া উঠে , ঋদয়ের সরসতা থাকে না । **** নৌকাডুবি *** ১১৩/ সংসারে যে ব্যক্তি কিছু হারায় নাই সে কিছু পায় নাই ।

অমনি যাহা আমাদের হাতে আসে তাহাকেই আমরা সম্পূর্ণ পাই না, ত্যাগের দ্বারা আমরা যখন তাহাকে পাই তখনই যথার্থ তাহা আমাদের ধন হইয়া উঠে । যাহা কিছু আমাদের প্রকৃত সম্পদ তাহা সম্মুখ হইতে সরিয়া গেলেই যে ব্যক্তি হারাইয়া ফেলে সে লোক দুর্ভাগা , বরঞ্চ তাহাকে ত্যাগ করিয়াই তাহাকে বেশি করিয়া পাইবার ক্ষমতা মানবচিত্তের আছে । যাহা আমার যায় তাহার সম্মন্ধে যদি আমি নত হইয়া করজোড় করিয়া বলিতে পারি আমি দিলাম আমার ত্যাগের দান, আমার দুঃখের দান, আমার অশ্রুর দান – তবে ক্ষুদ্র বৃহৎ হইয়া উঠে, অনিত্য নিত্য হয় এবং যাহা আমাদের ব্যবহারের উপকরণমাত্র ছিল তাহা পূজার উপকরণ হইয়া আমাদের অন্তঃকরণের দেবমন্দিরের রত্নভান্ডারে চিরসঞ্ছিত হইয়া থাকে । **** নৌকাডুবি *** ১১৪/ আমরা যাহা পাইয়াছি তাহা কখনোই হারাইতে পারি না, যাহা যথার্থ পাই নাই তাহাই হারাই । **** নৌকাডুবি *** ১১৫/ মানুষে মানুষে কী দুর্ভেদ্য ব্যবধান ! মন জিনিসটা কী ভয়ংকর একাকী ।

**** নৌকাডুবি *** ১১৬/ ঋদয়ের সহিত ঋদয়ের সাক্ষাৎ সহজ নহে , মানুষের সহিত মানুষের সম্বন্ধ সরল নহে । **** নৌকাডুবি *** ১১৭/ যারা নিন্দা করে তারা নিন্দা ভালবাসে বলিয়াই করে, সত্য ভালবাসে বলিয়া নয় । **** চতুরঙ্গ *** ১১৮/ যেখানে মেয়েরা দুঃখ পাইবে সেইখানেই তারা ঋদয় দিতে প্রস্তুত । **** চতুরঙ্গ *** ১১৯/ মানুষের মন যখন অত্যন্ত জোরে কিছু একটাতে গিয়ে ঠেকে তখন আপনিই তার শরীরের সমস্ত প্রয়োজন কমিয়া যায় । সেইজন্যই বড়ো দুঃখে কিংবা বড়ো আনন্দে মানুষের ক্ষুদাতৃষ্ণা থাকে না ।

**** চতুরঙ্গ *** ১২০/ মুর্খেরা লাভ করে উন্নতি, যোগ্য ব্যক্তিরা লাভ করে গৌরব । **** দুইবোন *** ১২১/ স্বভাবের প্রতিবাদ করাও যা আর তপ্ত লোহায় হাত বুলিয়ে তাকে ঠান্ডা করতে যাওয়াই তাই, তাতে বীরত্ব থাকতে পারে কিন্তু আরাম নেই । **** চার অধ্যায় *** ১২২/ অনেক মানুষ আছে যাদের স্বভাবের দু-রকমের বুনোনির কাজ । দুটোর মধ্যে মিল নেই । অথচ দুটোই সত্য ।

তারা নিজেকেও নিজে ভুল করে । **** চার অধ্যায় *** ১২৩/ রাগের মাথায় কর্তব্য করতে গেলে অকর্তব্য করার সম্বাবনাই বেশি । কিন্তু রাগের কারণ থাকলে রাগ না করাটা অমানবিক । **** চার অধ্যায় *** ১২৪/ রোগ সব শরীরের দুঃখের কিন্তু ক্ষীন শরীরে মারাত্বক । **** চার অধ্যায় *** ১২৫/ ভেবেই ভাবনা শেষ করতে হয়, তাকে ফাকি দিয়ে থামাতে গেলে বিপরীত ঘটে ।

