লজ্জাবতীর লজ্জা তো থাকবেই !
কিন্তু কেন ?
আসুন এবার খতিয়ে দেখি।
এখানে যে লজ্জাবতী এর কথা লিখব, তা' কিন্তু আমাদের ...........নয় !
আমি লিখছি, লজ্জাবতী গাছ এর কথা। লজ্জাবতী গাছ লজ্জা পায় কেন, সে কথাই লিখছি ।
লজ্জাবতী গাছকে গাছ বলা হলেও, এটি বড় ধরনের বৃক্ষ নয়। এটি লতা ঘাস জাতীয় এক প্রকারের উদ্ভিদ।
তবে একটি বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ্যের জন্য এরা মনুষ্য সমাজে, বিশেষ করে উদ্ভিদ বিঙ্গানী মহলে বেশ সুপরিচিত। এই চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ্য হলো লজ্জা পাওয়া। লজ্জাবতী নামকরণ করা হয়েছে এদের বৈশিষ্ঠ্যের সাথে মিল রেখেই । লাজুক মানুষ যেমন কারো সাথে কথা বলতেই লজ্জায় মাথা হেঁট করে ফেলে, এই লজ্জাবতী গাছগুলোও তাই। এরাও কারো শরীরের স্পর্শ পেলেই লজ্জায় জড়োসড়ো হয়ে পড়ে।
পাত গুলো যায় নুইয়ে, সারা শরীরটা গুটিয়ে আসে। অনেকে এক লাজুক মেয়ের সাথে তুলনা করে থাকেন। লজ্জাবতী গাছগুলো কেন এরকম আচরণ করে থাকে, তা' নিয়ে বিঙ্গানীরাও খুব চিন্তা ভাবনা, গভেষনা করেছেন । তাদের মতে, লজ্জাবতী গাছের পাতার গোড়াটা একটু ফোলা থাকে। এই ফোলা অংশের ভিতর থাকে বড় বড় কোষ।
এসব কোষ যখন পানি ভর্তি থাকে তখন গাছের পাতার বোটা ফুলে ওঠে এবং ডাঁটা সোজা হয়। কিন্তু লজ্জাবতী গাছে কেউ হাত দিয়ে স্পর্শ করলেই তার সাড়া গায়ে একটা বিদ্যুৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয়। এদের শরীরে এ্যাসিটাইলিন নামে এক প্রকারের রাসায়নিক পদার্থ আছে। এই এ্যাসিটাইলিন কোলিন পদার্থের মাধ্যমেই এই বিদ্যূৎ প্রবাহ ছড়িয়ে পড়ে ওদের সাড়া অঙ্গে। তখন এই রাসায়নিক পদার্থই দ্রুত এক কোষ থেকে আরেক কোষে ছুটতে থাকে।
এ ফলে লজ্জাবতী গাছের কোষ থেকে খনিজ লবন বেরিয়ে আসে। খনিজ লবন বের হয়ে আসার সঙ্গে কোষে যে পানি জমা ছিল তাও বেরিয়ে আসে। পানি বের হয়ে যাওয়ার ফলে কোষগুলো চুপসে যায় । ফলে তাদের শক্তি ও চাপ কমে যায়। তখন গাছের পাতা গুলোও শক্তি হারিয়ে ফেলে এবং দুর্বল হয়ে নুয়ে পড়ে।
এই অবস্থা কিছুক্ষন থাকে। আবার বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে ধীরে ধীরে কোষে পানি জমতে থাকে, গাছটি ও তখন পুনরায় সোজা হয়ে উঠে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।