আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রত্যুত্তরে জেনারেল নাসিম বলেন, ‘... I plan to surround Bangabhaban and force him to resign on health ground and ask him to get out.’

সত্য বলেছি, সত্য বলছি এবং আরো সত্য বলেই যাব ১৯৯৬ সালের ২০ মে জেনারেল নাসিমের ক্যু প্রচেষ্টার সঙ্গেও আওয়ামী লীগ জড়িত ছিল। জেনারেল নাসিমের ক্যুও ব্যর্থ হয়ে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা জেনারেল নাসিমের ক্যু প্রচেষ্টার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। এমনকি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তখন বিবৃতি দিয়ে জেনারেল নাসিম, জেনারেল হেলাল মোর্শেদ এবং ব্রিগেডিয়ার মীরনসহ ক্যু প্রচেষ্টাকারীদের সমর্থন জানান। তত্কালীন ডিজিএফআইয়ের প্রধান ছিলেন মেজর জেনারেল আবদুল মতিন।

তিনি তার লেখা ‘আমার দেখা ব্যর্থ সেনা-অভ্যুত্থান ৯৬’ বই-এ ‘ক্ষিপ্ত সেনাপ্রধান ও আওয়ামী কানেকশন : বঙ্গভবন দখলের হুমকি’ শীর্ষক পরিচ্ছেদে লেখেন—‘ডিজিএফআই’ সদর দফতরে কর্মরত অফিসাররা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সেনানিবাসের পরিস্থিতি আমাদের নিজস্ব প্রতিনিধির মাধ্যমে মনিটর করে ধারাবাহিকভাবে আমাকে বঙ্গভবনে জানাতে থাকেন। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে আমার সিগন্যাল ব্যুরোর পরিচালক কর্নেল মনজুর তারো কিছু সময় পূর্বে টেপ-এ রেকর্ডকৃত একটি অতি জরুরি ও তাত্পর্যপূর্ণ টেলিফোন সংলাপ সম্পর্কে আমাকে জানান। আমি তাত্ক্ষণিকভাবে ওই ক্যাসেটটি চষধু করে শুনি। অবিশ্বাস্য বলেই মনে হচ্ছিল। সেনাবাহিনী প্রধান ও আওয়ামী লীগ নেতা (পরবর্তী সময়ে সংসদ সদস্য) ক্যাপ্টেন (অব.) এবিএম তাজুল ইসলামের মধ্যকার দুই মিনিটকাল স্থায়ী আলাপচারিতার ওপর রেকর্ডকৃত এ টেপে জেনারেল নাসিমের আসল রূপ প্রকাশ পেয়েছে।

খোলসমুক্ত হয়ে অন্ধকার ছেড়ে এবার তিনি বেরিয়ে এসেছেন আলোর মাঝে। ২০ মে ’৯৬, সকাল ৮-৪৫ মিনিটে ধারণকৃত এ টেপে সেনাপ্রধান জেনারেল নাসিম কর্তৃক আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাছ থেকে সব ধরনের সহযোগিতাপ্রাপ্তির আশাবাদ এবং বিনিময়ে আওয়ামী লীগকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের সুদৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রয়োজনে বঙ্গভবন ঘেরাও এবং প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগে বাধ্য করানোর মতো এক ঔদ্ধত্যপূর্ণ হুঙ্কার সেনাপ্রধানের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে। আলাপের শুরুতেই সেনাপ্রধান জেনারেল নাসিম ক্যাপ্টেন (অব.) তাজকে বলেন, ‘...কী খবর, ‘We are very happy, we are with যবত্ (আ.লীগ নেত্রী), tell her that our full understanding with her, support with her and she should keep on having her full understanding for and support to us and confidence on us.’ ক্যাপ্টেন (অব.) তাজ জানান, ‘কালকে তো স্যার আমাদের অন্য নেতারা ঢাকায় ছিল না, সবাই নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ছিল, তাই আমি সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে আজকে আমরা বিভিন্ন এলাকা থেকে উনার (আ.লীগ সভানেত্রী) কাছে আমরা টেলিফোন করে বলব যে, We should back them up. আর আমি কি স্যার আমার নিজস্ব Capacity-তে ঢাকা শহরে একটি মিছিল করায়ে দেব?’ জবাবে সেনাপ্রধান তাত্ক্ষণিকভাবে বলে ওঠেন, ‘করায়ে দাও, যদি করাতে পার That goes in our favour. Anything you do এটার সঙ্গে বিসমিল্লাহ হয়ে যাবে, let the বিসমিল্লাহ নব started by you.’ মিছিলের উদ্দেশ্য ও slogan সম্পর্কে জেনারেল নাসিম তাজকে বলে চলেন, ‘... সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা চলবে না, সেনাবাহিনীকে চালানোর দায়িত্ব সেনাবাহিনী প্রধানের। রাজাকার বিশ্বাস (অর্থাত্ প্রেসিডেন্ট বিশ্বাস) এ পর্যন্ত সব অবিশ্বাসের কাজ করে আসছে, তাকে অতিসত্বর পদত্যাগ করতে হবে—এই রকমভাবে কিছু দিয়ে দাও।

