আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তারাকী হাসানরা কেন তাবলীগের নামে মিথ্যা অপবাদ দেয়??

নয়া যামানার নয়া পথিক,পথ হারিয়ে ছুটনা দিক্বিদিক কয়েকদিন ধরে তারাকী হাসান নামে এক ব্লগার তাবলীগের বিরুদ্ধে সমালোচনায় মুখর। তিনি ফাযায়েলে আমলের কয়েকটা ঘটনা উল্লেখ করে তাবলীগের উপর খড়গহস্ত হয়েছেন। তার উল্লেখিত ঘটনা এবং তার পর্যালোচানা যা তিনি করেছেন তা দেখুন,এরপর এর উত্তরঃ ১. আবু বকর জারীর (রঃ) বলেন, আমার কাছে এক গোলাম থাকিত যে সারাদিন রোজা রাখিত ও সারারাত্রি তাহাজ্জুদ আদায় করিত। একদিন সে আমার নিকট আসিয়া বলিল আমি ঘটনাক্রমে আজ রাত্রে ঘুমিয়া পরিলে স্বপ্ন দেখিলাম মেহরাবের দেয়াল থেকে সেখান হতে কয়েকজন অপূর্ব সুন্দরি ও একজন কুৎসিত মেয়ে আসিল। আমি তাহাদের জিজ্ঞাসা করিলে তারা বলিল, আমরা হলাম আপনার বিগত রাত্রিসমুহ আর এই কুৎসিত মেয়েটি হল আপনার আজকের রাত্রি।

(ফাজায়েল নামাজ, ৯৪ পৃষ্ঠা) ২. সুফি আব্দুল ওয়াহেদ একদিন এমন স্বপ্ন দেখার পর তিনি কসম করলেন, যে রাত্রে আর কখনো তিনি ঘুমাবেন না। পরে ৪০ বছর তিনি রাত্রে কখনো ঘুমাননি। (ফাজায়েল নামাজ, ৯৪ পৃষ্ঠা, পুরো গল্প না লিখে শধু মুল কথাটা লিখলাম)। ৩. জনৈক বুজুর্গ মাজহার সাদির বরাতে ঐ একই পৃষ্ঠায় জান্নাতের অল্প বয়সের কিশোরীদের লোভ দেখিয়ে একই গল্প দেওয়া হয়েছে। একই ধরনের অনেক গল্প ও কিচ্ছা ৯৫, ৯৬, ৯৭ ও ৯৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা আছে।

৪. খলিফা আব্দুল আজিজের নামে একটি কিচ্ছা লিখে বলা আছে, “খেলাফত লাভের পর হইতে তাহার ফরজ গোছলের প্রয়োজন হয় নাই” অর্থাৎ তিনি তার স্ত্রী সস্পর্শ থেকে সবসময় দূরে থেকে ইবাদতে মগ্ন ছিলেন। (৯৯ পৃষ্ঠা) ৫. ছাবেত নামক এক বুজুর্গ ৫০ বছর একটানা রাত্রিতে না ঘুমিয়ে কাটানোর ফলে সে মারা যাওয়ার পর লোকজন তার কবরে দেখল যে সে দাড়িয়ে দাড়িয়ে কবরের ভিতর নামাজ পড়ছে। (১০১ পৃষ্ঠা) ৫. এমনকি ইমাম আবু হানিফাসহ আরও কিছু ব্যক্তির নামে মিথ্যা বানোয়াট কথা তৈরি করে লেখা আছে, তারা এক ওযু দিয়ে ৫০ বছর এশা ও ফজরের নামাজ পড়তেন। (১০২ পৃষ্ঠা) তাবলীগের এসব এমন অসংখ্য গল্প-কিচ্ছার মাধ্যমে সারাদিন রোজা ও সারারাত্রি নামাজ আদায় করলে অনেক বড় সওয়াবের লোভ দেখানো হয়েছে। এখন দেখা যাক, রাসুল (সঃ) আমাদের এ বিষয়ে কি শিক্ষা দেয়- হজরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিস –> তিন ব্যক্তি পরস্পরের সাথে কথা বলছিল।

একজন বলল, “আমি সারাদিন রোজা রেখে যাব, কখনো ভাঙবোনা"। অন্যজন বলল, “আমি সারারাত নামাজ পরবো”, আরেকজন বলল, “আমি মেয়েদের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকব ও কখনো বিয়ে করবনা। ” তখন রাসুল(সঃ) বলেন, “আল্লাহর শপথ আমি তোমাদের চেয়ে আল্লাহ্‌কে অধিক ভয় করি ও বেশি তাকওয়ার অধিকারী। আমি রোজা রাখি আবার ছেড়েও দেই, আমি নামাজও পড়ি, আবার ঘুমাইও এবং আমি বিবাহও করি। জেনে রেখ, যে আমার সুন্নাত থেকে দূরে থাকবে, সে আমার অন্তরভুক্ত না।

