ঢাকা শহরে যারা bachelor, মেসবাড়িতে ভাড়া থাকেন কিংবা খাওয়া-দাওয়া করেন family-র বাইরে তাদের সবারই কম-বেশি অভিজ্ঞতা আছে সেইসব খালাদের ব্যাপারে যারা মেসগুলোতে রান্না করেন। সময় বাঁচানোর স্বার্থে তারা এমন সব খাবারের item তৈরি করে থাকেন যা সিদ্দিকা কবির কিংবা টমি মিয়া কোনদিন কল্পনাও করতে পারবেন না। সময় বাঁচানোর এই তাড়নার সাথে আর্থিক ব্যাপার জড়িত। কেননা এক সাথে একাধিক বাসায় তারা রান্না করে থাকেন। এই তাড়াহুড়া করার কারনে তারা রান্নার জগতে যেসব বিপ্লব সাধন করেছেন এবং সেই বিপ্লবের যেসব ফলাফল আমি নিজের উপর প্রয়োগ হতে দেখেছি তা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
আমি নিশ্চিত, আপনাদের অভিজ্ঞতাও এই ব্যাপারে কম নয়।
যেই item গুলো আমি নিজে খেয়েছি তাদের কিছু নাম দিয়েছি। আপনারা চাইলে আরো ভাল নাম দিতে পারেন।
১. ম্যাজিক ডিম
ডিম ছিল দুইটা, কিন্তু খাবার সময় দেখলাম তিনটা ভাজা ডিম। ব্যাপার কি? Extra ডিম টা কে নিয়ে আসল? ঘটনা হচ্ছে সময় বাঁচানোর জন্য বুয়া দুইটা ডিম ভেঙ্গে তিন ভাগ করে ভেজে এনেছে।
Idea টা খারাপ না। যাদের বাসায় হঠাত করে মেহমান চলে আসে তারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। খরচ ও বাঁচল, আপ্যায়নও হল।
২. ডিম তরতরি with fried potato
এটা রান্না করা খুবই সহজ। একটা ডিম সিদ্ধ করে আলু ভাজিতে ছেড়ে দিবেন।
তারপর সেই মিশ্রণকে পানিতে চুবাবেন। অল্প পরমান লবন ও তারচেয়েও অল্প পরিমান হলুদ দিয়ে মিশিয়ে সমগ্র মিশ্রণটিকে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ১০ মিনিট রাখুন। আপনার খাবার প্রস্তুত।
Note: মেস মেম্বার হিসাবের চেয়ে বেশি হয়ে গেলে ডিমটিকে প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে দুই বা চারভাগ করে নিতে পারেন।
৩. বেগুন with beef
বেগুনের প্রতি আমাদের বুয়ার সীমাহীন ভালবাসা।
বাজার থেকে বেগুন কিনে নিয়ে আসলেই তার মনে creativity-র বন্যা বয়ে যায়। একদিন অফিস থেকে বাসায় ফিরে দেখি তিনি রান্না করেছেন আলু আর বেগুনের ঝোল তরকারির সাথে গরুর মাংস। জীবনে প্রথমবারের মত বেগুনের তরকারি দিয়ে গরুর মাংস খেলাম। খুব শখ করে বাজার থেকে গরুর মাংস কিনেছিলাম। মাংসের এই পরিনতি তে অনেক খারাপ লেগেছিল কিন্তু খেতে হবে কি আর করা।
এটা ঠিক যে নতুন স্বাদ পেয়েছিলাম।
৪. খাসির মাংসের বেগুনি
এটা গত রমজান মাসের ঘটনা। বুয়াকে বলে গেলাম ইফতারিতে ভাল কিছু যেন করে। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে দেখি রাতের খাবারের জন্য যেই খাসির মাংস কেনা হয়েছিল তার কিছুটা বেগুনের সাথে ভাল করে মশলা দিয়ে মিশিয়ে বেগুনি তৈরি করেছে। আমরা হতম্ভব।
ভাল খেতে চাওয়ার শাস্তি যে এমন হতে পারে কল্পনাও করি নি।
৫. ফুলকপি চমচম
এইটা একদম সাম্প্রতিক ঘটনা। ফুলকপি ভাজি, ফুলকপি বড়া, ফুলকপি তরকারি তো সবাই খেয়েছেন কিন্তু আমি নিশ্চিত আপনারা কেউই ফুলকপি চমচম খান নি। সকালে নাস্তায় রুটির সাথে সাধারনত ডাল বা ভাজি খেয়ে থাকি। খুব দ্রুত নাস্তা করতে হয় কারন অফিস যাবার তাড়া থাকে।
কিছুদিন আগে গোসল শেষ করে বের হয়েছি তখন বুয়া বলছে মামা আসেন আজ নতুন জিনিস খাওয়াবো আপনাদের। নতুন জিনিসের কথা শুনেই বুঝলাম আজ খবর আছে। না জানি কি রান্না করেছে। রান্নাঘরে গিয়ে দেখি সে ফুলকপি সিদ্ধ করে ভেজে সেই ফুলকপিকে রুটির ভিতর ঢুকিয়ে রোল বানিয়েছে। এখানেই শেষ নয়।
আগের রাতে আমরা পিঠা খাওয়ার জন্য চিনির শিরা বানিয়েছিলাম, তার অনেকটাই খাওয়ার বাকি ছিল। আমাদের বুয়া সেই চিনির শিরার ভিতর রোল করা রুটি ভাল করে ভিজিয়ে প্লেটে করে আমাদের পরিবেশন করেছে।
আপনাদের হয়ত আমার কথাগুলো বিশ্বাস নাও হতে পারে কিন্তু আমি নিজে ভুক্তভুগি তাই জানি যা লিখছি মোটেও বানিয়ে লিখছি না। এইরকম আরো Item তিনি রান্না করেন। আপাতত সেগুলো লিখছি না।
লেখার বিষয়বস্তু যদি আপনাদের কাছে বিরক্তিকর না মনে হয় তবে পরের পর্বে বাকি Item গুলোর ব্যাপারে লিখবার আশা রাখছি।
২য় পর্বের লিঙ্ক :
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।