বাংলাদেশ এর সুপ্রাচীন ইতিহাস বলতে আমরা মুলত বুঝে থাকি মহাস্থানগড় এর পুণ্ড্রবর্ধন এই জনপদ মুলত ৬০০ খ্রিষ্টপূর্ব হতে ্মুলত মহাভারত এর রাজা পৌণ্ড্রত এর কাছ থেকে আমরা এই রাজ্যর বর্ণনা পাই। যাকে কৃষ্ণ যুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন। থাক সে কথা যদিওবা বর্তমানে উয়ারি-বটেশ্বর এর সভ্যতা থেকে আমরা জানতে পেরেছি জে বাংলাতে তার আগেও সভ্যতার অস্তিত্ব ছিল বর্তমানে মুন্সিগঞ্জে এই সাইট থেকে লোটাস টেম্পল সহ বহু প্রাচীন নিদরশন উদ্ধার করা হয়েছে যা থেকে এই কথার সত্যতা বোঝা যায়। এখন আসা যাক মুল কথায় মহামতি অ্যালেক্সান্ডার যখন ভারত অভিযান করেন তখন সে সময়ের লেখনি থেকে আমরা আরেক সাম্রাজ্যর খোঁজ পাই। যার নাম ছিল গঙ্গারিডই এ এক অনন্য ব্যাপার কেননা এই সাম্রাজ্যর কথা শুধু যেন গ্রীকরাই লিখে গেছে এর কথা আর কোন ভারতীয় লেখাতে আমরা পাই না, কেন?স্বভাবতই মনে প্রশ্ন আসে ।
অনেকে বলেন যে প্রাচীন বঙ্গ রাজ্যকেই গ্রীকরা গঙ্গারিডই বলেছেন তাহলে মেগাস্থিনিস এর লেখা Indica গ্রন্থে তাহলে এটিকে একই নামে কেন ডাকা হল? কেন মেগাস্থিনিস কি একবারও এটিকে বঙ্গ নামে অভিহিত করতে পারতেন না? তাহলে বিষয় টা কি? গঙ্গারিডই যেহেতু বর্তমান বাংলায় অবস্থিত ছিল সে কারণে বঙ্গ এর একটি অংশ হবার সম্ভাবনা কেউ উড়িয়ে দিতে পারবেনা তবে সরাসরি একেই বঙ্গ বলাটা ঠিক হবে কিনা জানিনা কেননা অ্যালেক্সান্ডার এর বর্ণনা কিন্তু বলে ভিন্ন কথা
ম্যাসিডোনিয়ান সম্রাট অ্যালেক্সান্ডার ভারত অভিযানের সময় তার সাথে করে শুধু সেনাবাহিনীই নয় বহু পণ্ডিতও এনেছিলেন তাদের মধ্যে একজন ছিলেন Diodorus Siculus তার রচনায় গঙ্গারিডই এর কথা এসেছে এই ভাবে
''যখন তিনি(আলেক্সানডার) তার বাহিনীকে নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন তখন কিছু লোক তাকে এসে বললেন যে পুরু(যে সম্রাট পুরুকে তিনি যুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন তার ভাগ্নে) পালিয়ে গেছে গঙ্গারিডইয়ে তিনি আরও জানতে পারেন এখান থেকে সামনে অগ্রসর হলে তার সামনে পড়বে একটা মরুভুমি যা পার হতে লাগবে প্রায় ১২ দিন আর মরুভুমির পরেই
তার সামনে পড়বে গঙ্গা যার প্রস্থ প্রায় বত্রিশ স্তাদিয়া(পাঁচ মাইল) আর যেটা গভীরতায় সমস্ত ভারতীয় নদী থেকে অনেক বেশী সেই নদীর অপর তীরে অবস্থিত প্রাসি আর গঙ্গারিডই রাজ্য যার রাজা স্কান্দ্রামেস(?) এর রয়েছে প্রায় ২০০০০ ঘোড়া ২০০০০০ পদাতিক ২০০০ রথ আর ৪০০০ হাতী যারা যুদ্ধের জন্য তৈরি'' এছাড়াও তারা আরও বলেন যে এই গঙ্গা যেটা প্রস্থে প্রায় ৫ মাইল ভারত মহাসাগরে পতিত হয় আর যেটা গঙ্গারিডই এর পূর্ব সীমান্ত নির্দেশ করে,যার সম্রাট সমগ্র ভারতের মধ্যে সর্ববৃহৎ আর সর্বাধিক রণহস্তীর অধিকারী। সুত্রঃডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার (The Classical Accounts of India) এরুপ কোন রকম বর্ণনা আমরা বঙ্গ রাজ্যের ক্ষেত্রে পাই না বঙ্গ রাজ্যের যেকোনো বর্ণনাতেই একে এতোটা শক্তিশালী আর বৃহৎ বলে মনে হয় না । অনেকে আরও বলেন গঙ্গারিডই আসলে ''নন্দ সাম্রাজ্য'' কিন্তু তাদের জন্য বলতে হয় যে নন্দ সাম্রাজ্যর জন্য আলাদা বর্ণনা দেয়া হয়েছে অ্যালেক্সান্ডার এর অভিযানের সময়। উইকিতে বলা হয়েছে সে সময়ে প্রাসি(মগধ) এর সম্রাট আগ্রামেস(ধননন্দ) এর কথা। আবার অনেকে বলেন যে সে সময়ে গঙ্গারিডই ছিল মগধ এর করায়ত্ব কিন্তু টলেমী আর মেগাস্থিনিস এর বর্ণনায় আমরা পাই দ্বৈত শাসন এর কথা।
বিশেষ ভাবে বলতে গেলে Pramod lal Paul এর লেখা ব্রাউন বুক থেকে সরাসরি উদ্ধৃতি দেয়া হল নিচে কতখানি সঠিক সেটা বিচার করার দায়িত্ব আপনাদের এই বইয়ে গাঙ্গারিডই সম্পর্কে বলা আছে
"India is inhabited by very many nations, among which the greatest of all is that of the Gangaridai against whom Alexander did not undertake an expedition, being deterred by the multitude of their elephants. This region is
separated from farther India by the Ganges, the greatest river in those parts." Cuntius Curtius says that the lower Gangetic country is occupied by two nations, the Gangaridai and Prasii, whose
king, Agrammes, commanded an army of almost above strength. The only difference is that Curtius refers to the number of the elephants as 3,000, whereas Diodorus gives the number as 4,000.
Plutarch says that the opposition of Alexander's army against further advance was due to the report that "The kings of Gangaridai and Prasioi were waiting for him with an army of 80,000 horse, 200,000 foot, 8,000 war chariots, and 6,000 fighting elephants." Plutarch assures that there is no exaggeTation in the ' description
অনুবাদঃভারতে বহু জাতি ও রাজ্য বসবাস করে যাদের মধ্যে সবথেকে শক্তিশালী হচ্ছে গাঙ্গারিডই যাদের বিরুদ্ধে অ্যালেক্সান্ডার যুদ্ধাভিযান গ্রহণ করেননি । Cuntis Curtius এর বর্ণনায় প্রাসি বা মগধ এর কথাও পাওয়া যায় যেখানে তিনি নন্দ সাম্রাজ্যকে বাংলা বা গঙ্গারিডই থেকে সামান্য অধিক শক্তিশালী বলেছেন যেটা করদ রাজ্য এর বৈশিষ্ট্যর সাথে একেবারেই মিলে না। এখন কথা হচ্ছে এই সাম্রাজ্য হঠাৎ তো আর বাতাস থেকে তৈরি হয়নি তাহলে এই সাম্রাজ্য আসলো কোথায় থেকে? তার থেকেও আরও অনেক আশ্চর্য বিষয় এই সাম্রাজ্যের ব্যাপারে আছে সেটা পরের পোস্টে দেয়া হবে
(এটা আমার ব্লগার হিসেবে প্রথম পোষ্ট প্লীজ জানাবেন কেমন লাগলো আর কোন ভুল হলে নিজ গুনে ক্ষমা করবেন আশা করি) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।