” (সহিহ বুখারি ও মুসলিম) এখন লক্ষনীয়ঃ ১. তাবলীগ আমাদের শিক্ষা দেয়, সারাদিন রোজা রাখ ও স্ত্রীর সংস্পর্শে না গিয়ে ও না ঘুমিয়ে সারারাত নামাজ পড়। ২. রাসুল (সঃ) আমাদের শিক্ষা দেয়, মাঝে মাঝে দিনে রোজা রাখ ও মাঝে মাঝে ছেড়ে দাও (নফল রোজা), স্ত্রীর সংস্পর্শে যাও এবং রাতের কিছু অংশ ঘুমাও, কিছু অংশ ইবাদত কর। এখন প্রশ্নঃ যারা কোরআন-হাদিস অধ্যয়ন না করে শুধু ফাজায়েল আমল অধ্যয়ন করে তা অনুযায়ী যদি সারাদিন রোজা ও সারারাত্রি নামাজ আদায় করেন, সেটা কি রাসুল (সঃ) কে অনুসরন করা, না তাবলীগের মওলানা জাকারিয়া কে অনুসরন করা হবে? একজন মুসলমান হিসেবে কোনটা মান্য করা উচিৎ আমাদের- রাসুলের আদর্শ, না তাবলীগদের ফাজায়েল আমলের আদর্শ ? >>>.>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>> প্রথমেই বলছি, করুনা হয় তাদের ইলম আর জ্ঞান দেখে। শাইখুল হাদিস আল্লামা যাকারিয়া রাহঃ একটি ঘটনা লিখলেন যা একান্তই একজনের ব্যাক্তিগত বিষয়। উনি এই ঘটনা লিখে কিন্তু উম্মতকে বলেননি যে, তোমরাও তাই কর।

আল্লাহ প্রেমিকদের নমুনা পেশ করেছেন মাত্র। যাই হোক! এবার আপনাদের নিকট আমার প্রশ্ন এবং তা তাদের বর্ণিত হাদিসকে সামনে রেখেই। আমি আপনাদের জিজ্ঞেস করতে চাই, এই হাদিসটি কি শেয়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া পড়েছিলেন? এই হাদিসটি কি মুসলিম শরীফের প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাকার ইমাম নববী পড়েছিলেন? প্রসিদ্ধ মুফাস্সির ইমাম আবু জারির তাবারী কি পড়েছিলেন? আপনাদের জবাব কি হবে তা আমার জানা নেই, তবে আমি নিশ্চিত যে, উল্লেখিত ইমামত্রয় এসমস্ত হাদিস পড়েছেন, বুঝেছেন এবং উম্মতকেও বুঝিয়েছেন। এবার আপনার নিকট আমার প্রশ্নঃ তাহলে এই ইমামত্রয় (তার পেশ করা হাদিসে বর্ণিত সুন্নাত) বিয়ে না করে ইলমী খেদমতকে প্রাধান্য দিলেন কেন? তাহলে কি আমরা ধরে নিব যে, তার দৃষ্টিতে তারা রাসুলের উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নন? উল্লেখিত ইমামত্রয় রাসুলের সুন্নাত বিয়ে না করে দ্বীনের খেদমতকে প্রাধান্য দিয়ে কি রাসুলের সুন্নাতের বিরোদ্ধাচরণকারী হয়ে গেলেন? আমি কমপক্ষে এমন স্পর্ধা দেখাব না। কেননা, আমি ব্যাক্তিগত বিষয়কে শরিয়তের দলীল হিসাবে দেখাতে চাই না।

শায়খ আবুল ফাত্তাহ আবুগুদ্দাহ রাহঃ লিখিত একটি কিতাব , যার নাম হচ্ছেঃ العلماء العزاب الذين اثروا العلم علي الزواج ""অবিবাহিত উলামায়ে কিরাম যারা বিয়ের উপর ইলমকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এই কিতাবটি পড়ুন এবং বুঝুন। এখানেই পাবেন উক্ত ইমামত্রয় ইলমী খেদমতের জন্যই বিয়ে থেকে দূরে ছিলেন। তাহলে কি তারা এখন এই ইমামত্রয়কে মানুষকে এই ভুল আমলের পথে নিয়ে যেতে চেয়েছেন (নাউযুবিল্লাহ) বলবেন? স্পর্ধা আছে কি? ধ্বংস হতে চাইলে করতেও পারেন। ধন্যবাদ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.