আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারত-ইসরাইল সম্পর্ক এবার দৃশ্যমান

পুরান আমি নব ভাবনায় বিভোর.. দৃশ্যমান হয়ে উঠছে ভারত-ইসরাইল সম্পর্ক। এতদিন এ সম্পর্কে কিছুটা রাখঢাক থাকলেও এবার দেশ দু'টি প্রকাশ্যে এ সম্পর্ক জোরদার করতে যাচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণ'র ইসরাইল সফর দুই দেশের দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিয়েছে। তবে সেইসঙ্গে আরব বিশ্বের পুরনো মিত্রদের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক রাখতে চায় ভারত। এসএম কৃষ্ণ মনে করেন, ইসরাইলের সঙ্গে তার দেশের সম্পর্ক সঠিক ও স্বাভাবিক।

আর এ বিষয়টি ভারতের সঙ্গে আরব বিশ্বের সম্পর্কে কোনো চিড় ধরাবে না। ভারতের পররাষ্ট্র নীতিতে এ ধরনের পরিপক্বতা এসেছে বলেও তার বিশ্বাস। বেশ কয়েক বছর ধরেই ভারত-ইসরাইল সম্পর্ক ছিল অনেকটা অপ্রকাশ্য। আরব বিশ্বের নজর থেকে তা আড়াল করাই ছিল উদ্দেশ্য। আরব বিশ্বের পুরনো মিত্রদের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রেখে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেয়া ছিল দেশটির কৌশল।

তবে ইসরাইল সফরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গীদের একজন বলেন, 'কোনো রকম সঙ্কোচ ছাড়াই ভারত ও ইসরাইল এখন থেকে নিজেদের অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে পারে, যেমন অন্য দেশের সঙ্গে করছে। ' কৃষি, প্রযুক্তি, প্রতিরৰা ও নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভারত ও ইসরাইলের সম্পর্ক গত এক দশকে অনেক দূর এগিয়েছে। দুটি দেশের অসংখ্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান যৌথ বিনিয়োগ করার পর বিকল্প জ্বালানি, রিয়েল এস্টেট, টেলিকম ও ওষুধ শিল্পে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করছে। তাই এখন ভারত ইসরাইল দ্বি-পাৰিক সম্পর্ক একটা কৌশলগত উন্নয়নে দ্রম্নত মোড় নিচ্ছে। এটাকে 'মোমেনটাম' বলা যায়।

ভারতের সাতটি প্রদেশে কৃষি, গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে ইসরাইল কাজ করছে। এসব প্রদেশে ইরাইলের পরিচালনায় ২৭টি কৃষি প্রকল্প দ্রম্নত সাফল্য নিয়ে আসছে। এসব বিষয়ে কোনো ভারতীয় নাগরিক ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করতে চাইলে তাদের জন্য এমন একশ শিৰাবৃত্তি স্পন্সর করছে ইসরাইল। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কৃষ্ণ এ ধরনের সহযোগিতা সন্ত্রাসের বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ বা প্রতিরৰাসহ নিরাপত্তার মতো বিষয়ে বিসত্দৃত করতে চান। তাই ইসরাইলের অভ্যনত্দরীণ নিরাপত্তামন্ত্রী আইজাক আহরোনোভিচের সামপ্রতিক ভারত সফরে প্রধান আলোচ্যসূচি ছিল সন্ত্রাস দমন।

ইসরাইল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (আইএআই) ভারতের সঙ্গে এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় প্রতিরৰা চুক্তি সই করেছে। এ চুক্তি অনুসারে ইসরাইলের ওই কোম্পানি এক দশমিক এক বিলিয়ন ডলার মূল্যের মিসাইল, মিসাইল প্রতিরৰা ব্যবস্থাপনা, পাইলটবিহীন ও গোয়েন্দা বিমানের সরঞ্জাম সরবরাহ করবে। ইসরাইলি কোম্পানিটির চুক্তির বিষয়ে তেল আবিব স্টক এক্সচেঞ্জ নিশ্চিত করলেও ক্রেতা সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয়নি। ইসরাইলের বিজনেস মিডিয়া গেস্নাবস বলছে, এ চুক্তি হয়তো দৰিণ কোরিয়ার সঙ্গে হয়েছে এমন ধারণা ছিল। তবে গেস্নাবস আরো পরিষ্কার করে বলেছে, ভারতের সঙ্গে ইসরাইলের এ চুক্তি সরাসরি দেখভাল করেছেন আইজাক নিশান।

আর ভারত ও ইসরাইলের মধ্যে প্রতিরৰা বাণিজ্য রয়েছে ৯ বিলিয়ন ডলারের। ভারতে গ্যাস রপ্তানির ব্যাপারে ইসরাইলের আগ্রহ আগের চেয়ে বাড়ছে। তামার ও লেভিয়াথান গ্যাসৰেত্র থেকে ইসরাইল ভারতে গ্যাস রপ্তানির পরিকল্পনা করছে। আর কাতার কিংবা অন্য যে কোনো দেশ থেকে গ্যাস আমদানিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে এগিয়ে আসবে ইসরাইল। এতদিন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বা অন্য কোনো ইস্যুতে ভারতের ভোট ইসরাইলের বিরম্নদ্ধে গেলেও এখন সময় পাল্টে যাচ্ছে।

ইসরাইলে ভারতের রাষ্ট্রদূত নভতেজ শর্মা বলেছেন, এমন অনেক ৰেত্র রয়েছে, যা দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থ; বিশেষ করে অর্থনীতির জন্য আরো সহায়ক। এদিকে ভারতের ইউনিয়ন মুসলিম লিগ (আইইউএমএল) ভারত ও ইসরাইলের এ ধরনের স্বাভাবিক সম্পর্ককে ভালো চোখে দেখছে না। লিগের প্রধান অধ্যাপক বাশির আহমেদ খান মনে করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণ ভারত-ইসরাইলের সম্পর্ককে স্বাভাবিক এবং আনত্দর্জাতিক সন্ত্রাসের বিরম্নদ্ধে দেশ দুটি অভিন্ন অবস্থানে রয়েছে বলে মনে করছেন, যা ন্যায়বিচারের সঙ্গে প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। তার মতে, ফিলিসত্দিনিদের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক বা ইসরাইলি সেনারা ওই দেশটির ভূ-খণ্ডে কী করছে তা দেখতে হবে। নিজেদের দেশ দখলদার মুক্ত করতে সেখানকার মানুষের লড়াই কখনো সন্ত্রাস হিসেবে অভিহিত হওয়ার নয়।

সূত্র : টাইমস অফ ইনডিয়া মুল লেখা: Click This Link  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।