**** যোগাযোগ *** ১২৬/ পূন্য তাতেই বেশি, সেইটেই কঠিন সাধনা । **** যোগাযোগ *** ১২৭/ কাঠুরে গাছকে কাটতেই জানে, সে গাছ পায় না, কাঠ পায় । মালী গাছকে রাখতে জানে সে পায় ফুল, পায় ফল । **** যোগাযোগ *** ১২৮/ দৌর্বল্য স্বভাবতই অনুদার, দুর্বলের আত্তগরিমা ক্ষমাহীন নিষ্ঠুরতার রূপ ধরে । **** যোগাযোগ *** ১২৯/ যে ভালবাসা আপনাকে দেয় তার অধিক আর কিছু দিতে পারে না ।

**** যোগাযোগ *** ১৩০/ যা কিছু চার দিকে বেড়ে আছে সেইটিই মনে হয় মিথ্যে, আর যার ঠিকানা পাওয়া যায় নি, যার ছবি যায় আকতে গেলে রঙ যায় আকাশে ছড়িয়ে, মূর্তি উকি দিয়ে পালিয়ে যায়, জলস্থলের নানা ইশারার মধ্যে, মন তাকেই বলে সব চেয়ে সত্য । **** যোগাযোগ *** ১৩১/ দুঃখ এড়াবার জন্য চেষ্ঠা করলে দুঃখ পেয়ে বসে । ওকে জোরের সঙ্গে মানতে হবে । **** যোগাযোগ *** ১৩২/ সংসারে ক্ষুদ্র কালটাই সত্য হয়ে দেখা দেয়, চিরকালটা থাকে আড়ালে, গানে চিরকালটা আসে ক্ষুদ্র কালটাই যায় তুচ্ছ হয়ে । তাতেই মন মুক্তি পায় ।

**** যোগাযোগ *** ১৩৩/ কয়লা ধুইলে ময়লা যায় না, কয়লাকে পুড়াতে হয় । **** পল্লীসমাজ *** ১৩৪/ বাধানো দাত দিয়ে যেটুকু হয় তার বেশি হয় না এ কথা আমরা জানি, শুধু আপনারাই জানেন না যে সংসারে সত্যিকার দাঁতওয়ালা লোকও আছে কামড়াবার দিন এলে তাদের অভাব হয় না । **** বিপ্রদাস *** ১৩৫/ জ্ঞানের আস্ফালনে মুখের মধু বিষ হয়ে উঠে । **** বিপ্রদাস *** ১৩৬/ অন্ধকে আলো বোঝানোর ফল নেই । **** বিপ্রদাস *** ১৩৭/ পেটে খেলে পিঠে সইতে হয়, রাগারাগি করা মুর্খতা ।

**** বিপ্রদাস *** ১৩৮/ বন্ধুর যখন হবে সত্যিকার প্রয়োজন তখন ভগবান আপনি পৌছে দিবেন তাকে দোরগোড়ায় । **** বিপ্রদাস *** ১৩৯/ অন্তর শূন্য থাকতে চায় না, হাতড়ে বেড়ায় চারদিকে । **** বিপ্রদাস *** ১৪০/ এমনি সকল মেয়ের প্রকৃতি ভালোবাসার পাত্র যে কে সমস্ত জীবনে খুজেও পায় না । কিংবা খুজে পাওয়ার জিনিস নয় – ওঠা মরীচিকা । **** বিপ্রদাস *** ১৪১/ সত্য জিনিসটা মেয়েদের মধ্যে প্রাণের সঙ্গে মিশিয়ে একেবারে এক হয়ে আছে ।

আমাদের সত্যে রঙ নেই, রস নেই, প্রাণ নেই, শুধু কেবল যুক্তি । মেয়েদের ঋদয় রক্তশতদল, তার উপরে সত্য রূপ ধরে বিরাজ করে, আমাদের তর্কের মতো তা বস্তুহীন নয় । এই জন্যই মেয়েরাই যথার্থ নিষ্ঠুর হতে জানে, পুরুষ তেমন জানে না, কেননা ধর্মবুদ্ধি পুরুষকে দুর্বল করে দেয় । মেয়েরা সর্বনাশ করতে পারে অনায়াসে, পুরুষেও পারে, কিন্তু তাদের মনে চান্তার দ্বিধা এসে পড়ে । মেয়েরা ঝড়ের মতো অন্যায় করতে পারে, সে অন্যায় ভয়ংকর সুন্দর ।

