আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অষ্টাদশোর্ধ্ব অণুরম্যঃ আফ্রিকান রুলেট

সামান্য বাতিকগ্রস্থ আফ্রিকার এক রাজা একবার গেলেন সোভিয়েত ইউনিয়ন সফরে। তখন সমাজতন্ত্রের ভাগ্যবিধাতা হয়ে সোভিয়েতীয় সিংহাসনে আসীন- প্রিমিয়ার মার্শাল জোসেপ স্তালিন। তো, রাশিয়ান কায়দায় পুরো সফর জুড়েই এন্তার খাতির যত্ন করা হলো কৃষ্ণাঙ্গ রাজামশায়ের। বিদায় বেলায় মার্শাল স্তালিন তার কাছে আবদার করে বললেন, “দেখুন মহামান্য, আমাদের দেশ ত্যাগ করার আগে প্রত্যেক রাষ্ট্রীয় অতিথিকে একটা বিশেষ আনুষ্ঠানিকতা সারতে হয়। মানে একটা বিশেষ আয়োজনে অংশ নিতে হয় আরকি।

” রাজামশায় উদার হেসে বললেন, “আমি সানন্দে রাজি। কী বিশেষ আয়োজন বলুন?” “আপনাকে ‘রাশিয়ান রুলেট ’ খেলতে হবে। খেলাটা আমাদের সংস্কৃতির বহু প্রাচীন একটা অংশ। তবে প্রাণনাশের সামান্য অবকাশ আছে। অবশ্য, একারণেই খেলাটা এমন অভিজাত।

” রাজা মশায় ঘাবড়ে গেলেন। “খেলার নিয়ম কানুন কি?”, শুধালেন তিনি। “ছয়ঘরা একটা রিভলভারে একটা বুলেট ঢুকানো হবে। বাকি ঘরগুলো খালি থাকবে। তারপর এই রিভলভারটা নিজের মাথায় ঠুকে একবার ট্রিগার চাপবেন।

কিসমতে যদি ‘জীবন’ লেখা থাকে তো বাঁচবেন। ” গোঁফের জঙ্গল ফুঁড়ে একপশলা হেসে নিলেন স্তালিন। “না হলে ‘রাশান রুলেট ডেড ক্লাব’ এর সদস্য হয়ে সোজা ইতিহাসের অভিজাত পাতায় ঢুকে পড়বেন। ” রাজামশায় ভয়ে চুপসে গেলেও আভিজাত্যের খাতিরে বুলেট ভরা রিভলভারটা নিজের মাথায় কাঁপা কাঁপা হাতে ঠুকলেন। তারপর হরিনাম জপতে জপতে চোখ বন্ধ করে ঘড়া টানলেন।

আফ্রিকার জংলী দেবতার আশীর্বাদ রাজামশায়ের সাথেই ছিল। তাই এই যাত্রায় তিনি বেঁচে গেলেন। তারপর মার্শাল স্তালিন তাঁকে হাসিমুখেই সোভিয়েত মুল্লুক থেকে বিদায় দিলেন। একবছর পর স্তালিন গেলেন আফ্রিকা সফরে। তো, সেখানে তিনি সেই রাজার আতিথ্য গ্রহণ করলেন।

সারাদিন প্রচুর ভুরিভোজ হলো। আফ্রিকান কায়দায় ঢাক-টেটরা পিটিয়ে প্রচুর বাদ্য-বাজন হলো। দিনশেষে স্তালিন রাজামশায়ের কাছ থেকে বিদায় নিতে যাবেন, এমন সময় রাজামশায়ও একটা আবদার করে বসলেন। “দেখুন কমরেড, আপনি যেমন আমার জন্য রাশিয়ান রুলেটের আয়োজন করেছিলেন ঠিক তেমনই আমি আপনার জন্য ‘আফ্রিকান রুলেট’ আয়োজন করেছি। আপনাকে কিন্তু অংশ নিতেই হবে।

” স্তালিন শুনে বিষম খেলেন। “কই, কোথায়?” রাজা তাকে একটা ছোট্ট কামরায় নিয়ে গেলেন। মার্শাল স্তালিন বিস্ময়ের সাথে দেখলেন, সেই কামরায় ছ জন আফ্রিয়ান সুন্দরী মোহনীয় ভঙ্গিতে হাঁটু গেড়ে করে বসে আছে। ছয়জনই সম্পূর্ণ বিবস্ত্র। রাজামশায় বললেন, “এরা হল আমাদের এখানকার ছয়টি ভিন্ন গোত্রের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে।

আপনার জন্য বেছে বেছে এদের জোগাড় করেছি। এরা এমন মধুরভাবে ব্লো- দিতে পারে না, মানে আপনি পরখ করে না দেখলে বিশ্বাসই করতে পারবেন না। আপনার কাজ হলো, এখান থেকে যে কোন একজনকে দৈবক্রমে বাছাই করে তথায় আপনার ওই সোভিয়েত যন্ত্রটা সমর্পণ করা। ” স্তালিনের বিস্ময় কাটছেই না। “কিন্তু রুলেট অংশটা কই? মানে আমি বলতে চাইছি, প্রাণঘাতী ব্যাপারটা এখানে কোথায়?” রাজা ঈষৎ হেসে বললেন, “এদের একজন কিন্তু নরখাদক।

” কৌতু.কম ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।