’ তাজ বলেন, ‘তো এদিকে একটা মিছিল ভালো করে করায়ে দিই স্যার। ’ নাসিম তাতে সম্মতি প্রকাশ করে আবারও বলেন, ‘... হ্যাঁ, in support (সেনাপ্রধান জেনারেল নাসিমের সমর্থনে), We do not accept him, রাজাকার বিশ্বাস, যব রং ধহ অবিশ্বাস। ’ তাজ বলেন, ‘আর এইটা (অর্থাত্ মিছিলটা) স্যার, আমাদের political banner-এর under-এ করি না স্যার, এইটা আমাদের নিজস্ব যোগাযোগের মাধ্যমে সরল মনের সাধারণ লোক দিয়া করায়ে দিই, ঠিক আছে স্যার?’ জবাবে নাসিম বলেন, ‘হ্যাঁ, যেখানে যেখানে পার কয়েক জায়গায় করায়ে দাও। ’ অতঃপর ক্যাপ্টেন (অব.) তাজ সেনাবাহিনীর চারজন অফিসারের সংযুক্তি আদেশের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘...আর. Order তো চলে গেছে আজকে না?’ জেনারেল নাসিম বলেন, ‘হ্যাঁ, order is already there, attach করে দিয়েছি। তারা না যাইলে ২টার পর ও রিষষ take them into custody, office hour-Gi g‡a¨ they have to report any time. If they don’t, I will take them into custody. কথা শেষ করার আগে তাজ বলেন, ‘স্যার, যদি অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ কিছু থাকে ও রিষষ মরাব you a call.’ ‘Please be in touch, Avi I think শেখ হাসিনার এখন বাইরে কোথাও যাওয়া উচিত না, she should be around Dhaka, they may try an action on সব, মানে প্রেসিডেন্ট পাগলা কুত্তার মতো একটা action নিতে পারে’—বলে নাসিম তাজকে তার আশঙ্কা ব্যক্ত করেন।

তাজ তাতে, ‘হ্যাঁ করতে পারে’ বলে সায় দেন। প্রত্যুত্তরে নাসিম বলেন, ‘... I plan to surround Bangabhaban and force him to resign on health ground and ask him to get out.’ শেখ হাসিনার বিবৃতি প্রসঙ্গে মেজর জেনারেল আবদুল মতিন তার বইয়ে ‘২০ মে ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির সম্পৃক্তি’ শীর্ষক অধ্যায়ে লেখেন ১৮ মে ৯৬ তারিখে সরকার মেজর জেনারেল হেলাল মোর্শেদ এবং ব্রিগেডিয়ার মীরনকে চাকরি থেকে অকালীন অবসর প্রদান আদেশ সম্পর্কিত ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির সম্পৃক্তি ঘটে তারও দুই দিন পর অর্থাত্ ২০ মে তারিখে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী) বিবৃতির মধ্য দিয়ে। বিবৃতিতে তিনি তাদের অবসর দেয়ার প্রতিবাদ জানান এবং জেনারেল নাসিমের পক্ষাবলম্বন করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সোর্স ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।