পুরুষের অন্যায় কুশ্রী কেননা তার ভিতরে ন্যায়বুদ্ধির পীড়া আছে । **** ঘরে-বাহিরে *** আমার পড়া কতগুলো উপন্যাস এবং উপন্যাসের লেখক এবং নায়ক ও নায়িকা ও অন্যান্য চরিত্র । ১/ পল্লীসমাজ – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – রমেশ+রমা । ২/ বিপ্রদাস – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – বিপ্রদাস, দ্বিজদাস+বন্দনা । ৩/ গৃহদাহ – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সুরেস+অচলা+মহিম ।

৪/ পথের প্যাচালী – বিভূতিভূষণ চট্টোপাধ্যায় – অপু, দুর্গা, সর্বজয়া । ৫/ শেষের কবিতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – অমিত+কেতকী,অমিত+লাবণ্য+শোভনলাল । ৬/ কপালকুন্ডলা – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – নবকুমার+কপালকুন্ডলা । ৭/ অনন্ত প্রেম – আনোয়ার কবির পাশা । ৮/ বনে যদি ফুটল কুসুম –বিধানচন্দ্র মিত্র – সাগর+ঋতু ।

৯/ বিষাদসিন্ধু – মীর মোশারফ হোসেন । ১০/ ঘরে-বাহিরে – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – নিখিল+বিমলা+স্বদ্বীপ । ১১/ রোল নাম্বার ওয়ান – হাফিজ আল ফারূকী । ১২/ বউঠাকুরাণীর হাট – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – উদয়াদিত্য+সুরমা, প্রভা । ১৩/ গোরা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – গোরা+সুচরিতা, বিনয়+ললিতা ।

১৪/ শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – শ্রীকান্ত+রাজলক্ষী, ইন্দ্র । ১৫/ পরিণীতা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – শেখর । ১৬/ চরিত্রহীন - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সতীশ+সরোজিণী, সাবেত্রী, উপেন্দ্র+সুরবালা, কিরণময়ী, দিবাকর । ১৭/ পথের দাবী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – অপূর্ব+ভারতী, ডাক্তার-সব্যসাচী, সুমিত্রা । ১৮/ বড়দিদি - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সুরেন্দ্রনাথ, শান্তি, মাধবী, বড়দিদি, প্রমীলা ।

১৯/ অনুরাধা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – বিজয়, অনুরাধা, গগন, কুমার । ২০/ মেজদিদি - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – কেষ্ঠ, হেমাঙ্গিনী, কাদম্বিনী, নবীন, বিপিন । ২১/ বোঝা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সত্যেন্দ্রকুমার মিত্র+সরলা+নলিনী, হেমাঙ্গিনী+বিধু । ২২/ পন্ডিত মশাই - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – কুসুম+বৃন্দাবন দাস, চরণ, কুঞ্জনাথ+ব্রজেশ্বরী, কেশব । ২৩/ দেবদাস - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – চন্দ্রমুখী+দেবদাস, দেবদাস+পার্ব্বতী+ভুবন চৌধুরী, মহেন্দ্র, মনোরমা ।

২৪/ রাজর্ষি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – হাসি+তাতা, ধ্রুব, গোবিন্দ্র মাণিক্য, নক্ষত্ররায়, রঘুপতি, বিল্বন, জয়সিংহ । ২৫/ চোখের বালি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – মহেন্দ্র+আশালতা+বিনোদিনী, বিহারী, রাজলক্ষী, অন্নপূর্ণা । ২৬/ নৌকাডুবি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – রমেশ+হেমনলিনী, নলিনাক্ষ+কমলা, ক্ষেমংকরী, চক্রবর্তী, শৈলজা, উমেশ, অক্ষয়, যোগেন । ২৭/ চতুরঙ্গ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – শচীশ, শ্রীবিলাস+দামিনী, হরিমোহন, জগমোহন, পুরন্দর, ননিবালা, নিলানন্দস্বামী । ২৮/ দুইবোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – শশাঙ্ক+শর্মিলা+উর্মি, নীরদ, রাজারাম, হেমন্ত ।

২৯/ বিরাজ বৌ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – নিলাম্বর+বিরাজ, পীতাম্বর+মোহিনী, হরিমতি, সুন্দরী, রাজেন্দ্র । ৩০/ মালঞ্চ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – আদিত্য+নীরজা, সরলা, রমেন । ৩১/ চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – এলা, অন্তু, অতীন, অখিল, বটু, ইন্দ্রনাথ । ৩২/ যোগাযোগ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – মধূসূধন+কুমুদিনী, বিপ্রদাস, সুবোধ, কালু, নবীন+মোতির মা, হাবলু, শ্যামা-সুন্দরী । সমাপ্ত ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।