^^^^^^^^^ ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের কোন এক দিন, সকাল ১০:৩০। ঘুম থেকে উঠে নাস্তাও করি নাই, বাসার সবাই গ্রামের বাড়ি যাব ২/৩ দিনের জন্য। কিছু ক্যাশ ছিল, যা খালি বাসায় রাখা নিরাপদ মনে না করে ব্যাংকে জমা করে আসাটাই ভালো মনে করে বেরিয়ে পড়ি ব্যাংক এর পথে। বাসার কাছেই ব্যাংক। ২০১০ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ইবিএল এর যে শাখা চট্টগ্রামে ওপেন হয়েছিল সেটাতে (ইচ্ছে করেই স্পেসিফাই করছিনা)।
১০:৪০, ব্যাংক এর দৃশ্য
খুব অল্পসংখ্যক গ্রাহক আছেন টেলারে, বিপরীতে তিনজন কর্মকর্তা। তিনজনই মহিলা। তাদের হাতের ডানপাশে টিভিতে আগের রাতে হওয়া লা-লিগার পুন:প্রচার চলতেছিল। তিনজনের দু'জন তাদের মত করে নিজেরা কি বিষয়ে কথা বলতেছেন, আমি সেদিকে ফোকাস করিনি। আমার হাতের সর্বডানের জনের সামনে ডিপোজিট স্লিপ আর টাকাগুলো রাখতেই উনি বলেন সর্ব বামের কাউন্টারে যেতে।
গেলাম এবং মিনিট দুয়েক সেখানে দাঁড়িয়ে থাকার পর ম্যাডামের নজরে আসলাম। ডিপোজিট স্লিপ আর টাকাগুলো হাতে নিয়ে আমার দিকে যেন একটু তাকালেন, তারপর ভ্রু কুঁচকে বললেন, "নোটের সংখ্যা লিখেন নাই কেন?"। এটা খুবই সিম্পল জিনিস। ধরেন ওখানে ১০ টাকার নোট ১০০টা ছিল ১০*১০০ মেশিনে গুনে লিখে দিলেই হয়। এত সিম্পল ব্যপার নিয়ে মাথা ঘামাইনা তাই উনার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আমি টিভিতে খেলা দেখতেছিলাম।
১০:৫২ (আনুমানিক)
অনেক্ষণ ধরে নোটগুলো একটা একটা করে উনি পরীক্ষা করলেন। আমি খুব কুল ছিলাম, নিজের মত খেলা দেখতেছি যেটা লাইভ দেখি নাই। এবার ম্যাডামের নোট পরীক্ষা করা শেষ হল। এবার দুই ভ্রু আরো ভালো মতন কুঁচকিয়ে বললেন, "নোটগুলো এরেঞ্জ করে দেন নাই কেন? ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম জানেন না?" এইবার আর কুল থাকতে পারলাম না। আশেপাশের লোকজন না শুনে মত খুব চাপা স্বরে উনাকে জিজ্ঞেস করি, "ওয়াট ডিড ইউ জাস্ট সেইড? ওয়াট ডু ইউ থিংক, ওয়াই দিজ ব্যাংক পেয়িং ইউ ফর?" -ম্যাডাম এইবার ভ্যাবাচ্যাবা খেয়ে বোবা বনে গেছেন।
১০:৫৪ (আনুমানিক)
এর ধারাবাহিকতায় ফ্রেমে আসলেন পাশের জন।
-- ভাইয়া, আসলে উনি আপনাকে বুঝতে পারেন নি।
আমি: বি প্রফেসনাল, ম্যাম, আ'ম নট ইয়োর 'ভাইয়া'। দিজ ব্যাংক ইজ পেয়িং ইউ টু সার্ভ মি, নট টু গেট সারভিস ফ্রম মি।
-- আ'ম স্যরি, স্যার।
............ (আমার ডিপোজিট স্লিপ রেডি করতে করতে) আপনি কোথায় আছেন?
আমি: স্যরি, বুঝিনি.......
-- আপনি কি করেন?
আমি: আই থিংক ইটস নট রিলেটেড টু মাই পয়েন্ট, থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ।
......... এতটুকু বলে বলে আমি ফিরে আসি।
ফিনিশিং
আমার যা দোষ ছিল: আমি ঘুম থেকে উঠামাত্র বাথরুম থেকে বেরিয়ে রাতের টিশার্ট আর ট্রাউজার্স পরে চলে গিয়েছিলাম। নোটের পরিমাণ ছিল রাউন্ড ফিগার তাই লিখার প্রয়োজন মনে করিনি। মেসিনে দিলেই বেরিয়ে যায় কয়টা নোট আছে।
নোটগুলো সাজিয়ে রাখার মত টাইম ছিলনা আমার।
** ব্যাংক থেকে টাকা তুললে সেখানে বান্ডিলে কি সব নোট সাজানো থাকে? -উত্তর: না। তাহলে আমি কেন ব্যাংকে টাকা জমা করার সময় নোটগুলো সাজিয়ে দিব?
** সব মিলিয়ে আমার কাছে বান্ডিল ছিল তিনটা, যদি সমান অংকের টাকা বাংলাদেশের ৩য় বৃহত্তম নোটে হত তাহলে নোটের বান্ডিলের সংখ্যা দাঁড়াত ২০ এ। এই নোটগুলো এরেঞ্জ করতে আমার কয় ঘন্টা লাগতে পারত? মানুষের কি আর কাজ নাই.......
এত সব লিখার কারণ হল, মানুষের সেবা পাওয়ার মানটা যাতে একটু বাড়ে। আমি জানি অনেক ব্যাংক এর কর্মকর্তা হয়তো আমার এই ব্লগ পড়বেন।
রাগ না করে একবার ভাবুন তো, টাকা দিতে গিয়ে আপনাকে যদি এমন আক্রমণাত্বক আচরণের সম্মুখীন হতে হয় তাহলে ঐ অবস্থায় আপনার কেমন লাগবে? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।