আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজশাহীতে জামায়াত পুলিশসংঘর্ষ------- ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে মৃত্যু হয় শফিকের

গায়ে সাদা-কালো চেক শার্ট। পরনে নেভি ব্লু রঙের প্যান্ট। পায়ে সাদা রঙের কেডস। দুই হাতে দুই টুকরো ইট। মুখে চিৎকারের ভঙ্গি নিয়ে দৌড়ানোর একটি ছবি।

সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে রাজশাহী নগরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগমুহূর্তে জামায়াতের কর্মী শফিকুল ইসলামের এ রকম একটি ছবি সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এরপর মুহূর্তেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শফিকুল। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। শফিকুলকে গুলি করে হত্যার ব্যাপারে একে অপরকে দায়ী করেছে জামায়াত ও পুলিশ। তবে গতকাল মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্রের (স্মল ফায়ার আর্মস) গুলিতে শফিকুলের মৃত্যু হয়েছে।

তাঁর বুকে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। গত সোমবার নিহত হওয়ার পর থেকে শফিকুলের লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা ছিল। গতকাল দুপুরে তাঁর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরে পুলিশের গাড়িতে করে শফিকুলের লাশ শহরের বহরমপুরের অচিনতলা এলাকার বাড়িতে পাঠানো হয়। বাড়ির পাশের মাঠে জানাজা শেষে বেলা তিনটার দিকে নগরের হেতেম খাঁ কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।

শফিকুলের ময়নাতদন্তের ব্যাপারে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক মুনসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্রের গুলি শফিকুলের বুকের বাঁ পাশে বিদ্ধ হয়ে পিঠের নিচের অংশের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে গেছে। ’ ক্ষুদ্র অস্ত্রের ব্যাপারে জানতে চাইলে মুনসুর বলেন, রিভলবার বা পিস্তলজাতীয় অস্ত্র এর মধ্যে পড়ে। এ ধরনের অস্ত্র পুলিশ, সন্ত্রাসী সবার কাছে থাকতে পারে। পুলিশের গুলিতে শফিকুলের মৃত্যু হয়েছে, জামায়াতের এমন দাবি প্রসঙ্গে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার এম ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘জামায়াত কী দাবি করেছে, সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু শফিকুল পুলিশের গুলিতে মারা যাননি।

’ শফিকুলের পরিবারে আহাজারি: গতকাল সকালে বহরমপুর অচিনতলা এলাকায় শফিকুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর মা বিলাপ করছেন। বাবা কয়েক দিন ধরে অসুস্থ। তিনি পাশের ঘরে শুয়ে ছিলেন। কথা বলতে পারছিলেন না। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে শফিকুলের ছোট ভাই মঞ্জুর রহমান স্বীকার করেন, তিনি ও তাঁর ভাই জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

তিনিও ভাইয়ের সঙ্গে সোমবারের মিছিলে ছিলেন। শফিকুলের নিকটস্থ প্রতিবেশী সুমন আলী এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি মাইনুল ইসলাম মনে করেন, শফিকুল জামায়াতের কর্মী হলেও রাজশাহীতে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ওয়ার্ড বয়ের চাকরি বাঁচাতে সোমবারের মিছিলে গিয়েছিলেন। তাঁরা দুজনই বলেন, শফিকুল তাঁদের একাধিকবার বলেছেন, চাকরি বাঁচাতে হলে জামায়াতের মিছিলে যেতে হয়। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবুল খায়ের বলেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠান থেকে মিছিলে যাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। হাসপাতালে হিন্দু ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের কর্মচারীও রয়েছেন।

তাঁরা তো জামায়াতের রাজনীতি করেন না। আবুল খায়ের বলেন, হাসপাতালে প্রায় ২৫০ জন কর্মীর এক-তৃতীয়াংশই কর্মচারী। ওই কর্মীরা তিন পালায় কাজ করেন। যাঁদের কাজ থাকে না তাঁরা হয়তো মিছিলে যেতে পারেন। সোমবার সকাল সাড়ে সাতটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত শফিকুলের কাজের সময় ছিল।

Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।